আমার জান্নাতের সাথী
✍️লেখক:- Muhammad Emon
পর্বঃ- ১
আব্দুল্লাহ বাসে বসে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছিলো।
অন্য কোনো শব্দ কানের মধ্যে যায়না।
গানের তালে তালে পা নাচাচ্ছে। আর মুখে আসতে আসতে করে গান গাচ্ছে।
আব্দুল্লাহ খেয়াল করলো যে তার পাশে একজন হুজুর টাইপের একজন ভদ্রলোক এসে বসলেন।
লোকটি দেখতে হুজুর
পাশে বসেই আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে আছে।
আব্দুল্লাহ আড় চোখে হুজুরটার দিকে তাকালো।
আব্দুল্লাহ তার মতো করে গান শুনছিলো।
লোকটি তার হাতটি আব্দুল্লাহর কাধের ওপরে রাখলো
আব্দুল্লাহ এক কান থেকে ইয়ারফোন খুলে তাকে বললো
আব্দুল্লাহ– ভাই কিছু বলবেন?
হুজুর– আসসালামু আলাইকুম
আব্দুল্লাহ– অলাইকুম সালাম
হুজুর– ভাই গান শুনছেন?
আব্দুল্লাহ– হুম শুনছি!
এরি মধ্যে যোহরের আজান শুরু হয়ে যায়
কিন্তু আব্দুল্লাহ তার দুই কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনতে থাকে
হুজুর সেটা দেখে আব্দুল্লাহ এর গায়ে হাত দিয়ে বলে যে
হুজুর– ভাই আজান হচ্ছে
আব্দুল্লাহ– ওওও আচ্ছা।
হুজুর– হুম ভাই পারলে আজান এর উত্তর দিন।
আব্দুল্লাহ আর কিছু বলে না
আজান শেষ হয়ে যায় আব্দুল্লাহ আবার কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনতে আরম্ভ করে।
হুজুর আবার আব্দুল্লাহ এর কাধে হাত বুলায়
আব্দুলাহ তার ইয়ারফোন খুলে একটু রাগি মেজাজে বলে
আব্দুল্লাহ– কি সমস্যা আপনার? (রেগে)
হুজুর– “ভাই যে কান দিয়ে পবিত্র আজানের ধ্বনি শুনলেন আবার সেই কান দিয়েই কিভাবে গান শুনেন”?
আব্দুল্লাহ কোনো কথা বলে না চুপ করে থাকে
হুজুর– ভাই আল্লাহ আমাদেরকে কান দিয়েছেন ভালো কিছু শুনবার জন্য!!
আব্দুল্লাহ চুপ করে থাকে
হুজুর– ভাই আমরা যে গান শুনি তার ভিতরে তো বেশিই শিরকি কথাবার্তা কুফুরিতে ভিরা।
এরভিতরেই বাসের কন্টেক্টার হুজুরকে ডেকে বলে আপনার নামার জায়গা এসে পরেছে
হুজুর তার ব্যাগ থেকে একটি বই বের করে আব্দুল্লাহকে দিয়ে বলে
হুজুর– ভাই এই নিন এটা আমি আপনাকে হাদিয়া দিলাম বা গিফট ও বলতে পারেন।
আব্দুল্লাহ– কেনো দিচ্ছেন আমি নিবো না।
হুজুর– ভাই এই বইটা একটু মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
এই বলে হুজুর বইটি আব্দুল্লাহকে দিয়ে বাস থেকে নেমে যায়।
আব্দুল্লাহ কিছু বুঝতে পারে না।
সে বইটি রেখে দেয়।
আব্দুল্লাহ আবার তার কানে ইয়ারফোন দিয়ে গান শুনতে যাবে তখন তার কানে আবার বেজে উঠে হুজুর এর সেই কথা
” ভাই যেই কান দিয়ে পবিত্র আজানের ধ্বনি শুনেন সেই কান দিয়ে কিভাবে গান শুনেন”?
আব্দুল্লাহ ইয়ারফোনটা তার পকেটে রেখে চুপ করে বসে আছে।
আর ভাবছে কে সে যে কিনা আমি আব্দুল্লাহ কে কথা শুনিয়ে চলে গেলো?
আব্দুল্লাহ এর খুব রাগ হচ্ছিলো।
আব্দুল্লাহ বাস থেকে নামার সময় বইটা রেখেই নেমে যেতে থাকে কিন্তু বাস কন্টাক্টার আব্দুল্লাহ কে জোর করে বইটি দিয়ে নামিয়ে দেয়।
আব্দুল্লাহ বাস থেকে নেমেই সিগারেটে আগুন দেয়
আব্দুল্লাহ সিগারেট খেতে খেতে তার বাসার দিকে যাচ্ছিলো আর মনে মনে বলছিলো যে
আজকেই গাড়িটাকে নষ্ট হবার ছিলো?
যার কারনে আজকে আমায় কথা শুনালো?
আব্দুল্লাহ সিগারেট খেতে খেতে তার বাসার সামনে যায়।
সিগারেটটা ফেলে সে ভিতরে যায়।
তার ঘরে গিয়ে বইটাকে টেবিলের ওপরে ফেলে দেয়।
আব্দুল্লাহ বিছানায় শুয়ে আছে।
আব্দুল্লাহর মা এসে তাকে খেতে ডাকে।
চলুন একটু পরিচয় হয়ে আছিঃ-
আব্দুল্লাহ হলো তার বাবা মা এর এক মাত্র ছেলে।
তার বাবার ব্যবসায়ী।
আব্দুল্লাহর পরিবার খুব বড়লোক।
তাই আব্দুল্লাহ যখন যা ইচ্ছা তাই করে।
আব্দুল্লাহ কলেজের ছাত্র।
বাকি পরিচয় না হয় পরে জানবেন।
👉 আল্লাহ যাদের ক্ষমা করবেন, যাদের করবেন না!:
👉 হাশরের ময়দানের কিছু প্রশ্ন:
👉 ইসলাম সম্পর্কে কিছু জানা অজানা তথ্য:
পর্বঃ- ২
আব্দুল্লাহ সিগারেট খেতে খেতে তার বাসার সামনে যায়।
সিগারেটটা ফেলে সে ভিতরে যায়।
তার ঘরে গিয়ে বইটাকে টেবিলের ওপরে ফেলে দেয়।
আব্দুল্লাহ বিছানায় শুয়ে আছে।
আব্দুল্লাহর মা এসে তাকে খেতে ডাকে।
আব্দুল্লাহ চলে যায়।
খাবার শেষে আব্দুল্লাহ বইটার দিকে তাকিয়েও আবার তার বিছানায় চলে যায়।
আব্দুল্লাহ ঘুমিয়ে পরে।
বিকেল প্রায় ৫ টা বাজে বাজে
তখন আব্দুল্লাহর ফোনটা বেজে উঠে।
আব্দুল্লাহ– হ্যালো কে?
সাকিব– আমি সাকিব
আব্দুল্লাহ– হুম বল
সাকিব– আড্ডা এর জায়গায় চলে আয় আমরা সবাই আছি এখন শুধু তোর অপেক্ষায়।
আব্দুল্লাহ– ওও আজকে তো সোমবার মনে পড়েছে একটু অপেক্ষা কর আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি।
সাকিব– ওকে।
আব্দুল্লাহ ফোনটা কেটে দিয়ে উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে।
রেডি হয়ে বাহির হয় আব্দুল্লাহ।
তার গাড়িটাও ঠিক হয়ে যায়।
তাই আব্দুল্লাহ গাড়ি নিয়ে বাহির হয়।
প্রায় ১০ মিনিট পরে সে আড্ডা দেওয়ার জায়গায় চলে যায়।
তার বন্ধুরা তার সাথে গাড়িতে উঠে।
সাকিব– চল চল দেরি হয়ে গেছে এমনি।
আব্দুল্লাহ– হুম।
আব্দুল্লাহ গাড়ি ড্রাইব করছে।
আর তার বন্ধুরা সবাই মিলে গান গাচ্ছে।
হাসান– কিরে আব্দুল্লাহ তোর আজকের ইন্টারভিউ কেমন হলো?
আব্দুল্লাহ– ধুর আর বলিস না দস্তো স্যারেরা যা প্যারা দিলো। আবার গাড়িটারও কি যেনো হয়েছিলো তাই বাসে করে আসতে হয়েছে। বাসের ভিতরে আবার একজন হুজুর এসে আমাকে বয়ান দিয়েছে।
হাসান– ওও এতো কিছু হয়ে গেছে??
আব্দুল্লাহ– হুম মেজাজটাই গরম হয়ে গিয়েছিলো।
হাসান– হুম বুঝলাম।
তারা আবার গান গাওয়া শুরু করে দেয়।
কিন্তু আব্দুল্লাহ এর কানে এখনো হুজুর এর ওই কথাটা বাজছে।
হাসান– কিরে ভাই তোর মুখে কি হয়েছে? এর সময়তো তুই-ই জোরে জোরে গাইতি কিন্তু আজকে তো গাইতেছিস না?
আব্দুল্লাহ– ভালো লাগছে না।
হাসান– কেনো কি হয়েছে?
আব্দুল্লাহ– কিছু না।
সন্ধ্যা ৭ টার বেশি বাজে তারা বারে পৌছে গেছে।
সবাই ইনজোয় করছে আব্দুল্লাহ সেও।
তারা সবাই বড়লোক মা-বাবার ছেলে তাই তাদের ইচ্ছা মতো যা ইচ্ছে তাই করে।
সবাই মদ খাচ্ছে নাচ্ছে।
তাদেরকে কেও বাধা দেওয়ার নেই।
রাত প্রায় ১ টার কাছাকাছি।
তারা গাড়িতে করে বাসায় ফিরছে।
সবাই সবার বাসার সামনে নেমে যায়
আব্দুল্লাহও তার গাড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে।
আব্দুল্লাহর মা দরজা খুলে আব্দুল্লাহকে ভিতরে প্রবেশ করায়
আব্দুল্লাহর মা– তুই কি কোনো দিনই ঠিক হবি না?
আব্দুল্লাহ– আমিতো ঠিকই আছি মা
আব্দুল্লাহর মা– বাবা তুই আর নেশা করিস না বাবা।
আব্দুল্লাহ কিছু বলে না ঘরে চলে যায়।
আব্দুল্লাহ ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।
সকালে আব্দুল্লাহর মা এসে তাকে জাগিয়ে দেয়।
আব্দুল্লাহ উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে কলেজের জন্য তার ব্যাগ গোছাচ্ছে।
টেবিলেই সেই বইটা দেখতে পায়
আব্দুলাহ বইটি অন্য কাওকে দিয়ে দিবে ঠিক করে তাই সে বইটি তার ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়।
আব্দুল্লাহ তার বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরে।
কলেজে গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে থাকে।
ক্লাস টাইম শুরু হয়ে যায়
তারা সবাই ক্লাস করছে
ওহহ বলা হয়নি আব্দুল্লাহ এবার ইন্টার ২ বর্ষের ছাত্র
তার সাথীরাও একসাথের।
আব্দুল্লাহর খুব ভালো মেধা ছিলো
কিন্তু সে তা কাজে লাগায় না।
কলেজের প্রায় সকল শিক্ষকই আব্দুল্লাহকে খুব ভালোবাসতো।
ক্লাস অফটাইম চলছে।
সবাই বাহিরে ঘুরছে ক্লাসে কথা বলছে কেও কেও মোবাইল ব্যবহার করছে।
আব্দুল্লাহ তার ব্যাগ থেকে বইটি বের করে
সে এখনো বইটির নাম পড়েনি।
আব্দুল্লাহ বইটির নাম পড়ছে বইটির নাম কিছুটা ছিলো এইরকম ” মুহাম্মাদ (সা.) তিনি কে”? (এই নামের কোনো বই আছে কিনা জানা নেই এটা শুধু গল্পের জন্য এমনি ব্যবহার করা হয়েছে)
আব্দুল্লাহ বইটির নাম শুনে ভাবতে থাকে যে এই মুহাম্মাদ (সা.) নামটা তো শুনেছি কিন্তু কে ছিলেন তিনি? যে তার নাম দিয়ে একটা বই লেখা হয়েছে?
আব্দুল্লাহ কৌতুহল করেই বইটা খুলতে লাগলো
বইটার সূচিপত্র দেখেও অবাক হয়।
আব্দুল্লাহ মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয় যে সে এই বইটি পড়বে। তাছারা তাকে বইটি পড়ার জন্যই দেওয়া হয়েছিলো।
এরই মধ্যে ক্লাস শুরু হয়ে যায়।
ক্লাসের মধ্যেও আব্দুল্লাহ ভাবতে থাকে বইটি নিয়ে।
কলেজ ছুটির পরে আব্দুল্লাহ ও তার বন্ধুরা বাইক নিয়ে তাদের আড্ডার স্থলে যাচ্ছে।
আব্দুল্লাহ ও তার বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছে আর সিগারেট খাচ্ছে।
আব্দুল্লাহর বন্ধুরা ঠিক করে আবার আগামীকাল কলেজ বাং দিয়ে তারা বারে যাবে।
কিন্তু হাসান ও আব্দুল্লাহ রাজি হয় না।
তাই তারাও যাবে না।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায় তারা সবাই সবার বাড়ি চলে যায়।
আব্দুল্লাহ বাড়ি গিয়ে বেলকনিতে বইটি নিয়ে যায় পড়বে বলে।
আব্দুল্লাহ চেয়ারে বসে একটা সিগারেটে আগুন দেয়।
এর মধ্যেই তার ফোনে একটা কল আসে।
আব্দুল্লাহ কলটা রিসিভ করে
আব্দুল্লাহ– হ্যালো কে??
রুমি– আব্দুল্লাহ ভালো আছো?
আব্দুল্লাহ– হুম ভালো আপনি?
রুমি– হুম ভালো।
আব্দুল্লাহ– কিন্তু আপনি কে?
রুমি– আমি যেই হই তা দিয়ে তুমি কি করবে?
আব্দুল্লাহ– কিছু না কিন্তু কে? আর কন্ঠটাও মেয়েদের মতো লাগছে?
রুমি– হুম আমিতো মেয়েই
আব্দুল্লাহ– ওও বুঝতে পেরেছি আরিফ? তুই তো দেখি এখন আমার সাথেও মজা করা শুরু করলি
(আরিফ হলো আব্দুল্লাহর বন্ধু সে মেয়েদের মতো গলা করে অনেক সময় অনেকের সাথে কথা বলে তাই আব্দুল্লাহ ভেবেছিলো যে আরিফ তার সাথে মজা করছে)
রুমি– এই আরিফটা আবার কে?
আব্দুল্লাহ– মজা করিস না ভাই।
রুমি– আরে আমি আসলেই একটা মেয়ে তুমি আমায় এখনো চিনতে পারো নাই?
আব্দুল্লাহ– নাহ
রুমি– আমি রুমি বলছি রুমি
আব্দুল্লাহ– রুমি? তুমি কেনো আমাকে ফোন দিয়েছো? আর আমার নাম্বার কোথায় পেয়েছো তুমি?
রুমি– অনেক কষ্টে তোমার নাম্বারটা জোগার করেছি।
আব্দুল্লাহ– কেনো?
রুমি– জানো না তুমি কেনো?
আব্দুল্লাহ– দেখো ফোন কাটো তুমি।
রুমি– কথাতো শুনো আমার
আব্দুল্লাহ– তোমায় আমি ফোন কাটতে বলেছি না?
রুমি– আব্দুল্লাহ তুমি কেনো বুঝছো না আমায়?
আব্দুল্লাহ ফোনটা কেটে দেয়।
রুমি আবার তাকে ফোন করে
আব্দুল্লাহ এবার ব্লাকলিষ্টে ফেলে দেয় তার নাম্বার।
(রুমি হলো আব্দুল্লাহ এর কলেজের তার সাথেই পড়ুয়া একজন। রুমি আব্দুল্লাহকে খুব ভালোবাসে কিন্তু আব্দুল্লাহ তাকে মটেও ভালোবাসে না।)
আব্দুল্লাহ ফোনটা পাশে রেখে বই পড়া শুরু করে দেয়।
আব্দুল্লাহ এর মনের ভিতরে শুধু একটাই কথা যে
কে এই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম?
👉 আপনি কি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করছেন ? মানসিক শান্তি কিভাবে পেতে পারি ?:
👉 আপনি কি পাপ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছেন? আপনি কি জানেন না কীভাবে ক্ষমা চাইতে হয় ?:
👉 মুসলিম হয়েও জাহান্নামে যাবে যারা!:
👉 জেনে নিন: পশু জবেহ করার সঠিক পদ্ধতি:
পর্বঃ- ৩
আব্দুল্লাহ ফোনটা পাশে রেখে বই পড়া শুরু করে দেয়।
আব্দুল্লাহ এর মনের ভিতরে শুধু একটাই কথা যে কে এই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম?
আব্দুল্লাহ বসে বসে বই পরছে
বইয়ের সূচিপত্র দেখেই একটু চোমকে যায় আব্দুল্লাহ।
আব্দুল্লাহ পড়তে শুরু করে বইটি
আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ (সা.) এর বংশ পড়ছে
আর মনে মনে ভাবছে যে এতো বড় বংশ ও এতো ভালো।
আব্দুল্লাহ বইটা পড়তে থাকে
আব্দুল্লাহ এর কাছে খুবই ভালো লাগতে থাকে বইটি।
রাত প্রায় ৮ টা বাজে
আব্দুল্লাহর বন্ধু হাসান তার বাড়ির নিচে তার বাইক নিয়ে আসে
হাসান আব্দুল্লাহকে ফোন দিয়ে নিচে আসতে বলে আড্ডা দেওয়ার জন্য
আব্দুল্লাহ নিচে এসে হাসান এর বাইক এ করে আড্ডা দেওয়ার জন্য চলে যায়।
আব্দুল্লাহ সিগারেটে আগুন দেয় তার বন্ধুরা সিগারেট খাচ্ছে
আব্দুল্লাহ তার বন্ধুদেরকে বলছে যে রুমি আবার তাকে ফোন করেছিলো।
হাসান– আব্দুল্লাহ তুই তো তাহলে তার প্রপোজটা এক্সেপ্ট করতে পারোছ?
আব্দুল্লাহ– ধুর। তোরা তো জানিস যে আমার এইগুলো ভালো লাগে না
হাসান– ভালো না লাগার কি আছে বল? আমরা এখানে সবাই তো রিলেশন করি তুইও কর।
আব্দুল্লাহ– নাহ কোনো দিনও করবো না।
হাসান– বুঝলি নারে তুই যে রিলেশন এ কতো মজা। (হেসে)
আব্দুল্লাহ– দরকার নেই আমার এতো মজার। আচ্ছা মদ কি আনা হইছে?
হাসান– হুম আজকে আমাদেরকে ট্রিট দিচ্ছে আরফান
আব্দুল্লাহ– বাহ আরফান বাহ!! এইরকম তো দিনে ২/৩ টা ট্রিট দিতেও পারোছ বেটা?
আরফার– প্রতিদিন ২/৩ টা?
আব্দুল্লাহ– কেনো কম বলে ফেললাম? (হেসে)
আরফান– মনে তো হয় তাই (হেসে)
আব্দুল্লাহ– হা হা হা হা আচ্ছা ট্রীট টা কি উপলক্ষে?
আরফান– তোরা আমার বন্ধু তোদেরকে আবার কিসের উপলক্ষে খাওয়াবো?
আব্দুল্লাহ– তুই যে কিপ্টামি করিস তা আমরা জানি। এখন বল সত্যি করে।
(সাকিব বলে উঠে)
সাকিব– ভাই সকল আমাদের আরফান ভাই নতুন রিলেশন এ গিয়েছে তাই সে আমাদেরকে ট্রিট দিচ্ছে!!
সাকিব কথাটা একপ্রকার ঘোষনা দিয়েই বললো
আব্দুল্লাহ ও হাসান বলে উঠলে
“ওরে কিপ্টা তাই তো বলি যে তুই আবার কিভাবে ট্রিট দিচ্ছিস”
আরফান একপ্রকার সরম পায় আর হাসে।
আব্দুল্লাহ– তা ভাবি কি হবে এবার?
আরফান– জানি না রে বন্ধু।
আব্দুল্লাহ– ওওও
আরফান– হুম
আব্দুল্লাহ– ভালো করে কেয়ার করিস ভাবিটার
আরফান– হুম হুম
হাসান– নে নে এবার খাবি কি তোরা?
হুম হুম
তারা ছিলো মোট ৪ জন
তারা মজা করে মদ খাচ্ছে
আরফান আজ অনেক বেশি এনেছে মদ।
হাসান একটু কম খায়
আর আব্দুল্লাহ বোতলটা ধরে ঢক ঢক করে খেতে থাকে।
আব্দুল্লাহকে মানা করলেও সে শুনে না খেতে থাকে।
একপর্যায়ে বোতলটা শেষ হয় আর আব্দুল্লাহ হেলে পরে যায়।
আব্দুল্লাহ এর সেন্স নেই বললেই চলে।
আরফান বলছে– এবার ওয় কিভাবে বাড়ি যাবে?
হাসান– আমি বাইকে করে দিয়ে আসবো
আরফান– হুম তাহলে যা এখন।
এরপর হাসান আব্দুল্লাহকে বাইকে উঠানোর চেস্টা করে কিন্তু পারে না।
পরে আব্দুল্লাহকে সাকিব ও আরফান মিলে ধরে আব্দুল্লাহকে বাইকে উঠায়।
হাসান বাইক নিয়ে যাচ্ছিলো
আব্দুল্লাহ হাসান এর গায়ে হেলান দিয়ে ছিলো
হাসান আছতে আছতে করে বাইক নিয়ে আব্দুল্লার বাসা যায়।
হাসান– আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ আরে এই আব্দুল্লাহ যা বাসায় যা।
আব্দুল্লাহ– এয়্যে বাসায় এসে গেছি নাকি? (নেশায়)
হাসান– হুম যা এখন বাসায়
আব্দুল্লাহ– হা যাচ্ছি আমি আমার বাসায়
আব্দুল্লাহ বাসায় যায়
আব্দুল্লাহর মা দরজা খুলে দেয়।
আজ আব্দুল্লাহর বাবাও জেগে রয়েছে
আব্দুল্লাহ ঘরে ঢুকতেই তার বাবা তাকে বোকা-ঝোকা দিতে থাকে।
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বলে।
আব্দুল্লাহ কিছুটা মাতলামো করছিলো
তা দেখে আব্দুল্লাহ এর বাবা আব্দুল্লাহকে একটা থাপ্পড় মেরে দেয়।
আব্দুল্লাহ সে জিদের বশে আর মাতলামোর কারনে সে গিয়ে তার বাবার কলার ধরে বসে
তখন আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহকে বাধা দেয়
কিন্তু আব্দুল্লাহ তার মাকেও তুই তুই করে বলে
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহ এর দিকে তাকিয়ে থাকে।
আব্দুল্লাহ সে তার বাবার কলার ছেড়ে তার রুমে চলে যায়
আব্দুল্লাহর বাবা সে বসে পরে।
আব্দুল্লাহর মা বলে
আব্দুল্লাহর মা– তুমি কষ্ট পেও না আব্দুল্লাহ না বুঝে করেছে।
আব্দুল্লাহর বাবা– আমরা আমাদের ছেলেকে ঠিক ভাবে মানুষ করতে পারলাম না।
এই বলে আব্দুল্লাহর বাবা তার রুমে চলে যায়।
আব্দুল্লাহর মা কাদতে থাকে।
আব্দুল্লাহ সে তার ঘরে গিয়ে শুয়ে পরে।
আব্দুল্লাহ তেমন কিছু মনে করছে না
আব্দুল্লাহ ঘুমিয়ে পরে।
এইদিকে আব্দুল্লাহর বাবা ঘরে বসে নিরবে অশ্রু ঝরায়।
আব্দুল্লাহর মা ও অশ্রু ঝরায়
আব্দুল্লাহর মা ও বাবা আব্দুল্লাহর ঘরে গিয়ে দেখে যে সে ঠিকভাবে শুয়ে নেই
তারা দুজন আন্দুল্লাহকে ঠিক করে শুইয়ে দেয়
আর চাদরটা তার শরীরের উপরে দিয়ে দেয়
এরপর লাইট অফ করে তারা চলে যায়।
সকাল হয়ে যায় আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহকে ডেকে উঠায় আব্দুল্লাহ হুম হুম করতে করতে আরো ৩০ মিনিট পরে ঘুম থেকে উঠে।
আব্দুল্লাহ ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে কলেজে চলে যায়।
কলেজে গিয়ে আবার প্রতিদিনের মতো করে আড্ডা দেওয়া শুরু হয়।
আব্দুল্লাহ ক্লাস রুমে বসা
হঠাৎ তার সামনে রুমি এসে বসে পরে।
রুমি– আব্দুল্লাহ তুমি আমায় কেনো লাভ করো না?
আব্দুল্লাহ– আমার এইগুলো ভালো লাগে না
রুমি– কিন্তু আমি যে তোমাকে খুব লাভ করি আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– এখান থেকে জাওতো রুমি আমার ভালো লাগছে না।
এরিমধ্যে হাসান,সাকিব ও আরফান চলে আসে।
রুমি সেখান থেকে চলে যায় আর যাবার সময় বলে
রুমি– তোমরা আব্দুল্লাহকে বুঝাও যে আমি তাকে কতোটা ভালোবাসি।
রুমি চলে যায়।
হাসান– কিরে আব্দুল্লাহ তুই তো দেখি এখন রুমির সাথে কথাও বলিস?
আব্দুল্লাহ– না না রুমি তো এখানে এসে কথা বলতেছিলো কিন্তু আমি না।
সাকিব– হইছে হইছে কি ভেবেছিস আমরা কিছু বুঝি না?
আব্দুল্লাহ– আরে ভাই প্লিজ একটু চুপ করতো তোরা জানিস যে আমার এইগুলো ভালো লাগে না।
আরফান– হাসান ওর ব্যাগটা চেক করতো দেখতো কোনো চিঠি আছে কিনা।
আব্দুল্লাহ– নে চেক কর আর দেখ কি আছে।।
হাসান আব্দুল্লাহর ব্যাগ চেক করতে থাকে কিছু পায় না কিন্তু বইটা পায়।
হাসান বইটা হাতে নিয়ে বইয়ের নামটা পরে বলে
হাসান– কিরে আব্দুল্লাহ এটা আবার কেমন বই পরিস?
আব্দুল্লাহ– আসলে বইটা আমার না তোদেরকে যে ওই বাসে আসার সময় ওই হুজুরটার কথা বলেছিলাম না? ওই হুজুরটাই দিয়েছিলো এটা আমাকে।
আরফান– ওও
সাকিব– এই বইটোই পরিছ না পরে উল্টা পাল্টা হয়ে যাবি।
আব্দুল্লাহ– না নাহ কিন্তু নামটা খুব ভালো লেগেছে আর অল্প একটু পরেছিলাম ভালোই লাগলো।
হাসান– এটা আর পড়া লাগবে না।
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা পড়বা না নে ব্যাগ রাখ বইটা
সাকিব– না ওকে আর দিছ না বইটা তুই তোর কাছে রেখে দে।
আব্দুল্লাহ– কেনো?
সাকিব– তুই যদি আবার বইটা পড়িস তাই হাসান সে তার কাছে রেখে দিক।
হাসান সে তার ব্যাগে বইটা রেখে দেয় আব্দুল্লাহ আর কিছু বলে না।
কলেজ ছুটির আব্দুল্লাহ বাসায় আসে।
এসে দেখে তার মা বসে বসে কান্না করছে।
আব্দুল্লাহ– কি হয়েছে মা?
আব্দুল্লাহ মা– কিছু না। (কেদে)
আব্দুল্লাহ– বলো তো মা কি হইছে কান্না করছো কেনো তুমি?
আব্দুল্লাহর মা– তুই গতকাল রাতে তোর বাবার কলার ধরেছিস কেনো?
আব্দুল্লাহ– তো কি করবো? সে আমায় থাপ্পড় মেরেছে কেনো?
আব্দুল্লাহর মা– সে তোর বাবা সে তোর গায়ে হাত উঠাতে পারে কিন্তু তুই পারিস না!!
👉 সাহাবাদের ২৫ টি প্রশ্ন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উত্তর:
👉 বিয়ে না হওয়া নিয়ে ডিপ্রেশন?:
👉 কোন সময়ে আল্লাহ ‘তালা পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন?:
👉 জান্নাতিদের জন্য কি কি নেয়ামত অপেক্ষা করছে?:
👉 হেদায়েতের জন্য আল্লাহর কাছে কিভাবে দোয়া চাইতে হয়?:
পর্বঃ- ৪
আব্দুল্লাহর মা– তুই গতকাল রাতে তোর বাবার কলার ধরেছিস কেনো?
আব্দুল্লাহ– তো কি করবো? সে আমায় থাপ্পড় মেরেছে কেনো?
আব্দুল্লাহর মা– সে তোর বাবা সে তোর গায়ে হাত উঠাতে পারে কিন্তু তুই পারিস না!!
আব্দুল্লাহ কিছু না বলে ব্যাগটা রেখে বাহিরে চলে যায়।
আব্দুল্লাহ তাদের আড্ডার স্থলে বসে থাকে আর গতকাল রাতের কথাটা ভাবিতে থাকে।
আব্দুল্লাহর কাছে বেশি খারাপ লাগে না
ইতিমধ্যে সেখানে তার অন্য বন্ধুরাও এসে পরে।
আব্দুল্লাহ– কিরে তোরা সবাই এক সাথে এখানে?
হাসান– তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে।
আব্দুল্লাহ– কি সারপ্রাইজ?
হাসান– একটু পরেই দেখতে পারবি
হাসান, আরফান ও সাকিব তারা আব্দুল্লাহকে গাড়িতে বসিয়ে একটি জায়গায় নিয়ে যায়।
গাড়িতে থাকা অবস্থায়ই আব্দুল্লাহর চোখ বেধে ফেলে
আব্দুল্লাহ জিজ্ঞাসা করলে কিছু বলেনা তারা।
গাড়ি থেকে ধরে ধরে নামাচ্ছে আব্দুল্লাহকে তারা।
একটু সামনে গিয়ে আব্দুল্লাহকে দাড় করিয়ে আসতে আসতে তার চোখের ওপরের কাপড় সরিয়ে তার চোখ আসতে আসতে খুলবার জন্য বলে।
আব্দুল্লাহ তার চোখ খুলে দেখে তার সামনে একটি টেবিলের উপরে কেক রাখা
আব্দুল্লাহ– কিরে কার জন্য এই কেক?
সাকিব– তোর জন্য
আব্দুল্লাহ– আমার জন্য মানে?
হাসান– বেটা আজকে তোর জন্মদিন আমাদেরকে একটু মনেও করিয়ে দিলি না।
আব্দুল্লাহ– ওওও আরেহ আমারই তো মনে নেই।
হাসান– ভালো ভাই ভালো।
আব্দুল্লাহ– হুম এখন কি কেকটা কাটবো?
আরফান– না না দাড়া আরেকজন আসবে।
আব্দুল্লাহ– কে?
এরই মধ্যে রুমি চলে আসে
রুমির হাতে একটি গিফট এর বক্স
রুমি আব্দুল্লাহর সামনে এসে তার দিকে গিফটটা এগিয়ে দিয়ে বলে
রুমি– Happy Birthday Abdullah
আআব্দুল্লাহ– তুমি এখানে কি করো?
রুমি– তোমায় উইশ করবার জন্য এলাম।
আব্দুল্লাহ– তোমার উইশ করা লাগবে না তুমি চলে যাও
রুমি– কেনো যাবো?
আব্দুল্লাহ– হুম তোমার কথা আমার ভালো লাগে না
রুমি– ওকে কথা বলবো না গফটটা তো নিবা?
আব্দুল্লাহ– লাগবে না কোনো গিফট
হাসান– আরেহ দাও এদিকে দাও।
হাসান রুমির হাত দিয়ে গিফটটা নিয়ে টেবিলের উপরে রাখে।
রুমি– আব্দুল্লাহ I Love You প্লিজ ফিরিয়ে দিও না।
আব্দুল্লাহ অন্যদিকে চলে যায়
হাসান ডেকে বলে আব্দুল্লাহকে কেক কাটার জন্য আব্দুল্লাহ কেক কাটা শুরু করে।
আব্দুল্লাহ সবাইকে কেক খাইয়ে দেয় কিন্তু রুমিকে দেয়না
এতে করে রুমি খুব রাগ করে আর রুমির প্রপোজালটাও আব্দুল্লাহ গ্রহন করে না তাই রুমি রাগের মাথায় ইচ্ছা মতো আব্দুল্লাহকে উল্টো পাল্টা কথা শুনায়।
আব্দুল্লাহ যখন রুমিকে ধমক দেয় তখন
রুমি রাগের মাথায় আব্দুল্লাহকে থাপ্পড় মেরে সেখান থেকে চলে যায়।
আব্দুল্লাহর মাথা খুব গরম হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ কি করবে বুঝতে পারছে না।
পাশে থাকা মদ এর বোতল নিয়ে আব্দুল্লাহ খেতে শুরু করে।
হাসান তাকে বাধা দিলে আব্দুল্লাহ বলে
প্লিজ কেও কাছে আসবি না
না হয় কিন্তু খারাপ কিছু হয়ে যাবে!!
হাসান বলে
আচ্ছা মদ এতো আর পেটে ঢালিস না পরে সমস্যা হবে
আব্দুল্লাহ বলে
ধ্যাৎ তোর সমস্যা যা হবার হবে
ওই মেয়ের কতো বড় সাহস যে আমি আব্দুল্লাহ এর গায়ে হাত তোলে।
আব্দুল্লাহ খুব বেশি পরিমানের মদ খায়।
আব্দুল্লাহ নেশার কারনে দাড়াতে পারছে না।
আব্দুল্লাহ ঠিক ভাবে কথাও বলতে পারছে না
আব্দুল্লাহ সেখাই শুয়ে পরে।
প্রায় এক ঘন্টা পর আব্দুল্লাহর ঘুম ভেঙে যায়
কিন্তু তার নেশা এখনো যায়নি
সে দেখে তার বন্ধুরা পাশে বসে আছে
রাত প্রায় ১২ টা বাজে
আব্দুল্লাহ এর আগে কখনো এতো পরিমানের মদ খায়নি
সাকিব, হাসান আব্দুল্লাহকে ধরে গাড়িতে বসায়
আরফান বলতে থাকে
বেটা তুই নিজেই সব মদ খেয়ে নিলি আর আমরা বসে বসে ঘোড়ার ডিম খেলাম
আজকের দিনটাই বৃথা গেলো
আব্দুল্লাহ কিছু বলে না।
আব্দুল্লাহ গাড়িতে শুয়ে আছে
হাসান গাড়ি চালাচ্ছে
আব্দুল্লাহর উপরে তারা সবাই রাগ হয়ে আছে
কারন আব্দুল্লাহ একাই অনেক বেশি মদ খেয়ে নিয়েছে।
আব্দুল্লাহর বাসা এসে পরে আব্দুল্লাহ আসতে আসতে ঘরে যেতে থাকে
আব্দুল্লাহর মা দরজা খুলতে একটু দেরি করে বলে
আব্দুল্লাহ বকাবকি করতে থাকে
আব্দুল্লাহর বকা শুনে আব্দুল্লাহর বাবা এসে আব্দুল্লাহকে থাপ্পড় দিয়ে এক ধাক্কা দিয়ে বলে যে
তুই ঘর থেকে বের হয়ে যা তোর মতো ছেলে আমাদের প্রয়োজন নেই!
আব্দুল্লাহ কথা শোনে না সে ঘরে যেতে চায় কিন্তু আব্দুল্লাহর বাবা তাকে ঘরে যেতে দেয় না
আব্দুল্লাহ প্রায় সময়ই মদ খেয়ে এসে তার বাবা ও মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহকে এক ধাক্কা দেয়
আব্দুল্লাহ একটু দূরে গিয়ে মাটিতে পরে যায়।
আব্দুল্লাহর খুব বেশি রাগ উঠে যায়
তাই আব্দুল্লাহ উঠে এসে তার বাবাকে ধাক্কা দেয়
আব্দুল্লাহর মা তাকে বাধা দিলে আব্দুল্লাহ তার মাকে ধাক্কা দেয় আর আব্দুল্লাহর মা দেয়ালের সাথে বারি খেয়ে তার মাথা ফেটে যায়।
আব্দুল্লাহ তার বাবার গলা চেপে ধরে বলে
তোর এতো সাহস কিভাবে হয় যে আমার গায়ে হাত দিছ?
বেশি সাহস হইছে হ্যা?
আব্দুল্লাহর বাবা শুধু আব্দুল্লাহর চেহারার দিকে চেয়ে থাকে
আব্দুল্লাহর বাবার চোখ থেকে পানি পড়ছে
আব্দুল্লাহর বাবা বলে
হুম বাবা আরো শক্ত করে আমার গলা চেপে ধর মেরে ফেল আমায় আমিই তোকে মানুষ করতে পারিনি
যেই ছেলেকে না খেয়ে খাইয়েছি সেই ছেলে আজ আমার গলা চেপে ধরে তুই মেরে ফেল আমায় বাবা মেরে ফেল
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহর হাত শক্ত করে ধরে বলতে থাকে আর কাদতে থাকে যেনো তাকে মেরে ফেলে
এইদিকে আব্দুল্লাহর মা উঠে এসে আব্দুল্লাহকে ছারাচ্ছে
আব্দুল্লাহর মায়ের মাথা থেকে রক্ত পরছে আব্দুল্লাহ দেখে সে ঘরে চলে যায়।
আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহর বাবার গায়ে হাত দিয়ে বলে
থাক তুমি কষ্ট পেয়ো না আব্দুল্লাহ এখনো ছোট
আব্দুল্লাহর মা কাদতে থাকে
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহর মা-এর মাথা দেখে তার মাথা তার হাতটা চেপে ধরে বলে
তুমি হসপিটালে চলো
কিন্তু আব্দুল্লাহর মা যেতে চায় না
পরে আব্দুল্লাহর বাবা জ্বোর করে আব্দুল্লাহর মাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ তার ঘরে গিয়ে শুয়ে থাকে
আব্দুল্লাহর নেশা এখন একটু একটু কাটছে।
আব্দুল্লাহ শুয়েই থাকে।
রাত প্রায় ৩ টা বাজে
আব্দুল্লাহর বাবা ও আব্দুল্লাহর মা হাসপাতাল থেকে ফিরে আসে।
তারা দুজনে আব্দুল্লাহর ঘরে যায়
আব্দুল্লাহ তার চেহারার উপরে চাদরটা দিয়ে রাখে
আব্দুল্লাহর মা ও বাবা বুঝে যে আব্দুল্লাহ ঘুমিয়ে আছে।
আব্দুল্লাহর মা ও বাবা আব্দুল্লাহ এর মাথার সামনে গিয়ে আব্দুল্লাহর বাবা বলে
আব্দুল্লাহর বাবা– আহ!! আমরা আমাদের ছেলেটাকে মানুষ করতে পারলাম না।
আজকে নিজের ছেলে কিনা তার বাবা মা এর গায়ে হাত তোলে
নিজের রক্ত পানি করে এই ছেলেকে বড় করেছি
নিজে না খেয়ে তাকে খাইয়েছি
একটা দিন ঘরে বসে ছিলাম না শুধু ছেলেটার দিকে তাকিয়ে
নিজে খারাপ জামা-কাপড় পরে ছেলেকে ভালো ভালো জামা কিনে দিয়েছি
কোনো ঈদ নিজে জামা না নিতে ছেলেকে কিনে দিয়েছি
নিজে বাহিরে কিছু খেতাম না ওই টাকায় ছেলের জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসতাম
নিজেদের যৌবনকালটা ছেলের জন্য বিলিয়ে দিলাম
কিন্তু আজ সেই ছেলে কিনা আমাদের গায়ে হাত তুলে?
নিজের বাবাকে মারে?
নিজের মায়ের মাথা থেকে রক্ত বের করে?
