আবৃত মুক্তা
“মা যাচ্ছি, আস্সালামু আলাইকুম! ”
“এই দাড়া , এসব মোল্লার মতো কি পড়ছিস। খোল এক্ষুণি! “বলল মা নওশীন।
“মা এগুলো আমার ক্রাশদের ফ্যাশন, তুমি বুঝবানা!”বলে তাসনিম দিলো দৌড় মায়ের নাগালের বাইরে।
আজকের দিনটা তাসনিমের জীবনে সোনারাঙা দিন গুলোর একটি। আজ প্রথমদিন তাসনিম নিজেকে পরিপূর্ণ পর্দার সহিত ভার্সিটির ক্যাম্পাসে পা দিবে।
ভয়, সংশয়, আনন্দ সব মিলে এক অদ্ভূদ অনুভুতি ঝেকে বসেছে তাসনিমের মাথায়।
“ড্রাইভার আংকেল আজ ছুটির দুই ঘন্টা আগেই আসবেন। আজ বাসায় তাড়াতাড়ি চলে যাবো।”
“হুম মামুনি, সাবধানে যাও।”
তাসনিম কলেজের টপ স্টুডেন্টদের মধ্যে একজন। তার পিছনে সব সময় অনেক ছেলের লাইন পড়ে থাকে। এমন একটা অধুনিকমনা মেয়ের হুট করে পরিবর্তনটা কেউ মেনে নিতে পারবেনা।
নানান জনে নানান কথা শুনিয়ে দিবে। অপবাদ শোনার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ক্যাম্পাসে পা রাখলো তাসনিম। উন্নত ভার্সিটি হওয়াতে সেখানে আরো নানান দেশের স্টুডেন্টরা পড়াশোনা করে। সব স্টুডেন্টই সর্ট আধুনিক পোশাকে সজ্জিতা।
হঠাৎ ভার্সিটির সবাই জীবন্ত টেন্টরূপে অদ্ভূদ মানবীকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ, তারপর বিভিন্ন রকম মন্তব্য করে জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো।
আর তাসনিম সেসব শুনতে শুনতে সামনের দিকে পা বাড়ালো।
একজন বলল, “এসব গেয়ো মেয়ে নামী ভার্সিটিতে কেমনে চান্স পেয়ে গেলো, ভার্সিটির পরিবেশটাই অসুন্দর করে ফেললো।
আরেকজন বললো,”বুঝতেছিস না এগুলো হচ্ছে ভদ্র শয়তান। বোরখার নিচে শয়তান পুষে।
তার কথা শুনে সবাই হাসতে হাসতে লুটোপুটি।
তাসনিম আগে থেকেই জানতো এরকমই হবে। তাই এসব ছাইপাঁশ তোয়াক্কা না করে সামনের দিকে এগুতে লাগলো। ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ স্টুডেন্ট তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে যেন নতুন প্রাণী দেখছে। এমন প্রাণী আর কখনো দেখেনি।
পরক্ষনে সেই অট্টহাসি।
এক সুন্দরী তার পাশাপাশি হাটতে লাগলো আর বললো, “এই যে মোল্লা বোরখার নিচে কোনো বোমাটোমা রেখেছো নাকি?
তাসনিম বললো, “হে রেখেছি, আপনার মাথার উপর ফাটাবো নাকি? ”
মেয়েটা ভয়ে তার ফ্রেন্ডদের কাছে চলে গেলো আর এদিকে তাসনিম হাসতে হাসতে লুটোপুটি।
নিজের বিভাগে ঢুকে ফাস্টবেঞ্চে তার জন্য রাখা সিটে গিয়ে বসলো।
সাথে সাথে তার ফ্রেন্ডরা এসে ভীর জমালো।
নাজনীন বলল, ” এই যে মোল্লা সাহেবা এটা এই ক্লাসের টপ স্টুডেনের জায়গা। ওর জায়গা তুমি কেনো দখল করছো। উঠে যাও বলছি!”
