আল্লাহর অনুপ্রেরণা: প্রতিটি সৃষ্টির পিছনের রহস্য
আল্লাহর সৃষ্ট বিশাল প্রাণী তিমির সকল বৈশিষ্ঠ্য অনুকরন করে তৈরী করা হয়েছে সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ।
কোরআনে কারিমের সূরা দুখানের ৩৮ ও ৩৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন,
“আমি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এ দু’য়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি। আমি এগুলো যথাযথ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি; কিন্তু তাদের বেশিরভাগই বোঝেনা।”
বিজ্ঞানীরা সাবমেরিন আবিষ্কার করার জন্য প্রথমে একটি ধারণা নিয়েছিলেন, যাতে বিশাল সমুদ্রের নীচে তা অবাধে চলাচল করতে পারে,
এজন্য তারা সর্বশেষ তিমিকে অনুসরন করেন। আর এজন্যই সাবমেরিনের নকশা তিমির বৈশিষ্ঠ্য ও আকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি।
শ্বাস নেওয়ার জন্য তিমিকে চলতে হয়। তিমি পানিতে স্থির থাকতে পারে, বিশেষত: ঘুমাতে। তবে, তাদের ঘুমের সময়কালগুলি খুব সংক্ষিপ্ত,
কারন তাদের বাতাসের জন্য পানি পৃষ্ঠের দিকে ফিরে আসতে হয়। তাদের বড় ফুসফুসগুলির কারনে
তারা প্রতিটি শ্বাসে প্রচুর বায়ু নিতে পারে, যাতে পানির নীচে তাদের দীর্ঘশ্বাস ধরে রাখতে পারে।
তিমিরা ক্যাটস্-নেপিং নামক একটি প্যাটার্নে ঘুমায়। ঘুমের সময় তাদের মস্তিষ্কের অর্ধেক অংশ বন্ধ হয়ে যায়।
বাকি অর্ধেক জাগ্রত ও মনোযোগী থাকে শিকারী বা বাধা হতে নিজেকে রক্ষা করতে এবং প্রয়োজনে নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে।
প্রায় দুই ঘন্টা পরে, ঘুমন্ত ভাগটি জাগ্রত হয় এবং সক্রিয় অর্ধেকটি ঘমিয়ে যায়।
তিমিরা ১১ থেকে ১১০ ফুট দীর্ঘ হয়ে থাকে।
এদের দৃষ্টিশক্তি প্রখর নয়, তাই এরা ইকোলোকেশনের সাহায্যে খাবারের সন্ধান করে,
অর্থাৎ এগুলি সরাসরি পানিতে ক্লিক শব্দ ছাড়ে এবং প্রতিধ্বনির সাহায্যে জানতে পারে শিকার থেকে কত দূরে রয়েছে।
ব্যবহৃত ক্লিক বা হুইসেলগুলি তাদের ব্লোহোল থেকে নির্গত হয়।
ইকোলোকেশন সিষ্টেমটি তিমির মাথার খুলিতে বড় আকারের সাইনাস গহ্বরের মতো একটি অংশ। এটা নির্ভুলতার সাথে দূরত্ব,
গতি এবং কোণগুলিকে চিহ্নিত করার জন্য প্রতিধ্বনি অনুরণন তৈরি করতে পারে।
এ সিষ্টেম ব্যবহার করে তারা অন্য তিমির সাথেও যোগাযোগ ও ডাটা আদান প্রদান করতে পারে।
তিমির সকল বৈশিষ্ঠ্যই সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজে রয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্ বলেন, “যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সৃজন করেছেন উত্তমরূপে।”(সুরা সাজদাহ : ৭)
অন্যত্র বলেন, “… এটা আল্লাহরই সৃষ্টি-নৈপুণ্য, যিনি সব কিছুকেই করেছেন সুষম।”(সুরা নামল : ৮৮)
সুরা আর রহমানে বারবার বলেছেন “অতএব (হে জ্বীন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?”
মানবজাতিকে চ্যালেঞ্জ করে এটাও বলেনঃ “পৃথিবীতে যত বৃক্ষ আছে, সবই যদি কলম হয় এবং সমুদ্রের সঙ্গেও সাত সমুদ্র যুক্ত হয়ে কালি হয়,
তবুও তার বাক্যাবলী লিখে শেষ করা যাবেনা। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়”।(সুরা লোকমান : ২৭)
তাই একে কোন মানুষের আবিস্কার বা উদ্ভাবন বলা উচিৎ কি ? বরং উদঘাটন বলা যেতে পারে, কারন এর মূল প্যাটেন্টতো স্রষ্টারই।