যে মা না ঘুমিয়ে ছেলেকে পাহারা দিতো
নিজে ভিজা জায়গায় শুয়ে ছেলেকে শুকনো জায়গায় শুয়াতো
আহ!! আজ সেই ছেলে কিনা আমাদের গায়ে হাত তুলে।
দেখো গো দেখো আমরা কেমন ছেলে বড় করেছি।
আব্দুল্লাহর মা ও বাবা কাদতে থাকে
কাদতে কাদতে ঘর থেকে চলে যাবে
কিন্তু তারা দু’জনই আব্দুল্লাহর কপালে একটা করে চুমু দিয়ে কাদতে কাদতে ঘর থেকে চলে যায়।
আব্দুল্লাহ এতোক্ষন তাদের সকল কথাই শুনছিলো আব্দুল্লাহর চোখেও পানি চলে আসে তার বাবার কথা শুনে।
আব্দুল্লাহর এখনো নেশা কাটেনি
সে নেশার কারনে বেশি কিছু ভাবতেও পারছে না
চোখগুলো টেনে টেনে মেলছে
আব্দুল্লাহ কোনো ভাবে তার মোবাইলে গান চালু করে শুয়ে পরে।
আব্দুল্লাহর মায়ের মাথা ব্যান্ডেজ করা
মাথাটা নাকি খুব ব্যাথা করছে তার
তারা দু’জনে শুয়ে থাকে।
সকাল প্রায় ১১:৩০ টা বাজে
আব্দুল্লাহর হঠাৎ করে ঘুম ভেঙে যায়
সে দেখে যে তার ফোনে এখনো গান বাজতেছে
আব্দুল্লাহ গানটা বন্ধ করতে গিয়ে দেখে ১১ঃ৩০ বাজে
আব্দুল্লাহ তারাতারি করে উঠে পরে
সে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে
এসে চেচামেচি করে বলতে থাকে
আব্দুল্লাহ– কয়টা বাজে মা? আমায় এখনো ডাক দাওনি কেনো? কলেজে কি যেতে হবে না আমার?
কিন্তু আব্দুল্লাহর মার ঘর থেকে কোনো শব্দ আসে না
আব্দুল্লাহ আবার বলতে থাকে
কিন্তু কোনো শব্দ আসে না
তাই আব্দুল্লাহ তার মায়ের ঘরের সামনে গিয়ে জোরে জোরে বলতে থাকে
মা খাবার দাও কলেজে যাবো দেরি হয়ে যাচ্ছে!!
আব্দুল্লাহর মা আসতে করে আব্দুল্লাহকে ডেকে বলে
“আব্দুল্লাহ বাবা টেবিলের ওপরে দেখো তোমার বাবা তোমার জন্য খাবার এনেছে সেটা খেয়ে চলে যাও”
আব্দুল্লাহ তার মায়ের কথা শুনে ঘরে যায়
গিয়ে দেখে তার মা কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে আর তার মায়ের মাথায় ব্যান্ডেজ করা
আব্দুল্লাহ– কি হয়েছে মা?
আব্দুল্লাহর মা– কিছু না বাবা একটু জ্বোর এসেছে
আব্দুল্লাহ গায়ে হাত দিয়ে দেখে খুব জ্বোর তার মায়ের গায়ে
আব্দুল্লাহ– একটু কই অনেক জ্বোর দেখছি বাবা কোথায়?
আব্দুল্লাহর মা– তোর বাবা ওষুধ আনতে গেছেন। আমি আজকে নাস্তা বানাতে পারিনি বাবা,,, তাই তোর বাবা বাহির থেকে তোর জন্য নাস্তা এনেছে তুই খেয়ে কলেজে চলে যা।
আব্দুল্লাহ– মা তোমার তো শরীর অসুস্থ খুব চলো হাসপাতালে
আব্দুল্লাহর মা– না না বাবা লাগবে না তুই যা তোর দেরি হয়ে যাচ্ছে
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা যাচ্ছি মা
আব্দুল্লাহ টেবিলে গিয়ে বসে তার নাস্তা খাচ্ছে আর ভাবছে যে
আমার জন্যই মায়ের আজ এই অবস্থা
রাতে আমার ধাক্কা খেয়ে তার মাথা ফেটে গেছে
খুব ব্যাথা করছে হয়তো তাই জ্বোর এসেছে।
👉 বেনামাজীর শাস্তিঃ(দুনিয়াতে/মৃত্যুর সময়/কবরের মধ্যে/হাশরের মাঠে ):
👉 আল্লাহর ৯৯ টি নাম ! ( বাংলা অর্থ সহ):
👉 নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার ১৫ টি কৌশল!:
👉 উত্তমরূপে অজু করার নিয়ম ও সুন্নত পদ্ধতি-:
👉 কাউকে মেরি-ক্রিস্মাস বা শুভ বড়দিন উইশ করার আগে নিচের আয়াত গুলো পড়ে দেখুন:
👉 কোনো বিশেষ মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে আল্লাহ-র কাছে চাওয়া যাবে?:
পর্বঃ- ৫
আব্দুল্লাহ টেবিলে গিয়ে বসে তার নাস্তা খাচ্ছে আর ভাবছে যে
আমার জন্যই মায়ের আজ এই অবস্থা
রাতে আমার ধাক্কা খেয়ে তার মাথা ফেটে গেছে
খুব ব্যাথা করছে হয়তো তাই জ্বোর এসেছে।
আব্দুল্লাহ নাস্তা শেষ করে কলেজে চলে যায়
আব্দুল্লাহর আজকে ভালো লাগছে না
আব্দুল্লাহ আজ আড্ডাও দিচ্ছে না তার বন্ধুদের সাথে কলেজে।
কলেজে রুমি আব্দুল্লাহর কাছে এসে Sorry বলতে চায় কিন্তু আব্দুল্লাহ তাকে সরাসরি বলে দেয় যে
যদি সে তার কাছে আসে তাহলে খারাপ কিছু হয়ে যাবে তাই রুমি আর তার আশেপাশেও যায় না।
আব্দুল্লাহ মনে মনে বলতে থাকে যে রুমির জন্যই সব কিছু হয়েছে।
কলেজে আব্দুল্লাহ আজ চুপচাপ থাকে
তাই কলেজ ছুটির পরে আব্দুল্লাহকে সাথে করে নিয়ে তার বন্ধু একটু আড্ডা দিতে যায়
আব্দুল্লাহ যেতে চায় না কিন্তু তার বন্ধুরা তাকে জোর করেই নিয়ে যায়।
বিকেল গরিয়ে সন্ধ্যা পার হয়ে যায়।
রাত প্রায় ৯ টা আব্দুল্লাহ নির্জনে বসে থাকে।
আরফান– আব্দুল্লাহ বাসায় যেয়ে আন্টি আংকেল এর কাছে মাফ চেয়ে নিস।
(আব্দুল্লাহ গতকাল রাতের কথা তার বন্ধুদেরকে বলে)
আব্দুল্লাহ কোনো কথা বলে না
হাসান– আব্দুল্লাহ ওঠ এবার বাসায় চল সিগারেট তো দুই পেকেট তুই একাই শেষ করে ফেলেছিস
আব্দুল্লাহর মনে কিসের যেনো একটা ভয়
আব্দুল্লাহর ওই বইটার কথা মনে পরে
আব্দুল্লাহ– হাসান ওই বইটা কি তুই পরেছিস?
হাসান– না ওইটা নিয়ে টেবিলের এক কোণায় রেখে দিয়েছি
আব্দুল্লাহ– বইটা দে তো পড়বো
হাসান– ওওও আচ্ছা চল আমি তোকে বই দিচ্ছি।
এরপর আব্দুল্লাহ হাসান এর বাসায় গিয়ে বইটা নিয়ে তার বাসায় চলে যায়
ঘড়িতে ঘন্টার কাটা ১১ টায়
আব্দুল্লাহ দরজায় নক করলে তার বাবা এসে খোলে
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহর দিকে তাকায় না কোনো কথাও বলে না
আব্দুল্লাহ খেয়াল করে যে তার বাবার চেহারায় এক প্রকার ভয়
আব্দুল্লাহ বুঝতে পারে যে এই ভয়টা তাকে করছে
যদি সে আবার তাদের গায়ে হাত তোলে তাই।
আব্দুল্লাহর– মা কোথায়?
বাবা– ঘরে ঘুমিয়ে আছে
আব্দুল্লাহ– ওও
বাবা– টেবিলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নে
আব্দুল্লাহ– ওকে
এরপর আব্দুল্লাহ তার ঘরে চলে যায়
ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খেতে বসে
আব্দুল্লাহ দেখে যে বাহির থেকে খাবার আনা হয়েছে
আব্দুল্লাহ খাবার খেয়ে তার মায়ের ঘরে গিয়ে দেখে
তার মা শুয়ে আছে আর তার বাবা তার মায়ের মাথায় পানি দিচ্ছে
আব্দুল্লাহ দেখে তার চোখে পানি চলে আসে
আব্দুল্লাহ গিয়ে জিগ্যেসও করতে পারছে না যে মা তুমি কেমন আছো এখন?
আব্দুল্লাহ জিগ্যেসও করতে পারছে না যে মা-বাবা তোমরা খেয়েছো খাবার?
আব্দুল্লাহ তার ঘরে চলে যায়
আব্দুল্লাহ বেলকনিতে গিয়ে বসে সিগারেটে আগুন দেয়
সিগারেট খেতে থাকে আব্দুল্লাহ আর গান শুনতে থাকে
সিগারেট খাওয়া শেষ হলে আব্দুল্লাহ বইটা নিয়ে আসে।
আব্দুল্লাহ বইটা পড়তে থাকে
আব্দুল্লাহর কাছে খুব ভালো লাগছে বইটা পড়তে
রাত প্রায় ১২ টা বাজে
আব্দুল্লাহ উঠে গিয়ে তার বিছানায় শুয়ে পরে শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপছে
আব্দুল্লাহর মনে প্রশ্ন জাগে যে এই পৃথিবীর সব থেকে সেরা লোক কে ছিলেন?
তাই আব্দুল্লাহ গুগলে সার্চ দেয় “Who is the best man in the world”
আব্দুল্লাহ দেখে যে নাম এসেছে “মুহাম্মাদ”
আব্দুল্লাহর মনে আরো বেশি প্রবল ইচ্ছা জেগে উঠে যে কে এই মুহাম্মাদ (সা.)?
আব্দুল্লাহ দেখে একটা বই আছে নাম হলো ” The 100 Book”
আব্দুল্লাহ আগে বইটা সম্পর্কে জানে বইটার লেখক একজন খ্রিস্টান তার নাম ছিলো “Michael H. Hart”
বইটা বের হয় ১৯৭৮ সালে।
Michael H. Hart সে অনেক বাছাই করে ১,০০০ জন বিশ্বসেরা মানুষ এর নাম বের করে
পরে এসে ১,০০০ জন থেকে আরো কমিয়ে আনতে আনতে ১০০ জনে নিয়ে আসে।
১০০ জনে এনে Michael সে এই ১০০ জনের ইতিহাস ও জীবনি পড়তে থাকে খুব ভালো ভাবে
Michael H. Hart সে ভাবে যে যিশুকে নাম্বার ১ এ দিবে কিন্তু সে মুহাম্মাদ (সা.) এর জীবনি যতোই পড়ে ততোই অবাক হয়।
Michael H. Hart তার “The 100 Book” এ একেবারে সর্বপ্রথম ১ নাম্বারে নাম দেয় ইসলামের ধর্মের একজন নেটা বা নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর
তার এই কান্ড দেখে তখন খ্রিস্টানদের অনেক নেতাই অবাক হয়ে যায় পরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে
আমি যতোই মুহাম্মাদ (সা.) এর জীবনি পড়ি আমি ততোই অবাক হই তাই আমি তার নাম ১ নাম্বারে দিতে বাধ্য হয়েছি।
আব্দুল্লাহ অনলাইনেই বইটা দেখে আর সর্বপ্রথম নাম “মুহাম্মাদ (সা.)”
আব্দুল্লাহ খুব অবাক হয় কারন আব্দুল্লাহ যেটুকু জীবনি পড়েছে তাতে সে জানতে পারে যে সে আজ থেকে আরো প্রায় ১৫০০ বছর আগে এসেছিলেন পৃথিবীতে
আর তখন তো বিজ্ঞানও ছিলো না,, না ছিলো কোনো আবিষ্কার।
আব্দুল্লাহ গুগল ঘাটে অনেক সময় এরপর ইউটিউবে মুহাম্মাদ (সা.) এর জীবনি শুনে
রাত প্রায় ১ টা বাজে তাই আব্দুল্লাহ ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে আব্দুল্লাহর ঘুম ভেঙে যায় তার বাবার ডাকে
আব্দুল্লাহ বুঝিতে পারে যে তার মায়ের শরীর খারাপ তাই সে তো আর আব্দুল্লাহ কে ডাকতে পারবে না।
আব্দুল্লাহ ফ্রেশ হয়ে তার মায়ের ঘরে গিয়ে তার মাকে দেখে নাস্তা করতে বসে যায়।
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহর খাবারের পাশে কিছু টাকা রেখে যায়।
আব্দুল্লাহ কিছু বলে না।
নাস্তা শেষ করে আব্দুল্লাহ বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরে কলেজের উদ্দেশ্যে
কলেজে গিয়ে আব্দুল্লাহ বইটা পড়তে থাকে
আব্দুল্লাহ আজকে আর আড্ডা দিচ্ছে না
আব্দুল্লাহ বসে বসে বই পড়ছে
তার বন্ধুরাও দেখে অবাক হয়
তারা আর আব্দুল্লাহকে বিরক্ত করে না
কারন এমনিতেই আব্দুল্লাহর মন খারাপ সেটা তারা জানে।
কলেজ শেষে আব্দুল্লাহ বাসায় ফিরবার পথে তার বাবার দেওয়া সেই টাকা দিয়ে কিছু ফল কিনে নিয়ে যায় তার মায়ের জন্য।
আব্দুল্লাহ বাসায় ফল নিয়ে যায়
ফল গুলো তার মায়ের ঘরে নিয়ে যায়
আব্দুল্লাহর মা দেখে অবাক হয়
তার মা তাকে “জিজ্ঞাসা করে এই ফল কিসের”?
আব্দুল্লাহ বলে ” মা তোমার জন্য নিয়ে আসলাম”
আব্দুল্লাহর মা খুব অবাক হয় আর মনে মনে বলে যে,,
যে ছেলে কোনো সময়ই কিছু আনে না সে কিনা আজকে ফল নিয়ে এসেছে তাও আবার তার মায়ের জন্য?
আব্দুল্লাহর মা খুব খুশি হয়
আব্দুল্লাহ– মা তুমি কেমন আছো এখন?
মা– ভালো বাবা আর এখন তো আরো বেশি ভালো হয়েগেছি
আব্দুল্লাহ– ওও আচ্ছা মা আমি আমার ঘরে যাই
মা– আচ্ছা বাবা যা।
আব্দুল্লাহ তার ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বই পড়তে শুরু করে
আব্দুল্লাহ আজ আড্ডা দিতেও যায় না
শুধু বইটা পড়তে থাকে
আব্দুল্লাহ বইটা বইটা পড়তে পড়তে যখন মুহাম্মাদ (সা.) এর কষ্টের কথাগুলো পড়ছে তখন তার অজান্তেই তার চোখ থেকে পানি পরে বইয়ের পৃষ্টায়।
আব্দুল্লাহ তার চোখে হাত দিয়ে দেখে চোখ থেকে পানি পরছে।
আব্দুল্লাহ অনেক বই পড়েছে কিন্তু কোনো সময়ই এমনটা হয়নি।
আব্দুল্লাহ আবার বইটা পড়তে থাকে আর তার চোখ দিয়ে পানি পরতে থাকে।
একপর্যায়ে আব্দুল্লাহ পুরো বইটা পড়া শেষ করে
তখন রাত প্রায় ১০ টা বাজে।
আব্দুল্লাহ বইটা বন্ধ করে বইটার নামের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আব্দুল্লাহর চোখ থেকে এখনো পানি পরছে
আব্দুল্লাহ শুধু একটা কথাই ভাবতে থাকে যে,,
যে কিনা আমাকে দেখেনি এবং আমার নাম আমার কথা কিছুই শোনেনি
আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগে তিনি আমাকে ভালোবেসেন
আমার জন্য কতোই না কিছু করেছে।
আর আজ আমি কিনা তার উম্মত হয়ে আজকে এই সকল বাজে কাজের মধ্যে পরে আছি?
তার তো হক আছে আমার ভালোবাসা পাওয়ার।
আমি তাকে কিভাবে কষ্ট দিতে পারি?
না আজ থেকে আমি তাকে ফলো করবো।।
আব্দুল্লাহ চোখ মুছে নিচে খাবার খেতে যায়।
খাবার খেয়ে ঘরে চলে আসে।
আব্দুল্লাহ এখন শুধু তাকেই নিয়ে ভাবছে
ইন্টারনেটে তার জীবনি শুনছে
তার বিভিন্ন কষ্টের কথাগুলো শুনছে আর তার চোখ দিয়ে পানি পরছে!!
আব্দুল্লাহ তাকে ফলো করাএ জন্য পুরো প্রতিশ্রুতি নেয়।
তার উম্মত হিসেবেই বাকি জীবনগুলো পার করবে।
সকাল ১২ টা বাজে আব্দুল্লাহ ঘুম থেকে উঠে আজকেও তার বাবাই তাকে ডেকে তোলে
আজ শুক্রবার তাই দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছে আব্দুল্লাহ।
আব্দুল্লাহ ফ্রেশ হয় নাস্তা করে
নাস্তা শেষে ঘরে আসে এরই মধ্যে তার বন্ধুরা ফোন করে
আব্দুল্লাহকে বলে জুম্মার নামাজের জন্য বের হতে
আব্দুল্লাহ গোসল করে তৈরি হয়ে বের হয়
তখন প্রায় ১ঃ১০ বাজে
মাসজিদে গিয়ে কোনো রকম ভাবে জামাতটা পায়
সালাম ফিরানোর সাথে সাথে বের হয়ে যায়।
চলে যায় আড্ডার স্থলে গিয়েই সিগারেটে দেয় আগুন মজা করছে আর সিগারেট খাচ্ছে।
আব্দুল্লাহ আজকে সিগারেট একেবারেই কম খায়।
তা দেখে তার বন্ধুরা অবাক হয়।
বিকেলে আব্দুল্লাহ বের হয় কিছু বই কিনবে
সে লাইব্রেরিতে গিয়ে কিছু বই কিনে নিয়ে আসে।
এসে পড়তে থাকে বইগুলো।
আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ (সা.) এর বেশ কিছু জীবনির বই পড়তে থাকে
যতো পড়ছে ততোই পড়তে ভালো লাগছে।
আব্দুল্লাহর বন্ধুরা তাকে আড্ডার জন্য ডাকলে সে জায়না ঘরেই থাকে।
আব্দুল্লাহর বন্ধুরাও ব্যপারটা বুঝতে পারে না।
ভাবে হয়তো তার মনটা এখনো ঠিক হয়নি তাই আব্দুল্লাহকে একা থাকতে দেয়।
প্রায় ৩ দিন কেটে যায়
আব্দুল্লাহ আগের থেকে অনেকটাই তাকে পরিবর্তন করছে
আব্দুল্লাহ এখন অনেক বেশিই মুহাম্মাদ (সা.) কে ভালোবাসে
আব্দুল্লাহ তাকে ফলো করে আর আব্দুল্লাহ যেহেতু তার জীবনি পড়েছে তাই সে জানে যে তিনি ছিলেন মেসেঞ্জার মানে বার্তাবাহক।
আব্দুল্লাহ আজকে আছরের নামাজেও গিয়েছে
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ মোনাজাত করে
তার অজান্তেই তার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে
আব্দুল্লাহ কিছুই বলতে পারে না আর
কান্না করতে থাকে।
আব্দুল্লাহ অনেকটাই পরিবর্তন হতে থাকে
তার বন্ধুরাও কিছু বুঝতে পারে না।
আব্দুল্লাহ ইসলামের অনেক কিছু নিয়ে পড়তে থাকে সে জা জানে না তা জানার চেস্টা করছে আব্দুল্লাহ এখন শুধু চায় ভালো হতে।
আব্দুল্লাহ ইসলামিক অনেক বই পড়তে থাকে।
আব্দুল্লাহ কলেজে গিয়েছে তার বন্ধুরা তাকে দেখে কিছু না বুঝায় হাসান বলে
হাসান– আব্দুল্লাহ কি হয়েছে তোর একটু বলতো?
👉 প্রশ্ন : বিয়ে করার উদ্দেশ্যে প্রেম করা যাবে? ইসলাম কি বলে?:
👉 প্রশ্ন : ভালোবাসা সম্পর্কে ইসলাম কী বলে?:
👉 প্রশ্ন : বিয়ে সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?:
👉 কেন সবসময় অযু অবস্থাতে থাকা উচিত?:
👉 আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়তম লোক কে?:
পর্বঃ- ৬
আব্দুল্লাহ অনেকটাই পরিবর্তন হতে থাকে
তার বন্ধুরাও কিছু বুঝতে পারে না।
আব্দুল্লাহ ইসলামের অনেক কিছু নিয়ে পড়তে থাকে সে যা জানে না তা জানার চেস্টা করছে আব্দুল্লাহ এখন শুধু চায় ভালো হতে।
আব্দুল্লাহ ইসলামিক অনেক বই পড়তে থাকে।
আব্দুল্লাহ কলেজে গিয়েছে তার বন্ধুরা তাকে দেখে কিছু না বুঝায় হাসান বলে
হাসান– আব্দুল্লাহ কি হয়েছে তোর একটু বলতো?
আব্দুল্লাহ– কই কিছু না তো!
হাসান– তোর আচার-আচরণ কেমন যেনো হয়ে যাচ্ছে আমাদের সাথে এখন আড্ডাও দিয়ে যাস না
!! কিছুতো একটা হয়েছে তোর বল তো একটু আমায়!
আব্দুল্লাহ– আরেহ ভাই কিছুই হয়নাই একজন মানুষকে ফলো করতেছি শুধু!!
হাসান– তা তো জানি তুই অনেককেই ফলো করছ
আব্দুল্লাহ– আগে যাদেরকে ফলো করতাম তাদের আর ফলো করবো না
হাসান– কেনো?
আব্দুল্লাহ– কারণ তাদের জীবনি ভালো না তাদের আচার-আচরণও ভালো না
এখন শুধু আমি একজনকেই ফলো করতেছি
হাসান– কাকে?
আব্দুল্লাহ– আমার এখন শুধু একজনই আইডল সে বিশ্বসেরা। আমি তার জীবনি পড়েছি আমি তাকে এখন খুব ভালোবাসি কারণ তিনিও আমাকে ভালোবেসেছিলেন আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগে!!
হাসান– কি বলিস!! প্রায় ১৫০০ বছর আগের একজন লোককে তুই এখন আইডল হিসেবে গ্রহণ করলি?
আব্দুল্লাহ– হুম
হাসান– তুই তো বিজ্ঞানের যুগের আর সে তো আদি মানুষ যাকে বলে তখন তো ডিজিটাল শব্দই ছিলো না আর তুই কিনা তখনকার একটা লোককে ভালোবাসিস আর তাকে ফলো করিস!!
আব্দুল্লাহ– হুম আমি তার সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি ও পড়েছি।। হুম এটা ঠিক যে তখন বিজ্ঞানের কিছুই ছিলো না আর তখন মানুষগুলোও অন্যরকম ছিলো কিন্তু সে ছিলো একজন মহামানব তিনি যে কাজগুলো করেছেন আর করতে বলেছেন তা আজ বিজ্ঞানে পরিনত হয়েছে!! আর তার জীবনি পড়ে আমি খুব অবাক তাই তো তাকে আমি ফলো করার চেস্টা করছি!!
হাসান– কে সে নাম কি তার?
আব্দুল্লাহ– তার নাম হলো হযরত মুহাম্মাদ (স.)
হাসান– সে তো আমাদের ধর্মের একজন নবী মাত্র
আব্দুল্লাহ– হুম তাই তো তাকে ফলো করি
হাসান– তাকে ফলো করলে তোকে সবাই মোল্লা বলবে উল্টো পাল্টা কথা বলবে!
আব্দুল্লাহ– যে মানুষটা আমার জন্য আজ থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগে কষ্ট করেছেন আমাকে না দেখেই আমায় ভালোবাসেন তিনি আমার জন্য দু’আও করতো, সবসময় শুধু তার এই উম্মতের কথা ভাবতেন।
আমার জন্য তো সে কতো কথাই শুনেছে ও আঘাত সহ্য করেছে। আমি না হয় তার জন্য এইটুকু সহ্য করলাম!!
হাসান– তোর মাথা কি ঠিক আছে?
আব্দুল্লাহ– হুম ঠিক আছে এখন কিন্তু আগে ঠিক ছিলো না।
হাসান– সব হয়েছে ওই বইটার জন্য তাই না!
আব্দুল্লাহ– বইটা তো শুধু পড়েছি আর বাকিটা আল্লহ করেছেন।
হাসান– তুই তো দেখছি এখন……..
আব্দুল্লাহ– তা আমায় তোরা যা-ই বলিস আমি তাকেই ফলো করবো শুধু তাকেই আমার আইডল হিসেবে মানবো!!
হাসান আর কিছু বলে না
হাসান আব্দুল্লাহর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
কলেজ শেষে আব্দুল্লাহ বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ঠিক করে আছরের নামাজ পড়বে তাই সে মাসজিদে যায়।
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহর একজনের সাথে পরিচয় হয়
তার নাম ছিলো “মুসা”
আব্দুল্লাহ তার সাথে পরিচয় হয়ে বাহিরে বের হয় মুসা বলে
মুসা– ভাই আমি ভুল না করলে আপনি তো নামাজ পড়েননা তাই না?
আব্দুল্লাহ– হুম (মাথা নিচু করে)
আব্দুল্লাহ মুসাকে তার পরিবর্তবের কথা বলতে থাকে
মুসাও মনোযোগ সহকারে শুনতে থাকে।
মুসা আব্দুল্লাহর কথা শুনে খুব অবাক হয়
মুসা– আচ্ছা ভাই বুঝলাম একটা কথা বলি?
আব্দুল্লাহ– জ্বি ভাই বলুন!
মুসা– আমরা দু’জন কি বন্ধু হতে পারি? মানে বন্ধু হিসেবে থাকতে পারি? যেহেতু আমরা একই বয়সের!
আব্দুল্লাহ– হুম ভাই
মুসা– ওকে তাহলে আমায় নাম ধরে ডাকতে পারো
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা
মুসা ছিলো মাদ্রাসার ছাত্র।
অনেক আল্লাহ ভিরু ছিলো মুসা।
মুসা আব্দুল্লাহকে ইসলাম সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানায়
আব্দুল্লাহরও শুনতে খুব ভালো লাগছে তাই আব্দুল্লাহও আগ্রহসহকারে শুনছে
মাগরিবের আজান হয়ে যায় তারা নামাজের জন্য মাসজিদে যায়
ফরজ নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ যখন সুন্নাত নামাজ পড়ছিলো তখন মুসা দেখে তার নামাজে অনেক ভুল হচ্ছে তাই মুসা সুন্নাত এর পরে আব্দুল্লাহকে নামাজ শিক্ষা দেয়
আব্দুল্লাহ খুব খুশি হয় মুসার মতো একজন বন্ধু পেয়ে!!
আব্দুল্লাহ– মুসা এটা আমার জীবনের প্রথম মাগরিবের নামাজ।
মুসা– ওও সমস্যা নেই আব্দুল্লাহ এখন থেকে আল্লাহর কাছে ওয়াদা করো যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে
আব্দুল্লাহ– হুম আমি চেস্টা করবো!
মুসা– ইংশা-আল্লহ
এরপর দু’জনে মাসজিদ থেকে বের হয়ে যে যার বাসায় চলে যায়।
আব্দুল্লাহ বাসায় এসে তার মায়ের ঘরে যায়
মুসা বাবা ও মায়ের ব্যপারে অনেক কিছু জানিয়েছে আব্দুল্লাহকে।
তাই আব্দুল্লাহ এখন থেকে বাবা মায়ের সকল কথা শুনবে
আব্দুল্লাহ তার মায়ের ঘরে গিয়ে দেখে তার বাবাও আছে। আব্দুল্লাহ তার মায়ের কাছে গিয়ে মাথা নিচু করে বসে।
মা– কিরে বাবা কি হয়েছে?
আব্দুল্লাহ কোনো কথা বলে না মাথা নিচু করে বসে থাকে।
আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহর বাবাকে বলতে থাকে
মা– ওগো জানো আব্দুল্লাহ আজকে আমার জন্য ফল নিয়ে এসেছে!!
আব্দুল্লাহর বাবা কথাটা শুনে খুব অবাক হয়
বাবা– কি বলো তুমি!
মা– হুম ওইযে দেখো ওইখানে আছে
আব্দুল্লাহর বাবা তাকিয়ে দেখে সত্যি ফল এনেছে আব্দুল্লাহ।
মা– আমার ছেলে এই প্রথম কিছু এনেছে আমার জন্য!!
আব্দুল্লাহর মা কথাটা বলতে বলতে কেঁদে দেয়
আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে বলে
মা– বাবা আজকে আমি অনেক খুশি বাবা (কেঁদে)
আব্দুল্লাহ কোনো কথা বলে না মাথা নিচু করে রাখে
আব্দুল্লাহর মা দেখে আব্দুল্লাহর চোখ থেকে পানি পড়ছে
মা– আব্দুল্লাহ কি হয়েছে তোর বাবা তুই কাঁদছিস কেনো?
ও ভাবছিস যে আমায় মাথায় আঘাত দেওয়ার জন্য আমি তোর ওপর রাগ?
নারে বাবা আমি তোর ওপরে কোনো রাগ না। আমি খুব খুশি এখন তুই আমার জন্য ফল নিয়ে এসেছিস ( কেঁদে কেঁদে)
আব্দুল্লাহ মাথাটা উঠিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে থাকে আর কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে
আব্দুল্লাহ– মা আমায় তুমি মাফ করে দাও আমি ভুল করে এই বাজে কাজটা করে ফেলেছি। মা আমি অজান্তেই এই কাজটা করে ফেলেছি তুমি আমায় মাফ করে দাও গো মা।
আমি আর কোনো দিন তোমার অবাধ্য হবো না। (কেঁদে কেঁদে)
মা– আরেহ পাগল ছেলে আমার আমি তো তোকে অনেক আগেই মাফ করে দিয়েছি। কারণ আমি জানি যে তুই ইচ্ছা করে এই কাজটা করিসনি আর তুই তো এখনো ছোট। যা তোর বাবার কাছে মাফ চা। (কেঁদে কেঁদে)
আব্দুল্লাহ তার বাবার দিকে তাকিয়ে মাথাটা নিচু করে বলতে থাকে
আব্দুল্লাহ– বাবা তুমি আমায় মাফ করে দাও
আমি আর কোনো দিন নেশা করবো না
আমি আর তোমাদেরকে কষ্ট দিবো না
আমি আর তোমাদের অবাধ্য হবো না
আমায় মাফ করে দাও
তোমরা যা বলবে আমি তাই করবো বাবা ( কাদতে কাদতে)
আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে বলে
বাবা– নারে বাবা আমি তোর ওপর রাগ করে নেই বাবা।
সন্তান যতোই কষ্ট দিক তবুও কোনো মা বাবাই তার সন্তানকে দূরে সড়িয়ে দেয় না। ( কাঁদতে কাঁদতে )
আব্দুল্লাহ খুব কান্না করতে থাকে
একেবারে ছোট বাচ্চাদের মতো করে।
আব্দুল্লাহ খুব পরিবর্তন হয়েছে
তার এই পরিবর্তন দেখে তার বাবা ও মা খুব খুশি হয়।
এশা এর আজান হয়ে যায় আব্দুল্লাহ নামাজের জন্য বেড়িয়ে যায়।
মাসজিদে গিয়ে তার মুসার সাথে দেখা হয়।
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ মুসা এর সাথে কথা বলে
বাসায় আসে।
মুসা আব্দুল্লাহ কে অনেক কিছু শিখিয়েছে জানিয়েছে।আব্দুল্লাহও খুব খুশি হয় আর খুশি খুশি শিখতে থাকে।
আব্দুল্লাহ বাসায় এসে তার
বাবা ও মায়ের সাথে কথা বলে
আব্দুল্লাহর মা এখন
বেশ অনেকটাই সুস্থ এখন।
রাতের খাবার শেষে আব্দুল্লাহ তার রুমে যায় গিয়ে শুয়ে শুয়ে মোবাইল টিপছে আর বিভিন্ন ওয়াজ শুনছে
আব্দুল্লাহ খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে।
আব্দুল্লাহও এখন এটাই চায় যে,,,
সে এখন জান্নাতের দিকে যাবে
জীবনে অনেক বেশি পরিমানের গুনাহ করে ফেলেছে তার গুনাহ এর কারণে না জানি কখন আজাব চলে আসে।
আব্দুল্লাহ এলার্ম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে
ফজরের সময় উঠে নামাজের জন্য বের হয়ে যায় আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহর মনে খুব খুশি সে এই প্রথম ফজরের নামাজ পড়ছে।
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ ও মুসা হাটছে আর গল্প করছে
মুসা ইসলামের বিভিন্ন দিক আব্দুল্লাহকে বলতে থাকে
আব্দুল্লাহও খুব খুশি ভাবে শুনতে থাকে
আব্দুল্লাহ যা জানে না সে তা মুসাকে জিজ্ঞেস করে
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা ভাই মুসা একটা প্রশ্ন ছিলো!!
মুসা– হুম ভাই করো কি প্রশ্ন?
আব্দুল্লাহ– আমি তো জীবনে অনেক গুনাহ করেছি,, কতো হারাম খেয়েছি,,
কতো যিনার কাজ করেছি
কতো নামাজ মিছ করেছি
আল্লাহ তায়ালার কতো নাফরমানি করেছি আমি
আমার মতো হয়তো আর কেও গুনাহ করে নি
আল্লহ কি আমার এতো গুনাহ মাফ করবেন??
মুসা– হুম ভাই করবে!! আল্লহ যদি গুনাহ মাফ না করেন তাহলে আর কে করবে?
আল্লহ তা’য়ালা নিজেই বলেন, নিশ্চয় তিনি আল্লহ, ক্ষমাশীল, পরম ক্ষমাপরায়ণ। নিশ্চয়ই আল্লহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। (সূরা: হজ্জ, আয়াত: ৬০)
তুমি শুধু আন্তরিক ভাবে আল্লহ তা’য়ালার কাছে তওবা করো
তওবা করলে আল্লহ অনেক খুশি হয়
তওবার ফলে তিনি এত খুশি হন যে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে নবী সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক মুসাফির তার উটসহ সফরে এক মারাত্মক মরুভূমিতে বিশ্রামের জন্য এক গাছের ছায়ায় মাথা রেখে শোয়ামাত্রই ঘুমিয়ে পড়ল। এর মধ্যেই তার উট গায়েব হয়ে যায়। সে এদিক-সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করল; কিন্তু সে বৃথায় হয়রান হল। ক্ষুধা ও পিপাসায় বেশি কাতর হয়ে পড়ল।
তারপর ফিরে সে গাছের নিকট এসে শোয়ামাত্র চোখ লেগে গেল। কিছু পড়ে চোখ খুলতেই দেখতে পেল তার সেই উট খাদ্য ও পানিসহ দাঁড়িয়ে আছে। তা দেখে সে এত খুশি হল যে, উটের লাগাম ধরে খুশির উচ্ছ্বাসে বলে উঠল, ‘আল্লাহ তুমি আমার বান্দা আমি তোমার রব।’
নবী সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তওবা করলে আল্লহ হারিয়ে যাওয়া উটওয়ালা অপেক্ষা অধিক খুশি হন। (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লহ তার বান্দাদের প্রতি বড়ই ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তিনি চান বান্দা তওবা করুক। এজন্যই দিনে রাতে হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
তাই তওবা করো আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– হুম আল্লহ কতো বড় ক্ষমাশীল কতো ভালোবাসেন আমাদেরকে কিন্তু তবুও আমরা বুঝতে পারি না
মুসা– হুম
👉 মৃতরা কীভাবে বুঝতে পারে যে তারা মারা গেছে?:
👉 প্রশ্ন: অভিশাপ দিলে কি লাগে? কাউকে অভিশাপ দিলে কি গুনাহ বা পাপ হয়?:
👉 ইসলামিক দৃষ্টিতে বাংলাদেশে বিবাহের দেনমোহর সর্বনিম্ন কত টাকা ধার্য করা হয়েছে?:
👉 তালাক আল-কোরান ও রাসূল সাঃ সহীহ্ হাদিস থেকে তালাক কি ভাবে দিতে হয় !:
পর্বঃ- ৭
তাই তওবা করো আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– হুম আল্লহ কতো বড় ক্ষমাশীল কতো ভালোবাসেন আমাদেরকে কিন্তু তবুও আমরা বুঝতে পারি না
মুসা– হুম
আব্দুল্লাহ ও মুসা হাটছে আর কথা বলছে
ফজরের পরে যে কিরকম পরিবেশ থাকে তা শুধু যারা ফজরের নামাজ পড়ে তারাই বুঝতে ও উপভোগ করতে পারে।
আব্দুল্লাহ বাসায় চলে আসে
বাসায় এসে দেখে তার আম্মু নাস্তা বানাচ্ছে
আব্দুল্লাহ ঘরে চলে যায়
ঘরে গিয়ে আব্দুল্লাহ বই পড়তে শুরু করে।
বই পড়তে পড়তে কখন যেনো ঘুম চলে আসে আব্দুল্লাহর আর সে বই খোলা রেখেই ঘুমিয়ে পড়ে
আব্দুল্লাহ এখন অনেক বেশি চেঞ্জ হয়ে গেছে
এটা দেখে তার মা বাবা অনেক খুশি হয়
আব্দুল্লাহ কলেজে যায়
কিন্তু তার সাথে তেমন একটা কেও মেশে না
আব্দুল্লাহ কলেজ থেকে এসে মুসাকে নিয়ে কিছু কেনাকাটা করতে চলে যায়
আব্দুল্লাহ
পাঞ্জাবি,পায়জামা,টুপি,আতর সহ আরো অনেক কিছু কিনে নিয়ে আসে।
আব্দুল্লাহ খুব খুশি হয়।
আব্দুল্লাহ আগে এইগুলো ব্যবহার করতো না
কিন্তু এখন থেকে কেনো জানি তার এইগুলোই ভালো লাগছে!!
আব্দুল্লাহ ও মুসা আসছিলো তখন আব্দুল্লাহর চোখ গিয়ে পড়ে রাস্তার ওপাশে
সে দেখে রুমি তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে
আব্দুল্লাহ তার দিক থেকে চোখ সড়িয়ে নিয়ে আবার হাটতে শুরু করে
একটু দূরে যাওয়ার পরেই দেখে যে রুমি তার সামনে চলে আসছে
কিন্তু আব্দুল্লাহ মুসা কে নিয়ে অন্যদিকে চলে যায়
মুসা ব্যাপারটা খেয়াল করে।
রুমি আর আব্দুল্লাহর পিছনে যায় না
কারণ তার সাথে মুসা ছিলো
রুমি আগে মুসাকে দেখেনি।
মুসা– আব্দুল্লাহ তুমি কি তাকে চিনো?
আব্দুল্লাহ– হুম
মুসা– ওওও
আব্দুল্লাহ– আসলে ওই মেয়েটার নাম রুমি আর সে আমার সাথেই কলেজে পড়ে।
সে আমায় ভালোবাসে কিন্তু আমি না।।
আর তোমায় তো বলেছিলাম।
মুসা– ওও হুম
আব্দুল্লাহ– হুম
মুসা– আচ্ছা চোখের যিনা সম্পর্কে কিছু বলি?
আব্দুল্লাহ– হুম হুম বলো!
মুসা– আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,,,,
قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِہِمۡ وَ یَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَہُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَزۡکٰی لَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ ﴿۳۰﴾
“মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত”।
[সুরা নূর আয়াত: ৩০]
আর বেগানা নারীর দিকে তাকানো যিনা হয়
আব্দুল্লাহ– ওও যদি ভুলবশত চোখ পড়ে যায়
যেমন হাটতেছি তখন?