“আরে থাম তোরা, আমি তাসনিম!”
“what the! ”
সবাই থতমত খেয়ে গেলো।তারপর সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি দিচ্ছে।
“তাসনিম এ তোর কেমন বেহাল দশা! এসব কি পড়ছিস? তুই নাকি ক্যাটরিনা কাইপকে অনুসরন করিস! এসব পড়ে তো ক্যাটরিনা কাইপ হওয়া যায় না।” বলল নাজনীন।
“আমি এমন এক সুন্দরের সন্ধান পেয়েছি যার সামনে ক্যাটরিনা কাইপ ধূলিকণার ও যোগ্য না।”
“ওমা সেকি! তো তোর সেই ক্রাশের নাম কি! ”
“আমার রাসূল, আমার কুরআন, আমার ইসলাম। এর চেয়ে সৌন্দর্য আর কি থাকতে পারে!”
এমন সময় মেম চলে আসায় সবাই যার যার সিটে গিয়ে বসলো। কিন্তু তাকে উপহাস করা থামলো না।
“এই মেয়ে দাড়াও। কে তুমি? ক্লাসে নতুন নাকি? ভার্সিটির ডিসিপ্লিন কিছু জানো?”
“মেম আমি তাসনিম! ”
“তাসনিম এসব কি পড়েছো তুমি? কোনো জঙ্গীর দলে যোগ দিয়েছো নাকি? আমার ক্লাস করতে হলে মুখ খোলো।”
“মেম, জঙগী কেন হতে যাব। এগুলো আমাদের রবের হুকুম মেম।
বোরখা পড়লে যদি জঙ্গী হওয়া যায় তাহলে মেম আপনি পতিতা!
কারন পতিতারা ও শাড়ি পড়ে সাজগোছ করে পতিতালয়ে যায়।
“কিহ! ক্লাসের টপ হয়েছো বলে তোমার এত বড় স্পর্ধা! দাড়াও তোমার রাবেয়া বসরী বার করছি।” বলে নিকাবে হাত দিতে যাবেন, এমন সময় তাসনিম পাশে সরে গেলো।
“ডোন্ট টাচ মি মেম! আপনি আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। আপনার চাইতে আমার রব আমার কাছে অনেক বড়। আমার কাছে রবের হুকুম সবার আগেই।”
“এটা কিন্তু বাড়াবাড়ি ধার্মিকতা। ইসলাম এতটা কঠোর না! আমরা ও তো পর্দা করি
এই যে হিজাব করছি। মুখ ঢাকতে হইনা।মুখ খুলে ফেলো।
মনের পর্দা আসল পর্দা মন ঠিক থাকলে সব ঠিক থাকবে। ”
“মেম আমি একমত আপনার সাথে। মনের পর্দা আসল পর্দা। কি দরকার জামা কাপড় পরার ! উলঙ্গ হয়ে চললে ও তো হয়। সরি মেম যুক্তি যা বলে তাই বললাম। আল্লাহকে ভয় করুন মেম। তওবা করে রবের দিকে প্রত্যাবর্তন করুন।
দুনিয়াবি মোহ মায়া ত্যাগ করে জান্নাতের মোহে ডুবে যান মেম। এটাই একমাত্র শান্তির জায়গা। কোটি টাকার গাড়ি- বাড়ি, নাম -যশ, খ্যাতি আপনাকে জান্নাতে নিয়ে যাবেনা। আপনাকে জান্নাতে নিবে আপনার আমল।
সূরা নূরের ৩১ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,
“আর ইমানদার নারীদেরকে বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে। তাদের শোভা প্রদর্শন না করতে যা এমনিতেই প্রকাশিত হয় তা ব্যাতীত। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র,
