যে সময় বান্দা গুনাহে লিপ্ত হয়
(১) মানুষ যখন মনে করে, আমাকে কেউ দেখছে না তখন সে গুনাহে লিপ্ত হয়। অথচ মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন।’ (সুরা : ফাজর, আয়াত : ১৪)
(২) মানুষ যখন মনে করে, আমার গুনাহ সম্পর্কে কেউ জানতে পারবে না, তখন সে গুনাহে লিপ্ত হয়। অথচ মহান আল্লাহ বলেন, ‘চোখের চুরি ও অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ১৯)
(৩) যখন মনে করে, আমার কাছে কেউ নেই, আমি একাই আছি, তখন সে গুনাহে লিপ্ত হয়। অথচ মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন তোমরা যেখানেই থাক।’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ৪)
(৪) মানুষ যখন নির্লজ্জ হয়ে যায়, লাগামহীন হয়ে যায় এবং বলে আমি অমুক কাজ করব, পারলে কিছু করো; কেউ আমার কিছুই করতে পারবে না।
এমন চিন্তা থেকে সে গুনাহে লিপ্ত হয়। অথচ মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই তাঁর (আল্লাহর) পাকড়াও খুবই মারাত্মক, বড়ই কঠোর।’ (সুরা:হুদ, আয়াত:১০২)
গুনাহর চার সাক্ষী
গুনাহর ওপর কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা চার সাক্ষী পেশ করবেন।
প্রথম সাক্ষী : প্রত্যেক মানুষের কাঁধে ‘কিরামান কাতিবিন’ ফেরেশতা আছেন,
তাঁরা সাক্ষী হবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অবশ্যই তোমাদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত আছে। সম্মানিত আমল লেখকবৃন্দ। তারা জানে, যা তোমরা করো।’ (সুরা : ইনফিতার, আয়াত : ১০-১২)
দ্বিতীয় সাক্ষী : আমলনামা সাক্ষী হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমলনামা সামনে রাখা হবে। তাতে যা আছে, তার কারণে আপনি অপরাধীদের ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন। তারা বলবে : হায় আফসোস! এ কেমন আমলনামা? এ
যে ছোট বড় কোনো কিছুই বাদ দেয়নি; সবই এতে রয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারো প্রতি জুলুম করবেন না।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৪৯)
তৃতীয় সাক্ষী : জমিন বা গুনাহ করার স্থান সাক্ষী হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন সে (জমিন) তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে। কারণ আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।’ (সুরা : জিলজাল, আয়াত : ৪-৫)
চতুর্থ সাক্ষী : মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সাক্ষী হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা যখন জাহান্নামের কাছে পৌঁছাবে তখন তাদের কান, চোখ ও ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা : সাজদা, আয়াত : ২০)
আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব, তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৬৫)
পাপ আগুনসদৃশ
পাপ মূলত আগুন। পাপীরা অবশ্যই ইহকাল ও পরকালে পাপের আগুনে জ্বলবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা এতিমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করে তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করে এবং শিগগিরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০)
নেক আমলে আনন্দময় জীবন
নারী পুরুষের যে কেউ পাপমুক্ত থাকবে এবং নেক আমল করবে, সে-ই আনন্দময় জীবন লাভ করবে।
ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিন পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে সৎকাজ করবে, তাকে আমি নিশ্চয়ই আনন্দময় জীবন দান করব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রদান করব।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)