মুসা– হাদিসে এসেছে রাসুল (স.) হযরত আলী (র.) কে উদ্দেশ্য করে বলছেন,,,,,,
‘‘হে ‘আলী! বার বার দৃষ্টি ক্ষেপণ করো না। কারণ, হঠাৎ দৃষ্টিতে তোমার কোন দোষ নেই। তবে ইচ্ছাকৃত দ্বিতীয় দৃষ্টি অবশ্যই দোষের’’।
(আবূ দাউদ ২১৪৯; তিরমিযী ২৭৭৭; আহমাদ : ৫/৩৫১, ৩৫৩, ৩৫৭; হা’কিম : ২/১৯৪ বায়হাক্বী : ৭/৯০)
শুধু চোখের যিনা ছাড়াও অন্যান্য অঙ্গেরও গুনাহ রয়েছে।
যেমন হাদিসে রাসুল (স.) এরশাদ করেছেন,
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলা প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্য যিনার কিছু অংশ বরাদ্দ করে রেখেছেন। যা সে অবশ্যই করবে। চোখের যিনা হচ্ছে অবৈধভাবে কারোর দিকে দৃষ্টি ক্ষেপণ, মুখের যিনা হচ্ছে অশ্লীল কথোপকথন, হাতও ব্যভিচার করে; তবে তার ব্যভিচার হচ্ছে অবৈধভাবে কাউকে হাত দিয়ে ধরা, পাও ব্যভিচার করে; তবে তার ব্যভিচার হচ্ছে কোন ব্যভিচার সংঘটনের জন্য রওয়ানা করা, মুখও ব্যভিচার করে; তবে তার ব্যভিচার হচ্ছে অবৈধভাবে কাউকে চুমু দেয়া, কানের ব্যভিচার হচ্ছে অশ্লীল কথা শ্রবণ করা, মনও ব্যভিচারের কামনা-বাসনা করে। আর তখনই লজ্জাস্থান তা বাস্তবায়িত করে অথবা করে না’’।
(আবূ দাউদ ২১৫২, ২১৫৩, ২১৫৪)
আব্দুল্লাহ– হুম ভাই মুসা বুঝেছি এবার।
মুসা– আল’হামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহ– এতো দিন কতো যিনা করে ফেলেছি!!
মুসা– আদম সন্তান তো গুনাহ করবেই এটাই স্বাভাবিক কিন্তু যারা তওবা করে তারাই সফলকাম।
আব্দুল্লাহ– হুম
আব্দুল্লাহ বাসায় চলে আসে
মুসাও তার বাসায় চলে যায়
আব্দুল্লাহ তার মার্কেটগুলো তার মা ও বাবাকে দেখায় এমন ভাবে আব্দুল্লাহকে দেখাচ্ছিলো যে সে যেনো এখনো ৯ বছরের শিশু।
আব্দুল্লাহর মা দেখে খুব খুশি হয়
আব্দুল্লাহও অনেক খুশি।
দিনটি পার হয়ে যায়
আব্দুল্লাহ কলেজের জন্য তৈরি হচ্ছে
কিন্তু এ কি!??
আজকে আব্দুল্লাহ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পাঞ্জাবি ও টুপি পরে কলেজে যাবে!!
তাই আব্দুল্লাহ তৈরি হচ্ছে
তৈরি হয়ে আব্দুল্লাহ তার ঘর থেকে বের হয়
আব্দুল্লাহর মা বাবা দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আব্দুল্লাহর দিকে
আব্দুল্লাহ তাদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দেয়
আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে তার কপালে একটা চুমু দেয়।
আব্দুল্লাহও তার মায়ের কপালে চুমু দেয়।
আব্দুল্লাহ বের হয়ে যায় কলেজে যাওয়ার জন্য
আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহর বাবাকে বলতে থাকে
যে ছেলেটা কিনা কিছুদিন আগেও তার মা বাবার গায়ে হাত তুলতো
সেই ছেলেই আজকে তার কপালে চুমু দেয়
আব্দুল্লাহ অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছে।
আব্দুল্লাহ কলেজের গেটে যায়
আব্দুল্লাহ একটু নারভাস
আব্দুল্লাহ আজ প্রথম এই
পোশাক পড়ে কলেজে যাচ্ছে
আব্দুল্লাহ বাইক নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে
আব্দুল্লাহর দিলটা কেমন
জানি একপ্রকার ভাবে লাফাচ্ছে
আব্দুল্লাহর চেহারাটাও যেনো কেমন হয়ে গেছে।
আব্দুল্লাহ কলেজের ভিতরে বাইক নিয়ে যাচ্ছে
কলেজের মাঠটা তার
দেওয়া আতরে যেনো ভরে গেছে
আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকে
সেখানে থাকা সবাই
সবাই শুধু চেয়ে চেয়ে আব্দুল্লাহকে দেখছে
কেউই যেনো চোখের পলক ফেলাচ্ছে না
শুধু একনজরে আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে আছে।
সবাই শুধু একটা জিনিস-ই ভাবতে থাকে যে,,,
এটা কি আসলেই আব্দুল্লাহ?
রুমি আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে আছে
রুমি পুরো অবাক হয়ে যায়
রুমি আব্দুল্লাহর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে
আব্দুল্লাহ তার বাইক রেখে চোখ নিচের দিকে দিয়ে ক্লাস রুমে প্রবেশ করে
ক্লাসে থাকা সবাই আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকে
আব্দুল্লাহ তার ছিটে গিয়ে বসে
পুরো ক্লাস রুমটা আব্দুল্লাহর মাখা
আতরের ঘ্রাণে ভরে গেছে
আব্দুল্লাহ বসে থাকে
মাথা নিচু করে
রুমি আব্দুল্লাহর সামনে এসে বসে
রুমি তাকিয়ে শুধু দেখতেই থাকে আব্দুল্লাহকে
আব্দুল্লাহ মাথাটা নিচু করে বসে থাকে
আব্দুল্লাহর বন্ধুরা তাকিয়ে থাকে আব্দুল্লাহর দিকে
হাসান আব্দুল্লাহর কাছে এসে বসে
হাসান– এটা কে রে ভাই?
আব্দুল্লাহ হাসান এর দিকে তাকায়
হাসান– এটা কি আব্দুল্লাহ নাকি?
আব্দুল্লাহ– হুম আমিই আব্দুল্লাহ
হাসান– কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
আব্দুল্লাহ– কেনো অসম্ভবের কি আছে?
হাসান– তুই হুজুর হলি কিভাবে?
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ
হাসান– কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
আব্দুল্লাহ– কেনো যখন একটা ছেলে খারাপ হয় খারাপ ভাবে চলাফেরা করে তখন তো তাকে গিয়ে কেও জিজ্ঞাসা করে না যে “এটা কিভাবে সম্ভব”?
তাহলে যদি ভালো হয় তখন কেনো এটা বলে?
হাসান কিছুই বলতে পারে না
শুধু আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকে
পাশে আব্দুল্লাহর বাকি বন্ধুরাও দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো শুনে।
কেও কোনো কথা বলছে না
রুমিও তাকিয়ে আছে আব্দুল্লাহর চেহারার দিকে
ক্লাসে স্যার চলে আসে
যে যার জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে।
স্যার জিজ্ঞাসা করে,,,,,, কি ব্যাপার আজকে ক্লাসরুমে কেমন যেনো একটা অন্যরকম ঘ্রাণ আসছে?
একজন দাঁড়িয়ে বলে,,
স্যার আমাদের আব্দুল্লাহর শরীর থেকে এই ঘ্রাণটা আসছে!!
স্যার অবাক হয়ে যায়
আর আব্দুল্লাহর দিকে তাকায়
আব্দুল্লাহ স্যারের দিকে তাকিয়ে আবার নিচে তাকায়
স্যার আব্দুল্লাহর পোশাক দেখে অবাক হয়ে যায়।
স্যার তাকিয়ে আছে আব্দুল্লাহর দিকে।
আব্দুল্লাহ তোমার এতো পরিবর্তন?,, স্যার বলে
আব্দুল্লাহ– স্যার কোথায় পরিবর্তন
স্যার– না মানে এই পোশাক যে?
আব্দুল্লাহ– স্যার এই পোশাক পড়া তো নিষেধ নয় (একটা হাসি দিয়ে)
স্যার– তা তো নয়।
ক্লাস শুরু হয়ে যায়
সবাই ক্লাস করছে
কিন্তু মাঝে মাঝে রুমি আব্দুল্লাহর দিকে তাকায়।।
আব্দুল্লাহ বিষয়টা লক্ষ করে কিন্তু সে রুমির দিকে তাকায় না।।
বিরতি টাইম হয়ে যায়!!
আব্দুল্লাহ তার জায়গায়ই বসে থাকে
আব্দুল্লাহ হালকা কিছু খেতে থাকে আর একটা বই পড়তে থাকে।
ক্লাসে তখন শুধু আব্দুল্লাহ একা ছিলো
এমন সময়ই রুমি ক্লাসে প্রবেশ করে
আব্দুল্লাহর সামনের বেঞ্চে এসে বসে পড়ে
রুমি আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে আছে
আব্দুল্লাহ মাথা নিচু করে বই পড়ছে
আব্দুল্লাহর খাবার থেকে রুমি খেতে শুরু করে
যাতে আব্দুল্লাহ কিছু বলে
কিন্তু আব্দুল্লাহ কিছু বলেনা
আর রুমির দিকে তাকায়ও না
আব্দুল্লাহ তার মতো করে বই পড়ছে
রুমি আব্দুল্লাহকে বলে
আব্দুল্লাহ প্লিজ আমায় মাফ করে দাও আসলে সেদিন এর জন্য আমি খুবই দুঃখিত!!
আব্দুল্লাহ কোনো কথা বলে না
রুমি আবার বলে কিন্তু আব্দুল্লাহ কোনো জবাব দেয় না তার কথায়।
তাই রুমি আব্দুল্লাহর বইটা বন্ধ করে দেয়
আর বলে
প্লিজ আব্দুল্লাহ প্লিজ মাফ করে দাও আমায়!!
আব্দুল্লাহ– হুম করেছি প্লিজ আমাকে আর দয়া করে বিরক্ত করবেন না!
রুমি– সত্যি মাফ করেছো?
আব্দুল্লাহ– হুম
রুমি তার বইটা দিয়ে দেয়
আর সেখান থেকে চলে যায়।
কলেজ ছুটি হলে আব্দুল্লাহ তার
বন্ধুদের সাথে কথা বলে নাহ।
আব্দুল্লাহ তার বাইক নিয়ে বাসায় চলে আসে।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে
আছরের নামাজের জন্য চলে যায়।
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ
মুসাকে সকল ঘটনা বলতে থাকে।
👉 অল্প বয়সে বিয়ে করার উপকারিতা:
👉 প্রশ্ন: খারাপ স্বপ্ন দেখলে কী করণীয়?:
👉 নারী ও পুরুষের সালাতে কি পার্থক্য আছে? কাযা সালাত পড়া সম্পর্কে বিস্তারিত?:
👉 যারা জর্দা, গুল, সিগারেট সহ বিভিন্ন মাদক সেবন করে, তারা কি জাহান্নামি?:
👉 প্রশ্নঃ সালাতে ইমাম ভুল করলে করনীয় কী?:
পর্বঃ- ৮
কলেজ ছুটি হলে আব্দুল্লাহ তার
বন্ধুদের সাথে কথা বলে নাহ।
আব্দুল্লাহ তার বাইক নিয়ে বাসায় চলে আসে।
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে
আছরের নামাজের জন্য চলে যায়।
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ
মুসাকে সকল ঘটনা বলতে থাকে।
মুসা আব্দুল্লাহর কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে
আব্দুল্লাহর কথা বলা শেষ হকে মুসা বলে
মুসা– আব্দুল্লাহ ভাই তোমার ওই উক্তিটা খুব সুন্দর হয়েছে।
আর এখন যেহেতু তুমি দ্বীনের ভিতরে আসতে আসতে প্রবেশ করছো সেহেতু দেখবে যে অনেক কিছুই শুনতে হবে তোমার
কিন্তু এতে করে মন খারাপ করবে না
আব্দুল্লাহ– হুম
মুসা– আব্দুল্লাহ দেখবে যে এখন রুমি আপু আর তোমায় ভালোবাসবে না!
আব্দুল্লাহ– কেনো?
মুসা– হুম কারন তুমি যে এখন দ্বীনের পথে চলছো তাই
আব্দুল্লাহ– হুম আর এটাই ভালো ভাই
মুসা– হুম,,,,,,,,,,,, আচ্ছা আব্দুল্লাহ তোমার বন্ধুরা তো খুব অবাক হয়েছে তাই না?
আব্দুল্লাহ– হুম অনেক অবাক হয়েছে!!
মুসা– হুম।
আব্দুল্লাহ মুসার মতো এইরকম
একজন বন্ধু পেয়ে খুব খুশি হয়
মাগরিবের নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ তার বাসায় আসে
কিছুক্ষণ পরে হাসান ফোন করে
হাসান– হ্যালো আব্দুল্লাহ?
আব্দুল্লাহ– হুম বল
হাসান– বাহিরে আয় তোর বাসার নিচে আছি আমরা
আব্দুল্লাহ– কেনো?
হাসান– আয় অনেক দিন ধরে আড্ডা হয় না তাই আয়
আব্দুল্লাহ– নাহ রে ভাই তোরা যা আমি আর এই কাজগুলো জরাতে চাই না!!
হাসান– এখন দেখি হুজুর হইয়া গেছোছ,,,,, নিচে আস তুই এখনি!!
আব্দুল্লাহ– না
আব্দুল্লাহ আসতে চায় না কিন্তু অনেক জোর করায় আব্দুল্লাহ আসে
আব্দুল্লাহ পাঞ্জাবি ও মাথায় টুপি দিয়েই বের হয়
হাসান এর বাইকে উঠে আব্দুল্লাহ
তারা তাদের সেই আড্ডার স্থলে চলে যায়
আব্দুল্লাহ বসে আসে
হাসান একটা সিগারেট দিলো আব্দুল্লাহর হাতে বললো যে “নে খা”
আব্দুল্লাহ তার হাত সরিয়ে দেয়
সে নিতে চায় না
হাসান– দেখ ভাই সিগারেট টা খেতে থাক নে ধর
আব্দুল্লাহ– প্লিজ ভাই দয়া করে এইগুলো আর দিস না আমায় প্লিজ
সাকিব– ভাই এখন হুজুর হয়ে গেছে তাই আর এইগুলো খাবে না এখন!
আব্দুল্লাহর কথাটা শুনে খুব খারাপ লাগে।
হাসান– দেখ ভাই সিগারেটটা নে নিয়ে খেতে থাক
আব্দুল্লাহ– খাবো না বলেছি তো আমি!!
হাসান– এখন ওই মুসা না কি জানি নাম তাকে পেয়ে আমাদেরকে ভুলে গেছিছ?
আব্দুল্লাহ– ভুলিনি তোদেরকে
হাসান– হুম তা তো দেখছিই প্রায়ই ওই মুসার সাথে কথা বলতে দেখি
আব্দুল্লাহ– মুসা হলো আমাদের দ্বীনি বন্ধু ও ভাই
হাসান– হুম বুজেছি যা যা গিয়ে ওই হুজুর মুসার সাথেই থাক গিয়ে যা
আব্দুল্লাহর খুব খারাপ লাগে হাসানের এই কথাটা
আব্দুল্লাহ– হুম মুসা আমায় ঠিকই বলেছিলো
হাসান– কি বলেছে?
আব্দুল্লাহ–
اَلۡاَخِلَّآءُ یَوۡمَئِذٍۭ بَعۡضُہُمۡ لِبَعۡضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الۡمُتَّقِیۡنَ ﴿ؕ٪۶۷﴾
“সেদিন বন্ধুরা একে অন্যের শত্রু হবে, মুত্তাকীরা ছাড়া।”
[ ৪৩ তম সূরা
সূরা আয-যুখরুফ
আয়াত ৬৭]
হাসান– হুম খুব বড় হুজুর হয়ে গেছিছ
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ
এরপর আব্দুল্লাহ সেখান থেকে চলে আসে
আব্দুল্লাহ বাসার দিকে হাটতে থাকে।
আব্দুল্লাহ যেখানে আড্ডা দিতো সেখান থেকে তার বাসা অনেকটাই দূরে হেটে আসলে প্রায় ৩০ মিনিট লাগবে!!
আব্দুল্লাহ ঘর থেকে বের হবার সময় তার মানিব্যাগ টাও ভুলে রেখে এসেছে
আব্দুল্লাহর কাছে এখন কোনো টাকা নেই
তাই সে রিকশা নিতে পারছে না।
আব্দুল্লাহ মাথা নিচের দিকে দিয়ে
হাটছে আর আব্দুল্লাহর চোখ দিয়ে পানি পরছে
কিছুক্ষন পর পর আব্দুল্লাহ তার হাত দিয়ে শুধু চোখের পানি পরিষ্কার করছে
আব্দুল্লাহ ভাবতে থাকে
কি বন্ধু বানিয়েছি আমি
আজকে তাদের আসল
চেহারাটা দেখতে পারলাম
আমি হুজুর হচ্ছি বলে কিনা
তারা আমায় ছেরে দিলো?
আব্দুল্লাহ হাটতে থাকে
আর পুরানো কথাগুলো ভাবতে থাকে।
বাসায় এসে আব্দুল্লাহ তার ঘরে গিয়ে বসে
এশার আজান হলে নামাজের জন্য বেরিয়ে যায়।
নামাজ শেষে বাসায় চলে আসে।।
আব্দুল্লাহ এখন কলেজে গেলেও তার সাথে তার কোনো বন্ধু বসে না
কেমন জানি একা একাই চলতে হচ্ছে আব্দুল্লাহর।
এভাবে বেশ অনেক দিন কেটে যায়
আব্দুল্লাহ আগের থেকে আরো বেশি ইলম (জ্ঞান) অর্জন করেছে।
আব্দুল্লাহ প্রায়ই তার মা বাবাকে
ইসলামিক অনেক কিছু বলে।
তার মা বাবাও শুনতে থাকে
ছেলের এতো পরিবর্তন দেখে
আব্দুল্লাহর মা বাবা খুব অবাক হয়
কিন্তু মাঝে মাঝে ভালো লাগে না
“একজন ছেলে বা মেয়ে যখন দ্বীনের পথে প্রবেশ করতে থাকে তখন তার সবচেয়ে বড় বাধা হলো তার পরিবার।”
” পরিবারের পরে সমাজের লোক, বন্ধুবান্ধব, আত্তিওসজন বাধা হয়ে দাড়াঁয়”
আব্দুল্লাহকে প্রায় সময়ই বলতো
“কিরে? কি করছোছ যে এখন হুজুর হয়ে গেলি?”
“কিরে জেলে গিয়েছিলি নাকি?”
“কিরে কার সাথে কি করছোছ?”
“কিরে এখন হুজুর সাজোস?”
“এতো দিন খারাপ কাজ করে এখন হুজুর হইয়া গেছো না?”
আব্দুল্লাহকে এসকল কথা বলতো
কিন্তু আব্দুল্লাহ এতে করে মনে কষ্ট নিতো না
শুধু একটা কথাই ভাবতো যে
“তারা না বুঝেই এই সকল কথা বলছে”
শুধু যে ছেলেদের সাথেই এইটা হয় তা নয়
যখন একজন মেয়ে দ্বীনের পথে প্রবেশ করতে থাকে
যখন বোরখায় নিজের শরীরকে ঢেকে দেয়
তখন কিছু ফাজিল ব্যক্তিরা বলে যে
“কিরে বুড়ি হয়ে গেলি?”
“কিরে কার সাথে কি করছোছ”?
“কিরে বুড়িদের মতো এটা কি পড়েছিস?”
“বুঝি বুঝি সবই বুঝি ঢং”
ইত্যাদি ইত্যাদি
আব্দুল্লাহ এখন কলেজে গেলেও রুমি তার সাথে কথা বলে না
কিন্তু রুমি লুকিয়ে লুকিয়ে তাকায় আব্দুল্লাহর দিকে!!
আব্দুল্লাহ তার কাজের জন্য বাসে উঠেছে
ইন্টারভিউ দিয়েছিলো যেখানে সেখানে যাচ্ছে
আব্দুল্লাহর চাকরিটা হয়ে গিয়েছিলো
কিন্তু আব্দুল্লাহর এই পোষাক ও দাড়ি দেখে তারা আর চাকরিটা দেয় না তাকে
সেখান থেকে আসার সময় আব্দুল্লাহ বাসে আছে
আর তার হাতে বেশ কিছু বই
বই মনে মনে ভাবছে যে যদি এখন সেই হুজুরটার সাথে দেখা হয়ে যেতে
আব্দুল্লাহ শুধু হুজুরের সাথে দেখা জেনো হয় তাই সে তার বাইকে আসে না
আব্দুল্লাহ বাসে বসে আছে
আর একটু পর পর এদিক ওদিক তাকাচ্ছে
তার এই তাকানি দেখে বাসের কন্টাক্টর তাকে জিজ্ঞাসা করে সে এমন কেনো করছে?
আব্দুল্লাহ– ভাই আমি একজন হুজুরকে খুজছি
কন্টাক্টর– হুজুর??
আব্দুল্লাহ– হুম ভাই সে হয়তো এই পথ দিয়েই যাওয়া আসা করে
কন্টাক্টর– ওও এমন একজন হুজুর আছে সে প্রায়ই দেখি জায় আসে,,, এই বাসেও যায় যদি বাস পায় তাহলে
আব্দুল্লাহ– ওওহ,,,,সে কখন যায়?
কন্টাক্টর– এইতো সামনের স্টেশন মেনে যান দেখেন পান কিনা
আব্দুল্লাহ– ওকে ভাই
আব্দুল্লাহ দাঁড়িয়ে সেই হুজুরকে খুজছে
এদিক সেদিক যাচ্ছে আর খুজছে
প্রায় ২০ মিনিট চলে যায়।
আব্দুল্লাহ দাঁড়িয়ে আছে
হঠাৎ দেখে তার ডানদিক থেকে একটা হুজুর করে লোক আসছে,,,,মাথাটা নিচের দিকে দিয়ে হাটছে
আব্দুল্লাহ তার দিকে তাকিয়ে থাকে
হুজুরটা কাছে এলে আব্দুল্লাহ দেখে চিনতে পারে
আব্দুল্লাহ– আসসালামু আলাইকুম
হুজুর– ওয়া আলাইকুমুসালাম ওয়া রহমাতুল্লহ
আব্দুল্লাহ– ভালো আছে হুজুর?
হুজুর– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনি কেমন আছেন হযরত?
হুজুরটা আব্দুল্লাহকে হযরত ডাকায় আব্দুল্লাহ অবাক হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি,,,,আপনি কি আমায় চিনতে পেরেছেন?
হুজুর– হুম কিছুটা হয়তো
আব্দুল্লাহ– ওওও হুজুর আমি……….
👉 জুমার দিনের যে আমল খুলে দিতে পারে সৌভাগ্যের সোপান:
👉 নিশ্চিত দোয়া কবুলের সেরা ১০টি সময়ঃ-
👉 আল্লাহর নাজাত লাভের উপায়:
👉 সকাল-সন্ধ্যায় এই ২ টি ছোট দোয়ার অকল্পনীয় ফজিলত:
👉 বিপদের সময় রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যে ৩টি দোয়া পাঠ করতেন:
পর্বঃ- ৯
হুজুর– আল’হামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনি কেমন আছেন হযরত?
হুজুরটা আব্দুল্লাহকে হযরত ডাকায় আব্দুল্লাহ অবাক হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ– আল’হামদুলিল্লাহ ভালো আছি,,,,আপনি কি আমায় চিনতে পেরেছেন?
হুজুর– হুম কিছুটা হয়তো
আব্দুল্লাহ– ওওও হুজুর আমি আব্দুল্লাহ ওইযে সেদিন বাসের ভিতরে আমায় একটা বই দিয়েছিলেন? মনে পড়েছে?
আব্দুল্লাহ বইটা দেখায়
হুজুর– হুম মনে পড়েছে মনে পড়েছে
আব্দুল্লাহ– হুম হুজুর আমিই আব্দুল্লাহ
হুজুর– মাশা আল্লাহ আপনার এই পোশাক দেখে খুব ভালো লাগছে
আব্দুল্লাহ– হুজুর এই বইটা আমার জীবনের মোড় পালটে দিয়েছে
নিয়ে গিয়েছে আমায় আমার রবের কাছে
কি বলে যে আমি আপনায় ধন্যবাদ দিবো!!
হুজুর– না নাহ ভাই কি বলেন ধন্যবাদ এর কি আছে?
আমিও তো মুসলিম আর আপনিও মুসলিম
তাহলে একজন মুসলিম কিভাবে অপর মুসলিমকে জাহান্নামের দিকে যেতে দেখেও বারণ না করে পারে?
আব্দুল্লাহ– হুম হুজুর কিন্তু…
হুজুর– ভাই যদি ধন্যবাদ দেওয়াই প্রয়োজন হয় তাহলে শুধু আমার জন্য দোয়া করবেন। যেনো আল্লাহ আমাকে মাফ করে দেন আর জান্নাতুল ফেরদৌসের দান করেন।
আব্দুল্লাহ– আমিন
হুজুর– তাছাড়া কাওকে ধন্যবাদ না বলে দোয়া করবেন হাদিসেও এইরকমই বলা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ– কিভাবে দোয়া করবো?
হুজুর–হাদিসে এসেছে,,
যদি কারো উপকার করে এবং এর জন্য সে যদি তাকে “জাযাকাল্লহু খইরন ( ﺟَﺰَﺍﻙَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺧَﻴﺮً ) বলে তাহলে সে যেনো তাঁর প্রতি সর্বোচ্চ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলো।
[তিরমিযী ২০৩৫]
পুরুষদের ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য বলা “জাযাকাল্লহু খইরন ( ﺟَﺰَﺍﻙَ ﺍﻟﻠﻪُ ﺧَﻴﺮً )”
এবং মহিলাদের জন্য বলা “জাযাকিল্লাহু খইরন ( ﺟَﺰَﺍﻙِ ﺍﻟﻠﻪُ ﺧَﻴﺮًﺍ )”।
যারা “জাযাকাল্লহু খইরন” বলে তাদের প্রতি সর্বোত্তম জবাব কোনটি?
যখন উছাইদ ইবনে হাদাইর রদিয়াল্লহু আনহু রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেনঃ
“হে আল্লাহর রসূল, জাযাকাল্লহু খইরন!”
তখন রসূল সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ
“ওয়া আংতুম ফা-জাযাকুমুল্লহু খইরন ( ﻭَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﻓَﺠَﺰَﺍﻛُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮًﺍ)”
অর্থঃ তোমাকেও আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিন
(শাইখ আলবানী আল-সহীহার ৩০৯৬ নং হাদিসে একে সহীহ বলেছেন, আল- তা’লিকাতুল হিসান আল সহীহ ইবনে হিব্বান ৬২৩১)।
সঠীক উত্তর হলোঃ “ওয়া আনতুম ফা-জাযাকুমুল্লহু খইরন ( ﻭَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﻓَﺠَﺰَﺍﻛُﻢُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺧَﻴْﺮًﺍ)”।
সতর্ককতা-
আমরা কখনো শুধুমাত্র ‘জাযাকাল্লহু’ বলবো না। বরং ‘জাযাকাল্লহু খইরন’ বলবো। কারণ ‘জাযাকাল্লহু’ দ্বারা প্রতিদান ভালোও হতে পারে আবার মন্দও হতে পারে। তাই ‘জাযাকাল্লহু খইরন’ বলবো।
যখন কেউ জাযাকাল্লহু খইরন
[বুখারী,হাঃ ৩৩৬; তিরমিযী,হাঃ২০৩৫] – বলে এর জবাবেঃ ‘ওয়া আংতুম ফা জাযাকুম-আল্লহু খইরন ‘ (এবং আল্লাহ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দিন)
[সহীহ ইবনে হিব্বান,হাঃ ৬২৩১;সহীহ তাহক্বীক আলবানী] বলতে হয়।
আব্দুল্লাহ– ওওও বুঝতে পারলাম হুজুর
হুজুর– আলহামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহ– জাযাকাল্লহু খইরন
হুজুর– ওয়া আংতুম ফা জাযাকুমুল্লহু খইরন
আব্দুল্লাহ– হুজুর আপনার জন্য কিছু হাদিয়া এনেছি আমি।
হুজুর– কিসের হাদিয়া?
আব্দুল্লাহ– প্লিজ হুজুর মানা করবেন না কিছু বই
হুজুর– না না ভাই কি বলেন হাদিয়া কিসের আবার?
আব্দুল্লাহ– প্লিজ হুজুর প্লিজ দয়া করে হাদিয়াটা গ্রহন করুন প্লিজ।
হুজুর– কিন্তু
আব্দুল্লাহ– প্লিজ
আব্দুল্লাহর অনেক জোরা জোরিতে হুজুর বই গুলো নেয়।
আব্দুল্লাহ ও হুজুর অনেক কথা বলে
এবং আব্দুল্লাহ হুজুর এর নাম্বারও নিয়ে আসে।
আব্দুল্লাহ বাসায় ফিরে আসে
খুব খুশি আব্দুল্লাহ
বিকেলে মুসার সাথে কথা বলে তাকে
জানায় আব্দুল্লাহ, মুসাও খুব খুশি হয়
আব্দুল্লাহ রাতে খাবার খাচ্ছে
তখন তার মা তাকে বলে যে
মা– হে গো আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল্লাহকে বলো
বাবা– না তুমি বলো
মা– আরেহ তুমি ওর বাবা তুমি বলো
আব্দুল্লাহ– কি হয়েছে মা বাবা?
মা– তোর বাবার কাছ থেকে শুন
আব্দুল্লাহ– কি হয়েছে বাবা?
বাবা– তোমার মায়ের কাছ থেকে শুনো
মা– আরেহ তুমি বলো
বাবা– নাহ তুমি বলে ফেলো
আব্দুল্লাহ– উফফ কি হয়েছে,,, মা তুমিই বলো তো
বাবা– হুম এইতো এবার ঠিক আছে বলো বলো
মা– নাহ মানে বাবা আব্দুল্লাহ তোর জন্য মেয়ে দেখতে চাচ্ছি
আব্দুল্লাহ– মেয়ে দেখে কি করবে?
মা– তোকে বিয়ে দিবো
আব্দুল্লাহর মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে
আব্দুল্লাহ আমতা আমতা করছে
মা– কিরে বাবা তোর আবার কি হলো?
আব্দুল্লাহ– না মা কিছু না
মা– তো বাবা কি বলিস? মেয়ে দেখা শুরু করি?
আব্দুল্লাহ– দেখো কিন্তু দ্বীনদ্বার হতে হবে
মা– হুম তুই যেমন হুজুর তোর জন্য একটা হুজুরনিই আনবো
আব্দুল্লাহ– হুম তাহলে ঠিক আছে
এরপর আব্দুল্লাহ উঠে তার ঘরে চলে যায়।
আব্দুল্লাহর বাবা হাসতে থাকে আর বলতে
থাকে
“বিয়ের কথা শুনে ছেলে আমার লজ্জায় নীল হয়ে গেছে”
“নাহ লাল হয়ে গেছে” আব্দুল্লাহর মা বলে।
আব্দুল্লাহর পরিবারও অনেকটাই দ্বীনের পথে আসছে।
আব্দুল্লাহ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ে
ফজরে মুসাকে এই কথা বলে আব্দুল্লাহ
মুসা শুনে খুব খুশি হয়
মুসা– আরে! আব্দুল্লাহ ভাই এখন তো…..
আব্দুল্লাহ– এখন?
মুসা– না মানে খুব খুশি লাগছে
আব্দুল্লাহ– ওওও কিন্তু অনেক লজ্জাও লাগছে
মুসা– হুম তা তো লাগবেই (হেসে)
আব্দুল্লাহ– হুম,,,,,,ভাই মুসা আমায় একটু নিয়ম কানুন শিখিয়ে দিও
মুসা– কিসের নিয়ম?
আব্দুল্লাহ– বিয়ের
মুসা– বিয়ের আবার নিয়ম? তুমি ইসলামিক ভাবে বিয়ে করবে
আব্দুল্লাহ– হুম ইংশা-আল্লহ
মুসা– ইংশা-আল্লহ,,,,,,,,, যৌতুক কিন্তু ভুলেও নিবে না আর যদি পরিবার বলে তবুও না
আব্দুল্লাহ– হুম ইংশা-আল্লহ
মুসা– এখন এমন একটা পরিস্থিতি যে,
মেয়ে পক্ষ্য,,, ছেলে চায় দ্বীনদ্বার বিল গেটস।
আব্দুল্লাহ– হুম তা ঠিক
মুসা– যাই হোক দেখে শুনে বিয়ে করবে
আব্দুল্লাহ– হুম,,, ভাই মুসা কুরআন ও হাদিসে বিয়ের ব্যাপারে কি বলা হয়েছে আমায় একটু জানাও
মুসা– হুম,,, ভাই ইসলাম ধর্মটা হচ্ছে সব দিক থেকেই সেরা
আব্দুল্লাহ– হুম তা তো ঠিক ভাই
মুসা– বিয়ের ব্যাপারে,,৷ আল্লহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,
‘তোমরা বিয়ে করো সেই নারীদেরকে, যাদের তোমাদের ভালো লাগে।’
৪ নম্বর সুরা
সুরা নিসা
আয়াত ৩
আব্দুল্লাহ– হুম বুঝলাম ভাই
মুসা– হাদিসে এসেছে,,,,
হজরত মুগিরা ইবনে শুবা (র.) বলেন, আমি জনৈক নারীকে বিয়ের প্রস্তাব করলাম। রসূল (স.) আমাকে বললেন, ‘তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাকে দেখে নাও। কেননা এতে তোমাদের উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা জন্মাবে।’
(মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৩১০৭)
অন্য হাদিসে এসেছে, এক লোক নবী করিম (স.)-এর নিকট এসে বলল যে, সে আনসারি এক মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। রসূল (স.) বললেন, ‘তাকে দেখেছ কি? কেননা আনসারদের চোখে দোষ থাকে।’
(সহিহ মুসলিম)
এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, শুধু দেখাই যথেষ্ট নয়; বরং পাত্র বা পাত্রীর কোনো ত্রুটি আছে কি না, তাও জেনে নেওয়ার অধিকার অন্য পক্ষের রয়েছে।
পাত্র ব্যতীত তার পরিবারের অন্য পুরুষদের জন্য পাত্রী দেখার অনুমতি শরিয়ত দেয় না। আর চুল বের করা ও হাঁটানোর মতো বিব্রতকর কাজ অবশ্যই পরিহারযোগ্য।
আব্দুল্লাহ– আমার বাবাও কি মেয়ে দেখতে পারবে না?
মুসা– পাত্র তুমি তোমার বাবা নয় যে মেয়ে দেখবে (মুচকি হেসে)
আব্দুল্লাহ– হুম
মুসা– রসূলুল্লহ (স.) বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে আত্মিক ও ঈমানের সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘নারীদের চারটি গুণ দেখে বিয়ে করো : তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। তবে তুমি দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেবে। নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৯০)
রসূল (স.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের নিকট কোনো পাত্র বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীনদারী ও চরিত্র তোমাদের যদি পছন্দ হয়, তাহলে তার সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন করো। অন্যথা জমিনে বড় বিপদ দেখা দেবে এবং সুদূরপ্রসারী বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে।’
(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৮৪-৮৫)
আব্দুল্লাহ– হুম ভাই মুসা বুঝলাম
মুসা– আল’হামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহ– জাযাকাল্লহু খইরন ভাই
মুসা– ওয়া আংতুম ফা জাযাকুমুল্লহু খইরন
👉 যারা খুব বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতে পারেন না, তাদের জন্য সহজ একটি আমল:
👉 যে দোয়া ১ বার পাঠ করলে রাত দিন অনবরত জিকিরের চেয়েও বেশি সওয়াব পাবেন!:
👉 সমস্ত গুনাহ মাফের দোয়া সমূহ:
👉 ফজরের নামাজের উপকারিতা / ফজিলত / বৈজ্ঞানিক উপকারিতা:
পর্বঃ- ১০
রসূল (স.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের নিকট কোনো পাত্র বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীনদারী ও চরিত্র তোমাদের যদি পছন্দ হয়, তাহলে তার সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন করো। অন্যথা জমিনে বড় বিপদ দেখা দেবে এবং সুদূরপ্রসারী বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে।’
(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৮৪-৮৫)
আব্দুল্লাহ– হুম ভাই মুসা বুঝলাম
মুসা– আল’হামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহ– জাযাকাল্লহু খইরন ভাই
মুসা– ওয়া আংতুম ফা জাযাকুমুল্লহু খইরন
আব্দুল্লাহর মুখে একটু লজ্জা
মুসা মুচকি মুচকি হাসছে
মুসা– লজ্জা পেও না আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– ইয়ে মানে
মুসা– কোনো মানে নেই,,,, আর তোমায় যে দেখবে সে পছন্দ করবে ইংশা-আল্লহ
আব্দুল্লাহ– কেনো?
মুসা– তুমি তো দেখতেও খারাপ না বা তোমার ইলম (জ্ঞান) ও নেই এমনটা না
আব্দুল্লাহ– ওও
মুসা– আল্লহ তোমাকে উত্তম একজন জীবনসঙ্গী দান করুক আমিন
আব্দুল্লাহ– ছুম্মা আমিন
আব্দুল্লাহ বাসায় আসে
বেশ কয়েকদিন ধরে আব্দুল্লাহর বন্ধুরা তার সাথে কথা বলে না
আব্দুল্লাহ মাঝে মাঝে তাদের খোজ খবর নেয়
কিছু দিন পরে
রাতের বেলায় আব্দুল্লাহ ঘরে শুয়ে আছে
শুয়ে শুয়ে বই পড়ছে
আব্দুল্লাহর মা তার ঘরে আসে
আব্দুল্লাহ উঠে বসে
মা– আব্দুল্লাহ তোর জন্য মেয়ে দেখতে যাবো
আব্দুল্লাহ– কবে মা?
মা– বুধবার
আব্দুল্লাহ– এতো তারাতারি আজকে তো সোমবার
মা– তো কি হইছে বুধবার যাবো ইংশা-আল্লহ
আব্দুল্লাহ– ওকে ইংশা-আল্লহ
আব্দুল্লাহর মা চলে যায়
আব্দুল্লাহ নারভাস ফিল করে
ফজরে আব্দুল্লাহ মাসজিদে যায়
মাসজিদে যাবার সময় দেখে তার থেকে বয়সে ছোট একজন মাসজিদে ঢুকছে বাম পা দিয়ে
আব্দুল্লাহ তখন কিছু বলে না
নামাজ শেষ হলে
আব্দুল্লাহ তার কাছে গিয়ে বসে
আন্দুল্লাহ সেই ছেলেকে বলে যে
ভাই মাসজিদে প্রবেশের সময় ও বের হবার সময় কিছু সুন্নাত রয়েছে
আমি কি আপনায় বলবো তা?
হুম ভাই বলুন,,,সেই ছেলেটি বললো
আব্দুল্লাহ– মাসজিদে প্রবেশের সময়
بِسْمِ اللهِ. وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ. اَللّٰهُمَّ افْتَحْ لِيْ اَبْوَابَ رَحْمَتِكَ
বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু’ আলা রাসুলিল্লাহ্ আল্লহুম্মাফ্তাহলি আবওয়াবা রহমাতিক্।
আল্লহ তা’আলার নামে প্রবেশ করছি। আল্লহ তা’আলার রসুল সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। হে আল্লহ! আমার জন্যে আপনার রহমতের দ্বার উন্মুক্ত করে দিন।
(সুনান ইবন মাজাগ, হাদীস নং- ৭৭২, মুসনাদে আহমাদ হাঃ ২৬৪৭৩)
আমর ইবন উসমান হবন সায়িদ ইবন কাসীর ইবন দীনার হিমসী ও আব্দুল ওয়াহাব ইবন যাহহাক (র)……আবু হুমায়দ সায়িদী (র.) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রসুলুল্লহ (স.) বলেছেন—-
তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে, তখন সে যেন নবী (স.) -এর প্রতি সালাম দেয় । এরপর সে যেন বলে—-
بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ اللّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ،
এবং ইত্তেকাফের নিয়তে প্রবেশ করা
আর ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা
আর মাসজিদ থেকে বের হবার সময়ের সুন্নাতগুলো হলো
মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময়
بِسْمِ اللهِ. وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ. اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ.