ভাই , ভাইয়ের ছেলে , বোনের ছেলে , নিজেদের মহিলাগন ,স্বীয় মালিকানাধীন দাসী ,পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা মুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।”
মেম আমার কোনো ক্ষমতা বা সাহস নেই আল্লাহর হুকুম অমান্য করার। আমার পক্ষে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার সাহস নেই যে জাহান্নাম হবে অতল গহ্বর। পাপীদের শাস্তি দেওয়া হবে অফুরন্ত কাল। আমি পারবো না সইতে।
মেম সহ ক্লাসের আরো কিছু নির্বাক চোখ তাকিয়ে আছে তাসনিমের দিকে।
মেম তাসনিমকে কিছু বললেন না। ভারাক্রান্ত মনে কোনোরকম ক্লাসটা শেষ করলেন। অনেকেই অদ্ভূদ কি যেনো নিয়ে ভাবছে। আর তাসনিম ভাবছে, “তারা কি রবের হুকুমটা মানার চেষ্টা করছে,
তারা কি হিদায়াতের অমৃত সুধা পান করতে পারবে!” আশা নিরাশায় ভুগছে তাসনিম। কয়েকটা ক্লাস করে বাসায় চলে গেলো তাসনিম।
এদিকে নওশীন খুব ক্রুদ্ধ হয়ে আছেন মেয়ের উপর আর রাগ ঝাড়ছেন স্বামী তামজিদের উপর।
“শুনো তাসনিমের বাবা, তোমার মেয়ের এসব বুজুর্গি আমি আর মেনে নিতে পারছি না। এসব বুজুর্গীর জন্য মেয়ের বিয়েটা ও হবে না দেখে নিও তুমি। ” বললেন নওশিন।
“আমার মেয়ে জান্নাতের বাগিচায় ফুটন্ত একটা ফুল। আমি এমন একটা জান্নাতের টুকরোর বাবা হতে পেরে নিজেকে গর্ববোধ করি। তোমার মতো দুনিয়াবাদীরা কোনোদিন এসবের মর্ম উপলব্ধি করতে পারবে না। ” বললেন তামজিদ।
“হয়েছে হয়েছে, মেয়ের নামে একদম সাফাই গাইবে না। আমার তো ভাবতে ও সন্দেহ লাগে ও আমার মেয়ে কিনা! উফফ ! আমার এমন স্মার্ট মেয়েটা কিভাবে হুট করে এরকম গেঁয়ো বেকডেইটেড আনসোশ্যাল হয়ে গেলো আল্লাহ ! ”
“তোমার বকাবকানি বন্ধ করে আমাকে যেতে দাও। অফিসে লেট হয়ে যাচ্ছে। ”
“হুম যাও যাও, পারলে বাপ মেয়ে মিলে আমার মাথাটা খাও।”
মেয়েকে সম্পূর্ণ আধুনিক মনমানসিকতায় বড় করে তুলেন মা নওশিন। রুমজুড়ে ছিলো রূপচর্চার যত আয়োজন, তীব্র ঘ্রাণে ভরা পারফিউম। এমন রাজকন্যা হঠাৎ আনকালচারড হয়ে গেল সেটা ভাবতেই নওশীনের চোখে পানি চলে আসে।
মনেমনে ভাবেন, “আমার সপ্নে গড়া রাজকন্যাকে নিয়ে বুনা স্বপ্ন ভেঙে তছনছ হয়ে গেলো।”
নওশীনের স্বপ্ন ছিলো মেয়েকে বলিউডের তারকা বানাবেন। বিজ্ঞাপনে ও কয়েকবার নাম দিয়েছিলেন মেয়ের। তামজিদ তা করতে দেইনি। কিন্তু আশা ছেড়ে দেননি নওশীন। মেয়েকে তিনি নিজের স্বপ্নের মতো গড়ে তুলবেন।
কিন্তু এতোদিনের বুনা স্বপ্ন যে ভেঙে তছনছ হয়ে গেলো ভাবতেই কান্না আসে নওশিনের।