বিসমিল্লাহি ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আলা রসুলিল্লাহ্ আল্লহুমা ইন্নি আস’আলুকা মিন ফাদ্লিক।
আল্লহ তা’আলার নামে শুরু করছি। আল্লহ তা’আলার রসুল সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ, রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট হালাল রুজির প্রার্থনা করছি।
(সুনান ইবন মাজা, হাদীস নং- ৭৭২, মুসলিম হাঃ ৭২৮)
আমর ইবন উসমান হবন সায়িদ ইবন কাসীর ইবন দীনার হিমসী ও আব্দুল ওয়াহাব ইবন যাহহাক (র)……আবু হুমায়দ সায়িদী (র.) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লহ (স.) বলেছেন—-
তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে, তখন সে যেন নবী (স.) -এর প্রতি সালাম দেয় । এরপর সে যেন বলে—-
بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ اللّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ،
আর সে যখন বের হয়, তখন যেন বলে—-
بِسْمِ اللهِ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ
বাম পা দিয়ে বের হওয়া
ডান পায়ের জুতো আগে পরা
ভাই বুঝলেন তো?
হুম ভাই আলহামদুলিল্লাহ বুঝেছি
আর আপনাকে খুব বেশি ধন্যবাদ বলার জন্য,,,ছেলেটি বললো
আব্দুল্লাহ মাসজিদ থেকে বের হয়ে মুসার সাথে কথা বলছে
মুসাকে জানায় আব্দুল্লাহ রাতের কথা
মুসাও শুনে খুশি হয়
আব্দুল্লাহ ও মুসা কথা বলতে থাকে
মুসা ও আব্দুল্লাহ ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে নিজেদের মধ্যে
আছরের পরে আব্দুল্লাহ বসে বসে আমল করছে
সকালের সেই ছেলেটা নাম হলো তার আরিফ
আরিফ আব্দুল্লাহর কাছে এসে বলে
আরিফ– আসসালামু ‘আলাইকুম ভাই কি করছেন
আব্দুল্লাহ– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম বসে আছি ভাই কেনো?
আরিফ– না ভাই কিছু আমল এর কথা যদি বলতেন আমায়
আব্দুল্লাহ– ওও হুম বলছি
আরিফ– হুম
আব্দুল্লাহ– ফরজ নামাজের পরে মানে সালাম ফিরানোর পরে
৩ বার,,,,,, “আসতাগফিরুল্ল-হ” ।(ﺃَﺳْﺘَﻐْﻔِﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪ)
অর্থঃ হে আল্লহ!আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
১ বার,,,,,, “আল্লহুম্মা আংতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবা-রকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরম”।
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﻭَﻣِﻨْﻚَ ﺍﻟﺴَّﻼَﻡُ، ﺗَﺒَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻳَﺎ ﺫَﺍ ﺍﻟْﺠَﻼَﻝِ ﻭَﺍﻟْﺈِﻛْﺮَﺍﻡِ
অর্থঃ হে আল্লহ্! তুমি শান্তিময়, তোমার কাছ থেকেই শান্তি অবতীর্ণ হয়। তুমি বরকতময়, হে পরাক্রমশালী ও মর্যাদা প্রদানকারী।
সাওবান (রঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন “রসুল (সঃ) যখন সালাম ফেরাতেন তখন তিনি তিনবার ইস্তেগফার পড়তেন অর্থাৎ ‘আস্তাগফিরুল্লহ’ বলতেন। তারপর বলতেনঃ “আল্লহুম্মা আংতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরম”। -মুসলিম ১/২১৮, আবু দাউদ ১/২২১
১ বার,,,, আয়াতুল কুরসী (সুরা বাক্বারা আয়াতঃ ২৫৫)
আবু উমামা (রঃ) বলেন, রসুলুল্লহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর ‘আয়াতুল কুরসী পাঠ করে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে পারবেনা”।
(নাসায়ী, হাদীস সহীহ, সিলসিলাহ সহিহাহ-হাদিস ৯৭২)
এবং
৩৩ বার,,,,,,, “সুব’হা-নাল্লহ” (আল্লাহ কতই না পবিত্র-মহান)”«سُبْحَانَ اللَّه
৩৩ বার,,,,,“আলঃহামদুলিল্লাহ” (সকল প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য) الْحَمْدُ لِلَّهِ،
৩৪বার,,,,,,, “আল্ল-হু আকবার” (আল্লাহ সবচেয়ে বড়)” اللَّهُ أَكْبَرُ
এইগুলো পড়বে
এখন তুমি আপাতত এইগুলো মুখস্ত করে আমল করতে থাকো পড়ে আবার বলবো কিছু আমল এর কথা
আরিফ– জ্বি ভাই ইংশা-আল্লহ
এরপর আরিফ চলে যায়
মুসা ও আব্দুল্লাহ হাটতে বের হয়
আব্দুল্লাহ ও মুসা হাটছিলো ও কথা বলছিলো
আব্দুল্লাহর বন্ধুরা তাদেরকে দেখে
হাসান– সাকিব দেখ দেখ আব্দুল্লাহ এখন ওই ছেলেটার সাথেই বেশি সময় কাটায়
সাকিব– হুম বেটা এখন হুজুর হয়ে গেছে
হাসান– হুম কিন্তু কিছু একটা তো করতে হয়
সাকিব– কি করবি?
হাসান– চল পরে বলবো
সাকিব– ওকে চল
তারা চলে যায়
আব্দুল্লাহ ও মুসা তাদেরকে খেয়াল করেনি
তারা কথা বলছিলো আর হাটছিলো
রাতে আব্দুল্লাহ ঘরে শুয়ে আছে
আর ভাবছে যে আগামীকাল সে মেয়ে দেখতে যাবে
কেমন কেমন যেনো লাগছে তা ভিতরে
আব্দুল্লাহ আজকে রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য অনেক আগে আগে উঠে পড়ে
নামাজ শেষে সে কি যেনো বলছে তার রবের কাছে
আজান হয়ে যায় আব্দুল্লাহ মাসজিদে চলে যায়
নামাজ শেষে মুসা তাকে বলে
মুসা– ভাই আব্দুল্লাহ তো আজকে তো তুমি মেয়ে দেখতে যাচ্ছো ইংশা-আল্লহ
আব্দুল্লাহ– হুম ইংশা-আল্লহ কিন্তু আমার না কেমন কেমন যেনো ফিল হচ্ছে
মুসা– হুম তা হবারই কথা
আব্দুল্লাহ– কি যে করি
মুসা– কিছুই করতে হবে না ঠিক হয়ে যাবে যখন একটু কথা বলবে তার সাথে
আব্দুল্লাহ– জানি না ভাই
মুসা– যাওয়ার আগে নামাজে দাঁড়িয়ে রবের সাথে কথা বলে নিও
আব্দুল্লাহ– হুম ইংশা-আল্লহ
আব্দুল্লাহ বাসায় আসে
তাদের বাসা থেকে মেয়েদের বাসা দূরে তাই তারা ১২ টায় বের হবে যেতে যেতে প্রায় ৪ থেকে সারে চার ঘন্টা লাগবে।
১১ টায় আব্দুল্লাহ নামাজে দাঁড়িয়ে যায়
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ দু’আ করছে
যেনো সব ঠিক ভাবে হয়
আব্দুল্লাহ তৈরি হচ্ছে
বিশেষ কোনো ভাবে তৈরি হচ্ছে না
সাধারণ ভাবেই আব্দুল্লাহ তৈরি হয়েছে
আব্দুল্লাহ তার বাবা ও তার মা যাবে
কিন্তু তার বাবা মেয়ে দেখবে না
আব্দুল্লাহ ও তার মা ঠিক ঠাক ভাবে
চিনে না তাই তাদের পথপ্রদর্শক
হিসেবে তার বাবা যাচ্ছে
বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে
প্রায় ৪ ঘন্টার বেশি সময় লাগে
আব্দুল্লাহ যোহরের নামাজ রাস্তায় পড়ে নেয়।
বাসায় গিয়ে দরজায় করা নাড়ে
👉ইসলামের জন্য প্রথম জীবন দেন যে নারী-
👉হযরত মুসা (আঃ) ও আল্লাহ তালার কথোপকথন-
👉রাসূলুল্লাহ(ﷺ ) ও এক আগন্তুকের অবিশ্বাসনীয় ঘটনা-
👉হেদায়াত লাভের গল্প-
👉হযরত আলী (রাঃ) ও ফাতেমা (রাঃ) একটি শিক্ষনীয় ঘটনা-
পর্বঃ- ১১
আব্দুল্লাহ তৈরি হচ্ছে
বিশেষ কোনো ভাবে তৈরি হচ্ছে না
সাধারণ ভাবেই আব্দুল্লাহ তৈরি হয়েছে
আব্দুল্লাহ তার বাবা ও তার মা যাবে
কিন্তু তার বাবা মে দেখবে না
আব্দুল্লাহ ও তার মা ঠিক ঠাক ভাবে
চিনে না তাই তাদের পথপ্রদর্শক
হিসেবে তার বাবা যাচ্ছে
বাসা থেকে বেরিয়ে পরে
প্রায় ৪ ঘন্টার বেশি সময় লাগে
আব্দুল্লাহ যোহরের নামাজ রাস্তায় পরে নেয়।
বাসায় গিয়ে দরজায় করা নাড়ে
দরজায় করা নাড়ার সাথে সাথে একজন বয়স্ক লোক গায়ে জুব্বা পড়া মাথায় টুপি পড়া এসে দরজা খুলে দেয়
আব্দুল্লাহ তাকে দেখে সালাম দেয়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
বয়স্কলোক– ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
আব্দুল্লাহ– ভালো আছেন আংকেল?
বয়স্কলোক– আলহামদুলিল্লাহ ভালো বাবা তুমি কেমন আছো? আর আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো?
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ ভালো,,, আসতে কোনো সমস্যা হয়নি
বয়স্কলোক– আলহামদুলিল্লাহ,,, আসো আসো বাবা ভিতরে আসো
আব্দুল্লাহ ও তার মা বাবা ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে
তখন প্রায় সারে ৪ টা বাজে
আব্দুল্লাহ বসে
সামনের টেবিলে তাদের জন্য অনেক রকম
নাস্তা সাজিয়ে দিয়েছে
আব্দুল্লাহ বসে আছে
আব্দুল্লাহর সেই বয়স্কলোক যে কিনা মেয়ের বাবা তার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছে
একটু বয়স্কলোকরা এক সাথে হলে যা হয় আর কি
আছরের আজান হয়ে যায়
আব্দুল্লাহ তার বাবা ও সেই মেয়ের বাবা
মিলে মাসজিদে যায়
এইদিকে আব্দুল্লাহর মা মেয়ের ঘরে গিয়ে
মেয়েকে দেখতে থাকে
প্রায় ৫ঃ৩০ বাজে তারা বাসায় ফিরে আসে
এসে আব্দুল্লাহ বসে থাকে
একটু পরে মেয়ের ছোট ভাই এসে
আব্দুল্লাহকে ডেকে তার বোনের ঘরে নিয়ে যায়
আব্দুল্লাহর ভিতরে কেমন কেমন যেনো করছে
কিছুটা ভয়ের মতোও
আব্দুল্লাহ তার হাতে থাকা একটা ব্যাগ নিয়ে যায়
আব্দুল্লাহ ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে সালাম দেয়
পর্দার ভিতর থেকে সালাম এর জবাব আসে
আব্দুল্লাহ কন্ঠ শুনে মুগ্ধ হয়ে কি সুন্দর মিষ্টি কন্ঠ
আব্দুল্লাহ ঘরে যায়
ঘরে গিয়ে দেখে ঘরটা অনেক সুন্দর ভাবে সাজানো গোছানো দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে
একটা টেবিল চেয়ারে মেয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে
তার সামনেই আরেকটা চেয়ার আব্দুল্লাহর জন্য
আব্দুল্লাহকে ঘরে দিয়ে মেয়ের ভাইটা চলে যায় বাহিরে
আব্দুল্লাহ চেয়ারে বসে
বসে সে কিছু বলতে পারছে না
তার ভিতরে কিছুটা নারভাস নারভাস ফিল হচ্ছে
আব্দুল্লাহ বসে থাকে চুপ করে
মেয়েটাও মাথা নিচু করে বসে থাকে
আব্দুল্লাহ আবার সালাম দেয়
মেয়েটাও আসতে করে সালামের জবাব দেয়
আব্দুল্লাহ– ভালো আছেন?
আবিহা– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ ভালো,,,, আপনার নাম কি?
আবিহা– জ্বি আমার নাম মুন কিন্তু প্রিয় একটা নাম আবিহা তাই আবিহা বলেই ডাকলে ভালো লাগবে
আব্দুল্লাহ– ওও খুব সুন্দর নাম
আবিহা– জাযাকাল্লাহ খাইরান
আব্দুল্লাহ– ওয়া আনতুম ফা জাজাকুমুল্লাহু খাইরান
আবিহা– আর কিছু জিজ্ঞাসা করবেন?
আব্দুল্লাহ– আপনারা কয় ভাই বোন?
আবিহা– চার ভাই ১ বোন
আব্দুল্লাহ– আপনি তো মাদ্রাসা প্লাস স্কুল দুই জায়গাতেই পড়েছেন তাই না?
আবিহা– জ্বি
আব্দুল্লাহ– হুম শুনেছি,,,,,,,,আচ্ছা একটু কুরআন পড়ে শুনাবেন? যেকোনো কিছু আয়াত?
আবিহা– জ্বি
یٰۤاَیَّتُہَا النَّفۡسُ الۡمُطۡمَئِنَّۃُ ﴿٭ۖ۲۷﴾
হে প্রশান্ত আত্মা!
ارۡجِعِیۡۤ اِلٰی رَبِّکِ رَاضِیَۃً مَّرۡضِیَّۃً ﴿ۚ۲۸﴾
তুমি ফিরে এসো তোমার রবের প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তোষভাজন হয়ে।
فَادۡخُلِیۡ فِیۡ عِبٰدِیۡ ﴿ۙ۲۹﴾
অতঃপর আমার বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও।
وَ ادۡخُلِیۡ جَنَّتِیۡ ﴿٪۳۰﴾
আর প্রবেশ কর আমার জান্নাতে।
[৮৯ তম সূরা
সূরা ফাজর
আয়াত ২৭-৩০]
আব্দুল্লাহ আয়াত গুলো শুনে তার চোখের কোণায় পানি চলে আসে। হাত দিয়ে চোখটা মুছে বলে
আব্দুল্লাহ– মাশা আল্লাহ খুব সুন্দর কন্ঠ আপনার
আবিহা– আচ্ছা কিছু মনে না করলে যদিও আপনি কুরআন তেলাওয়াত করে শুনাতেন,,,,
আব্দুল্লাহ– জ্বি
تَبٰرَکَ الَّذِیۡ بِیَدِہِ الۡمُلۡکُ ۫ وَ ہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرُۨ ۙ﴿۱﴾
বরকতময় তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। আর তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।
الَّذِیۡ خَلَقَ الۡمَوۡتَ وَ الۡحَیٰوۃَ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَ ہُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡغَفُوۡرُ ۙ﴿۲﴾
যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল।
الَّذِیۡ خَلَقَ سَبۡعَ سَمٰوٰتٍ طِبَاقًا ؕ مَا تَرٰی فِیۡ خَلۡقِ الرَّحۡمٰنِ مِنۡ تَفٰوُتٍ ؕ فَارۡجِعِ الۡبَصَرَ ۙ ہَلۡ تَرٰی مِنۡ فُطُوۡرٍ ﴿۳﴾
যিনি সাত আসমান স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। পরম করুণাময়ের সৃষ্টিতে তুমি কোন অসামঞ্জস্য দেখতে পাবে না। তুমি আবার দৃষ্টি ফিরাও, কোন ত্রুটি দেখতে পাও কি?
ثُمَّ ارۡجِعِ الۡبَصَرَ کَرَّتَیۡنِ یَنۡقَلِبۡ اِلَیۡکَ الۡبَصَرُ خَاسِئًا وَّ ہُوَ حَسِیۡرٌ ﴿۴﴾
অতঃপর তুমি দৃষ্টি ফিরাও একের পর এক, সেই দৃষ্টি অবনমিত ও ক্লান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।
وَ لَقَدۡ زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنۡیَا بِمَصَابِیۡحَ وَ جَعَلۡنٰہَا رُجُوۡمًا لِّلشَّیٰطِیۡنِ وَ اَعۡتَدۡنَا لَہُمۡ عَذَابَ السَّعِیۡرِ ﴿۵﴾
আমি নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপপুঞ্জ দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং সেগুলোকে শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের বস্তু বানিয়েছি। আর তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছি জ্বলন্ত আগুনের আযাব।
وَ لِلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِرَبِّہِمۡ عَذَابُ جَہَنَّمَ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمَصِیۡرُ ﴿۶﴾
আর যারা তাদের রবকে অস্বীকার করে, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব। আর কতইনা নিকৃষ্ট সেই প্রত্যাবর্তনস্থল!
[৬৭ তম সূরা
সূরা মুলক
আয়াত ১-৬]
আবিহা– মাশা আল্লাহ আপনার কন্ঠ খুবই সুন্দর শুনলে শুধু শুনতেই মনে চায়
আব্দুল্লাহ– শুকরান,,,,,,,,,আচ্ছা আপনার একটা প্রিয় আয়াত বলুন তো
আবিহা–
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۳﴾
হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।*
*পবিত্র কুরআনের অনেক স্থানে আল্লাহ নেককারদের সাথে আছেন, ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন ইত্যাদি বলা হয়েছে। তিনি আরশের উপর থেকেও বান্দাকে সাহায্য সহযোগিতা করার মাধ্যমে তার সাথে রয়েছেন বলে বুঝে নিতে হবে।
[২য় তম সূরা
সূরা বাকারাহ
আয়াত ১৫৩]
আপনার?
আব্দুল্লাহ–
وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۵﴾ۙ
আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।
[২য় তম সূরা
সূরা বাকারাহ
আয়াত ১৫৫]
এছাড়াও আরো আয়াত আছে যেমন,,
হে আল্লাহ, আমি তো কখনো আপনাকে ডেকে ব্যর্থ হইনি।”
[১৯ তম সূরা
সূরা মারিয়াম
আয়াত ৪]
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা এখন আমায় কি পছন্দ হয়েছে আপনার?
আবিহা– আলহামদুলিল্লাহ জ্বি,,,, আমায় কি পছন্দ হয়েছে আপনার? আমি দেখতে ভালো না তা জানি।
আব্দুল্লাহ– আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে
৯৫ তম সূরা
সূরা আত ত্বীন
আয়াত ৪
সেখানে বলেন,
لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡۤ اَحۡسَنِ تَقۡوِیۡمٍ ۫﴿۴﴾
অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে।
আলহামদুলিল্লাহ আপনি খুবই সুন্দর
আবিহা– জাযাকাল্লাহ খাইরান
আব্দুল্লাহ– ওয়া আনতুম ফা জাজাকুমুল্লাহু খাইরান
আব্দুল্লাহ– আমার সম্পর্কে কি কিছু জেনেছেন?
আবিহা– বেশি কিছু না কিন্তু যা যেনেছি আলহামদুলিল্লাহ।
আব্দুল্লাহ– ওওও
আবিহা– হুম
আব্দুল্লাহ– প্রতিনিয়ত কুরআন তিলাওয়াত করা হয়তো?
আবিহা– জ্বি আলহামদুলিল্লাহ হয়,,,আপনার?
আব্দুল্লাহ– জ্বি আলহামদুলিল্লাহ হয়
আব্দুল্লাহ– কেমন ছেলে পছন্দ আপনার?
আবিহা– দ্বীনদ্বার চরিত্রবান আল্লাহ ভিরু তাক্বওয়াবান
আব্দুল্লাহ– মাশা আল্লাহ খুব ভালো পছন্দ
আবিহা– শুকরিয়া
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা দেনমোহর হিসেবে কিছু বলবেন?
আবিহা– জ্বি মানে এই বিষয়ে আমার পরিবারের সাথে কথা বললেই ভালো হয়
আব্দুল্লাহ– দেনমোহর সম্পুর্নটা হচ্ছে আপনার হক।
এখানে আপনার বাবা, মা, ভাই, বোন কারোর কোনো হক নেই!
আবিহা– হুম তা তো ঠিক
আব্দুল্লাহ– হুম এখন কি চান? আপনি চাইলে ৫ লাখ ১০ লাখ টাকা দেনমোহর হিসেবে ধার্য্য করতে পারেন,,, আবার চাইলে শরিয়তের যে সর্বনিম্ন দেনমোহর ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা তাও ধার্য্য করতে পারেন এটা সম্পুর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা।
আর আমি তা পছন্দ করবো না যে আমি ঋণ করে দেনমোহর পরিশোধ করবো
আমার তেমন ইনকাম নেই নতুন একটা কাজে জইন হবো বেশি টাকা বেতন না ।
তাই আপনি আপনার দেনমোহর বলুন
যদি তা আমার ইনকামের ভিতরে হয়
বা আমার কাছে সেই পরিমান টাকা থাকে তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ আর যদি না থাকে তাও আলহামদুলিল্লাহ এখন আপনার মতামত
আবিহা–……………. (চুপ করে থাকে)
আব্দুল্লাহ– সমস্যা নেই আপনি চাইলে এখন বলতে পারেন বা কিছুদিন সময়ও নিতে পারেন
আবিহা– আচ্ছা তাহলে ৫ হাজার টাকা দেনমোহর হিসেবে থাকবে
আব্দুল্লাহ শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আবিহার দিকে আবিহা আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে আবার তার চোখ নিচু করে দেয়
আব্দুল্লাহ– আরেকটু বেশি নিন
আবিহা– না এটাই এটা যেহেতু আমার হক তাই আমিই সিদ্ধান্ত নিলাম
আব্দুল্লাহ অনেক বলে কিন্তু আবিহা শুনে না ৫ হাজার টাকাই দেনমোহর হিসেবে চায়।
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা তাহলে এখন উঠি
আবিহা– জ্বি,,,,,আর যদি আমায় আপনার পছন্দ না হয় তাহলে প্লিজ বলে দিবেন
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ
এই বলে আব্দুল্লাহ তার হাতে থাকা বইয়ে ভরা ব্যাগটা আবিহার দিকে এগিয়ে দেয়
আবিহা– এটা কি?
আব্দুল্লাহ– এটায় কিছু বই রয়েছে আশা করছি আপনার পছন্দ হবে
আবিহা– জাযাকাল্লাহ খাইরান
আব্দুল্লাহ– ওয়া আনতুম ফা জাজাকুমুল্লাহু খাইরান
আল্লাহ হাফেয
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
আবিহা– জ্বি আল্লাহ হাফেজ ওয়াআলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
আব্দুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়
গিয়ে তার বাবার পাশে গিয়ে বসে
কিছুক্ষন কথা বলে
তারা বেরিয়ে পরে
👉মা আয়েশা রাঃ এর কিছু কথা-
👉ইব্রাহিম আঃ এর সময়ের এক ঘটনা-
👉দুআ কবুলের গল্প-
👉এক অত্যাচারী শাসক(ফেরাউন) ও তার মেয়ের ঈমানের শক্তি-
👉রাজা ও তার তিন মন্ত্রী-
পর্বঃ- ১২
আবিহা– জ্বি আল্লাহ হাফিজ ওয়া ‘আলাইকুমুসসালাম ওয়া র’হমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
আব্দুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়
গিয়ে তার বাবার পাশে গিয়ে বসে
কিছুক্ষন কথা বলে
তারা বেরিয়ে পড়ে
আব্দুল্লাহদের বাসায় আসতে আসতে প্রায় ৯ টার বেশি বেজে যায়
আব্দুল্লাহ এসে এশার নামাজ আদায় করে খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়ে
মেয়ের বাসা থেকে আগামীকাল জানাবেন বলেছে
আব্দুল্লাহ তাহাজ্জুদের জন্য উঠে পড়ে
নামাজে দাঁড়িয়ে যায়
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ দু’আ করছে
হে আল্লহ তুমি আমায় একজন নেক্কার জীবনসঙ্গীনি দান করুন
আব্দুল্লাহ কুরআনে আল্লহর শিখিয়ে দেওয়া দু’আ পড়ছে
আর দু’আ করছে
স্বামী-স্ত্রীর ও সন্তানের জন্য দু’আ
رَبَّـنَـا هَـبْ لَـنَـا مِـنْ اَزْوَاجِـنَـا وَذُرِّيّـتِـنَـا قُـرَّةَ اَعْـيُـنٍ وَّاجْـعَـلْـنَـا لِلْـمُـتَّـقِـيْـنَ اِمَـامَـا
রব্বানা হাব্ লানা মিন্ আয্ওয়াজ্বিনা ওয়া যুররিইয়্যাতিনা ক্বুরওয়াতা আ’ইউনিওঁ ওয়াজ্ব’আলঅনা লিল্ মুত্তাক্বিনা ইমামা।
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য এমন সাথী (স্বামী বা স্ত্রী) এবং সন্তান-সন্ততি দান কর যারা হবে আমাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর এবং আমাদেরকে কর মুত্তাকিদের জন্য অনুসরণযোগ্য।
(সূরা ফুরকান, আয়াত : ৭৪)
সূরা ফুরকানের ৭৪ নং আয়াতের দ্বারা স্বয়ং রব্বুল ‘আলামিন স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের জন্য এভাবে দু’আ করার জন্য মানবজাতিকে শিক্ষা দিয়েছেন। বর্তমানে অশান্ত সমাজ ব্যাবস্থায়-পারিবারিক পেরেশানীতে এর চেয়ে প্রয়োজনীয় তথা প্রাসঙ্গিক দু’আ ও চাওয়া আর কি হতে পারে ?
আব্দুল্লাহ বলছে
হে আমার রব যদি সে আমার জন্য কল্যাণকর হয় তাহলে আপনি তাকে আমার স্ত্রী হিসেবে দান করুন
আর যদি সে আমার জন্য অকল্যাণকর হয় তাহলে আপনি তাকে আমার স্ত্রী হিসেবে দান করিয়েন না
দু’আ শেষে আব্দুল্লাহ কুরআন পড়ছে
কিছুক্ষণ পরে আজান হয়ে গেলে আব্দুল্লাহ মাসজিদে চলে যায়
নামাজ শেষে আব্দুল্লাহ আমল করছে
আব্দুল্লাহ একটা আমল করছে যেটার ফায়দা অনেক বেশি
আবু হুরাইরাহ (রঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লহ (সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক একশত বার “সুব’হানাল্লহি ওয়াবিহামদিহী”(سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ) বলে তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হয়, তা সাগরের ফেনারাশির সমপর্যায় হলেও।
জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৬৬
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
এটার আরো একটি ফায়দা বা লাভ রয়েছে
যেমন হাদিসে এসেছে
আবু হুরাইরাহ (রঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক সকালে ও বিকালে একশত বার বলেঃ সুবাহানাল্লহি ওয়া বিহামদিহী”,(سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ) কিয়ামতের দিন তার চাইলে উত্তম (আমলকারী) আর কেউ হবে না। তবে যে লোক তার ন্যায় কিংবা তার চাইতে অধিক পরিমান তা বলে (সে উত্তম ‘আমালকারী বলে গণ্য হবে)।
জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ৩৪৬৯
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আব্দুল্লাহ আরো কিছু আমল করে
আমল শেষ করে আব্দুল্লাহ ও মুসা হাটতে বের হয়
মুসা– ভাই আব্দুল্লাহ তারপরে কেমন দেখা হলো পাত্রী?
আব্দুল্লাহ– মাশা-আল্লহ মেয়েটা খুবই সুন্দর ছিলো আর কন্ঠ ও দ্বীনদ্বারিতা আলহামদুলিল্লাহ সুন্দর ছিলো
মুসা– পছন্দ হয়েছে তোমার?
আব্দুল্লাহ– হুম
এরপর আব্দুল্লাহ তাকে সকল ঘটনা বলে
মুসা– আচ্ছা সবই বুঝলাম কিন্তু…..
আব্দুল্লাহ– কিন্তু?
মুসা– সবাই তো মেয়ে দেখে আসার সময় টাকা দিয়ে আসে মেয়ের হাতে কিন্তু তুমি বই কেনো দিলে?
আব্দুল্লাহ– আসলে ভাই,,,, সবাই তো টাকা দেয় আর দেখা যায় এই টাকা নিতে সেই মেয়েটার অনেক নাকজ করে অনেকে এটা পছন্দও করে না
তাই আমি কিছু ইসলামিক বই দিলাম
আর সব থেকে বড় কথা হলো যে
আমি যে তাকে বই দিলাম এতে করে সে আমার দেওয়া এই বই পড়ে কিছু জ্ঞানও অর্জন করতে পারবে
এতে তার ও আমার দুইজনের-ই লাভ হবে
সে এই বই পড়ে কিছু আমল শিখলো আর তা করলো এতে করে আমিও কিছু লাভবান হলাম আমার জন্য কেও একজন আমল শিখে তা করছে
আল্লহ তা’য়ালা এতে করে আমাকেও কিছু নেকি দিবেন ইংশা-আল্লহ
তাই ভাই বই দিয়েছি আমি
মুসা– হুম ভাই বুঝলাম,,,, এভাবে তো কখনো ভেবে দেখিনি?
আব্দুল্লাহ– ওও
মুসা– হুম,,, তারা কি আজকে জানাবেন?
আব্দুল্লাহ– হুম বলেছে যে আজকে জানাবে
মুসা– তাহলে আলহামদুলিল্লাহ তুমি বিয়েটা করেই ফেলছো (একটু হেসে)
আব্দুল্লাহ– আল্লাহ যদি চায় তাহলে ইংশা-আল্লহ
মুসা– হুম
আব্দুল্লাহ– কিন্তু ভাই মুসা তুমি করবে কবে?
মুসা– ইংশা-আল্লহ ভাই কিছু মাস পরে দু’আ রাইখো
আব্দুল্লাহ– ওওও
মুসা– হুম
মুসা ও আব্দুল্লাহ হাটতে থাকে
বেশ কিছুক্ষন হেটে বাসায় চলে আসে
আব্দুল্লাহ বাসায় এসে তার ঘরে যায়
আব্দুল্লাহ ঘরে গিয়ে বসতেই তার মা তার ঘরে চলে আসে
মা– আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– জ্বি মা
মা– তারা ফোন দিয়েছিলো
আব্দুল্লাহ– ও কি বললো?
মা– বলেছে যে তারা আজকে আমাদের বাসায় আসবে
আব্দুল্লাহ– ওও কখন?
মা– বলেছে যে সকালের নাস্তা করে বেরিয়ে পড়বে
আব্দুল্লাহ– ওওও
মা– হুম শোন বাবা তুই একটু বাজারে যা
আব্দুল্লাহ– হুম মা যাচ্ছি আরেকটু পরে এখনো তো কোনো দোকান সেইরকম ভাবে খোলেনি
মা– হুম একটু পড়েই যাস
আব্দুল্লাহ– হুম মা ইংশা-আল্লহ
এরপর আব্দুল্লাহর মা চলে যাচ্ছে আর আব্দুল্লাহ ডেকে বলে
আব্দুল্লাহ– মা তারা কি বলেছে আর?,,,মানে আমায় কি পছন্দ হয়েছে বা কিছু?
মা– না তেমন কিছুই বলেনি বাবা দেখি আসলে কি বলে
আব্দুল্লাহ– ওওহ
মা– হুম,,,তোর তো মেয়ে পছন্দ হয়েছে নাকি?
আব্দুল্লাহ– হুম মা আল’হামদুলিল্লাহ তাকে পছন্দ হয়েছে আমার
মা– আল’হামদুলিল্লাহ
এরপর আব্দুল্লাহর মা চলে যায়
সকাল প্রায় ১০ টা বাজে
আব্দুল্লাহ মুসাকে ফোন দেয়
ফোন দিয়ে বলে যে তার সাথে একটু যাবে কিনা বাজারে।
মুসাও যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে যায়
তারা বাজারের জন্য বেরিয়ে পড়ে
আব্দুল্লাহর মা কিছু টাকা দিয়েছে সেই টাকা দিয়ে আব্দুল্লাহ বাজার করবে
আব্দুল্লাহ ও মুসা হাটছে
কিছুক্ষন হাটার পরে প্রায় তারা বাজারের কাছে
তখন আব্দুল্লাহ দেখে কিছু ছেলে তাদের দিকে আসছে
দেখতে দেখতে আব্দুল্লাহ ও মুসার দিকে চলে আসে সেই ছেলেগুলো তারা প্রায় ৫ জনের মতো ছিলো
আব্দুল্লাহ ও মুসা পাশ কেটে চলে যাচ্ছিলো
সেই ছেলেগুলো আবার তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম
তাদের থেকে একজন বলে
“ভাই ও হচ্ছে আব্দুল্লাহ অনেক ডেঞ্জার একটা জিনিস ওকে ছেড়ে দিন নাইতো যদি পরে কোনো বিপদে পড়ি?”
তাদের যে লিডার ছিলো সে বলে
“কিসের বিপদ ওকে দেখে তো মনে হয় না যে কিছু করতে পারবে”
“না ভাই আব্দুল্লাহ অল্প কিছুদিন ধরে এই পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু মালটা আগে অনেক ডেঞ্জার ছিলো”
“তা পরে দেখা যাবে”
আব্দুল্লাহ সালাম জবাব না পেয়ে আবার তাদের সবাইকে লক্ষ্য করে সালাম দিলো
তাদের লিডার বলে উঠলো
কি ভাই কোথায় যাচ্ছেন?
আব্দুল্লাহ– বাজারে ভাই
লিডার– ওও তা দেখি তো সাথে কি আছে আবার কোনো ইয়াবা আছে কিনা দেখি তো
আব্দুল্লাহ– না ভাই ওইসব কিছু নেই
লিডার– কথা কম দেখি এইদিকে আয়
আব্দুল্লাহ কিছু বললো না
লিডার সে আব্দুল্লাহর পকেটে কিছু টাকা পেলো
সে সেই টাকা গুলো নিয়ে আরেকজনের হাতে দিয়ে বলছে
লিডার– নাই তো কিছু আচ্ছা তাহলে যাও ভাই বাজারে যাও
পাশ থেকে আব্দুল্লাহর বন্ধু হাসান ও সাকিব দেখছিলো
কিন্তু তারা আর এগিয়ে আসে না
আব্দুল্লাহ তাদের দিকে তাকিয়ে আবার নিচে তাকিয়ে থাকি
হাসান পাশ দিয়ে যাচ্ছে আর আব্দুল্লাহকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছে
হাসান– সাকিব আমাদের কি? তার তা সেই বুঝুক
মুসা হাসানের কথা শুনে বলে উঠে
মুসা– ভাই এই তোমাদের বন্ধুত্ব?
মুসার কথা শুনতে না শুনতেই হাসান মুসার কলার চেপে ধরে
মুসা হাসানের হাটতা ধরে
আব্দুল্লাহ দেখে হাসানকে একটা ধাক্কা দেয়
দিয়ে বলে
“কি হচ্ছে এইগুলা হাসান?”
হাসান– আব্দুল্লাহ তুই আমায় ধাক্কা দিলি?
আব্দুল্লাহ– তুই ওর কলার কেনো ধরলি (রেগে)
হাসান– তাই বলে তুই আমায় ধাক্কা দিবি?
এই দিকে সেই লিডারটা আব্দুল্লাহর কাধে হাত দিয়ে ধাক্কা দেয়
আব্দুল্লাহ সাথে সাথে ওই লিডারটার কলার ধরে কয়েকটা থাপ্পড় মারতে থাকে আর বলে
আব্দুল্লাহ– তোর কি হইছে হুম তোমার বাপদের সাথে চলা ফেরা ছিলো আমার হুম আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ
আজকে শুধু রবের প্রেমে পড়েছি তাই বেচে গেলি যা যা গিয়ে তোদের বাপদের কাছ থেকে আমি আব্দুল্লাহর খবর নে যা
এই বলে ছেড়ে দেয় আব্দুল্লাহ
সেই লিডারটার নাম ছিলো রানা
রানা– কাজটা ঠিক করলি না তুই
আব্দুল্লাহ– যা যা
রানা ও তার সাথের সবাই চলে যায়
আব্দুল্লাহ– বাহ রে হাসান বাহ আজকে বন্ধুত্ব প্রমান পেলো বাহ
হাসান– তুই আজকের কাজটা ঠিক করলি না সামান্য একটা হুজুর এর জন্য তুই আমায় ধাক্কা দিলি?
আব্দুল্লাহ– দেখ ভাই হাসান…………
👉বোরকা পড়া মেয়ে (STORY)-
👉মায়াবতী (ইসলামিক গল্প)-
👉চিরকুট (ইসলামিক গল্প)-
👉নীল ডায়েরি (ইসলামিক গল্প)-
👉আমার জান্নাতের সাথী (ইসলামিক গল্প)-
পর্বঃ- ১৩
রানা– কাজটা ঠিক করলি না তুই
আব্দুল্লাহ– যা যা
রানা ও তার সাথের সবাই চলে যায়
আব্দুল্লাহ– বাহ রে হাসান বাহ আজকে বন্ধুত্ব প্রমাণ পেলো বাহ
হাসান– তুই আজকের কাজটা ঠিক করলি না সামান্য একটা হুজুর এর জন্য তুই আমায় ধাক্কা দিলি?
আব্দুল্লাহ– দেখ ভাই হাসান আমি কি করেছি তা আমি জানি!
হাসান– হুম ভালোই হুজুর হইয়া গেছো না ভাই?
আব্দুল্লাহ– দেখ ভাই মাফ কর আমায় তুই জানিস যে আমি কেমন প্লিজ
হাসান– পরে দেখা যাবে
হাসান এই বলে চলে যায়
আর মুসার দিকে তার আঙুল দেখিয়ে বলে
“আজকের কথাটা আমি ভুলবো না”
আব্দুল্লাহ দাঁড়িয়ে থাকে
মুসা আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকে
মুসা– আব্দুল্লাহ ভাই এতো রাগ করাটা কি ঠিক হয়েছে?
আব্দুল্লাহ– ভাই আমি এতো রাগ কোথায় করলাম?
মুসা– এই যে তাকে যে মারলা
আব্দুল্লাহ– ভাই আল’হামদুলিল্লাহ আমি রাগকে কিছুটা কন্ট্রোল করেছি আর নাইতো এখানে অন্য কিছুও হয়ে যেতে পারতো
মুসা– যাইহোক এটা একদম ঠিক হয়নি আমাদের মাফ চাওয়া দরকার তাদের কাছে গিয়ে
আব্দুল্লাহ–………. হুম (মাথা নাড়িয়ে)
মুসা– এখন বাজার কিভাবে করবে?
আব্দুল্লাহ– এই কথাই তো ভাবছি
মুসা– চলো
আব্দুল্লাহ– কোথায়?
মুসা– সামনে আমার একজন পরিচিত লোক আছে তার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে দিচ্ছি তোমায়
এরপর তারা বাজারে গিয়ে বাজার শেষ করে বাসায় ফিরে আসে
আব্দুল্লাহ যোহরের নামাজ শেষ করে বাসায় ফিরছে
বাসায় এসে দেখে তারা সবাই চলে এসেছে
আব্দুল্লাহ সালাম দিয়ে তাদের সাথে বসে কথা বলতে থাকে
আব্দুল্লাহকেও তাদের খুব পছন্দ হয়েছে
বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করছে এখন
আব্দুল্লাহ চুপ করে বসে থাকে
আব্দুল্লাহর বিয়ের তারিখ পরে যায় ১ ই অক্টোবর
আজকে হচ্ছে সেপ্টেম্বরের ২২ তারিখ
মানে হাতে আর বেশি সময় নেই
মুসাও জেনে খুব খুশি হয়
বিকেলে আব্দুল্লাহ ও মুসা মিলে রানার খোজে বের হয়
অবশেষে তারা রানার কাছে গিয়ে পৌছায়
রানা তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ভাই রানা
রানা– হুম বল
আব্দুল্লাহ– ভাই আজকের সকালের ঘটনার জন্য আমি খুবই দুঃখিত আমায় মাফ করে দাও (মাথা নিচু করে)
রানা– কিসের মাফ? আমায় মেরে অপমান করে এখন মাফ চাচ্ছো?
আব্দুল্লাহ– দেখো ভাই সকালের সেই ঘটনাটা একটা এক্সিডেন্ট মনে করো।
রানা– কিসের এক্সিডেন্ট? তুই তো আমায় ইচ্ছা করেই মারলি
আব্দুল্লাহ– ভাই আমি আমার ভুলটা বুঝতে পেরেছি
রানা– কিন্তু আমি তো এভাবে মাফ করবো না
আব্দুল্লাহ– ভাই আমি তোমার গায়ে হাত তুলেছি তুমিও চাইলে আমায় সেই পরিমান মারতে পারো বা বেশি
রানা মনে মনে ভাবতে থাকে যে
আব্দুল্লাহর সম্পর্কে যা শুনেছি আর সকালে যা উপভোগ করলাম এতে তো তার এই কথা বলার কথা না আবার তার টাকাও আমার কাছে সে তার টাকার জন্যও আসে নাই
কিন্তু সে মার খাওয়ার জন্য কেনোই বা এসেছে?
আব্দুল্লাহ– ভাই আমি মুসলিম হিসেবে এতোটা কঠোর ও বাজে ব্যবহার করা আমার মোটেও উচিত হয়নি
আর ভাই টাকা আমার প্রয়োজন নেই, হয়তো তুমি টাকা গুলো ভেঙে ফেলেছো
কিন্তু ভাই আমি তা সদকা করে দিলাম
আর নাইতো দেখা যাবে হাশরের মাঠে আল্লহ তোমায় আটকিয়ে দিবে আর আমার টাকার জবাব চাইবে, তখন কিভাবে দিবে?
তাই ভাই মাফ করে দিয়েছি আমি টাকাটা
রানা– ভাই তোমার কথা তো আমি কিছুই বুঝছি না তোমার সম্পর্কে যা শুনেছি আর সকালে তুমি যা দেখালে এতে তো এখন এই কথাগুলো আমি মোটেও আশা করিনি?
আব্দুল্লাহ– ভাই আমার ব্যপারে যা শুনেছো তা অতীত আর তা তুমি ভুলে যাও আমি এখন যেমন তেমনই ভাবো আমায় ভাই
রানা কিছু বলে না
শুধু আব্দুল্লাহর ব্যবহার দেখে তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে
আব্দুল্লাহ– ভাই তুমি আমায় মাফ করে দাও
মুসা– দেখো ভাই রানা আসলে মুসলিম হিসেবে আমাদের যেরকম হওয়া উচিত আমরা সেই রকম হতে পারছি না
কিন্তু যারা চেস্টা করে তারা পারে
আবার দেখা যায় তাদেরকেও আটকানোর জন্য একটা দল কাজ করে
আসলে সকালে আব্দুল্লাহর বন্ধুরা তার এই অবস্থা দেখেও তাকে সাহায্য করলো না
কেনো জানো?
কারণ হচ্ছে আব্দুল্লাহ এখন হুজুর হয়ে গেছে
তাদের সাথে আর মিশে না তাদেরকে আর আজেবাজে কিছু খাবারের দাওয়াত দেয়না তাই
রানা– ভাই আমি আসলেই তোমাদের ব্যবহার দেখে অবাক হয়ে গেলাম,, অন্যায়টা ছিলো আমার কিন্তু তবুও তোমরা…….
মুসা– ভাই একজন মুসলিমের আচার-আচরণ কোমল হবে এটাই তো স্বাভাবিক
রানা– ওও
মুসা– হুম
রানা,,,, আব্দুল্লাহর কাছ থেকে নেওয়া টাকাগুলো দিয়ে দেয় আর বলে
ভাই তোমায় আমি মাফ করেছি আর তুমিও আমায় মাফ করে দিও কিছু মনে কইরো না ভাই,,,
আব্দুল্লাহ– জাযাকাল্লহু খইরন ভাই
রানা– হুম ভাই
এরপর মুসা ও আব্দুল্লাহ এসে পড়ে রানা তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে
তারা বাসায় ফিরে আসে
আব্দুল্লাহর মনটা আগের থেকে একটু ভালো হয়
সামনে আব্দুল্লাহর বিয়ে
মুসাও খুব খুশি কারণ তার বন্ধুর বিয়ে
সময়টা খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে
এইদিকে আব্দুল্লাহর কাজও ঠিক হয়ে গেছে
দেখতে দেখতে আজ সেপ্টেম্বরের ২৯ তারিখ
আব্দুল্লাহর আর মাত্র ১ দিন পরে বিয়ে
আব্দুল্লাহ নিজের মতো করে সবাইকে বলেছে
আব্দুল্লাহ তার বন্ধুদেরকেও বলে
কিন্তু তারা কেও আসতে চায় না
যখন শুনেছে আব্দুল্লাহর বউকে তারা দেখতে পারবেনা
তার বিয়েতে কোনো গান-বাজনা, নাচা-নাচি ইত্যাদি কিছুই হবে না তাই তারা আসতে নাকজ করে দেয়।
.
.
.
.
.
.
.
.~আজ ১ ই অক্টোবর ~
আব্দুল্লাহর বিয়ে
আব্দুল্লাহর বিয়েটা আর ৫/১০ টা সাধারন বিয়ের মতো নয় যে, হারাম জিনিস থাকবে
সকালে আব্দুল্লাহ তার বাবা ও তার মা বের হয়ে যায়
ঘরে বউ আনার জন্য
সেখানে বিয়েটা সম্পুর্ন হয়
সেখানের মাসজিদের ইমাম উপস্থিত থাকে তিনিই বিয়েটা সম্পূর্ণ করে
তারা গিয়ে বউ নিয়ে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়
এইদিকে খাবারেরও ঝামেলাটা শেষ প্রায়
আব্দুল্লাহ এটা কখনোই চায় না যে
সে তার বউকে প্যান্ডেলের নিচে বসিয়ে রাখবে
আর মানুষ আসবে ও তার বউকে দেখে চলে যাবে
তাই আব্দুল্লাহ দেরি করেই আসে
মুসা ছেলেদের খাবারের দায়িত্বে ছিলো
তারা বাহিরে বসে খাবার খেয়েছে
আর মেয়েদের জন্য ঘরের ভিতরে পর্দা সহকারে আয়োজন করা হয়েছিলো।
আব্দুল্লাহ বাড়ি ফিরে আসে
আবিহা রুমে গিয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করে নেয়
আব্দুল্লাহও নামাজ শেষ করে বাহিরে আসে
বাহিরে আসার পরে মুসা এসে আব্দুল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে বলতে থাকে
بَارَكَ اللهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِيْ خَيْرٍ.
উচ্চারণঃ- বা-রাকাল্ল-হু লাকা ওয়াবা-রকা ‘আলাইকা ওয়াজামা’আ বাইনাকুমা ফী খইর।
অর্থাৎ, আল্লহ তোমার প্রতি বর্কত বর্ষণ করুন, তোমাকে প্রাচুর্য দান করুন এবং তোমাদের উভয়কে মঙ্গলের মাঝে একত্রিত করুন।
(আবু দাঊদ, তিরমিযী, আদাবুয যিফাফ ১৭৫পৃঃ)
মুসা খুব খুশি হয়
আব্দুল্লাহ একটু সরম পায়
এরপর মুসা আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে
এর মধ্যেই সেখানে সেই হুজুরটা উপস্থিত
যে কিনা আব্দুল্লাহকে আলোর পথের সন্ধান দিয়েছিলো
সেও এসে আব্দুল্লাহকে বলে-
بَارَكَ اللهُ لَكَ وَبَارَكَ عَلَيْكَ وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِيْ خَيْرٍ
আব্দুল্লাহ কিছুটা সরম পায়
অতঃপর আব্দুল্লাহ হুজুরের সাথে কোলাকুলি করে
নোটঃ
(আক্দের পর হাত তুলে জামাআতী (সাধারণ) দুআ। আক্দের পূর্বে বা পরে মীলাদ (জামাআতী দরূদ) পড়া, বরের দুই রাকআত নামায পড়া, উঠে মজলিসের উদ্দেশ্যে সালাম ও মুসাফাহা করা, নিজের হাতে ইমাম, উকীল ও সাক্ষীদেরকে ওলীমাহ (?) দেওয়া, শরবত ও পান হালাল করা, আক্দে তিন-তিন বার কবুল করানো, বরকে পশ্চিমমুখে বসানো, মাথায় টুপী জরুরী মনে করা ইত্যাদি বিদআত।)
(ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৭১৪)
তারা বসে গল্প করছিলো
সেখানে রানাও উপস্থিত ছিলো আরো
অনেকেই ছিলো সেখানে
এশার নামাজ পরে মুসা হুজুর তারা চলে যায়
আব্দুল্লাহ অনেক বলে রাতে থেকে যেতে কিন্তু তারা চলে যায়
রাত প্রায় ৯ঃ৩০ টা বাজে
আসতে আসতে লোকজনের ভিড় কমছে
সবাই চলে যাচ্ছে যে যার বাসায়
আবিহা রুমে বসে আছে তার সাথে
আরো অনেকে আছে তারা কথা বলছে
আব্দুল্লাহ বাহিরে বসে থাকে একা
আর ভাবতে থাকে
আজকে আমার বিয়েতে আমার একটি বন্ধুও আসলো না।
অথচ তারা আমায় ছাড়া কোথাও যেতো না
আমি যখনই আসতে বলতাম তারা তখনই চলে আসতো
যেখানে বলতাম সেখানেই যেতো
কিন্তু আজ!
রাত প্রায় ১১ টা বাজে
আব্দুল্লাহর বাসায় এখন কোনো মানুষের ভিড় নেই
আব্দুল্লাহ তার বাবা ও মায়ের সাথে কথা বলছে
👉মায়াজাল (ইসলামিক গল্প)-
👉শ্যামপরী (ইসলামিক গল্প)-
👉অপেক্ষা (ইসলামিক গল্প)-
👉আবৃত মুক্তা (ইসলামিক গল্প)-
👉বেহেশতী আলোয় আলোকিত মন্দ মানুষ (ইসলামিক গল্প)-
পর্বঃ- ১৪
আবিহা রুমে বসে আছে তার সাথে
আরো অনেকে আছে তারা কথা বলছে
আব্দুল্লাহ বাহিরে বসে থাকে একা
আর ভাবতে থাকে
আজকে আমার বিয়েতে আমার একটি বন্ধুও আসলো না।
অথচ তারা আমায় ছাড়া কোথাও যেতো না
আমি যখনই আসতে বলতাম তারা তখনই চলে আসতো
যেখানে বলতাম সেখানেই যেতো
কিন্তু আজ!
রাত প্রায় ১১ টা বাজে
আব্দুল্লাহর বাসায় এখন কোনো মানুষের ভিড় নেই
আব্দুল্লাহ তার বাবা ও মায়ের সাথে কথা বলছে
রাত প্রায় ১১ঃ৩০ টা বাজে
আব্দুল্লাহ তার ঘরে যায়
ঘরে ঢুকেই আব্দুল্লাহ সালাম দেয়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
আবিহা– ওয়া ‘আলাইকুমুস-সালামু সালাম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
আব্দুল্লাহ আবিহার দিকে যায়
আবিহার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়
আবিহা মাথা নিচু করে বসে থাকে
আব্দুল্লাহ তার ডান হাতটি আবিহার কপালের একটু উপরে রাখে
আবিহা লজ্জায় একেবারে লাল হয়ে যায়
এখনো আবিহার মুখ ঢাকা
আব্দুল্লাহ আবিহার মাথায় হাত রেখে বলতে থাকে
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ
উচ্চারণঃ আল্লহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খইরিহা ওয়া খইরিমা ঝাবালতাহা ‘আলাইহি; ওয়া আ’উজুবিকা মিন সাররিহা ওয়া সাররিমা ঝাবালতাহা আলাইহি।
অর্থঃ “হে আল্লহ! আমি আপনার কাছে এর মধ্যকার কল্যাণ এবং এর মাধ্যমে কল্যাণ চাই এবং তার মধ্যে নিহিত অকল্যাণ ও তার মাধ্যমে অকল্যাণ থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই”।
‘আমর ইবনু শুআইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ কোন নারীকে বিয়ে করে অথবা কোন দাসী ক্রয় করে তখন সে যেন বলেঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এর মধ্যকার কল্যাণ এবং এর মাধ্যমে কল্যাণ চাই এবং তার মধ্যে নিহিত অকল্যাণ ও তার মাধ্যমে অকল্যাণ থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাই”। আর যখন কোন উট কিনবে তখন যেন সেটির কুঁজের উপরিভাগ ধরে অনুরূপ দু’আ করে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, আবূ সাঈদের বর্ণনায় রয়েছেঃ অতঃপর তার কপালের চুল ধরে বলবে। স্ত্রী এবং দাসীর ব্যাপারেও বরকতের দু’আ করবে।
[সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৬০]
আবিহা– আমিন
আব্দুল্লাহ– ছুম্মা আমিন,,,,,,,আসুন নামাজে দাঁড়িয়ে যাই
আবিহা– জ্বি চলুন।
আব্দুল্লাহ জায়নামাজ দুটি বিছায়
আব্দুল্লাহ সামনে দাঁড়ায় আর আবিহা তার পিছনে দাঁড়ায় আব্দুল্লাহর সাথে আবিহা জামাতে নামাজ পড়ছে
আব্দুল্লাহ একটু উচ্চস্বরে কুরআন তিলাওয়াত শুরু করে আর আবিহাও শুনতে থাকে
দুইজনে জামাতে নামাজ পড়ছে
আব্দুল্লাহ সূরা ফাতিহার পড়ে সূরা আর-রহমান পড়া শুরু করে
আবিহার কষ্ট হবে ভেবে আব্দুল্লাহ সূরা আর রহমানের ৫৯ আয়াত পর্যন্ত পড়ে রুকুতে চলে যায়
আর ২য় রাকাতে আব্দুল্লাহ সূরা ফাতিহার পরে সূরা আবাসা পড়তে থাকে
আবিহাও শুনতে থাকে
নামাজ শেষ দুইজনেই সালাম ফিরায়
এরপর আব্দুল্লাহ একটু উচ্চুস্বরে এই
দু’আ করছে
اَللّهُمَّ بَارِكْ لِىْ فِىْ أَهْلِىْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِىَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَا جَمَعْتَ بِخَيْرٍ و فَرِّقْ بَيْنَنَا إِذَا فَرَّقْتَ إِلَى خَيْرٍ
উচ্চারণঃ আল্লহুম্মা বা-রিকলী ফী আহলী, ওয়া বা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লহুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখইর, ওয়া ফাররিক্ব বাইনানা ইযা ফাররকতা ইলা খইর।
অর্থঃ অর্থ: “হে আল্লহ! আপনি আমার জন্য আমার পরিবারে বরকত দিন এবং আমার ভিতরেও বরকত দিন পরিবারের জন্য। হে আল্লহ! আপনি তাদের থেকে আমাকে রিযিক দিন আর আমার থেকে তাদেরকেও রিযিক দিন। হে আল্লহ! আপনি আমাদের যতদিন একত্রে রাখেন কল্যাণেই একত্রে রাখুন। আর আমাদের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিলে কল্যাণের পথেই বিচ্ছেদ ঘটান।”
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রঃ) বলেন, স্ত্রী স্বামীর কাছে গেলে স্বামী দাঁড়িয়ে যাবে এবং স্ত্রী তার পিছনে দাঁড়াবে। অতঃপর তারা একসঙ্গে দুই রাক‘আত সালাত আদায় করবে এবং বলবে:
اَللّهُمَّ بَارِكْ لِىْ فِىْ أَهْلِىْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِىَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَا جَمَعْتَ بِخَيْرٍ و فَرِّقْ بَيْنَنَا إِذَا فَرَّقْتَ إِلَى خَيْرٍ
[(তাবারানী, মু‘জামুল কাবীর, হা/৮৯০০; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/৭৫৪৭; সিলসিলাতুল আছার আছ-ছহীহাহ হা/৩৬১; আদাবুয যিফাফ, পৃঃ ২৪।)(মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক) ]
আবিহা এবারও আমিন বললো
আব্দুল্লাহ আরো অনেক দু’আ করলো ও আবিহা আমিন আমিন বলতে লাগলো।
!!একটু কিছু মাস-আলা জেনে নেই!!
নফল নামাজ যদি পড়তে রাত হয় তাহলে উচ্চস্বরে কুরআন তিলাওয়াত করা এবং যদি দিন হয় তাহলে আস্তে আস্তে পড়া।
নফল নামাজে এভাবে পড়াই সুন্নাহ।
বাসর রাতে নব দম্পতীর দু রাকাআত নামায পড়ার ব্যাপারে রসুল সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোন হাদীস পাওয়া যায় না।
তবে একাধিক সাহাবীর আমল পাওয়া যায়। তাই অনেক আলেমগণ বলেছেন, এই দু রাকাআত নামায পড়া মুস্তাহাব।
এ ব্যাপারে সাহাবীদের আমল সম্পর্কে সহীহ সনদে দুটি হাদীস উল্লেখ করা হল:
🌀 ১. আবু উসাইদ . এর গোলাম আবু সাঈদ হতে বর্ণিত। তনি বলেন, আমি গোলাম থাকা অবস্থায় বিয়ে করলাম এবং কয়েকজন নবী সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাহাবীকে ডাকলাম। তাদের মধ্যে ছিলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ, আবু যর এবং হুযায়ফা র.।
তিনি বলেন, আমি তাদেরকে বললাম, আমাকে (আমার করণীয় সম্পর্কে) শিক্ষা দিন। তারা বললেন,
إذا أدخل عليك أهلك فصل عليك ركعتين ، ثم سل الله تعالى من خير ما دخل عليك ، وتعوذ به من شره ، ثم شأنك وشأن أهلك
“যখন তোমার ঘরে তোমার স্ত্রীকে প্রবেশ করানো হবে তখন তুমি দু রাকাআত সালাত আদায় কর এবং তোমার ঘরে যে এসেছে আল্লাহর নিকট তার কল্যাণ প্রার্থনা কর এবং অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা কর। তারপর তুমি এবং তোমার স্ত্রীর যা করণীয় কর।”
[(মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৩/৪০১ এবং মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৬/১৯১, শাইখ আলবানী রহ. বলেন, আবু সাঈদ পর্যন্ত এ হাদীসের সনদ সহীহ)]
🌀 ২) শাকীক রহ. তবে বর্ণিত, এক লোক আব্দুল্লাহ (অর্থাৎ ইবনে মাসঊদ) এর নিকট আগমন করলেন (তিনি আবু জারীর নামে পরিচিত)। তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা কে বললেন, আমি এক যুবতী মেয়ে বিয়ে করেছি। কিন্তু আমার আশংকা হচ্ছে, সে আমাকে অপছন্দ করবে (বা আমার প্রতি রাগ-গোস্বা করবে)।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ বললেন,
ن الإلف من الله ، والفرك من الشيطان ، يريد أن يكره إليكم ما أحل الله لكم ، فإذا أتتك فمرها أن تصلي وراءك ركعتين
“ভালবাসা ও সুসম্পর্ক আল্লহর পক্ষ থেকে হয় আর ঘৃণা বা রাগ-গোস্বা হয় শয়তানের পক্ষ থেকে। কারণ সে আল্লহর হালাল করা বিষয়ে তোমাদের মাঝে ঘৃণা সৃষ্টি করতে চায়। সুতরাং তোমার স্ত্রী তোমার কাছে আসলে তাকে আদেশ করবে, সে যেন তোমার পেছনে দু রাকাআত সালাত আদায় করে।”
[( মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ৩/৪০২ এবং মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক ৬/১৯১, ত্বাবারানী কাবীর ৯/২০৪ শাইখ আলবানী রহ. বলেন, হাদীসের সনদ সহীহ- আদাবুয যাফাফ পৃষ্ঠা ২৪)]©
উক্ত হাদীসদ্বয় দ্বারা অনেক আলেম, বাসর রাতে নতুন স্বামী-স্ত্রীর কর্তৃক দুরাকাআত নামায আদায় করাকে মুস্তাহাব বলেছেন।
এখানে মনে রাখতে হবে যে বাসর রাতের নামাজ মুস্তাহাব বা পছন্দনীয়!!
কেও এই নামাজকে যদি ফরজ, সুন্নাহ, ওয়াজিব বা খুব জরুরি মনে করেন তাহলে তা বিদআতে পরিনত হবে।
তাই মুস্তাহাব মেনেই আমল করবো ইংশা-আল্লহ।
আবিহা খাটের উপরে বসা
আবিহার মুখ এখন খোলা
আব্দুল্লাহ আবিহার সামনে এসে বসে
আব্দুল্লাহ আবিহার সামনে বসে বলে
আব্দুল্লাহ– “তুমি আমায় ক্ষমা করা শেখো, তাহলে আমার স্থায়ী ভালোবাসা পাবে। আমি যখন প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হই তখন তুমি কথা বলো না।
কারণ আমি দেখেছি, ভালোবাসা ও ঘৃণা কোনো বুকে একসঙ্গে হলে; ভালোবাসা টিকতে পারে না। “
[ইমাম আবুল আসওয়াদ দুওয়ালি রহমতুল্লহি ‘আলাইহি বড় চমৎকার একটি কথা বলেছেন, বিবাহিত প্রত্যেকের এর ওপর আমল করা উচিত। পঙক্তি দুইটি ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি -এর খুব পছন্দ ছিল।]
স্ত্রী যদি এর ওপর আমল করতে পারে, তাহলে তার প্রতি স্বামীর ভালোবাসা স্থায়ী হবে। নিজের রবকে সন্তুষ্ট করতে পারবে। ধৈর্যধারণকারীণি-দের সওয়াব লাভ করবে।
আবিহা– জ্বি ইংশা-আল্লহ মনে থাকবে আমার।
আব্দুল্লাহর পাশেই টেবিলে থাকা মিষ্টির প্লেটটি হাতে নেয়
নিয়ে একটি মিষ্টি আবিহার মুখের সামনে ধরে
আবিহা লজ্জাবোধ করে কিন্তু তবুও সে একটু মিষ্টি খেয়ে নেয়।
আবিহা আব্দুল্লাহর হাত ধরে মিষ্টিটা তার মুখে তুলে দেয়
আর আব্দুল্লাহও তা খেয়ে নেয়
এভাবেই শুরু হয় তাদের প্রথম খাইয়ে দেওয়ার চ্যাপ্টার।
আব্দুল্লাহ ও আবিহা দুজনেই আবার দুজনের সাথে পরিচয় হয়
এরপর আব্দুল্লাহ ও আবিহা বেলকনিতে গিয়ে একটু সময় কাটায়
আব্দুল্লাহ আবিহার সাথে অনেক গল্প করে
আর আবিহাও শুনতে থাকে ও বলতে থাকে
এভাবে তাদের একে অপরের সাথে ভালো পরিচয় সৃষ্টি হয়ে যায় ও ভালোবাসা বেড়ে যায়।
স্বামী-স্ত্রীর প্রথম সাক্ষাতে করণীয়ঃ-
মুমিন মুসলমানের বিয়ের পর প্রথম সাক্ষাতে স্বামী-স্ত্রীর বেশকিছু করণীয় রয়েছে, যা পালন করা খুবই জরুরি। এতে রয়েছে বরকত ও কল্যাণ। তাহলো-
১. পরস্পরের জন্য দু’আ করা।
২. দু’আর পর একে অপরকে দুধ বা মিষ্টি জাতীয় খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা।
৩. পরস্পর ভালোবাসা ও হৃদ্যতাপূর্ণ কথাবার্তা বিনিময় করা।
৪. পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত হওয়া।
৫. মনের অসংকোচ, ভয়ভীতি, হতাশা ও বিষণ্নতা কাটিয়ে উঠতে খোশ গল্প করা।
৬. আন্তরিকতা ও ভালোবাসাপূর্ণ পরিবেশ কিছু সময় অতিবাহিত করা।
এরপর তারা ঘরে গিয়ে বাকি সময় কাটায়।
আব্দুল্লাহ ও আবিহার নতুন এক জীবন শুরু হয়!
তাদের সাংসারিক জীবন শুরু হয়!
{প্রথম রাতে আরো অনেক বিশেষ বিশেষ দু’আ ও করণীয় রয়েছে
এগুলো আমরা জেনে নেওয়ার চেস্টা করবো ইংশা-আল্লহ
খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ ও দু’আ রয়েছে }
👉জিবরাঈল (আঃ) আল্লাহ তায়ালাকে জিজ্ঞাসা করলেন আল্লাহ আপনি কিসে খুশি হন ?-
👉রাণী বিলকিসের ইসলাম গ্রহণের গল্প-
👉বাদশাহ হারুনুর রশিদের রাণী ছিল চারজন (ইসলামিক গল্প)-
👉খলীফা হারুনুর রশীদ এর শাসন আমলের একটি ঘটনা-
👉খলিফা হারুনুর রশিদ এর একটি শিক্ষনীয় ঘটনা-
পর্বঃ- ১৫
এরপর তারা ঘরে গিয়ে বাকি সময় কাটায়।
আব্দুল্লাহ ও আবিহার নতুন এক জীবন শুরু হয়!
তাদের সাংসারিক জীবন শুরু হয়!
ফজরের আজান হয়ে যায় আব্দুল্লাহ উঠে পরে
আবিহা শুয়ে আছে
আব্দুল্লাহ আবিহার মাথায় আসতে করে হাত বুলিয়ে সালাম দিতে থাকে
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া র’হমাতুল্লহ
আবিহা তারাহুরো করে উঠে পরে
আব্দুল্লাহ– আস্তে আস্তে এতো তারাতারি কিসের জন্য?
আবিহা– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া র’হমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ,,,,,,,না ইয়ে মানে
আব্দুল্লাহ– হুম ইয়ে মানে নেই
আবিহা মাথা নিচু করে রাখে
কিছুক্ষন পরে আব্দুল্লাহ মাসজিদের জন্য বের হয়ে যায়
আবিহাও ঘরে বসে নামাজ শেষ করে ফেলে
মাসজিদে নামাজ শেষে ও আমলের শেষে মুসার সাথে দেখা আব্দুল্লাহর
মুসা– আসসালামু ‘আলাইকুম
আব্দুল্লাহ– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া র’হমাতুল্লহ
মুসা–………………. (একটু মুচকি হাসতে থাকে)
আব্দুল্লাহ– কি ভাই হাসতেছো কেনো?
মুসা– না এমনি
আব্দুল্লাহ– ওওও
মুসা– হুম আল্লহ হাফিজ ভাই যাও বাসায় যাও
আব্দুল্লাহ– হুম,,, কিছুই বুঝলাম না সব সময়ই তো আমি বাসায় যাই তাহলে আজকে কেনো তুমি এমন ভাবে বলছো?
মুসা– না কিছু না তুমি বাসায় যাও ভাবি হয়তো তোমার জন্য অপেক্ষা করছে!
আব্দুল্লাহ– ও…. এই কথা
মুসা– হুম
আব্দুল্লাহ– তুমিও ভাই মুসা বুঝলা….. (হেসে)
মুসা– হুম বুঝেছি এখন যাই
এরপর মুসা চলে যায় আর আব্দুল্লাহও বাসায় চলে আসে
আব্দুল্লাহ বাসায় এসে দেখে যে আবিহা কুরআন তিলাওয়াত করছে
আব্দুল্লাহ চুপ্টি করে আবিহার পাশে গিয়ে বসে শুনতে থাকে
আব্দুল্লাহ মনে মনে বলতে থাকে….
আহ!
কি মায়াবি কন্ঠ
শুধু শুনতেই মনে চায়
আহ!
কি তার রুপ একেবারে পাগল হয়ে যাওয়ার মতো!
কি তার চাহোনি মন কেড়ে যায়!
আহ!
তার চোখের তো কোনো জবাবই নেই
কি মায়াবি ওই দুইটি চোখ
কাজল কালো চোখ তার
আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তাই তো
কুরআনের ৩০নং পারায় অবস্থিত
৯৫ তম সূরা
সূরা আত – ত্বীন এর
৪ নম্বর আয়াতে বলেন
لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡۤ اَحۡسَنِ تَقۡوِیۡمٍ ۫﴿۴﴾
অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে।
সুবহানাল্লহ
সুবহানাল্লহ
সুবহানাল্লহি ওয়াবি ‘হামদিহি
ইসসস প্রেমে পরে গিয়েছি যে আমি তার!!
আব্দুল্লাহ আবিহার কুরআন তিলাওয়াত শুনতে থাকে আহ খুব ভালো লাগছে তার শুনতে
হঠাৎ আবিহার আব্দুল্লাহর দিকে চোখ পরে সে
আয়াতে থেমে আব্দুল্লাহর দিকে তাকায়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া র’হমাতুল্লহ
আবিহা– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া র’হমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
আব্দুল্লাহ– কি হলো থামলেন কেনো? পড়ুন খুভ ভালো লাগছে শুনতে
আবিহা– আপনি কখন আসলেন?
আব্দুল্লাহ– এইতো প্রায় ২০ মিনিট হবে
আবিহা– ওও এতো সময় ধরে এখানেই ছিলেন?
আব্দুল্লাহ– কি জানি ঠিক জানি না মনে হয় অন্য কোথাও হারিয়ে গিয়েছিলাম
মাশা-আল্লহ কি সুন্দর কন্ঠ আপনার!
আবিহা– জাযাকাল্লহু খইরন
আব্দুল্লাহ– ওয়া আনতুম ফা জাযাকুমুল্লাহু খইরন
আবিহা– আপনি পড়েন না ফজরের পড়ে কুরআন?
আব্দুল্লাহ– হুম পড়িতো আলহামদুলিল্লাহ
আবিহা– তাহলে পড়ুন এখন
আব্দুল্লাহ– মাসজিদ থেকে তিলাওয়াত করে এসেছি।
আবিহা– ওও কালকে থেকে ইংশা-আল্লাহ বাসায় এসে করবেন ঠিক আছে? আমি শুনবো
আব্দুল্লাহ– জ্বি ইংশা-আল্লাহ,,,,, নিন আবার শুরু করুন তিলাওয়াত আমি শুনি
আবিহা– নাহ এখন গিয়ে সকালের নাস্তা করতে হবে
আব্দুল্লাহ– ওওওহ বাহ! কি কাজের
আবিহা– হুম আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো লাগে আমার কাজ করতে
আব্দুল্লাহ– ওওও আচ্ছা শুনুন
আবিহা– জ্বি বলুন
আব্দুল্লাহ– যদি কোনো সমস্যা হয় বা কিছু প্রয়োজন হয় তাহলে নির্দিধায় আমাকে বলবেন ওকে?
আবিহা– জ্বি ইংশা-আল্লাহ
আব্দুল্লাহ– ইংশা-আল্লাহ
আবিহা– আচ্ছা একটা কথা বলি?
আব্দুল্লাহ– জ্বি বলুন
আবিহা– আপনি খুব সুন্দর মাশা আল্লাহ!
এই বলে আবিহা উঠে চলে যায় রান্না ঘরে
গিয়ে নাস্তা তৈরি করতে থাকে
আব্দুল্লাহ একটু লজ্জা পায়
আব্দুল্লাহ মনে মনে বলতে থাকে
আপনিও তো খুব সুন্দর মাশা-আল্লাহ
প্রেমে পরে গিয়েছি আমি আপনার প্রথম দেখাতেই!
আবিহা নাস্তা তৈরি করতে থাকে
আর আব্দুল্লাহ ঘরে বসে বই পড়তে থাকে
আবিহার নাস্তা করা শেষ হলে ঘরে আসে
এসে দেখে আব্দুল্লাহ বই পড়ছে
আবিহা– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া র’হমাতুল্লহ
আব্দুল্লাহ– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া র’হমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
আবিহা– আল’হামদুলিল্লাহ নাস্তা বানানো শেষ
আব্দুল্লাহ– আল’হামদুলিল্লাহ
আবিহা– আচ্ছা শুনুন
আব্দুল্লাহ– জ্বি বলুন
আবিহা– আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দিবেন,,,আর আমায় একটু বুঝিয়ে-সুঝিয়ে দিবেন ইংশা-আল্লাহ ওকে?
আব্দুল্লাহ– জ্বি ইংশা-আল্লাহ,,,,,,,,, আর শুনুন
আবিহা– জ্বি……
আব্দুল্লাহ– গতকালের কথাটা সব সময় মাথায় রাখবেন ইংশা-আল্লাহ ওকে?
আবিহা– জ্বি ইংশা-আল্লাহ
আব্দুল্লাহ– “তুমি আমায় ক্ষমা করা শেখো, তাহলে আমার স্থায়ী ভালোবাসা পাবে। আমি যখন প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হই তখন তুমি কথা বলো না।
কারন আমি দেখেছি, ভালোবাসা ও ঘৃণা কোনো বুকে একসঙ্গে হলে; ভালোবাসা টিকতে পারে না। “
এই কথাটা ইমাম শাফেয়ি (রহি.) তার আহলিয়াকে (বউ বা বিবি বা স্ত্রী) বলেছিলো।
আর যখন তার আহলিয়া মারা যায় তখন তিনি বলেছিলেন যে প্রায় ৪০ বছর আমাদের সাংসারিক জীবন কিন্তু কখনোই আমরা ঝগড়া করি নাই
আবিহা– আল্লহু আকবার
আব্দুল্লাহ– হুম ভাবা যায়?,,,, তাই আপনিও এই কথাটা মনে রাখবেন,,, আমি যখন রাগান্বিত অবস্থায় থাকবো তখন আপনি আমার সাথে কথা বলবেন না ওকে?
আবিহা– জ্বি ইংশা-আল্লাহ
আব্দুল্লাহ– আর আপনি যখন রাগান্বিত অবস্থায় থাকবেন তখন হয়তো আপনার রাগ যেনো ভেঙে যায় তা করবো আর নাইতো আমিও কথা বলবো না ইংশা-আল্লাহ ওকে?
আবিহা– জ্বি ইংশা-আল্লাহ।
আব্দুল্লাহ– বসুন এখানে গল্প করি আমরা
আবিহা– জ্বি
এরপর তারা দুজন মিলে গল্প করতে থাকে
একে অপরকে জানার বুঝার চেস্টা করতে থাকে
দুজন দুজনকে চেনার জন্য জানার জন্য এই পদ্ধতিটা খুবই ভালো
একটু সময় দিলেই হয়ে যায় আল’হামদুলিল্লাহ!
👉আবু দাউদ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস-
👉সহীহ তিরমিজিঃ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস-
👉মিশকাতঃ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস-
👉খুবই মূল্যবান ৩০ টি ছোট হাদিস:-
👉রাসুল (সাঃ) এর চল্লিশটি হাদিস-
পর্বঃ- ১৬
আব্দুল্লাহ– আর আপনি যখন রাগান্বিত অবস্থায় থাকবেন তখন হয়তো আপনার রাগ যেনো ভেঙে যায় তা করবো আর নাইতো আমিও কথা বলবো না ইনশা আল্লাহ ওকে?
আবিহা– জ্বি ইনশা আল্লাহ।
আব্দুল্লাহ– বসুন এখানে গল্প করি আমরা
আবিহা– জ্বি
এরপর তারা দুজন মিলে গল্প করতে থাকে
একে অপরকে জানার বুঝার চেস্টা করতে থাকে
দুজন দুজনকে চেনার জন্য জানার জন্য এই পদ্ধতিটা খুবই ভালো
একটু সময় দিলেই হয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহর মা এসে আব্দুল্লাহকে ডাক দেয়
মা– আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– জ্বি মা আসো
আব্দুল্লাহর মা ঘরে প্রবেশ করে
আবিহা– আসসালামু আলাইকুম
মা– ওয়া’আলাইকুমুস সালাম
আবিহা– বসুন মা
মা– হুম,,,,,,,,,,,কেমন লাগছে মা?
আবিহা– জ্বি আলহামদুলিল্লাহ (মাথা নিচু করে)
মা– আলহামদুলিল্লাহ,,,,,, শুনো মা,,,,,,,, আমার ছেলেটার ভালো করে একটু খেয়াল রেখো,,,,,
আবিহা– জ্বি মা ইনশা আল্লাহ
মা– আব্দুল্লাহ একটু অন্যরকম ছেলে
এর মধ্যেই আব্দুল্লাহ গলা ঝারা দিয়ে কেশে উঠে
আব্দুল্লাহ– আমি অন্যরকম বলতে কি রকম মা?
মা– অন্যরকম মানে অন্যরকম
আবিহা– মা নাস্তা করবেন না?,,,,,আমি সব কিছু রেডি করে রেখে এসেছি
মা– হুম আসো নিচে আসো
আবিহা– জ্বি চলুন মা
এরপর আবিহা ও তার মা নিচে চলে যায়
আব্দুল্লাহ ঘরে বসে থাকে আর ভাবতে থাকে আমি কি
রকম?
নাস্তা শেষ করে আব্দুল্লাহ ও আবিহা নিজেদের ঘরে আসে।
আব্দুল্লাহ ফোনে কথা বলে আর আবিহা ঘর গোছাচ্ছে।
আব্দুল্লাহ ও আবিহা এতো অল্প সময়েই এতো কাছাকাছি চলে গেছে যেনো মনে হয় তাদের বিয়ে আরো অনেক আগে হয়েছে এবং তারা অনেক মাস যাবত সংসার করছে!!
এভাবে চলে যায় দুই সপ্তাহ
আব্দুল্লাহর কাজের জন্যও ট্রেনিং চলছে
খুব শিগ্রই কাজে জইন করবে আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ ও আবিহা খুবই খুশি
এ দিকে মুসারও বিয়ের কথা চলছে তারও আর একা থাকতে ভালো লাগে না।
আব্দুল্লাহ ও মুসা আছরের পরে বাহিরে হাটছে
পতিমধ্যে তাদের সাথে রানার দেখা হয়
কিন্তু রানা একা ছিলো না তার সাতগে একজন মেয়ে ছিলো বোরখা পরা
রানা আব্দুল্লাহ ও মুসাকে দেখে তাদের কাছে আসে
এসে সালাম দেয় তারাও সালামের উত্তর দেয়
আব্দুল্লাহ ও মুসা মনে করে রানার বোন সে
কিন্তু রানা তাদেরকে অবাক করে দিয়ে বলে যে,
ভাই এটা তোমাদের হবু ভাবি
রানার মুখে একথা শুনে তারা হতদম্ভ হয়ে যায়
আর ভাবতে থাকে
রানা তো আগের থেকে অনেক বেশিই চেঞ্জ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ সে এখন পাচঁ ওয়াক্ত নামাজও পড়ে কিন্তু সে বিয়ের আগে একজন বেগানা নারীর সাথে হাত ধরে রাস্তা হাটছে কিভাবে?
আব্দুল্লাহ এবার রানাকে বলে
আব্দুল্লাহ– ভাই রানা একটা কথা বলি?
রানা– হুম বলো
আব্দুল্লাহ– ভাই তুমি হয়তো জানো না যে বিয়ে আগে প্রেম ভালোবাসা সবই হারাম এতে যেনা হয়!
রানা– আমি তো ভাই যেনা করছি না!
আব্দুল্লাহ– ভাই এইযে যে তুমি তার সাথে কথা বলছো তার হাত ধরছো এবং তার দিকে তাকাচ্ছো এটাও তো যেনা।
রানা– কিন্তু আমি তো খারাপ কিছু ভাবছি না!
আর তাছারা সে এখন পর্দাও করে আমার চেঞ্জ দেখে সে এখন নিজেকেও পাল্টে ফেলেছে
আব্দুল্লাহ– ভাই পর্দা করলেই দ্বীনদ্বার হওয়া যায় না!
রানা– আমি তো তাকেই বিয়ে করবো এটাই নিয়ত
আব্দুল্লাহ– ভাই বিয়ে তুমি যাকেই করো বিয়ের আগে তার সাথে কথা বলা দেখা করা হাত ধরা এইগুলো সবই হারাম ভাই!