“রাজিয়াপু, রাজিয়াপু , এই ব্যাগটা ডাস্টবিনে ফেলে আসো তো! “বলল তাসনিম।
মেয়ের আওয়াজ শোনে পিছনে ফিরে তাকান নওশিন।
“জ্বি মেম, এক্ষুণি ফেলে দিচ্ছি । “বলল রাজিয়া।
“কয়বার বলবো আমাকে মেম না ডাকার জন্য। আমি বয়সে তোমার অনেক ছোট। আমাকে নাম ধরে ডাকবে। তুমি কাজের মেয়ে হতে পারো। বাট নিজেকে এত ছোট ভাববে না।আমরা কিন্তু এক আল্লাহর দাসী।
একই নবীর উম্মত। আমরা মুসলিম। তাই আমরা সবাই সমান। আমি তোমাকে বোনই মনে করি। একদম মেম ডাকবে না।”
মেয়ের এমন সরল মনমানসিকতায় অবাক হয়ে যান নওশীন। যে মেয়ে কাজের লোকের কাছ থেকে আট ফুট দৌড়ে থাকতো, সবসময়ই বকাঝকা করতো, তাদের যোগ্য মর্যাদা টুকু ও দিতো না সে মেয়ের এমন সরলমনা অবাক হওয়ারই কথা।”
এদিকে রাজিয়ার চোখের পানি টলমল। এভাবে সে কখনো কারো কাছে সম্মান পাইনি।
“তাসনিম, ব্যাগের মধ্যে কি?”বললেন নওশীন।
“মা, রূপচর্চার যন্ত্রপাতি, সাউন্ড,
দামি পারফিউমগুলো আর গাউন ছাড়া বাকি যত সর্ট জামা আছে সেগুলো। ”
“What the! তুই এসব কি করছিস মা? এই দামী জিনিসগুলো কেনো ফেলে দিচ্ছিস। কোন খারাপ গেয়ো ভূতের পাল্লায় পড়ছিস বলতো মা?”
“মা আমি আমার ক্রাশদের অনুসরণ করার চেষ্টা করছি মাত্র।”
“কোন ক্রাশ? হলিউড বলিউডে তো এমন কেনো ভূতমার্কা তারকা নেই! ”
“মা ক্রাশ শুধু হলিউড বলিউডের তারকারা হয়না। আমার ক্রাশ আমার রাসূল( স)। আমার ক্রাশ উম্মুল মুমিনীন,আমার ক্রাশ মা ফাতেমা। ওসব তুমি বুঝবানা। যায় আমার আরো অনেক কাজ আছে।”
তাসনিম রুম থেকে সব পুতুল শখের ছবি নিয়ে এসে মায়ের সামনে আগুনে পুড়িয়ে ধূলিৎসাৎ করে ফেললো।
নওশীন ধপাস করে বসে পড়লেন।
তাসনিম মায়ের কোলে মাথা রেখে বলতে শুরু করলো,
“মা তুমি আমাকে দুনিয়ার দুদিনের রাজকন্যা সাজানোর স্বপ্ন দেখছো। কিন্তু আমি দুদিনের রাজকন্যা হতে চাইনা। আমি অনন্তকালের রাজকন্যা হতে চাই। মা আমি জান্নাতের সুভাষীনি হতে চাই। জান্নাতের নহরে ঘুরে বেড়াতে চাই।
মা দুনিয়ার মোহ মায়া কখনো সুখী করবেনা আমাদের। তুমি একটিবার বুঝার চেষ্টা করো।
অতীতে কত রাজা বাদশা এসেছেন। তার কি দুনিয়াতে কেউ থাকতে পেরেছেন? তাদের ও নিষ্টুর দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করতে হয়েছে মা।”
নওশীন মেয়ের কথা গুলো তন্ময় হয়ে শুনতে লাগলেন।
“মা আমার মতো যারা হুট করে আল্লাহর আদেশ আর সুন্নাহকে নিজের লাইফে ফলো করা শুরু করলো আজ তাদেরই সবাই ঠাট্টা উপহাস করতেছে। আর তারা সব কিছু সহ্য করে দ্বীনকে আকড়ে ধরেছে।