হাদিসে রাসুল সা. বলেন,
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা বানী আদামের জন্য যিনার একটা অংশ নির্ধারিত রেখেছেন। সে তাতে অবশ্যই জড়িত হবে। চোখের জিনা হলো দেখা, জিহ্বার জিনা হলো কথা বলা, কুপ্রবৃত্তি কামনা ও খাহেশ সৃষ্টি করা এবং যৌনাঙ্গ তা সত্য অথবা মিথ্যা প্রমাণ করে।
ভাই একজন বেগানা নারীর হাতে হাত রেখে রাস্তা দিয়ে হাটা, রাতে দিনে ফোনে তার সাথে কথা বলা, তার দিকে তাকানো এই সবগুলোই হারাম ভাই!!
ইসলাম একটি সুন্দর ধর্ম
এখানে নারীদের অনেক সম্মান দেওয়া হয়েছে!
বোন আপনি এতো সস্তা নন যে আপনায় লোকে দেখবে
আলহামদুলিল্লাহ আপনি হয়তো আপনার এই হারাম ভালোবাসার জন্য পর্দা নামের যেই কাপড় সেটা গায়ে দিয়েছেন কিন্তু বোন পর্দা শুধু আল্লহর জন্য করতে হবে!
ভাই রানা দেখো আমরা যদি এখনই আমাদের বুকের মাঝে থাকা ভালোবাসাটা ব্যবহার করে ফেলি তাহলে বিয়ের পরে কিভাবে ভালোবাসবে নিজের স্ত্রীকে?
এখন হয়তো প্রশ্ন করবে যে আমি এখন যাকে ভালোবাসি তাকেই বিয়ে করবো তাহলেই তো আর ভালোবাসা কমবে না
কিন্তু ভাই একটু ভেবে দেখো এখন যে হারাম ভালোবাসায় ডুব দিয়ে আছো এটা একসময় আর ভালো লাগবে না
যদি তুমি তোমার হারাম দিয়ে সৃষ্টি ভালোবাসার মেয়েকে বিয়ে করো তাহলে দেখবে বিয়ের পরে সংসারে বরকত পাবে না
তখন দেখবে যে তাকে সন্দেহ হবে প্রতিটি কাজে ও কথায়!!
আর শয়তান এটাই চায়!!
কারনটা হচ্ছে বিয়ের পরে সে মোবাইল ব্যবহার করলে বা বান্ধুবিদের সাথে কোথাও গেলে তখন তোমার মনে খটকা লাগবে যে,
সে তো বিয়ের আগে তার পরিবারে বলতো যে, সে তার বান্ধুবির বাসায় যাচ্ছে কিন্তু সে আমার সাথে পার্কে যেতো, যেতো সিনেমা হলে এবং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে
এখন কি সে তা-ই করছে?
আর এখানে তোমার ভালোবাসায় শেষ হয়!!
যে ভালোবাসা হারাম দিয়ে শুরু হয় সে-ই ভালোবাসা কান্না দিয়ে শেষ হয়!
আলোবিহীন শুরু করা ভালোবাসায় কখনোই আলো আসবে না!
আমাদের ভালোবাসা তো এতো সস্তা হবার কথা নয়! এই ভালোবাসা নামক হৃদয়টায় যদি একটি বার নিজের রবকে বসাতে পারি তাহলেই হবে আর ক্ণ কিছুরই প্রয়োজন হবে না!!
আর আমার রব-ই তো প্রেমময় রব!!
وَہُوَ الۡغَفُوۡرُ الۡوَدُوۡدُ ۙ
তিনি অতি ক্ষমাশীল, অতি প্রেমময়।
—আল বুরুজ – ১৪
এই আয়াতের তাফসীরে মুফাসসীরগন লিখেছেন
কারও কারও মতে, ‘ওয়াদূদ’ বলা হয় তাকে যার কোন সন্তান নেই। অর্থাৎ যার এমন কেউ নেই যার প্রতি মন টানতে থাকবে। [ফাতহুল কাদীর]
তবে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে এর অর্থ, প্রিয় বা প্রিয়পাত্র। [ইবন কাসীর]
যার ভালবাসায় কোন খাদ নেই। যারা তাঁকে ভালবাসেন তিনিও তাদেরকে ভালবাসেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, ‘তিনি তাদেরকে ভালবাসেন আর তারাও তাঁকে ভালবাসে’। [সূরা আল-মায়েদাহ: ৫৪] তিনি এমন সত্তা যাঁকে তার ভালবাসার পাত্ররা এমন ভালবাসে যে ভালবাসার কোন উদাহরণ দেয়া সম্ভব হয় না। যার কোন তুলনা নেই। তাঁর খালেস বান্দাদের অন্তরে তাঁর যে ভালবাসা রয়েছে সেটার তুলনা কোন ভালবাসা দিয়ে দেয়া যাবে না। আর এজন্যই ভালবাসা হচ্ছে আল্লাহ্র দাসত্বের মূল কথা। যে ভালবাসার কারণে যাবতীয় ভালবাসার পাত্রের উপর সেটা স্থান করে নেয়। অন্য ভালবাসা যদি আল্লাহ্র ভালবাসার অনুগামী না হয় তবে সেটা বান্দার জন্য বিপদ ও শাস্তির কারণ হয়। [সা‘দী]
নিজের সবটুকু তো নিজের রবের জন্যই দেওয়া দরকার ছিলো আমাদের
রানার সাথে থাকা মেয়েতা বলে উঠলো
সাদিয়া– দেখুন ভাই আপনার জ্ঞান আপনার কাছেই রাখেন আমাদের বলতে হবে না!!
আমি জানি এবং দেখেছি আপনি কেমন ছিলেন আর এখন হুজুরগিরি দেখাচ্ছেন!
এই বলে রানার হাতটা টান দিয়ে রানাকে নিয়ে চলে যায়
আব্দুল্লাহ নিচের দিকেই তাকিয়ে থাকে
মুসা– আব্দুল্লাহ কি হলো? মেয়েটার কথায় কি কষ্ট পেলে?
আব্দুল্লাহ– না নাহ ভাই কি যে বলো কষ্ট পাবো কেনো? সে তো সত্যই বলেছে। তাই না?
তাছারা আমার তো কষ্ট পাবার তো কোনো কারন ই নেই যেখানে সাহাবায়কেরাম (রা.) তারা ইমান আনার পরে কতো কথা কতো নির্জাতন সহ্য করেছে
আর এখানে আমি সামান্য এইটুকু কথাতেই কষ্ট পাবো?
ভাই মুসা আমার কাছে এইগুলোকেই অনেক দামি মনে হয়!
মুসা– কেনো?
আব্দুল্লাহ– ভাই আজ আমি যতোটুকুই দাওয়াত দিচ্ছি আর এতে করে যে আমায় মানুষ বিভিন্ন কথা বলে আমার অতীতের কথা বলে খোটা দেয়
কাল হাশরে আমার এইগুলোই কাজে আসবে ইন শা আল্লহ
তখন আমি আমার রবকে ডেকে ডেকে বলতে পারবো
” হে আমার রব! আমি যখন দ্বীনের মধ্যে প্রবেশ শুরু করি এবং আপনার দ্বীনের সামান্য কিছু খেদমত করি তখন তো মি কতোই খোটা বিভিন্ন বাজে কথাবার্তা শুনেছি কিন্তু তবুও আমি আপনার দ্বীনের খেদমতে ছিলাম। আমি তো শুধু আপনায় বলেছি আমার হৃদয়ের বকর্তার কথা! অতএব হে আমার আসাস্থল আমায় আপনি ক্ষমা করুন।”
আল্লাহ আমায় ধৈর্য ধরার তাওফিক্ব দান করুক
মুসা– আমিন
এরপরে মুসা ও আব্দুল্লাহ হাটতে থাকে আর কথা বলতে থাকে
এইদিকে রানাও বাসায় চলে যায়
রানা ভাবতে থাকে আব্দুল্লাহর কথাগুলো
আসলেই তো তার কথাগুলো ঠিক
আমি আমার ভালোবাসাটাকে কেনো নষ্ট করবো?
আমার যৌবনের ইবাদত তো আমার রব পছন্দ করেন!
আমি আর ভালোবাসা টাকে কেনোই বা হারামে ফেলবো?
আমি তো আমার রবকেই চাই!
👉২৫ টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস-
👉৩০ টি গুরুত্বপূর্ণ হাদিস-
👉মা বোনদের জন্য ১৫ টি হাদিস :-
👉সাহাবাদের ২৫ টি প্রশ্ন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর উত্তর-
👉স্ত্রীর সঙ্গে করণীয় ১৬ টি সুন্নাত-(স্বামীর জন্য উপদেশ)-
👉জান্নাতি মৃত্যুর ১২ টি লক্ষণ-
পর্বঃ- ১৭
আল্লাহ আমায় ধৈর্য ধরার তাওফিক্ব দান করুক
মুসা– আমিন
এরপরে মুসা ও আব্দুল্লাহ হাটতে থাকে আর কথা বলতে থাকে
এইদিকে রানাও বাসায় চলে যায়
রানা ভাবতে থাকে আব্দুল্লাহর কথাগুলো
আসলেই তো তার কথাগুলো ঠিক
আমি আমার ভালোবাসাটাকে কেনো নষ্ট করবো?
আমার যৌবনের ইবাদত তো আমার রব পছন্দ করেন!
আমি আমার ভালোবাসা টাকে কেনোই বা হারামে ফেলবো?
আমি তো আমার রবকেই চাই!
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া র’হমাতুল্লহ
ক– অলাইকুম সালাম কে বলছেন আব্দুল্লাহ?
আব্দুল্লাহ– জ্বি আব্দুল্লহ বলছি আমি আপনি?
ক– আপনায় আমাদের অফিসে আসতে হবে
আপনাকে এখানেই থাকতে হবে।
আব্দুল্লাহ– ওহ কবে আসতে হবে ভাই?
ক– আপনি আগামী ৬ তারিখে আসবেন আর ট্রেইনিং-এ সকল কাজ দেখেছেনই তো?
আব্দুল্লাহ– জ্বি
ক– তাহলে ৬ তারিখ দেখা হবে
আব্দুল্লাহ– জ্বি ইং শা আল্লহ
আব্দুল্লাহ ফোন কেটে দেয়
ফজরের পরে মুসাকে সাথে নিয়ে
মাসজিদের ইমাম এর কাছে গিয়ে
খুব ভালোভাবে তার কাজ সম্পর্কে বলে
আর ইমাম সাহেবও তাকে বলে দেয়
যে এইভাবে এইভাবে করলে তা হারাম হবে।
আব্দুল্লাহর কাজটায় হালাল হারাম
দুটাই রয়েছে সে যদি চায় তাহলে
সে হারাম ইনকাম করে অনেক টাকা আয় করতে পারবে
আবার সে চাইলে হালাল ভাবেই ইনকাম করতে পারবে কিন্তু সেখানে হারাম এর তুলনা হালাল আয়টা কম হবে।
আব্দুল্লাহ এতেও খুশি সে
অল্প ইনকাম করবে কিন্তু কোনো
ভাবেই সে হারাম ইনকাম করবে না!
কারন হারাম ইনকাম এর শাস্তি খুবই ভয়াবহ!!
হাদিসে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন,
‘হালাল রুজি অন্বেষণ করা ফরজের পর আরেকটি ফরজ।’
-(বায়হাকি-৬/১২৮) –
হারাম রুজি ভক্ষন করা সম্পর্কেও খুব কড়াকড়ি হাদিস বর্নিত হয়েছে
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন,
‘যে দেহের গোশত হারাম খাদ্য দিয়ে গঠিত, তা বেহেশতে প্রবেশ করবে না। হারাম খাদ্য দিয়ে গঠিত দেহের জন্য জাহান্নামের আগুনই উত্তম।’
– (মেশকাত-২৬৩৪) –
আপনি হারাম খাদ্য খেয়েছেন সারা জীবন
আর আপনি আপনার রবের কাছে দু’আও করেছেন কিন্তু লোকদের শুধু এটাই বলেন যে আমার দু”আ কবুল হচ্ছে না।
মুসলিম শরিফের কিতাব সহ আরো অনেকগুলো কিতাবে একটি লম্বা হাদিস বর্ণিত হয়েছে,
হাদিসটি হলো,,,
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা পুত-পবিত্র, তিনি পুত-পবিত্র জিনিসকেই গ্রহণ করেন।
আল্লাহ তা‘আলা যে কাজ করতে রসূলদের প্রতি নির্দেশ করেছেন তদ্রূপ এই একই কাজের নির্দেশ মু’মিনদেরকেও করেছেন।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন :
‘‘হে রসূলগণ! পাক-পবিত্র হালাল রুযী খাও এবং নেক আ‘মাল কর’’
– (সূরা আল মু’মিনূন ২৩ : ৫১)।
–
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেনঃ-
‘‘হে মু’মিনগণ! আমি তোমাদেরকে যা উপজীবিকা স্বরূপ দান করেছি সেই পাক-পবিত্র বস্তুসমূহ ভক্ষণ কর’’
– (সূরা আল বাকারা ২ : ১৭২)।
অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দৃষ্টান্ত হিসেবে এক ব্যক্তির
অবস্থা উল্লেখ করে বলেন যে,
এ ব্যক্তি দূর-দূরান্তের সফর করছে,
তার মাথার চুল এলোমেলো,
শরীর ধূলাবালুতে মাখা।
এ অবস্থায় ঐ ব্যক্তি দু’ হাত আকাশের দিকে উঠিয়ে কাতর কণ্ঠে বলে ডাকছে, হে রব্! হে রব্! কিন্তু তার খাবার হারাম, পানীয় হারাম, পরনের পোশাক হারাম। আর এ হারামই সে ভক্ষণ করে থাকে। তাই এমন ব্যক্তির দু‘আ কিভাবে কবুল হতে পারে?
-[ সহীহ : মুসলিম ১০১৫, তিরমিযী ২৯৮৯, আহমাদ ৮৩৪৮, দারিমী ২৭১৭, সহীহ আল জামি‘ ২৭৪৪, সহীহ আত্ তারগীব ১৭১৭ ]-
দু’আ কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে হালাল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে!
আর নাইতো আপনি
“হে রব” “হে রব” বলে দু’আ করেই যাচ্ছেন অথচ আপনার কোনো দু’আ কবুলই হচ্ছে না।
আরো অনেক আয়াত ও হাদিসে হারাম ভক্ষণ এর শাস্তির বেপারে বলা হয়েছে।
হারামে কোনো আরাম নেই!!
আপনি এখন যে টাকাটা হারাম ভাবে ইনকাম করছেন
সেটা আপনার রব হালাল ভাবেই দিয়েছিলেন
কিন্তু আপনি ধৈর্য না ধরার ফলে তা হারাম ভাবে ইনকাম করেছেন!
আব্দুল্লাহ বাসায় চলে এসে আবিহাকে জানায় যে তার ৬ তারিখে যেতে হবে
আবিহার মনটা একটু খারাপ হলেও সে মানিয়ে নেয়
আব্দুল্লাহ– আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আগে ওইখানে যাই এরপরে সেখানের পরিস্থিতি দেখে আপনাদেরকে নিয়ে যাবো ইং শা আল্লহ।
আবিহা কিছু বলে না
আবিহা আব্দুল্লাহকে ছাড়া এক মুহুর্তও থাকতে চায় না। তার মনটা পাগল হয়ে যায়। কিন্তু এখন তারও কিছু করার নেই।
রাতে আবিহা, আব্দুল্লাহ ও তার মা বাবা খাবার খাচ্ছে
আব্দুলাহর মায়েরও মনটা খারাপ
আব্দুলাহ বুঝতে পারে
আব্দুল্লাহ– মা আমি তো আবার আসবো তোমরা শুধু দু’আ কইরো আমার জন্য যেনো সবসময় আমি হালাল এর উপর অটল থাকতে পারি!
হারামের দিকে যেনো কখনোই আমার মন না যায়।
আব্দুল্লাহর মা কিছু বলে না চুপ করে থাকে
আব্দুল্লাহ আর মাত্র ৪ দিন আছে তার ফ্যামিলির সাথে।
রাতে ঘুমাতে গেলে আব্দুল্লাহ ও আবিহা শুয়ে শুয়ে গল্প করে
আব্দুল্লাহ আবিহাকে বলে
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা কালকে যাবেন?
আবিহা– কোথায়?
আব্দুল্লাহ– হুম যাবো দেখি
আবিহা– কোথায় যাবেন?
আব্দুল্লাহ– ঘুরতে যাবো আপনায় নিয়ে
আবিহা– কিহ!! সত্যি? সত্যি বলছেন আপনি? (খুশি হয়ে বলে)
আব্দুল্লাহ– কি মনে হয়?
আবিহা– কোথায় যাবেন বলেন না প্লিজ?
আব্দুল্লাহ– কোথায় যেতে চান আপনি?
আবিহা– আমি তো এখানের কিছুই চিনি না
আব্দুল্লাহ– প্রাকৃতিক দৃশ্য তো এখানে তেমন দেখতেই পারবেন না
আবিহা– হুম তা তো বুঝেছি
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা আগামীকাল আমরা এইদিকেই একটু ঘুরবো এর পরের দিন আম্মু সহ অন্য কোথাও যাবো ইং শা আল্লহ ওকে??
আবিহা– হুম আমি রাজি,,,, কাল কখন যাবেন??
আব্দুল্লাহ– এইতো বিকেলের দিকে হয়তো
আবিহা– ওকে ওকে আমি রেডি হয়ে থাকবো
আব্দুল্লাহ– হুম এখন ঘুমান
আবিহা– হুম ঘুমাচ্ছি
আবিহা আব্দুল্লাহর গোলায় তার হাত দিয়ে তার বুকের উপরে তার মাথাটা রাখে আর বলে
আবিহা– আল্লহ যেনো আপনায় সকল বিপদ ও হারাম কাজ থেকে হেফাজতে রাখেন
আব্দুল্লাহ– আমিন,,, আর আপনাকেও যেনো আল্লহ সকল বিপদ ও হারামি সকল কাজ থেকে হেফাজতে রাখেন
আবিহা– আমিন।
আব্দুল্লাহ আবিহার মাথার চুলগুলোর ওপর দিয়ে আবিহাকে একটি চুমু দেয়।
আবিহা আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে
হালাল ভালোবাসাগুলো কতই না সুন্দর হয় হারাম এর বদলে!
সকালে আব্দুল্লাহ কলেজে যায়
কিছু দিন পরেই তার এক্সাম শুরু
কলেজে এখন তার সাথে তেমন কেওই কোনো কথা বলে না সবাই তার কাছ থেকে দূরে থাকতে পারলেই যেনো এখন সস্তি পায়।
আব্দুল্লাহ তার ব্যাঞ্চে বসে ছিলো
পাস দিয়েই রুমি হেটে যায়
কিন্তু রুমি আব্দুল্লাহকে কিছু বলে না
পাসে বসে থাকা তার বন্ধুরা এখন আর তেমন আব্দুল্লাহর সাথে কোনো কথা বলে না
প্রয়োজন হলে কথা বলে
আব্দুল্লাহর তেমন ভালোও লাগে না কলেজে পড়তে কিন্তু শুধু এক্সাম এর জন্য সে অপেক্ষা করছে
আব্দুল্লাহর বন্ধুরা তাকে লক্ষ্য করে বলে যে
বিয়ে করে এখন চেঞ্জ হয়ে গেছে
আর ভাবও বেরে গেছে
কিন্তু আব্দুল্লাহ তাদের কোনো কথার উত্তর দেয় না সে চুপ করে থাকে।
কলেজ শেষে আব্দুল্লাহ বাসায় যেতে যেতে প্রায় ৪ টার মতো বেজে জায়
আব্দুল্লাহ বাসায় গিয়ে দেখে আবিহা রেডি হয়ে বসে আছে
আব্দুল্লাহ সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে
আব্দুল্লাহ– কে এটা?
আবিহা– আবিহা আপনার বউ
আব্দুল্লাহ– মা শা আল্লহ আপনাকে তো খুব খুব খুবই সুন্দর লাগছে এই পর্দা অবস্থায়
আবিহা– নারীর সৌন্দর্য-ই তো হলো পর্দায়
আব্দুল্লাহ– হুম তা অবশ্য একদম ঠিক বলেছেন
আবিহা– হুম হুম হয়েছে এখন ফ্রেশ হয়ে নিন ভুলে গেছেন নাকি কিছু?
আব্দুল্লাহ– না নাহ কি বলেন আপনি আমি কিভাবে ভুলতে পারি আমার পাগলীটাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে তো
আবিহা– হুম হুম হয়েছে হয়েছে এখন ফ্রেশ হয়ে নিন সময় হাতে কম রয়েছে
আব্দুল্লাহ– জ্বি হুমায়রা যাচ্ছি।
এই বলে আব্দুল্লাহ চলে যায় ফ্রেশ হতে
আর আবিহা আব্দুল্লাহর জামা ব্যাগ বই এইগুলো গুছিয়ে রাখছিলো
পর্বঃ- ১৮
আব্দুল্লাহ– না নাহ কি বলেন আপনি, আমি কিভাবে ভুলতে পারি আমার পাগলীটাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে তো
আবিহা– হুম হুম হয়েছে হয়েছে এখন ফ্রেশ হয়ে নিন সময় হাতে কম রয়েছে
আব্দুল্লাহ– জ্বি হুমায়রা যাচ্ছি।
এই বলে আব্দুল্লাহ চলে যায় ফ্রেশ হতে
আর আবিহা আব্দুল্লাহর জামা ব্যাগ বই এইগুলো গুছিয়ে রাখছিলো
কিছুক্ষন পরে আব্দুল্লাহ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আবিহা বসে আছে তার অপেক্ষায়
আব্দুল্লাহ দ্রুত রেডি হয়ে মা কে বলে বের হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ আর আবিহা হাটছে আর কথা বলছে।
কিছুদূর গিয়ে মিনি পার্ক এর একটি ব্যাঞ্চে আবিহা বসে
আর আব্দুল্লাহ তার পাসে বসে
আব্দুল্লাহ– কিছু খাবেন না?
আবিহা– কি খাবো এখানে?
আব্দুল্লাহ– তাই তো, বাদাম?
আবিহা– হুম তা খাওয়া যেতে পারে
আব্দুল্লাহ পাশে দেখে একটি ছোট্ট ছেলে বাদাম বিক্রি করছে
“ও বাদামওয়ালা ভাই”
এই যে এইদিকে এইদিকে
জ্বি স্যার কোন
আমায় বাদাম দাও তো ২০ টাকার
স্যার মাত্র ২০ টেহার নিবেন?
আমার বাদাম কিন্তু হেব্বি টেস্ট
একবার খাইলে পরে আবার খাইতে চাইবেন
তহন আমারে না পেইলে পস্তাইবেন বুঝলেন!
তাই নাকি ভাই?
হ স্যার
তাছারা ভাবিও তো খাইবো ২০ টেহার
বাদাম আপনি খাইবেন নাকি ভাবিরে খাওয়াইবেন কন?
হুম বুঝতে পারলাম
দাও তাহলে আমায় ৩০ টাকার দাও বাদাম তাহলে খুশি তুমি?
হ স্যার খুশি এইবার
দাও তাহলে
এইলন স্যার
আর এইলন লবণ
আমার লবণও কিন্তু হেব্বি টেস্ট
খাইয়া দেহেন
আচ্ছা আমায় আরো ২০ টাকার দাওতো বাদাম
স্যার আরো ২০ টেহার দিমু? (খুশি হয়ে)
হুম দাও
এই যে এই যে
এইলন স্যার
হুম দাও আর এই নাও তোমার টাকা
দেন স্যার
এই বলে ছেলেটা চলে যায়
আব্দুল্লাহ ডেকে বলে
ও বাদামওয়ালা ছোট্ট ভাই
ছেলেটা পিছন ফিরে আসে
এইটা ধরো
কেন স্যার?
এটা তোমার জন্য তুমি খাবে
না না স্যার আমি খামু না
নাও বলছি
আব্দুল্লাহ জোর করে ছেলেটাকে বাদামটা
দেয়
স্যার এইডা কি আমার লাইগাই কিনছিলেন?
আব্দুল্লাহ– হ ভাই তোর লাইগাই কিনছি
ছেলেটা একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়
আর আব্দুল্লাহও মুচকি হাসতে থাকে
সাথে আবিহাও
আদুল্লাহ তার হাতে বাদামটা রাখে
আর বাদামের খোশা ছাড়িয়ে আবিহাকে দেয়
দুজনে মিলে গল্প করছে আর বাদাম খাচ্ছে
মাঝে মাঝে আব্দুল্লাহ আবিহার নিকাবের ভিতর দিয়ে তাকে খাইয়ে দিচ্ছে
আবার আবিহাও আব্দুল্লাহকে খাইয়ে দিচ্ছে
কথার ফাকে আব্দুল্লাহ দুষ্টুমি করে খোশা না ছাড়িয়েই আবিহার মুখে বাদান দেয়
আবিহা কিছু না বলেই খেতে থাকে
আব্দুল্লাহ– এটা অনেক মজা না? (হেসে)
আবিহা– মজা মানে শুধু কি মজা?,, মজার থেকেও বেশি মজা
আব্দুল্লাহ– আমিতো খোশাসহ দিয়েছি আপনি ফেললেন না কেনো?
আবিহা– কেন আমি ফেলবো কেনো?,,,আমার স্বামী সাহেব এত্তো ভালোবেসে আমায় একটি খোশাসহ বাদাম খাইয়েছে আর আমি তা ফেলে দিবো? এটা কি কোনো সময় সম্ভব বলুন আপনি?
আব্দুল্লাহ– পাগলী মেয়ে একটা (হেসে)
আবিহা– হুম পাগলী আমি তা শুধু আপনার জন্যই
আব্দুল্লাহ– হুম হুম বুঝেছি চলুন হাটতে থাকি
আবিহা– হুম,,,, চলুন
আবিহা ও আব্দুল্লাহ হাটতে থাকে
এরই মধ্যে তাদের সামনে আব্দুল্লাহর বন্ধুরা চলে আসে।
হাসান ও আরফান তাদের সামনে দাড়িয়ে আবিহার দিকে চেয়ে থাকে
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম
কেও সালামের উত্তর দেয় না
হাসান– তো ভাই এটা হচ্ছে আমাদের ভাবি
আব্দুল্লাহ– হুম
আরফান– গাইয়া গাইয়া লাগে তো ভাই কি সব পড়ে রেখেছে
হাসান– তো দেখি একটু ভাবিকে
আব্দুল্লাহ– আমি তোদের আগেই তো বলেছি যে দেখা যাবে না!
হাসান– তা বললে কিভাবে হয়? আমার যে দেখতে মন চাচ্ছে খুব
আবিহা আব্দুল্লাহর কানের সামনে তার মুখ নিয়ে আস্তে করে বলে
“এখান থেকে চলুন আমার খুভ ভয় করছে”
আব্দুল্লাহ পাশ কেটে চলে যায়
কিন্তু হাসান আবার তার সামনে এসে দাঁড়ায়
আব্দুল্লাহ– কি হইছে ভাই আমায় একটু বলবি?
আরফান– হাসান দেখতে চাচ্ছে তোর বউকে তো একটু দেখিয়ে দে
আব্দুল্লাহ– নাহ দেখা যাবে না!!
হাসান– কেনো?
আব্দুল্লাহ– নারীদের জন্য পর্দা ফরজ
আরফান– পর্দা আবার কি?
আব্দুল্লাহ–
পর্দা-পরিচিতি:
‘পর্দা’ শব্দটি মূলত ফার্সী। যার আরবী প্রতিশব্দ ‘হিজাব’। পর্দা বা হিজাবের বাংলা অর্থ- আবৃত করা, ঢেকে রাখা, আবরণ, আড়াল, অন্তরায়, আচ্ছাদান, বস্ত্রাদি দ্বারা সৌন্দর্য ঢেকে নেয়া, আবৃত করা বা গোপন করা ইত্যাদি।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, নারী-পুরুষ উভয়ের চারিত্রিক পবিত্রতা অর্জনের নিমিত্তে উভয়ের মাঝে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত যে আড়াল বা আবরণ রয়েছে তাকে পর্দা বলা হয়।
আবার কেউ কেউ বলেন, নারী তার বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ রূপলাবণ্য ও সৌর্ন্দয পরপুরুষের দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখার যে বিশেষ ব্যবস্থা ইসলাম প্রণয়ন করেছে তাকে পর্দা বলা হয়।
মূলত হিজাব বা পর্দা অর্থ শুধু পোশাকের আবরণই নয়, বরং সামগ্রিক একটি সমাজ ব্যবস্থা, যাতে নারী-পুরুষের মধ্যে অপবিত্র ও অবৈধ সম্পর্ক এবং নারীর প্রতি পুরুষের অত্যাচারী আচরণ রোধের বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে।
পর্দার বিধান:
পর্দা ইসলামের সার্বক্ষণিক পালনীয় অপরিহার্য বিধান। কোরআন-সুন্নাহর অকাট্য দলীল প্রমাণাদির ভিত্তিতে নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি বিধানাবলীর মতো সুস্পষ্ট এক ফরয বিধান।
আল্লাহ তায়ালাই এ বিধানের প্রবর্তক। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
‘যখন তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ’।
– (সূরা আহযাব: ৫৩) –
হাসান– এই পর্দার উপরে পুর্ন সমর্পিত থাকার তেমন তো প্রয়োজন নেই বলে মনে হচ্ছে!
আব্দুল্লাহ– আছে!! এ বিধানের প্রতি পূর্ণ সমর্পিত থাকাই ঈমানের দাবি। এ বিধানকে হালকা মনে করা কিংবা এ বিধানকে অমান্য করার কোনো অবকাশ নেই। কেননা ইসলামী শরীয়তের সুস্পষ্ট বিধানের বিরোধিতা করার অধিকার কারো নেই।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
‘আল্লাহ এবং তার রাসূল কোনো বিষয়ের নির্দেশ দিলে কোনো মু’মিন পুরুষ কিংবা কোনো মু’মিন নারীর জন্য সে বিষয় অমান্য করার কোনো অধিকার থাকে না। আর যে আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করে সে অবশ্যই পথভ্রষ্ট।’
– (সূরা আহযাব: ৩৬) –
আরফান– ভাই এটাকে এতো গুরুত্ব দেওয়ার কি দরকার আছে? ফাও ফাও
আব্দুল্লাহ– আছে অনেক বেশিই গুরুত্ব আছে
পর্দার গুরুত্ব:
পর্দার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে নবী আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা ও মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
– (সূরা আহযাব: ৫৯) –
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা এ আয়াতে পর্দার সঙ্গে চলাফেরা করার গুরুত্ব উল্লেখ করা হয়েছে যে, পর্দার সহিত চলাফেরা করলে সবাই বুঝতে পারবে তারা শরীফ ও চরিত্রবতী নারী।
এছাড়াও হাদীস শরীফেও পর্দার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু। যখন সে পর্দাহীন হয়ে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়।
[-(তিরমিযী: ১১৭৩) সহীহ্, মিশকাত (৩১০৯), ইরওয়া (২৭৩), তা’লীক আলা ইবনি খুযাইমা (১৬৮৫)] –
অন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
হযরত আলী (রা.) বর্ণনা করেন, একদা তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকটে ছিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাহাবীদের উদ্দেশ্যে) বললেন, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম বিষয় কোনটি? তারা চুপ হয়ে গেলেন। (কেউ বলতে পারলেন না)
অতপর আমি ফিরে এসে ফাতেমা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম বিষয় কোনটি ? তিনি বললেন, কোনো পরপুরুষ তাকে দেখবে না (অর্থাৎ নারী পর্দাবৃত থাকবে)। তারপর আমি ঐ বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, নিশ্চয় ফাতেমা আমার অংশ, সে সত্য বলেছে)।
– (মুসনাদুল বাযযার: ৫২৬) –
এতে পর্দার গুরুত্ব পরিস্ফূটিত হয়। আর পারিপার্শ্বিকতার বিবেচনায় বিবেকের দাবীও তাই।
আরফান– পর্দা করলেই বা কি? এতে করে তো পারার ছেলেরা খুশি হয় না!!
আব্দুল্লাহ– কোনো ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য পর্দা করা হয় না!
শুধু আল্লাহ তা’য়ালাকে খুশি করার জন্যই পর্দা করতে হয়!
পর্দা পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় ও সম্মানিত হতে পারে।
হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা পর্দানশীনদের ভালোবাসেন। আর কোরআনে বলা হয়েছে,
‘তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন ও সম্মানিত যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন।’
-(সূরা হুজুরাত: ১৩) –
হাসান হেসে উঠে বললো
হাসান– হা হা হা আচ্ছা এই আয়াতে তো বলা হয়েছে কি তাকওয়া লোকদের এইখানে তো পর্দার কথা বলা হয়নি!!
আব্দুল্লাহ– না ভাই বিষয়টা এমন নয়!
প্রকৃত অর্থে তাকওয়া সম্পন্ন বা মুত্তাকী হলো ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহর নির্দেশসমূহ মেনে চলে। আর সর্বসম্মতিক্রমে পর্দা আল্লাহর সুস্পষ্ট নির্দেশ। যেহেতু পর্দা আল্লাহর পক্ষ থেকে মানবজাতির জন্য অবশ্য পালনীয় নির্দেশ সেহেতু পর্দা পালনের মাধ্যমে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত ও মর্যাদা সম্পন্ন হতে পারে।
এছাড়াও পর্দা-বিধান সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করলে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, এ বিধানের পূর্ণ অনুসরণের মাধ্যমে নারী ও পুরুষের নৈতিক চরিত্রের হিফাযত হয়। পারিবারিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত ও সুদৃঢ় হয়।
আরফান– দেখ ভাই তুই একটু বেশি বেশি-ই করতাছোছ কিন্তু
আব্দুল্লাহ– আমি আবার কি বেশি করলাম ভাই?
হাসান– পর্দা না করলে কিসের প্রবলেম?
আব্দুল্লাহ– না করলে অনেক প্রবলেম কিন্তু করলে কোনো প্রবলেম নেই!
আরফান– না করলেও কোনো প্রবলেন নেই ভাই!!
আব্দুল্লাহ– আছে অনেক সমস্যা আছে!
আরফান– কি সমস্যা আছে?
পর্বঃ- ১৯
আরফান– দেখ ভাই তুই একটু বেশি বেশি-ই করতাছোছ কিন্তু!
আব্দুল্লাহ– আমি আবার কি বেশি করলাম ভাই?
হাসান– পর্দা না করলে কিসের প্রোবলেম?
আব্দুল্লাহ– না করলে অনেক প্রোবলেম কিন্তু করলে কোনো প্রোবলেম নেই!
আরফান– না করলেও কোনো প্রোবলেন নেই ভাই!!
আব্দুল্লাহ– আছে অনেক সমস্যা আছে!
আরফান– কি সমস্যা আছে?
আব্দুল্লাহ– সমস্যা বলতে সমস্যা নিজের রবের-ই তো নাফরমানি করা হয়!
হাসান– আমরা তো তোর বন্ধু আমাদের সামনে আসলে কোনো সমস্যা হবে না!
আব্দুল্লাহ– হবে!!
কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আর ঈমানদার নারীদেরকে বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, আর তাদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করতে যা এমনিতেই প্রকাশিত হয় তা ব্যতীত। তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজেদের গোপন শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার”।
–[ সুরা নূর আয়াত- ৩১ ]–
হাসান– ওও তাইলে ভাই নারীকে ঘর থেকে বাহিরে কেন বের করছো ঘোরেই বন্ধি করে রাখো! হা হা হা
আরফান– হুম ভাই হাসান ঠিক বলেছো,, হা হা হা
আব্দুল্লাহ– নারীদের জন্য গৃহের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। এজন্য ইসলাম প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, পর্দার বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পর
রাসূলুল্লাহ (সা.) তার স্ত্রী হযরত সাওদা (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
“প্রয়োজনে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে”।
-(বুখারী: ৪৭৯৫)-
মূলত ইসলাম একটি সর্বাঙ্গীন ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা।
তাই মানব প্রয়োজনের সকল দিকই ইসলামে বিবেচিত হয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে পর্দাবৃত হয়েই বাইরে বের হতে হবে। কিছুতেই পর্দাহীনভাবে বের হওয়া যাবে না।
এ প্রসঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) বলেন,
“নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু, যখনই সে পর্দাহীনভাবে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে উঁকি মেরে তাকায়”।
-(তিরমিযী: ১১৭৩)-
আর পবিত্র কোরআনে নারীদেরকে বাইরে গমনকালীন মুহুর্তে পূর্ণ পর্দা পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালার সুস্পষ্ট নির্দেশ,
‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রী, কন্যা এবং মু’মিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন (প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার সময়) তাদের (পরিহিত) জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’
-(সূরা আহযাব: ৫৯)-
এ আয়াতে নারীদেরকে বাইরে গমনের সময় তাদের পরিহিত জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন,
জিলবাব হলো নারীর এমন পোশাক যা দিয়ে তারা পুরো দেহ ঢেকে রাখে। অর্থাৎ বাইরে গমনের সময় দেহের সাধারণ পোশাক- জামা, পাজামা, ওড়না ইত্যাদির উপর আলাদা যে পোশাক পরিধান করার মাধ্যমে নারীর আপাদমস্তক আবৃত করা যায় তাকে জিলবাব বলা হয়। আমাদের দেশে যা বোরকা নামে পরিচিত।
এ থেকে বুঝা যায় যে,
বাইরে গমনের সময় বোরকা পরিধান করে আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়া আবশ্যক। আর আয়াতে জিলবাবের একাংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়ার যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নেয়া। যা সাহাবী, তাবেয়ী ও নির্ভরযোগ্য মুফাসসিরদের তাফসীর থেকে প্রতিভাত হয়।
হাসান– কি সব বললি কিছুই বুঝলাম না! শুধু শরীরই তো ঢাকার কথা বলা হয়েছে!
আব্দুল্লাহ– বলছি ভালো করে
আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত সাহাবী
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন,
আল্লাহ তায়ালা (এ আয়াতে) মুমিন নারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রয়োজনে তারা যখন বাইরে যাবে তখন তারা যেন জিলবাব দিয়ে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) তাদের মাথার উপর দিক থেকে তাদের মুখমণ্ডলও আবৃত করে নেয়। তবে তারা (চলাফেরার সুবিধার্থে) একটি চোখ খোলা রাখবে।
-(ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)-
প্রখ্যাত তাবেয়ী
মুহাম্মদ ইবনে সিরীন (রহ.) বলেন,
আমি আবীদাহ সালামানীহকে এ আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম তখন তিনি তার মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে নিলেন। অর্থাৎ তিনি বুঝিয়েছেন যে, এ আয়াতে (পুরো দেহ আবৃত করার পর) মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
-(ইবনে কাসীর: ৬/৪৮২)-
সাহাবী ও তাবেয়ীগণের পরবর্তী মুফাসসিরদের ব্যাখ্যার দিকে তাকালেও দেখা যায় যে, ইবনে জারীর তাবারী, ইবনে কাসীর, বায়যাবী, বাগভী, নাসাফী, সুয়ূতি, আবু বকর জাসসাস, মুফতি মুহাম্মদ শফিসহ সব তাফসীরকারকগণ এ আয়াতের অনুরূপ ব্যাখ্যাই করেছেন।
অর্থাৎ সকলে একমত পোষণ করেছেন যে, এ আয়াতে নারীদেরকে তাদের চেহারাসহ আপাদমস্তক আবৃত করে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে বাইরে গমনকালীন পর্দার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হয়।
আর এ ব্যাপারে সর্বোপরি কথা হলো, কোনো প্রয়োজনে নারীকে বাইরে যেতে হলে তখন তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে চেহারাসহ গোটা দেহ আবৃত করে পূর্ণ পর্দার সঙ্গে বের হওয়া। যা সর্বসম্মতিক্রমে ফরয।
এক্ষেত্রে জিলবাব বা বোরকা পরিধানের মাধ্যমে আপাদমস্তক আবৃত করে নিবে। প্রয়োজনে চেহারা বা মুখমণ্ডলের জন্য আলাদা নিকাব ব্যবহার করবে। আর হাতের কব্জি ও পায়ের গোড়ালীর জন্য মোজা পরিধান করবে। তবে চলাফেরার সুবিধার্থে রাস্তা-ঘাট দেখার জন্য শুধু চোখ খোলা রাখবে।
হাসান– ও আচ্ছা বুঝলাম! কিন্তু তোর বউ তো চোখও ঢেকে রেখেছে
আপাতত চোখটা দেখা এইটা দেখেই আমরা একটু মজা নি!
আব্দুল্লাহ– আমিই তাকে বলেছি যে চোখ ঢেকে রাখতে
আরফান– কেনো?
আব্দুল্লাহ– আমার কলিজায় এটা আঘাত লাগে যে আমার বউকে দেখে কেও মজা নিবে বা তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবে!
তাই আমি এই ফেতনার যুগে তার চোখও ঢেকে রেখেছি যাতে করে কোনো বাজে বেহায়া ছেলেরা তার চোখের দিকে না তাকাতে পারে!
হাসান– কথাটা কি আমাদেরকে বললি না?
আব্দুল্লাহ– তোদের কেনো বলবো?
আরফান– তার মানে আমাদের এই কথার জন্যই তুই তোর বউয়ের চোখ ঢেকে রেখেছিলি?
আব্দুল্লাহ– তোদের সাথে আমার এখানে দেখা হবে তা কি আমি জানতাম নাকি তোরা জানতি?
আই তো বলেছিই যে ফেতনার যুগে আমি আমার বউয়ের চোখ যেনো কেও না দেখতে পারে আমি মিন কোনো বেহায়া পুরুষ তাই এই কাজ করা!
তাছারা তারও কোনো সমস্যা হয় না এতে করে!
হাসান– হ হ ভাই বুঝলাম
কখন জানি ভাবি হোচট খেয়ে পরে যায় হা হা
আব্দুল্লাহ– আমি তার পাশে থাকা অবদি ইন শা আল্লহ কখনই পরবে না!
কারন তাকে আমি ধরে রাখি।
হাসান– সবই বুঝলাম ভাই কিন্তু আমি যে দেখবে তাকে
আব্দুল্লাহ– দেখতে পারবি না!
রাস্তা ছেড়ে দাড়া আমাদের যেতে দে!
হাসান– আমায় না দেখালে তো যেতে পারবি না!
আব্দুল্লাহ– আমি তার পাশে থাকা অবস্থায় এটা কোনো দিনই সম্ভব হবে না ইন শা আল্লহ
রবের কাছে তো সব সময়ই এটা দো’আ করি আমি!
হাসান কিছুতেই মানছে না
সে যেভাবেই হোক আবিহাকে দেখবে!
আব্দুল্লাহর সাথে অনেক তর্ক হয়!
আব্দুল্লাহও কোনো ভাবেই তাদেরকে দেখতে দিবে না আবিহার চেহারা।
কথা কাটাকাটির এক ফাকে
হাসান আবিহার নিকাবের দিকে হাত দেয়।
আবিহার নিকাবটা
পর্বঃ- ২০
আব্দুল্লাহ– আমি তার পাশে থাকা অবস্থায় এটা কোনো দিনই সম্ভব হবে না ইন শা আল্লহ
রবের কাছে তো সব সময়ই এটা দো’আ করি আমি!
হাসান কিছুতেই মানছে না
সে যেভাবেই হোক আবিহাকে দেখবে!
আব্দুল্লাহর সাথে অনেক তর্ক হয়!
আব্দুল্লাহও কোনো ভাবেই তাদেরকে দেখতে দিবে না আবিহার চেহারা।
কথা কাটাকাটির এক ফাকে
হাসান আবিহার নিকাবের দিকে হাত দেয়।
আবিহার নিকাবটা ধরবে
এমন সময়ে আব্দুল্লাহ হাসানের হাতটা ধরে নেয়।
পাশে থাকা আরফান সে আব্দুল্লাহর হাত ধরে বলে
আরফান– একটূ দেখা আমিও দেখতে চাই!
এইদিকে আবিহা খুবই ভয় পায়
ভয়ে সে আব্দুল্লাহর পিছনে গিয়ে
তাকে শক্ত করে ধরে রাখে
আর তার কানের কাছে বলে
আমার যে খুব ভয় করছে
এখন কি করবেন আপনি?
আব্দুল্লাহ হাতটা ঝাড়া দিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়
আর আবিহাকে উদ্দেশ্য করে বলে
আল্লহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,
`নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন যারা আল্লাহভীরু ও অনুগ্রহকারী।’
-(সুরা নাহল, আয়াত : ১২৮)-
আরফান– ওহ তাই নাকি?
আব্দুল্লাহ– হুম তাই,,,
হাদিসে এসেছে,
“আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত,
‘রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, …
জেনে রেখো! যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো উপকার করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনই তোমার উপকার করতে পারবে না।
আর যদি সব সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো ক্ষতি করতে চায়, তবু তারা আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া কখনই তোমার ক্ষতি করতে পারবে না।
কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং দপ্তরসমূহ শুকিয়ে গেছে”।’
-(সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৬)-
আরফান আব্দুল্লাহকে ধাক্কা দেয় আর বলতে থাকে এখন হুজুর হয়ে গেছো না ভাই?
আগে তো কতো খারাপ কাজ করেছো তখন কই ছিলো? তোমার এই হুজুরগিরি ভাই আব্দুল্লাহ?
আব্দুল্লাহ কিছু বলবে তখনই দেখে আরফানের পিছনে মুসা আসছে
আব্দুল্লাহ আবিহার হাতটা ধরে চলে যেতে শুরু করে কিন্তু তখনই
হাসান আব্দুল্লাহর কলারটা ধরে পিছনে টান দিয়ে তাকে সরি আবার আবিহার নিকাবটা ধরে
হাসান আবিহার নিকাবটা ধরে যখনই টান দিবে তখনই মুসা এসে হাসানের হাতটা ধরেই হাসানকে সজোরে একটা ধাক্কা দেয়।
আরফান এসে মুসার কলারে হাত দেয়
ঠিক তখনই আব্দুল্লাহ এসে আরফানের হাত সরিয়ে দিয়ে বলে
আব্দুল্লাহ– ভাই এই তোদের বন্ধুত্ত্ব?
আহ! কতো কিছুই না করেছি আমি তোদের জন্য তার এই প্রতিদান দিলি আজ?
আরফান– “চুপ বাদ দে তোর প্রতিদান ত্রতিদান এর কথা
ওর মতো একটা হুজুর হাসানের শরীরে হাত দেয় কিভাবে?”
আব্দুল্লাহ– “হাত দেয়নি আরফান মুসা শুধু হাসানকে থামিয়েছে
হাসান যে কাজটা করতে যাচ্ছিলো তা খুবই খারাপ করছি!”
আব্দুল্লাহ তাদের সাথে খুবই নম্রভাবে কথা বলে।
এইদিকে হাসান কিছুটা পিছনে চলে যা মুসার হাতে ঢাক্কা খেয়ে
হাসান এসে আবার মুসার কলারে হাত দেয়
আর বলে,
তোর কলিজা তো দেখছি খুব বেশিই বেড়ে গেছে!
আব্দুল্লাহ খুভ শক্ত করে হাসানের হাতটা ধরে বলে,
“ব্যস!! অনেক হয়েছে!
আমার এখন খুব বেশিই কিন্তু রাগ আসছে মাথায়!!
আর তোরা জানোছ যে আমি রাগান্বিত হলে আমি কি করতে পারি❗
ভুলে যাইছ না পুরোনো কথা আর কাজগুলি!!
হাসান আব্দুল্লাহর মুখে এই কথা শুনে তার দিকে তাকায় আর দেখে আব্দুল্লাহর চোখ রাগে লাল হয়ে যাচ্ছে
হাসান সাথে কিছুটা ভয় পায়
হাসান আরফান এর দিকে তাকায়
দেখে আরফান তাকে চোখ দিয়ে ইশারা দিয়ে তার হাত মানিয়ে দিতে বলছে।
তাই হাসান কিছুটা আতংকে হাত নামিয়ে দেয়
আব্দুল্লাহ হাসানের হাত ছেড়ে দিয়ে
আবিহার হাত ধরে
চলে যেতে শুরু করে
হাসান আব্দুল্লাহকে উদ্দেশ্য করে বলে,
হাসান– আজকের কথাও মনে রাখলাম আর
আমি তোর বউকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেখবোই দেখবো দেখি তুই কিভাবে আটকাছ
আব্দুল্লাহ পিছনে ফিরে বলে,
আব্দুল্লাহ– কসম ওই পবিত্র সত্ত্বার যার হাতে আমি আব্দুল্লাহর প্রাণ!
আমি বেচে থাকা অবস্থায় রবের শক্তি ব্যতিত পৃথিবীর আর কোনো শক্তি আমি না চাওয়া পর্যন্ত আবিহার চেহারা তো দূরে থাক তার পায়ের নখও দেখতে পারবে না ইন শা আল্লহ!
আরফান– হুম যা যা দেখা যাবে
হাসান মুসার দিকে তার আঙুল উঠিয়ে বলে,
হাসান– তোর কলিজা বেশি বেড়ে গেছে তাই না?
ওয়েট এন্ড সি তোর কি হাল করি তা দেখবি তুই!
মুসা– ভয় তা তো শুধু রবকেই করি! কোনো অপশক্তিকে নয়!
এই বলে মুসা চলে যায়
সাথে আব্দুল্লাহ ও আবিহাও
আরফান– দেখে নিবো ওই মুসা বেটাকে আর আব্দুল্লাহকেও!!
হাসান– আমি তোকে আগেই বলেছিলাম যে মুসার কিছু একটা করতে হবে কিন্তু তুই শুনলি না! এবার দেখ কলিজা কতো বেড়ে গেছে।
আরফান– টেনশন নিছ না
হাসান– এবার দেখ ওদের কি হাল করি আমি (রেগে)
আব্দুল্লাহ আবিহার হাত ধরে হাটছে নিচের দিকে তাকিয়ে
কিছুই বলছে না আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহকে এই অবস্থায় দেখে মুসা আব্দুল্লাহজে বলে,
মুসা— আব্দুল্লাহ কি মন খারাপ করলে কেনো?
আব্দুল্লাহ– না ভাই মন খারাপ করার কিছু নেই!
মুসা– তাহলে কি ভয় পাচ্ছো এদের কথায়?
আব্দুল্লাহ হাটা থামিয়ে দিয়ে মুসার দিকে ঘুরে দাঁড়ায় আর বলে,
আব্দুল্লাহ– এদের আবার কোন কথায় ভয় পাবো?
মুসা– না মানে,,, হাসান যে বললো ভাবিকে দেখবেই দেখবে তাও আবার এক সপ্তাহের মধ্যে এই কথা আর কি।
আব্দুল্লাহ– ভাই মুসা আমি ওদেরকে চিনি
আমি জানি যে হাসান তার বলা কথার কাজটা যেভাবেই হোক সাকসেস করার চেস্টা করবে।
মুসা– আব্দুল্লাহ ভাই টেনশন নিও না।
আব্দুল্লাহ– ভাই আমি আবিহাকে নিয়ে টেনশন করছি না!!
আমি তার পাশে থাকা অবস্থায় ইন শা আল্লহ কোনো খারাপ শক্তি তার কিছুই করতে পারবে না।
কারন মুমিনদের পাশে তো সয়ং আল্লহ আছেন!
ভাই মুসা আমি শুধু তোমায় নিয়ে টেনশন করছি!
ওরা যেভাবেই হোক তোমার ক্ষতি করার চেস্টা করবে!
মুসা– ভাই আব্দুল্লাহ আমায় নিয়ে টেনশন করিও না
এইতো তুমিই তো মাত্র বললে যে মুমিনদের পাশে সয়ং আল্লহ থাকেন!
রব যা চাইবেন তা-ই হবে ইন শা আল্লহ
হয়তো আল্লহ কোনো পরিক্ষা নিবেন আর এই পরিক্ষায় যদি কোনোভাবে পাশ করতে পারি তাহলে তো আমি কামিয়াব হয়ে যাবো ভাই।
আব্দুল্লাহ– হুম কিন্তু ভাই মুসা তুমি একটু সাবধানে থেকো
আর যদি কোনো সমস্যা দেখো তাহলে সাথে সাথে আমাকে ফোন দিও
মুসা– হুম ইন শা আল্লহ
ভাই তাহলে তুমি আর ভাবি এখন ঘুরো আমি চললাম (মুচকি হেসে)
আব্দুল্লাহ– কোথায় যাচ্ছো?
মুসা– বাসায় ফিরছিলাম কিন্তু আজ কেনো জানি মনটা খুব টানলো যে আজ এই পথ দিয়ে যেতে তাই এইদিকে এসে পড়লাম।
আব্দুল্লাহ– হুম ভাই আল্লহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন!
তুমি এইদিকে না আসলে হয়তো অন্যরকম কিছু একটা হয়ে যেতো এখন!!
মুসা– হুম ভাই এখন যাও যাও গিয়ে ঘুরো ভাবিকে নিয়ে। (হেসে)
আব্দুল্লাহ– মনে হয় না আর ঘুরবে
এখন বাড়ি চলে যাবো হয়তো।
মুসা– আচ্ছা তাহলে আমি চললাম,,, আল্লহ হাফেয,,,, আসসালামু ‘আলাইকুম
আব্দুল্লাহ– আল্লহ হাফেয,,, ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লহ
এই বলে মুসা হেটে চলে যায়।
আব্দুল্লাহ ও আবিহাও হাটে
আবিহা– রবের কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া তিনি আজ আমার পর্দা রক্ষা করেছেন! আলহামদুলিল্লাহ
আব্দুল্লাহ– হুম আলহামদুলিল্লাহ।
আবিহা– কিন্তু আর যে এখনো ভয় করছে!
আব্দুল্লাহ– কেনো কিসের ভয়? আল্লহ তো পাশে আছেন।
আবিহা– হুম।। কিন্তু ওই বদমাইশ গুলো যদি আপনার কোনো ক্ষতি করে তাহলে?
আব্দুল্লাহ– আল্লহ যা যাইবেন তা-ই হবে এর বাহিরে কিছুই হবে না!
আবিহা– মুসা ভাইয়ের জন্যও চিন্তা হচ্ছে।
আব্দুল্লাহ– চিন্তার কোনো কারন নেই।
আবিহা– কিন্তু,,
আব্দুল্লাহ– হুম হুম হয়েছে হুমায়রা আমার এখন কোন দিকে যাবেন বলুন
আবিহা– বাসায় যাবো এখন
আব্দুল্লাহ– কেনো?
আবিহা– হুম চলুন চলুন আর ঘুরার দরকার নেই!
আব্দুল্লাহ– ইস! আজকে একটু বউটাকে নিয়ে ঘুরতেও পারলাম না। (মুচকি হেসে)
আবিহা– হুম হুম হুজুর সাহেব আপনার বউ অনেক ঘুরেছে এখন চলুন বাসায়। (মুচকি হেসে)
আব্দুল্লাহ– জ্বি হুজুরনি সাহেবা আমার চলুন তাহলে বাসায়। (মুচকি হেসে)
আবিহা– জ্বি চলুন
আবিহা ও আব্দুল্লাহ কথা বলতে বলতে হাটতে থাকে বাসার উদ্দেশ্যে
এই দিকে মুসা বাসায় গিয়ে শুনতে পারে
পর্বঃ- ২১
আব্দুল্লাহ– ইস! আজকে একটু বউটাকে নিয়ে ঘুরতেও পারলাম না। (মুচকি হেসে)
আবিহা– হুম হুম হুজুর সাহেব আপনার বউ অনেক ঘুরেছে এখন চলুন বাসায়। (মুচকি হেসে)
আব্দুল্লাহ– জ্বি হুজুরনি সাহেবা আমার চলুন তাহলে বাসায়। (মুচকি হেসে)
আবিহা– জ্বি চলুন
আবিহা ও আব্দুল্লাহ কথা বলতে বলতে হাটতে থাকে বাসার উদ্দেশ্যে
এই দিকে মুসা বাসায় গিয়ে শুনতে পারে
তার জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছে
মুসা কিছুটা লজ্জা পেলেও পরে বলে যে কবে দেখতে যাবে?
মুসার মা– দেখতো যাবো না
মুসা– কেনো? আর তাদেরকে কি বলেছো মা?
মুসার মা– তোর বাবা কথা বলেছে তাদের সাথে।
এমনি কিছু জানায়নি শুধু বলেছে যে পরে জানাবেন।
মুসা– ওওও
মুসার মা– হুম,,, তোর জন্য অন্য জায়গায় মেয়ে দেখবো!
মুসা– কেনো মা এই মেয়েটা?
মুসার মা– এই মেয়েটা জেনারেল লাইনে পড়ুয়া, হাফেজা না ও আলেমাও না।
মুসা– ওও মেয়েটা কি পর্দা করে? আর শরিয়াত মোতাবেক চলে?
মুসার মা– হুম মেয়েটা পরিপূর্ণ ভাবে পর্দা করে আর তার ফ্যামিলিও দেখলাম যে দ্বীনদ্বার হয়েছে। মনে হয় যে মেয়েটাই মূল কারন পরিবর্তনের।
মুসা– তাহলে মা এই প্রস্তাব কেনো ফিরিয়ে দিবে?
মুসার মা– কারন মেয়েটা হাফেজা বা আলেমা না! আর তুই তো হাফেজ আলেমও তাই আমরা ভাবছি যে একজন হাফেজা আলেমা মেয়েকেই তোর জন্য নিয়ে আসবো!
মুসা– আচ্ছা মা একজন জেনারেল লাইনে পড়ুয়া ছেলে কিংবা মেয়ের কি অধিকার নেই? যে একজন হাফেয বা হাফিজা কাওকে বিয়ে করার?
তাদের জন্য কি? এটা নাজায়েজ? এমন কি কোনো নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ইসলামে যে শুধু মাত্র একজন হাফেজ ছেলেই শুধু একজন হাফেজা মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে? অন্য কেও না?
মুসার মা– এমন কিছু নেই কিন্তু দেখ বাবা একজন হাফেজ এর মর্যাদা শুধু মাত্র একজন হাফেযাই বুঝবে!
মুসা– না মা এই কথা ঠিক নয়! একজন হাফেজ এর মর্যাদা অন্যরাও বুঝে!
তাছারা মা তুমি নিজেই একটু ভেবে দেখো যে মেয়েটা আগে দ্বীনের ভিতরে ছিলো না কিন্তু আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা তাকে হয়তো হেদায়েতের নুর দিয়েছে তাই সে এখন দ্বীনদ্বার আর শরিয়ত মোতাবেক চলছে
এমনকি তুমি একটু ভেবে দেখো মা যে সে আল্লহর রহমতে তার পুরো ফ্যামিলিকে দ্বীনদ্বার করছে।
আর দেখো মা যে,
জেনারেল লাইনে পড়ুয়া ছেলে কিংবা মেয়ে যখন দ্বীনের মধ্যে আসে তখন তাদের দ্বীন শিক্ষার একটা ক্ষুদা জন্ম নেয় ভিতরে
কিন্তু তারা চাওয়া শর্তেও অনেকে সেই ক্ষুদাটা নিবারন করতে পারে না!
আর যখন সে একজন আলেম বা আলেমাকে পেয়ে যায় জীবনসঙ্গী হিসেবে তখন সে তার কাছ থেকে দ্বীনি শিক্ষাটা নিতে পারে!
আর যদি সে একজন আলেম বা আলেমাকে তার জীবনসঙ্গী হিসেবে না পায় তাহলে সে কোথা থেকে শিখবে?
মুসার মা– কথা তো ঠিক বাবা কিন্তু…..
এইদিকে আবিহা আর আব্দুল্লাহ বাসায় চলে আসে
তারা নিজেদের ঘরে যায় গিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে থাকে
আবিহা– মা শা আল্লহ স্বামী আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আপনায় ভালো জ্ঞান দান করেছেন।
আব্দুল্লাহ– কি যে বলেন! আমি হলাম সাধারন একজন স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র।
আবিহা– তাতে কি হয়েছে? আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা পবিত্র কুরআন এ ১০ নাম্বার সূরার ২৫ নাম্বার আয়াতে বলেন,
وَ اللّٰہُ یَدۡعُوۡۤا اِلٰی دَارِ السَّلٰمِ ؕ وَ یَہۡدِیۡ مَنۡ یَّشَآءُ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۲۵﴾
“আর আল্লাহ তোমাদেরকে শান্তির নিবাসের দিকে আহবান করেন;
এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে চলার ক্ষমতা দান করেন।”
[ সূরা ইউনুস আয়াত – ২৫ ]
আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা এই আয়াতে বলেন যে তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে হেদায়েত দান করেন
মানে সরল সঠিক পথে চলার ক্ষমতা দান করেন।
আব্দুল্লাহ– হুম কিন্তু আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা এই সুরারই ২৭ নাম্বার আয়াতে বলেন যে,
وَ الَّذِیۡنَ کَسَبُوا السَّیِّاٰتِ جَزَآءُ سَیِّئَۃٍۭ بِمِثۡلِہَا ۙ وَ تَرۡہَقُہُمۡ ذِلَّۃٌ ؕ مَا لَہُمۡ مِّنَ اللّٰہِ مِنۡ عَاصِمٍ ۚ کَاَنَّمَاۤ اُغۡشِیَتۡ وُجُوۡہُہُمۡ قِطَعًا مِّنَ الَّیۡلِ مُظۡلِمًا ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ﴿۲۷﴾
পক্ষান্তরে যারা মন্দ কাজ করেছে তারা তাদের মন্দ কাজের শাস্তি পাবে ওর অনুরূপ,
এবং অপমান তাদেরকে আচ্ছাদিত করে নিবে; তাদেরকে আল্লাহ (এর শাস্তি) হতে কেহই রক্ষা করতে পারবেনা,
যেন তাদের মুখমন্ডলকে আচ্ছাদিত করে দেয়া হয়েছে রাতের অন্ধকার স্তরসমূহ দ্বারা।
এরা হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী,
তারা ওর মধ্যে অনন্ত কাল থাকবে।
[ সুরা ইউনুস আয়াত – ২৭ ]
আর আমার জীবনটা তো পাপের মধ্যেই কেটেছে
জানি না আর কতো দিন বাচবো
সারা জীবনটা পাপের মধ্যেই কাটিয়ে দিয়েছি আমি!
আবিহা– অতীতে করা গুনাহগুলোর জন্য তাওবাই যথেষ্ট!
আল্লহা তা’আলা তাওবা কারীদেরকে ভালোবাসেন।
হাদিসে এসেছে,
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
তিনি বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন,
হে আদম সন্তান!
যাবৎ তুমি আমাকে ডাকবে এবং ক্ষমার আশা রাখবে, তাবৎ আমি তোমাকে ক্ষমা করব। তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন, আমি কোন পরোয়া করি না।
হে আদম সন্তান!
তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে থাকে অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, আমি কোন পরোয়া করি না।
হে আদম সন্তান!
তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কাউকে শরিক না করে থাক, তাহলে আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার নিকট উপস্থিত হব।’’
[তিরমিযি ৩৫৪০,সহীহ :
সহীহাহ্ (হা: ১২৭, ১২৮),
রাওযুন নাযীর (হা: ৪৩২),
মিশকাত তাহক্বীক্ব সানী (হা: ২৩৩৬)
তা’লীকুর রাগীব (হাঃ ২/২৬৮) ]
আর কুরআনে আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলেন,
‘হে ঈমানদাররা, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। নবী ও তাঁর সঙ্গে যারা ঈমান এনেছে তাদের সেদিন আল্লাহ লাঞ্ছিত করবেন না।’
(সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৮)
তাওবার দ্বারা আল্লহর কাছে প্রিয় বান্দা হওয়া যায়।
আব্দুল্লাহ– হুম,,,,, আবিহা….
আবিহা– জ্বি বলুন।
আব্দুল্লাহ– আজকের ওই ঘটনাটার জন্য আমি লজ্জিত (মাথা নিচু করে)
আবিহা– কি বলছেন এইগুলো আপনি?
আব্দুল্লাহ– আসলে ওরা আমার বন্ধু ছিলো কিন্তু এতো জঘন্য কাজ করবে ওরা তা আমি কখনোই কল্পনাও করতে পারিনি
আবিহা– আসলে আপনি যে তখন তাদেরকে পর্দা সম্পর্কে বলছিলেন তখন কেনো জানি আমার নিজেরই ঈমানি পাওয়ারটা বেড়ে যাচ্ছিলো
খুবই ভালো লাগছিলো আপনার ওই কথাগুলো!
শুধু এটাই মনে হচ্ছিলো যে আপনি মাদ্রাসারই ছাত্র একজন আলেম।
আব্দুল্লাহ– আহ! যদি তা হতে পারতাম!
জানেন আমি শুধু বৃদ্ধা এই রুপময় দুনিয়ার পিছনে ছুটছি যা কিনা আমায় শেষ সময়ের কথা ভুলিয়ে রেখেছে
আবিহা– আল্লহ তা’আলা মুসা ভাইকে নেক হায়াত দান করুক
আব্দুল্লাহ– আমিন
আবিহা– সুম্মা আমিন,,,, তিনি আজ ঠিক সময়ে এসে গেছে,,, আল্লহর দরবারে কোটি কোটি শুকরিয়া
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ।
আব্দুল্লাহ আবিহা চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে আর আবিহাও তাকিয়ে থাকে
আবিহা– কি হুজুর সাহেব? কি দেখছেন এমন করে?
আব্দুল্লাহ– আল্লহর কুদরত দেখছি,,, আমি দেখছি যে আমার রব কতো সুন্দর করে মানুষের আকৃতি দান করেছেন!
আবিহা– হুম তা তো করেছেনই
আব্দুল্লাহ– তাই তো আমার রব বলেন,
لَقَدۡ خَلَقۡنَا الۡاِنۡسَانَ فِیۡۤ اَحۡسَنِ تَقۡوِیۡمٍ ۫﴿۴﴾
আমিতো সৃষ্টি করেছি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে,
[ সুরা আত-ত্বিন আয়াত – ৪ ]
আবিহা– সুবহানাল্লহ
অন্য দিকে মুসা আর তার মা এর কথার মাঝে মুসার বাবা চলে আসে
মুসার মা মুসার বাবাকে মুসার কথাগুলো জানায়
মুসা তার মা ও বাবাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
মুসা– রাসূলুল্লাহ (সা.) বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে আত্মিক ও ঈমানের সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন,
‘নারীদের চারটি গুণ দেখে বিয়ে করো :
১| তার সম্পদ,
২| তার বংশমর্যাদা,
৩| তার রূপ-সৌন্দর্য
৪| তার দ্বীনদারী,
তবে তুমি দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেবে। নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
[সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৯০
মুসলিম ১৭/১৫, হাঃ ১৪৬৬,
আহমাদ ৯৫২৬
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৯) ]
ফুটনোটঃ
[ যে সব কারণে একজন পুরুষ বিশেষ একটি মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করার জন্য উৎসাহিত ও আগ্রহান্বিত হতে পারে তা হচ্ছে চারটি।
(১) সৌন্দর্য
(২) সম্পদ
(৩) বংশ
(৪) দীনদারী।
এ গুণ চতুষ্টয়ের মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ করা হয়েছে দীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। আর এ গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বাগ্রগণ্য ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর আলোচ্য নির্দেশের সার কথা হল- দীনদারীর গুণসম্পন্না কনে পাওয়া গেলে তাকেই যেন স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়, তাকে বাদ দিয়ে অপর কোন গুণসম্পন্না মহিলাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া উচিত নয় –
(সুবুলুস সালাম)।
চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি কেবল যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা-ই নয়, এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য গুণ যতই থাক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে সে অগ্রাধিকার যোগ্য কনে নয়। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস অনুযায়ী তো দ্বীনদারীর গুণ বঞ্চিতা নারী বিয়ে করাই উচিত নয়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন- তোমরা স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না- কেননা এরূপ সৌন্দর্যই অনেক সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না, কেননা এ ধনমাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে বিয়ে করবে। বস্তুত একজন দীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভাল-
(ইবনে মাজাহ, বায্যার, বাইহাকী)।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল – বিয়ের জন্য কোন্ ধরনের মেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন- যে স্ত্রীকে দেখলে সে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হয় তা সে যথাযথ পালন করে এবং তার নিজের স্বামীর ধন মালের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের বিপরীত কোন কাজই করে না-
(মুসনাদে আহমাদ)।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেছেন- দুনিয়ার সব জিনিসই ভোগ সামগ্রী আর সবচেয়ে উত্তম সামগ্রী হচ্ছে নেক চরিত্রের স্ত্রী- (মুসনাদে আহমাদ)।
উপরের উদ্ধৃত হাদীসগুলো থেকে যে কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা এই যে, ইসলামের দৃষ্টিতে তাকওয়া, পরহেযগারী, দীনদারী ও উন্নত চরিত্রই হচ্ছে জীবন সঙ্গিনী পছন্দ করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। ]
মুসার বাবা আর মা কোনো কথা বলে না।
মুসা তার ঘরে চলে যায় আর যাওয়ার আগে বলতে থাকে
আমি মেয়ের দ্বীনদ্বারিতা চাই কারন সে
“আমার জান্নাতের সাথে”
পর্বঃ- ২২
মুসার বাবা আর মা কোনো কথা বলে না।
মুসা তার ঘরে চলে যায় আর যাওয়ার আগে বলতে থাকে
আমি মেয়ের দ্বীনদ্বারিতা চাই কারন সে
“আমার জান্নাতের সাথে”
মুসা সে তার ঘরে গিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়
আর রবের কাছে দো’আ করতে থাকে
যেনো সে একজন তাকওয়াবান মেয়ে পায় হোক সে আলেমা বা হাফেযা
এইদিকে মুসার বাবা ফোন দিয়ে মেয়ে পক্ষকে বলে যে তারা আগামীকালের পরের দিন দেখতে যাবে পাত্রীকে
মেয়ে পক্ষ শুনে খুবই খুশি হয়।
মুসার বাবা রাতে খাবারের সময় মুসাকে বিষয়টা জানায় মুসা শুনে খুশি হয় আর বলে,
আলহামদুলিল্লাহ
রব যা চাইবেন তাই হবে,
তিনি যাকে আমার জীবনসঙ্গিনী হিসেবে সিলেক্ট করে রেখেছেন তাকেই পাবো আমি ইন শা আল্লহ।
এইদিকে আবিহা আর আব্দুল্লাহ তাদের বাবা মা সহ খাবার খাচ্ছে
হঠাৎ আব্দুল্লাহর বাবা বলে উঠে
আব্দুল্লাহর বাবা– তা বাবা তোর বন্ধুদেরকে যে দেখি না আর? কি হয়েছে তাদের? তারা তো তোর বিয়েতেও আসলো না?
ঝগড়া করেছিছ বুঝি?
আব্দুল্লাহ– না বাবা কি বলে ঝগড়া কেনো করবো?
আব্দুল্লাহর বাবা– তাহলে তাদের কি হয়েছে?
আব্দুল্লাহ– না কিছুই নাতো বাবা,, আজকেও তো দেখা হয়েছে তাদের সাথে কথাও হয়েছে
আবিহা আব্দুল্লাহর মুখের দিকে তাকায়
আবিহা দেখে আব্দুল্লাহর চোখে পানি টলমল করছে
আব্দুল্লাহর বাবা আর কিছু বলতেই যাবে তখনই আবিহা কথা ঘুরিয়ে নিয়ে নেয় আর বলে,
আবিহা– বাবা আপনার প্লেটটা তো ফাকা
এই বলে আবিহা আব্দুল্লাহর বাবার প্লেটে খাবার দেয়
আব্দুল্লাহর বাবা– না না মা আর দিও না পরে তো খেতে খেতে একেবারে দুম্বুস হয়ে যাবো
আবিহা– নাহ বাবা ওইটুকুতে কিছু হবে না আপনি খান।
আব্দুল্লাহর বাবা– মা তুমি নাও আরেকটু আর আব্দুল্লাহকেও দাও
আব্দুল্লাহ– না আমাকে আর দিয়েন না আর পারবো না।
কিছুক্ষন পরে খাবার খাওয়া শেষ হলে আব্দুল্লাহ ঘরে যায়
বেলকনিতে যায়
আবিহা কাজ শেষ করে ঘরে এসে দেখে আব্দুল্লাহ নিরবে বসে আসে
আবিহা আব্দুল্লাহর পিছনে এসে জ্বোরে
ভাও করে করে চিৎকার করে উঠে
আব্দুল্লাহ একটু নড়ে বসে
আবিহা হাসতে থাকে আর বলতে থাকে
আবিহা– হুজুর সাহেব ভয় পেয়েছে হুজুর সাহেব ভয় পেয়েছে!
আব্দুল্লাহ– ইস এতে নাচা আর গান গাওয়ার কি আছে পাগলী মেয়ে?
আবিহা– অনেক কিছু আপনি বুঝবেন না।
আব্দুল্লাহ– বুঝিয়ে দিন আমায় একটু
আবিহা– নিজে বুঝে নিন
আব্দুল্লাহ আবিহার হাত ধরে টান দিয়ে এনে তার পাশে বসায়
তার চেহারার সামনে তার চেহারাটা নিয়ে বলে
আব্দুল্লাহ– এই যে বউ আমার একটু বুঝিয়ে দিন আমাকে।
আবিহা আব্দুল্লাহর চোখে চোখ রেখে বলে
আবিহা– এটা হলো ভালোবাসার নাচ-গান
আব্দুল্লাহ– ওও তাই নাকি?
আবিহা– জ্বি
আব্দুল্লাহ– তাহলে আমায় এখন আমার বিবি সাহেবা ভালোবাসে?
আবিহা– মানে? আমি কি আজকেই শুধু আপনায় ভালোবাসলাম নাকি? এতো দিন কি একটুও মনে হয়নি যে আমি আপনায় কতোটা ভালোবাসি? ( কাদু কাদু ভাবে)
আব্দুল্লাহ–………
আবিহা আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিহা– আপনি যেদিন প্রথম আমায় দেখতে এসেছিলেন এবং এরপরে বিয়ের জন্য রাজি হয়েছিলেন সেই সেদিন থেকেই আপনাকে খুব বেশি ভালোবেসে ফেলেছি আর আপনি কিনা আমায় বুঝলেন না ( অতি নরম কন্ঠে)
আব্দুল্লাহ দেখে আবিহার চোখে পানিরা এসে খেলা করছে,
আব্দুল্লাহ– পাগলী মেয়ে একটা
এই বলে আবিহার মাথাটা তার বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে আব্দুল্লাহ বলে,
আব্দুল্লাহ– একটা পাগলী বউ আমার আমি জানি যে আপনি কখন থেকে আমাকে ভালোবাসেন
আবিহা– তাহলে আপনি কেনো বললেন যে আমি আজকেই ভালোবেসেছি আপনাকে? ( হালকা কেদে কেদে)
আব্দুল্লাহ– আপনার ভালোবাসা যেনো আরো বৃদ্ধি পায় তাই বলেছি।
আবিহা–…….. (কাদতে থাকে) ।
আব্দুল্লাহ– এইযে কি হয়েছে আপনার আপনার চোখ থেকে পানি পড়ছে কেনো? পানি গুলো মনে হয় খেলা করতে করতে ব্যাথা পেয়েছে?
আবিহা–…… (কাদতে থাকে)
আব্দুল্লাহ– এই বউ এই কি হয়েছে আপনার আপনি কাদছেন কেনো?
আবিহা– আমি আপনায় ছাড়া একা একা কিভাবে দিন কাটাবো? (কেদে)
আব্দুল্লাহ আবিহার চোখের পানিগুলো মুখে দিতে থাকে আর বলে,
আব্দুল্লাহ– আহারে আমার পাগলী বউ এটার জন্য কান্না করা লাগে বুঝি?
আবিহা– হুজুর আপনায় অনেক বেশি ভালোবাসি আমি। (কেদে কেদে)
আব্দুল্লাহ আবিহার কপালে চুমু দিয়ে বলে,
আব্দুল্লাহ– আমি ওইখানে গেলেও খুব খুব শীগ্রই আপনাদেরকে নিয়ে যাবার চেস্টা করবো
আবিহা কিছু বলে না শুধু আব্দুল্লাহর বুকে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে ধরে রাখে
আব্দুল্লাহ– আমি যেনো আর কোনো সময় দেখি না যে আমার বউ কান্না করছে! হুম
আবিহা– জ্বি
আব্দুল্লাহ– এইতো আমার হুমায়রা কত্তো ভালো,
চলুন এখন শুয়ে পড়ি
আবিহা– জ্বি কিন্তু আর একটু জড়িয়ে ধরে রাখতে দিন।
আব্দুল্লাহ– পাগলী একটা (হেসে)
আবিহা– হুম শুধু আপনার জন্যই পাগলী (হেসে)
একটু পরে তারা শুয়ে পরে
আবিহা আব্দুল্লাহর বাহুতে মাথা দিয়ে রেখে শুয়ে থাকে
আর আব্দুল্লাহ আবিহার চুলগুলো নিয়ে খেলা করে মাঝে মাঝে চুলগুলো ধরে আবিহার চেহারায় দেয় আর বলে,
আব্দুল্লাহ– মা শা আল্লহ বউটাকে এখন কিউটি সুন্দর লাগছে
আবিহা– কিউটি এটা আবার কোন মেয়ে?,
হুজুর আপনি কোন মেয়ের নাম নিলেন? সত্যি করে বলুন বলছি?
আব্দুল্লাহ হাসতে থাকে আর বলে,
আব্দুল্লাহ– আরে বউ আমার এটা কোনো মেয়ের নাম না এটা হচ্ছে কিউট এর কিউটি
আবিহা হাসতে থাকে আর বলে,
আবিহা– কিউট তো বুঝলাম কিন্তু কিউটি টা কি?
আব্দুল্লাহ– কিউট তো মেইল ভার্সন মনে হয় তাই আমি আমার বউকে কিউট না বলে কিউটি বললাম।
এটা শুধু আমিই আমার বউ কে বললাম
আবিহা– আচ্ছা আচ্ছা এবার বুঝলাম স্বামী আমার।
আব্দুল্লাহ– জ্বি
আব্দুল্লাহ– তা বউ এখন আমাকে একটি………
পর্বঃ- ২৩
আব্দুল্লাহ– কিউট তো মেইল ভার্সন মনে হয় তাই আমি আমার বউকে কিউট না বলে কিউটি বললাম।
এটা শুধু আমিই আমার বউ কে বললাম
আবিহা– আচ্ছা আচ্ছা এবার বুঝলাম স্বামী আমার।
আব্দুল্লাহ– জ্বি
আব্দুল্লাহ– তা বউ এখন আমাকে একটি………
আবিহা– এখন আপনাকে একটি কি?
আব্দুল্লাহ– এখন আমাকে একটি সূরা তিলাওয়াত করে শুনাবেন?
আবিহা– ওও এই কথা আর আমিতো ভেবেছিলাম..
আব্দুল্লাহ– কি ভেবেছিলেন?
আবিহা– না কিছু না
এই বলে আবিহা কুরআনের ৩০ পারার ৮৫ নাম্বার সূরা বুরুজ তিলাওয়াত করা শুরু করে
আবিহা আব্দুল্লাহর বুকের উপরে মাথা রেখে তিলাওয়াত করছে আর আব্দুল্লাহ মুগ্ধ হয়ে শুনছে আর আবিহার মাথায় হাত বুলাচ্ছে।
আবিহাও তার মধুর কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করছে তার কাছেও খুব ভালো লাগছে আব্দুল্লাহর বুকে মাথা রেখে কুরআন তিলাওয়াত করতে।
আবিহা সূরা বুরুজ এর যখন ১৪ নাম্বার আয়তটি তিলাওয়াত করে
وَهُوَ الغَفورُ الوَدودُ
অর্থঃ- আর তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, প্রেমময়।
আবিহা এই আয়াতটি প্রায় ৩ বার পড়ে
এরপর সে বলে
আবিহা– আসলেই তিনিই তো প্রেমময় রব!!
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ অবশ্যই কেনো কোনো সন্দেহ আছে?
আবিহা– না কোনো সন্দেহ নেই!! শুধু বলছি যে তিনিই তো প্রেমময় রব!
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ
আবিহা– আমি এটা বুঝিনা যেখানে আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা নিজেই বলছেন “তিনিই প্রেমময় রব” তবুও আমরা কিভাবে বিয়ের আগে অন্য মানুষের প্রেমে হাবুডুবু খাই?
যেখানে সকল প্রেমের উৎসই আমার রব সেখানে আমরা কিভাবে অন্য একজন গায়রে মাহরাম এর প্রেমে পরি?