জানো মা আমি এমন একটা জিনিসের সন্ধান পেয়েছে যার কারনে পৃথিবীর যেকোনো ঠাট্টা উপহাস আমাকে বিন্দুমাত্র স্পর্শ করতে পারে না।
সেই জিনিসটা হলো হিদায়াত। যা সবার নসিব হইনা।
সেলিব্রেটি তো তারাই মা যারা আল্লাহর আদেশ ওসুন্নাহ মানার কারনে ২৪ ঘন্টা ঠাট্টা বিদ্রূপ তামাশার পাত্র হচ্ছে। আর তাদের এই মিষ্টি ধৈর্য দেখে আসমানের কোটি কোটি ফেরেশতা তাদের জন্য প্রতিটা সময় রহমত মাগফিরাত আর জান্নাতের দোয়া করছে।
সারাটা দিন এত কিছু শুনে দিনশেষে যখন আল্লাহর খুশির জন্য সবাইকে মাফ করে শুয়ে পড়ে, তারাই তো কিয়ামতের দিন কোটি কোটি মানুষের সামনে হাসতে হাসতে জান্নাতে যাবে। তারাই তো প্রকৃত সাকসেস। প্রকৃত সেলিব্রেটি।”
মেয়ের প্রতিটি কথা তন্ময় হয়ে শুনছে। আর ভাবছে, ” এভাবে তো কোনো দিন ভাবিনি।”
মা আল্লাহর হুকুম অমান্য করার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। জাহান্নাম খুবই ভয়ানক মা। যার আভিধানিক অর্থ অগ্নীকুন্ড, আগুনের গর্ত, অতল গহ্বর। সেখানে অফুরন্ত শাস্তি চলতে থাকবে।
জাহান্নামীদের দূর থেকে আসতে দেখে জাহান্নাম রাগে ক্রোধে এমন আওয়াজ করবে যে তা শুনে কাফের বেইমানরা অজ্ঞান হয়ে যাবে। জাহান্নামীদের শরীরের চামড়া যখন পুড়ে যাবে তখন নতুন চামড়া লাগিয়ে দেওয়া হবে যাতে শাস্তির ধারা অব্যাহত থাকে।”
ভয়ে শিউরে উঠে নওশীন। চোখ দিয়ে পানি টলমল।
“হায়! জীবনে কি করলাম। সারাজীবন গোমরাহির পথে চলছি। আল্লাহর হুকুমকে কটাক্ষ করেছি। আল্লাহ কি আমাকে ক্ষমা করবেন! আমি কি জান্নাতি হতে পারবো? ” চোখ দিয়ে ঝরে পড়ছে। অনুতপ্তের অশ্রুফোটা।”
“মা আল্লাহ ক্ষমাশীল আর পরম দয়ালু। আল্লাহ তাওবাকারীদের খুব ভালোবাসেন। উত্তপ্ত গহীন মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া উঠ খুজে পেলে পথিক যেমন খুশি হয় তেমনি আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের দ্বীনের পথে প্রত্যাবর্তন।
দেখলে তার চাইতে বেশি খুশি হন।”
কুয়াশার বুক ছিড়ে ভোরের সোনা রাঙা আলোতে শুরু হলো তাসনিমদের জীবনের নতুন অধ্যায়। যে বাড়িতে সব সময় নাচ-গানের আসর বসতো, রূপচর্চার প্রতিযোগিতা চলতো, সে বাড়িতে এখন বসে দ্বীনচর্চার প্রতিযোগিতা, দ্বীনের আসর।
এই এক অদ্ভূদ আনন্দ ঘন প্রশান্তি, যা আগে কোনোদিন উপলব্ধি করেনি নওশীন। নাওশীন বুঝতে পারলো নারী কোনো স্বস্তা বস্তুুর মতো না যে হাটে বাজারে রাজপথে নিজেদের প্রদর্শন করবে। নারীই হলো আবৃত মুক্তা।
(The End)