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ কথা তো ঠিক! আমাদের নফস ও শয়তান কিন্তু একেঅপরের বন্ধু আর তাদের ফলেই আমরা এইসকল পাপের মধ্যে লিপ্ত হই।
আবিহা– হুম
এরপরে আবিহা আবার তিলাওয়াত শুরু করে দেয়
আর আব্দুল্লাহও শুনতে থাকে।
এইদিকে রানা সে কি করবে কিছু বুঝতে পারছেন না!
সে সিদ্ধান্ত নেয় আগামীকাল আব্দুল্লাহর সাথে দেখা করবে।
আবিহা শুয়ে আছে
হঠাৎ তার কানে কোনো এক বাচ্চা অতিমাত্রায় কান্না করার মতো শব্দ ভেসে আসছে।
আবিহা বিছানায় হাত দেয় কিন্তু সে আব্দুল্লাহকে পায় না।
আবিহা কিছুটা ভয় পায় যে এইখানে এভাবে কে কাদবে? আর আব্দুল্লাহই বা কোথায়!
আবিহা আস্তে করে উঠে,
উঠে দেখে ঘরের এক কোনায় কেও একজন সিজদায় কান্না করছে
আবিহা এবার উঠে বসে
সে ভালোভাবে তাকিয়ে বুঝতে পারে যে এটা আব্দুল্লাহ,
আব্দুল্লাহ কি যেনো বলছে আর কাদছে আবিহা শুনতে পারছে না তাই সে বিছানা থেকে নেমে আব্দুল্লাহর পায়ের পাশে গিয়ে দাঁড়ায় আর আব্দুল্লাহ কি বলছে তা শুনার চেস্টা করছে।
আবিহা শুনতে থাকে আব্দুল্লাহ কাদছে আর বলছে
“হে রব আপনার ক্ষমা চাই”
হে রব আপনার ক্ষমা চাই
হে রব আপনি তাদেরকে হিদায়াত দান করুন
হে রব তারা তো আমার ভাই আমি তাদেরকে রেখে কিভাবে জান্নাতে যাবো!
হে রব তারা না বুঝে আমার সাথে ও আবিহার সাথে এমনটা করেছে,, আপনি তাদেরকে মাফ করে দিন
হে রব আমিতো কেবল আপনাকেই রব হিসেবে ডাকি
রব আমি যে আপনাকে ভালোবাসি
হে রব আপনার জন্যই আমার এই পরিবর্তন!
হে রব জানি না এই ক্লান্তির প্রহর কবে শেষ হবে!
কবে দেখা পাবো নূর এর
যে নূর দেখার জন্য আমার এই হৃদয় পাগলপাড়া
হে রব আমার এই জবান সকল কথা প্রকাশে ব্যর্থ
হে রব এই চোখ শুষ্ক হয়েগেছে তারা কাদতে যানে না
আপনি আমার জবানের এই বখর্তা ক্ষমা করুন
আমার এই চোখের পানিহীন কান্না আপনি কবুল করুন!
হে রব জানি না কি জবাব দিবো হাশরে..
আমার এই জীবন যে আপনার অবাধ্যতায় পরিপূর্ণ হয়ে আছে!
এই হৃদয়ে কালো দাগ পরে আছে
এই দাগ পরিষ্কার করার ক্ষমতা আমার নেই!
হে রব এই ভাঙা হৃদয়কে আপনি আপন করে নিন!
উহিব্বুকা ইয়া রব উহিব্বুকা ইয়া রব উহিব্বুকা ইয়া রব
হে রব আপনি আবিহাকে হিফাজতে রাখুন
তাকে যেনো কোনো কালো শক্তি কখনোই স্পর্শ করতে না পারে
হে রব হয়তো সামনে আমার জন্য বিপদ অপেক্ষা করছে
ইয়া রব আপনি আমার কলিজাটাকে হিফাজতে রাখিয়েন
আবিহার চোখ থেকে পানি পরছে
আব্দুল্লাহর প্রত্যেকটি কথা যেনো আবিহার কলিজায় আঘাত করছে
তার প্রতিটি কথা তার কানে আসা মাত্রই তার শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যায়
আবিহার চোখ থেকে শুধু পানিই পরছে
আবিহা অজু করে এসে আব্দুল্লাহর পিছনে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়
আব্দুল্লাহর দু’আর মতো করে আবিহাও দু’আ করতে থাকে
কেনো জানি আজ আবিহার চক্ষু শীতল হয়ে যাচ্ছে
শুধু পানি পরছে
আবিহার ঠোঁট কাপছে
সে ঠোট কাপা অবস্থায়ই দু’আ করতে থাকে
আর একটি দু’আ বেশি করে করতে থাকে
হে আমার পালনকর্তা আপনি আমার প্রান প্রিয় স্বামীকে হিফাজতে রাখিয়েন!
তার কষ্টে যে আমিও কষ্ট পাই!
স্বামী স্ত্রী দুইজন মিলে রবের দুয়ারে ভিক্ষা চাচ্ছে
চাচ্ছে ক্ষমা পূর্বের করা পাপ থেকে
ভয়ে কাপছে ঠোট
না জানি কখন ডাক পরে যায় ওপারের
কি জাবাব দিবেন সেদিন?
যেদিন কেও রবে না আপনার চারিধারে?
তখন বলতে কি পারবেন?
হে রব আপনার জন্যই আমি সকল পাপ ছেড়েছি
ছেড়ে দিয়েছি দুনিয়া
তখন চেয়েছি আখিরাত
বলতে কি পারবেন সেদিন?
যেদিন আপনার মা, বাবা, ভাই, বোন, স্ত্রী ও সন্তান থেকেও থাকবে না কেও-ই পাশে?
আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আপনাকে তো আগেই জানিয়ে দিয়েছেন ভয়াবহ এই দিনের কথা।
আপনার আমার রব কুরআনের ৩০ নাম্বার পারার ৮০ নাম্বার সূরা, সূরাতুল ‘আবাসা এই সূরায় বলেন,
یَوۡمَ یَفِرُّ الۡمَرۡءُ مِنۡ اَخِیۡہِ
সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই থেকে,
وَأُمِّهِ وَأَبيهِ
তার মা ও তার বাবা থেকে,
وَ صَاحِبَتِہٖ وَ بَنِیۡہِ
তার স্ত্রী ও তার সন্তান-সন্ততি থেকে।
(সূরা ‘আবাসা আয়াত ৩৪,৩৫ ও ৩৬)
থাকবে কেও পাশে?
কেও না কেও-ই থাকবে না আমার আপনার পাশে
কেনো থাকবে না?
এটার উত্তরও আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা কুরআনে দিয়েছেন,
لِکُلِّ امۡرِئٍ مِّنۡہُمۡ یَوۡمَئِذٍ شَاۡنٌ یُّغۡنِیۡہِ
সেদিন তাদের প্রত্যেকেরই একটি গুরুতর অবস্থা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে।
(সূরা ‘আবাসা আয়াত ৩৭)
হায় আফসোস ‼️
আমরা এই আয়াতগুলো জানার পরেও প্রত্যাবর্তন করিনা রবের দিকে!
ও আগে থাকতে জানতেন না এই আয়াত সম্পর্কে?
তাই প্রত্যাবর্তন করেননি?
এখন তো জেনেছেন এখন প্রত্যাবর্তন করুন আপনার রবের দিকে
কাটিয়ে দিন বাকি জীবনটা রবের তরে
অন্ধকার ভেদ করে আলো উদিত হোক আপনার জীবনেও!
মরিচিকা এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে
ফিয়ে চলি সেই মহান স্বত্বার দিকে
যিনি ভালোবাসেন আমায় আমার সকল প্রিয়জন থেকেও বেশি
“তারই পায়ে থেকাই মাথা
কভু না করি উচু এই শির
না চাওয়া উপহার পাইগো যেনো
আধারের ওই সিজদাতে”
এই হৃদয়ে যতোই অন্ধকার আসুক
কখনোই ভুলিবো না রবকে!
হাজার অন্ধকার ভেদ করে একদিন
সত্যের আলো জ্বলবেই এ হৃদয়ে!
আমারও হৃদয়ে আসুক সেই বৃষ্টি
যে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে যাবে সকল ক্লান্তি
পর্বঃ- ২৪
ও আগে থাকতে জানতেন না এই আয়াত সম্পর্কে?
তাই প্রত্যাবর্তন করেননি?
এখন তো জেনেছেন এখন প্রত্যাবর্তন করুন আপনার রবের দিকে
কাটিয়ে দিন বাকি জীবনটা রবের তরে
অন্ধকার ভেদ করে আলো উদিত হোক আপনার জীবনেও!
মরিচিকা এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে
ফিয়ে চলি সেই মহান স্বত্বার দিকে
যিনি ভালোবাসেন আমায় আমার সকল প্রিয়জন থেকেও বেশি
মাসজিদের মাইকে আজান এর ধ্বনি ভেসে আসে
আব্দুল্লাহ মাথা তুলে দেখে তার পিছনে আবিহা সিজদায় পরে আছে
আব্দুল্লাহ কিছু বলে না
আব্দুল্লাহ সুন্নাত নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে যায়
ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ এর গুরুত্ব অনেক বেশি
রাসুল (সা.) ঘরে-সফরে সবসময় এটি পড়তেন। ফজরের ফরজের আগে দুই রাকাত নামাজ হলো- ফজরের আজানের পর সংক্ষিপ্ত দুই রাকাত নামাজ। এই দুই রাকাত ফজরের ফরজ আদায়ের আগে পড়তে হয়।
(মাউসুআতুল ফিকহিল ইসলামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৫৯৭)
আমরা যখন কোনো কাজ করি তখন অবশ্যই আমার ফায়দার জন্য কাজটি করি।
আর আমরা যখন কোনো কাজের ফায়দা বা তার তা পরলে কি লাভ হবে আমার এটা জানবো তখন আমরা সেই কাজটা করতে বেশি আগ্রহী হই
তাই চলুন যেনে নেওয়া যাক ফজরের ফরজ নামাজের পুর্বের দুই রাকাত সুন্নাত এর ফজিলত সম্পর্কে ঃ-
হযরত আয়েশা رضي الله عنها হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, “ফজরের দুই রাকআত (সুন্নত) পৃথিবী ও তন্মধ্যস্থিত সকল বস্তু অপেক্ষা উত্তম।”
(মুসলিম ৭২৫নং, তিরমিযী)
মা আয়েশা رضي الله عنها বলেন, ‘নবী (ﷺ) ফজরের সুন্নতের মত অন্য কোন নফল নামাযে তত নিষ্ঠা প্রদর্শন করতেন না।’
(আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, মুসলিম, সহীহ)
হযরত আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, “(ফজরের সময়) যে ব্যক্তি (স্বগৃহে) ওযু করে। অতঃপর মসজিদে এসে ফজরের (ফরয) নামাযের পূর্বে দুই রাকআত নামায পড়ে। অতঃপর বসে (অপেক্ষা ক’রে) ফজরের নামায (জামাআতে) পড়ে, সেই ব্যক্তির সেদিনকার নামায নেক লোকদের নামাযরুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর তার নাম পরম করুণাময় (আল্লাহর) প্রতিনিধিদলের তালিকাভুক্ত হয়।”
(ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, সহিহ তারগিব ৪১৩নং)
সুবহানাল্লহ এতো ফায়দা এই দুই রাকাত সুন্নাত নামাজের মধ্যে!
এতো ফায়দা তাহলে নিশ্চয় নামাজটা অনেক সময় নিয়ে পড়া লাগবে!
এই প্রশ্নটা হয়তো আমাদের মনের মধ্যে আসতে পারে
যেহেতু এতো ফায়দা বা গুরুত্ব এই নামাজের তা মনে হয় বড় সূরা কিরাত পড়তে হবে!?
চলুন দেখি হাদিস কি বলে,
হযরত হাফসা (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) ফজরের নামাযের পূর্বে আমার ঘরে দুই রাকআত সুন্নত পড়তেন এবং তা খুবই হাল্কা করে পড়তেন।’
(আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, মুসলিম, সহীহ)
হযরত আয়েশা رضي الله عنها বলেন, ‘ নবী (ﷺ) ফজরের নামাযের পূর্বে দুই রাকআত নামায পড়তেন এবং তা এত সংক্ষেপে পড়তেন যে, আমি সন্দেহ্ করতাম, তিনি তাতে সূরা ফাতিহা পড়লেন কি না।’
(আহমাদ, মুসনাদ)
হাদিস থেকে জানতে পারলাম যে এই নামাজ হাল্কা করে পড়তে হয়
কতো সুবিধা আমাদেরকে ইসলাম দিচ্ছি একে তো এতো এতো ফায়দা তার উপরে আবার নামজও দুই রাকাত তা আবার হাল্কা করতে হয়।
আরেকটু জেনে নেই প্রিয় নাবী (সা.) কি কি সূরা দিয়ে এই দুই রাকাত নামাজ পড়তেন।
জেনে নেই হাদিস থেকে এই নামাজের ক্বিরাত সম্পর্কে
এই নামাযের প্রথম রাকআতে নবী মুবাশ্শির (ﷺ) সূরা কাফিরুন এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ইখলাস (ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ) পড়তেন।
(মুসলিম, সহীহ ৭২৬, আবূদাঊদ, সুনান ১২৫৬, তিরমিযী, সুনান ৪১৭, ইবনে মাজাহ্, সুনান ১১৪৯নং)
এই হাদিসটি অনেকগুলো হাদিসের কিতাবে এসেছে।
তিনি বলতেন, “উত্তম সূরা সে দুটি, যে দুটি ফজরের পূর্বে দুই রাকআতে পড়া হয়; ‘ক্বুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন’ এবং ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ।”
(ইবনে মাজাহ্, সুনান ১১৫০, ইবনে হিব্বান, সহীহ, বায়হাকী শুআবুল ঈমান, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ৬৪৬নং)
তাই বলে কি শুধু এই দুইটাই সূরা পড়তেন সবসময় প্রিয় নাবী (সা.)?
অনেককেই বলতে ও লিখতে দেখা যায় যে শুধু এই দুইটাই সূরা দিয়ে ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়তে হবে! এই দুইটা সূরা দিয়ে পড়াই সুন্নাহ
অন্য কোনো সূরা দিয়ে এই দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়লে এই নামাজের ফজিলত বা ফায়দা পাওয়া যাবে না।
তাদের কথাগুলো নিতান্তই ভুল!
আপনি যেকোনো সূরা দিয়েই এই নামাজ পড়েন না কেনো এই নামাজের ফজিলত আপনি পেয়ে যাবেন ইন শা আল্লহ।
হাদিসে শুধু এই দুইটা সূরা দিয়েই যে রাসুল (সা.) সবসময় ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়তেন একথা তাদের ঠিক নয়!
ভুল ছাড়া আর কিছুই নয়!
তাহলে….?
চলুন চলে যাই হাদিসে দেখি হাদিস কি বলে,
কখনো কখনো তিনি (রাসুল সা.) এই নামাযের প্রথম রাকআতে সূরা বাক্বারার ১৩৬ নং আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা আলে ইমরানের ৬৪নং আয়াত পাঠ করতেন।
(মুসলিম, সহীহ ৭২৭নং, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ,হাকেম, মুস্তাদরাক, বায়হাকী)
আবার কোন কোন সময়ে প্রথম রাকআতে সূরা বাক্বারার ১৩৬নং আয়াত এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা আলে ইমরানের ৫২ নং আয়াত পড়তেন। (আবূদাঊদ, সুনান ১২৫৯নং)
আমি তাদেরকে আরো হাদিস দেখাতে পারবো যেখানে রাসুল (সা.) অন্য সূরা দিয়েও এই দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়তেন!
এই নামাজের মাসআয়েলও রয়েছে
আমরা জেনে নেওয়ার চেস্টা করবো ইন শা আল্লহ।
আব্দুল্লাহ নামাজ শেষ করে পিছনে তাকিয়ে দেখে আবিহা নামাজ পড়ছে।
আব্দুল্লাহ বসে বসে জিকির করতে থাকে
আবিহার নামাজ শেষ হলে
আব্দুল্লাহ আবিহার কোলে মাথা রেখে তার সাথে কথা বলতে থাকে আবিহাও তার সাথে কথা বলতে থাকে
একটি হাদিস উল্লেখ করি আপনাদের মাঝে
জানি মিছকিনদের খারাপ লাগবে
হাদিসটি মা ‘আয়েশা থেকে বর্ণিত,
তিনি বলেন, ‘নবী (ﷺ) ফজরের সুন্নত পড়তেন। তারপর যদি আমি ঘুমিয়ে থাকতাম তাহলে তিনি শয়ন করতেন। নচেৎ, আমি জেগে থাকলে তিনি আমার সঙ্গে কথা বলতেন।’
(আহমাদ, মুসনাদ, বুখারী, মুসলিম, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্), মিশকাত ১১৮৯নং)
আব্দুল্লাহও আবিহার সাথে কথা বলছে
কিছুক্ষন পরে আব্দুল্লাহ উঠে মাসজিদে চলে যায় ফরজ নামাজ পড়ার জন্য।
আর আবিহা বাসায় নামাজ পড়ে নেয়।
আব্দুল্লাহ নামাজ শেষে আমল করছে
হঠাৎ সে দেখে রানা এসে তার পাশে বসে
কিন্তু আব্দুল্লাহর সাথে কিছু না বলেই সে আবার উঠে বের হয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ কিছু বুঝতে পারে না
মুসাও তার মতো করে আমল করছে
মুসা ও আব্দুল্লাহ হাটার জন্য বের হয়
হাটতে থাকে আর তারা কথা বলতে থাকে
মুসা– আচ্ছা ভাই আব্দুল্লাহ আমায় একটা নাস্তিক প্রশ্ন করেছে একটি
আব্দুল্লাহ– কি প্রশ্ন?
মুসা– সে প্রশ্ন করেছে সূরা মা’আরিজ এর ৪ নাম্বার আয়াত নিয়ে
আব্দুল্লাহ– এই আয়াত নিয়ে আবার প্রশ্ন করার কি আছে?
মুসা–
تَعۡرُجُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ اِلَیۡہِ فِیۡ یَوۡمٍ کَانَ مِقۡدَارُہٗ خَمۡسِیۡنَ اَلۡفَ سَنَۃٍ ۚ﴿۴﴾
ফেরেশতাগণ ও রূহ এমন এক দিনে আল্লাহর পানে ঊর্ধ্বগামী হয়, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।
(সূরা মা’আরিজ আয়াত ৪)
তার প্রশ্নটা হলো ফেরেস্তারা এমন একদিনে মানে তারা একদিনে তার রবের দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় যা কিনা পঞ্চাশ হাজার বছর মানে তাদের একদিন আর আমাদের তা কিনা পঞ্চাশ হাজার বছর?
এটা কিভাবে সম্ভব?
আব্দুল্লাহ– হা হা হা ভাই মুসা সে কিরকম নাস্তিক?
অবশ্যই সে এটা বিজ্ঞান এর মাধ্যমে জানিতে চায়?
মুসা– হ্যাঁ সে বলেছে যে এটা কি বিজ্ঞানভিত্তিক?
আব্দুল্লাহ– হা হা হা
মুসা– ভাই আব্দুল্লাহ তুমি হাসছো কেনো?
আব্দুল্লাহ– ভাই এটা কিরকম নাস্তিক জানা নেই! সে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা চায় বাট সে নিজেই তো বিজ্ঞান জানে না!
মুসা– একটু গুছিয়ে বলো তো ভাই
আব্দুল্লাহ– সে বিজ্ঞান সম্পর্কে জানলে অবশ্যই Albert Einstein এর The theory of relativity সম্পর্কে জানা থাকতো।
এটা Time Dilation এর দিকে তাকালেই তো ইজি মাথায় ঢুকে যায়।
আমার জানা মতে এ আয়াত নিয়ে এর আগে কোনো নাস্তিক প্রশ্ন তুলে নাই।
কারন হয়তো তারা ভালোভাবেই Time Dilation সম্পর্কে জানেন।
তাই আর প্রশ্ন তুলে ধরা খেতে চায় না।
মুসা– ওও
আব্দুল্লাহ– Time Dilation এর মাধ্যমে যেখানে পিতার বয়স ৪০ বছর সেখানে ছেলের বয়স পিতার বয়সের বেশি হওয়া সম্ভব।
যদি আলোর গতিতে মানে আলোর গতি হলো প্রতি সেকেন্ড এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল
কেও যদি এই গতিতে চলতে পারে তাহলে
আচ্ছা এর আগে Albert Einstein এর আরেকটি কথা বা সুত্র বলে নেই। তা হলো বুঝতে সুবিধা হবে অনেক।
“ধীর গতিতে চলা বস্তুর সময় খুব দ্রুত গতিতে চলে
আর দ্রুত গতিতে চলতে থাকা বস্তুর সময় খুব ধীর গতিতে চলে।”
এটাই হলো মেইন বুঝার জায়গা
হ্যাঁ এখন যদি কেও আলোর গতিতে চলতে পারে মানে প্রতি সেকেন্ড ১,৮৬,০০০ মাইল গতিতে তাহলে সে যদি এক বছর চলতে থাকে থাকে মহাকাশে তাহলে সে পৃথিবীতে এসে দেখবে প্রায় ১৬ বছর কেটে গেছে
কেনো?
কারনটা হলো ওইযে আগেই বললাম
“ধীর গতিতে চলা বস্তুর সময় খুব দ্রুত গতিতে চলে
আর দ্রুত গতিতে চলতে থাকা বস্তুর সময় খুব ধীর গতিতে চলে।”
আরো সহজ করে বুঝাই যেমন ধরো
আমি ও তুমি ভাই
এখন আমার ও তোমার বয়স ২২ বছর
একেবারে সেম ২২ বছর তোমারও ২২ আর আমারও ২২ বছর
এখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে মহাকাশ ঘুরতে যাবো আমি চার হাজার আলোকবর্ষক ঘুরে আসবো আর এটা করতে হলে অবশ্যই আমার একটি মহাকাশযান প্রয়োজন যেটা আলোর গতিতে চলতে পারবে
কিন্তু স্যার Albert Einstein বলেন যে,
আলোর গতিতে চলার জন্য কোনো মহাকাশযান তৈরি করা সম্ভব নয়! এটা কোনো দিনই সম্ভব হবে না!
তবুও ধরে নিলাম যে আমরা একটি মহাকাশযান তৈরি করেছি বা আছে আমাদের যেটা কিনা প্রতি সেকেন্ডে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মাইল গতিতে ছুটতে পারবে!
এখন আমি তোমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেলাম যে তিন বছর পরে আমি ঘুরে ফিরে আসবো
ভাই মুসা একটি কথা মনে রেখো এখন কিন্তু তোমার আর আমার বয়স একই মানে ২২ বছর
আমি বেড়িয়ে পরলাম মহাকাশযানে করে ঘুরতে
আমার হাতে থাকা ঘরিটা দেখে দেখে একেবারে তিন বছর পরে আমি তিনশত আলোকবর্ষ ঘুরে এসে পরলান পৃথিবীতে মানে তোমার কাছে
এখন আমার বয়স ছিলো ২২ বছর আমি তিন বছর ঘুরে আসলাম তাহলে আমার বয়স হলো ২২+৩= ২৫ বছর
কিন্তু পৃথিবীর সময় কিন্তু আমার সাথে চলেনি
আমার এই তিন বছর পৃথিবীর প্রায় ৫০ বছর এর সমান
তাহলে এখন তোমার বয়স ২২+৫০= ৭২ বছর
এটা হবার কারন হচ্ছে আমি দ্রুত গতিতে চলেছি যার কারনে আমার সময় ধীর ভাবে ছিলো।
এখন আসি কুরআন এর আয়াতে
এখানে আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলছেন যে ফেরেস্তারা এবং রুহ (এখানে রুহ বলতে জিবরিল আমীনকে বুঝানো হয়েছে) তারা এমন এক দিনে আল্লাহর পানে ঊর্ধ্বগামী হয়, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর।
এখন ফেরেস্তা কিসের তৈরি?
নূর এর তৈরি আর নূর অর্থই হলো আলো
তাহলে আলোর গতি হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি মাইল
তাহলে ফেরেস্তারা আলোর গতিতে চলতে পারে যা কিনা মানুষ কখনই পারবে না
আর এর কারনেই ফেরেস্তাদের এক দিন আমাদের পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান
বুঝলে ভাই মুসা?
আর তুমি মোবাইলটা আমার মুখের সামনে এনে ধরে রাখছো কেনো?
মুসা– ভাই আলহামদুলিল্লাহ বুঝেছি আমি আর মোবাইলে রেকর্ড করে রেখেছি যাতে নাস্তিকটাকে শুনাতে পারি
আব্দুল্লাহ– ওওওহ
মুসা– হুম
আব্দুল্লাহ ও মুসা হাটছে আর কথা বলছে
কিছুক্ষন পরে আব্দুল্লাহ বাসায় গিয়ে ইশরাকের নামাজ শেষ করে আবিহার কুরআন তিলাওয়াত শুনছিলো
আবিহা কুরআন তিলাওয়াত করছে আর আব্দুল্লাহ তার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে
আবিহাও আব্দুল্লাহর মাথার চুলগুলো বুলিয়ে দিচ্ছে আর কুরআন তিলাওয়াত করছে
আবিহার কুরআন তিলাওয়াত শেষ হলে আব্দুল্লাহর সাথে কথা বলতে থাকে
আব্দুল্লাহ আবিহার চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে আর আবিহাও আব্দুল্লাহর চেহারার দিকে তাকিয়ে মাথা নুইয়ে দেয়
আব্দুল্লাহর নাকের সাথে আবিহার নাক লাগিয়ে ফিসফিস করে বলে,
হুজুর সাহেব ও হুজুর সাহেব
আব্দুল্লাহও ফিসফিস করে বলে,
জ্বি বলুন হুজুরনি সাহেবা,
বড্ড বেশি ভালোবাসি আপনাকে,
আপনার হাত ধরেই যেনো জান্নাতে যেতে পারি
এই হাত কখনোই ছাড়বেন না কিন্তু
আমি কি করে আমার পাগলী বিবি টার হাতখানা ছেড়ে দেই বলুন? –আব্দুল্লাহ বলল
উহিব্বুকা স্বামী আমার — আবিহা বলল
পর্বঃ- ২৫
হুজুর সাহেব ও হুজুর সাহেব
আব্দুল্লাহও ফিসফিস করে বলে,
জ্বি বলুন হুজুরনি সাহেবা,
বড্ড বেশি ভালোবাসি আপনাকে,
আপনার হাত ধরেই যেনো জান্নাতে যেতে পারি
এই হাত কখনোই ছাড়বেন না কিন্তু
আমি কি করে আমার পাগলী বিবি টার হাতখানা ছেড়ে দেই বলুন? –আব্দুল্লাহ বলল
উহিব্বুকা স্বামী আমার — আবিহা বলল
আব্দুল্লাহ– উহিব্বুকা বউজান
আব্দুল্লাহ আবিহার কপালে একটি চুমু দেয়
আবিহা তার কপালটা আব্দুল্লাহর ঠোটের কাছে ধরে রাখে।
সকাল প্রায় ১১ টা বাজে
আব্দুল্লাহ বাহিরে একটু কাজে আছে
আবিহা ঘরে
আব্দুল্লাহ কাজ শেষ করে আসার সময় রাস্তায় অনেকগুলো ছেলেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
সেখানে হাসানও ছিলো
আব্দুল্লাহ নিজ মনে হাটতে থাকে
যখন তাদের সামনে থেকে যাচ্ছিলো তখন একটি ছেলে আব্দুল্লাহকে ডাক দেয়
আব্দুল্লাহ গিয়ে সালাম দেয়
হাসান আব্দুল্লাহর দিকে তাকিয়ে থাকিয়ে থাকে
আব্দুল্লাহ– কিছু বলবেন ভাই?
ছেলেটা– কিরে তোর নাকি কলিজা বেশি বাড়ছে?
আব্দুল্লাহ– কলিজা আবার কমে নাকি ভাইজান?
ছেলেটা– তুই চিনোছ আমায়?
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ চিনি মানুষ হিসেবে
ছেলেটা– মজা করতাছোছ?
আব্দুল্লাহর মাথাটা একটু গরমই হয়ে যায় তবুও সে কন্ট্রোল করতে থাকতে নিজেকে
ছেলেটা– কিরে কথা বল আমারে চিনোছ?
আব্দুল্লাহ– ভাই আপনি যার লিডে চলেন তাকে গিয়ে আমার নাম বলিয়েন আমার নাম আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ ওকে
ছেলেটা– আমার সিনিয়রকে যদি বলি তুই আমার সাথে বিয়াদবি করেছিছ তাহলে তো তোকে একেবারেই শেষ করে দিবে
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ ভাইজান আপনি শুধু আপনার সিনিয়রের কাছে গিয়ে আমার নামটা বলিয়েন যে আব্দুল্লাহ
হয়তো যদি শুধু আব্দুল্লাহ বলেন তাহলে আপনার ওই সিনিয়রই আপনায় মারতে পারে।
ছেলেটা দুইটি ছেলেকে ইশারা দিলো
ছেলে দুইটি আব্দুল্লাহর পিছন থেকে এসে তার শরীরে ধাক্কা দিচ্ছে
আর বলছে
কিরে বেশি বড় হয়ে গেছোছ তাই না?
আব্দুল্লাহ– ভাই এমন করছেন কেনো আমার সাথে?
কই এমন করতাছি বল?
তুই হুজুর বলে তাও এখনো কিছু বলিনি বুঝলি?
ছেলেটা আব্দুল্লাহকে বলে
ওই যা যা সোজা এই রাস্তা দিয়ে চলে যা
আব্দুল্লাহ হাসান এর দিকে বন্ধুত্বের এক জোড়া চোখ নিয়ে তাকিয়ে চলে আসে
আব্দুল্লাহ আকাশের দিকে চেয়ে থাকে
তার চোখের কোনায় জল
অশ্রুসিক্ত চোখগুলো আকাশের দিকে চেয়ে রয়।
আব্দুল্লাহ বাসায় ঢুকবে এমন সময়ই তার কাধে কে যেনো হাত দেয়
আব্দুল্লাহ পিছনে তাকিয়ে দেখে
কিছু পুলিশ দাঁড়ানো
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
পুলিশ– অলাইকুম সালাম
আব্দুল্লাহ– কিছু হয়েছে কি স্যার?
পুলিশ– কি হয়েছে তা কিছুই জানেন না?
আব্দুল্লাহ– না তো কি হয়েছে স্যার?
পুলিশ– আমরা আপনাকে লক্ষ্য করেছি আপনি ওই ছেলেদের কাছে কি করছিলেন?
আব্দুল্লাহ– তারা তো আমায় ডাক দিয়ে দাড় করিয়েছিলো
পুলিশ– ওও তার পর??
আব্দুল্লাহ– তারপর
পুলিশ– তারপর আর কিছু বলা লাগবে না আমাদের কাছে ইনফরমেশন আছে যে আপনি ইয়াবা সেল দিয়ে থাকুন
আব্দুল্লাহ– আস্তাগফিরুল্লহ কি বলছন স্যার এইগুলো আপনি?
পুলিশ– এই তাকে চেক করুন তো
এইবলে একটি পুলিশ আব্দুল্লাহকে চেক করতে থাকে
আব্দুল্লাহ– স্যার চেক করেই বা কি? আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে স্যার প্লিজ আমার কথাটা শুনুন আমি ওই ছেলেদের চিনি না
স্যার এইযে দেখেন এটা পেয়েছি (পুলিশটি বললো)
পুলিশ অফিসার দেখলো ছোট একটি ব্যাগ এরমতো
পুলিশ ওইটা হাতে নিয়ে খুলে দেখলো এটার ভিতরে ইয়াবা
পুলিশ গুনতে লাগলো
পুলিশ– তো মিস্টার…?
আব্দুল্লাহ– আব্দুল্লাহ
পুলিশ– তো মিস্টার আব্দুল্লাহ এখানে ১০০ টা ইয়াবা রয়েছে
আব্দুল্লাহ– স্যার বিশ্বাস করুন আমি জানি না এইগুলো কিভাবে আমার কাছে এলো।
পুলিশ– ধরা পরলে সবাই এই কথাই বলে
আব্দুল্লাহ– স্যার প্লিজ আমার কথাটা বিশ্বাস যান
পুলিশ– ওদেরকে কতোগুলো সেল দিয়েছেন?
আব্দুল্লাহ– স্যার আমি এই কাজ করিনা আমাকে বিশ্বাস যান প্লিজ স্যার
পুলিশ– অকে গাড়িতে তুলো
আব্দুল্লাহ– স্যার আপনাদের হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে!
পুলিশ কিছু বলে না
আব্দুল্লাহকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় থানার উদ্দেশ্যে
আব্দুল্লাহ রাস্তার পাশে হাসান ও আরফান কে তার দিকে তাকিয়ে হাসতে দেখে
আব্দুল্লাহ তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে অশ্রুসিক্ত চোখগুলো নিয়ে।
আব্দুল্লাহ হাত দিয়ে তার ভিজা চক্ষুগুলো মুছে আর শুধু আকাশ পানে চায়।
হাসানা– প্ল্যান A এ সম্পুর্ন এবার প্ল্যান B শুরু করতে হবে।
আরফান– হ্যাঁ চল তাহলে
আব্দুল্লাহকে থানায় নেওয়া হয়েছে
আব্দুল্লাহ থানার ভিতরে ঢুকেই দেখে এই থানাটা যেনো অন্য সকল থানা থেকে ব্যতিক্রম
অনেক থানায় টুপি
আর নামাজের জন্য পাশেই একটি মেহরাবের মতো তৈরি করা।
আর সবাই আব্দুল্লাহকে দেখে আগে সালাম দিয়েছে আব্দুল্লাহও সালামের উত্তর নেয়
সবাই আব্দুল্লাহর দিকে এক অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
আব্দুল্লাহ কিছুই বুঝতে পারে না।
আব্দুল্লাহ তার ফোনটা বের করেই আগে মুসাকে ফোন দেয়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ মুসা আমি থানায় একটু আসতে পারবে?
আব্দুল্লাহ এক শ্বাসে কথাগুলো বলে গেলে
অছি– এই এই এইদিকে দিন ফোন
এই বলে আব্দুল্লাহর কাছ থেকে কেড়ে ফোনটি নিয়ে যায় থানার অছি
ফোনটা নিয়ে কল কেটে দিয়ে টেবিলের উপরে রাখে।
মুসা কিছুই বুঝতে পারে না সে শুধু আব্দুল্লাহর সালাম আর সে বলেছে থানায় সে এটা শুনেছে
মুসা দ্রুত ঘর থেকে বাহির হয়ে যায় থানার উদ্দেশ্যে
আর ভাবতে থাকে আব্দুল্লাহ থানায় কেনো?
ওর কি হলো?
ওর বন্ধুরা আবার কিছু করলো নাকি?
আব্দুল্লাহ চেয়ারে বসা
থানার অছি মোটা একখানা খাতা টেবিলের উপরে রাখলো রেখে কি যেনো লিখছে
অছি– নাম?
আব্দুল্লাহ– স্যার আমার কথা বিশ্বাস যান আমি তাদেরকে চিনি না আর আমার কাছে এইগুলো কিভাবে আসলো তা আমি জানি না
অছি– আহা বেশি কথা বলবেন না যে প্রশ্নগুলো করছি তার উত্তর দিন!!!
আব্দুল্লাহ– আব্দুল্লাহ
অছি– বাবার নাম?
আব্দুল্লাহ–…………
অছি– কোথায় থাকেন? বাড়ির ঠিকানা?
আব্দুল্লাহ–………. এর পাশে
অছি– কি করেন? মানে শুধু কি এইগুলো বিক্রিই করেন নাকি অন্য কোনো কাজও করেন?
আব্দুল্লাহ– নতুন চাকরীতে জইন করবো ৬ তারিখ ইন শা আল্লহ
অছি– ওওওহ, আচ্ছা এখন মূল কথায় ফিরা যাক
আব্দুল্লাহ– কি কথা স্যার?
অছি– এইগুলো কোথা থেকে আনেন? আর কাদের থেকে আনেন তাদের নাম ঠিকানা বলুন!
আব্দুল্লাহ– স্যার আমার কথাটা বিশ্বাস করুন প্লিজ!
আমি একজন মু’মিন আর মু’মিন হিসেবে আমার কথাটা প্লিজ বিশ্বাস করুন
অছি– নিজে চেক করে আপনার পকেট থেকে বের করেছি আমি
আব্দুল্লাহ– স্যার কেও হয়তো আমাকে ফাসাচ্ছে
অছি– কিছু করার নেই আমাদের! আপনি বলুন যে এইগুলো কোথা থেকে আনেন?
আব্দুল্লাহ– স্যার আমি সত্যি বলছি এগুলো আমার কাছে কোথা থেকে এসেছে তা আমি জানি না!
অছি– আপনার শরীরে হাত তুলি এটা কি আপনি চান?
আব্দুল্লাহ মাথা নিচু করে
আব্দুল্লাহর চোখ থেকে পানি পরছে
অছি– দেখুন এই থানার এস পি সাহেব খুবই ভালো মানুষ তিনিই বলেছেন যেনো হুজুরদেরকে সম্মান করি তাই আপনাকে এখনো কিছু বলছি না বাট আপনি যদি সত্যিটা না বলেন তাহলে অন্য উপায় অবলম্বন করতে হবে!
আব্দুল্লাহর জবান দিয়ে কিছুই বের হচ্ছে না
শুধু “ইয়া রব” “ইয়া রব” “ইয়া রব” বের হচ্ছে
আব্দুল্লাহর চোখ থেকে পানি পরছে আর জবানে শুধু “ইয়া রব” বের হচ্ছে।
অছি সাহেব আব্দুল্লাহর দিকে তাকায় আর তার মুখে ইয়া রব শুনতে পায়
কিন্তু তারও কিছু করার নেই
অছি সাহেব পানির গ্লাসটা আব্দুল্লাহর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
নিন ভাই পানি খান,
আব্দুল্লাহ কাদু কাদু কন্ঠে বলে,
ভাইজান কসম ওই সত্ত্বার যার হাতে আমি আব্দুল্লাহর প্রান এই পর্যন্ত আমি আপনায় যা বলেছি সবটুকু সত্যই বলেছি
জানি না আমার রব আমার থেকে কেনো এই পরিক্ষা নিচ্ছে!
কিন্তু আমি ধৈর্য হারাবো না ইন শা আল্লহ
এই বলে আব্দুল্লাহ পানির গ্লাসটা নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে ৩ শ্বাশে পানিটা পান করে আলহামদুলিল্লাহ বলে।
আব্দুল্লাহ গ্লাসটা টেবিলে রেখে বলে,
জাযাকাল্লহু খইরন
পর্বঃ- ২৬
আব্দুল্লাহ কাদু কাদু কন্ঠে বলে,
ভাইজান কসম ওই সত্ত্বার যার হাতে আমি আব্দুল্লাহর প্রান এই পর্যন্ত আমি আপনায় যা বলেছি সবটুকু সত্যই বলেছি
জানি না আমার রব আমার থেকে কেনো এই পরিক্ষা নিচ্ছে!
কিন্তু আমি ধৈর্য হারাবো না ইন শা আল্লহ
এই বলে আব্দুল্লাহ পানির গ্লাসটা নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে ৩ শ্বাশে পানিটা পান করে আলহামদুলিল্লাহ বলে।
আব্দুল্লাহ গ্লাসটা টেবিলে রেখে বলে,
জাযাকাল্লহু খইরন
—ওয়া আংতুম ফা জাযাকুমুল্লাহু খইরন
অছি– দেখুন ভাই আপনাকে একটি সুযোগ দিতে পারি
আব্দুল্লাহ– কিরকম?
অছি– আপনার নাম খাতায় তুলছি না এখন!
আপনি আমাদের থানার এস পি আসার আগ পর্যন্ত যদি পারেন তাহলে নিজেকে প্রমান করুন যে আপনি নির্দোষ!
আব্দুল্লাহ– জাযাকাল্লহু খইরন ভাইজান!
অছি– হ্যাঁ কিন্তু আপনাকে জেলে থেকেই তা প্রমান করতে হবে!
আব্দুল্লাহ– কিন্তু আমি বাহিরে না গেলে কিভাবে প্রমান করবো?
অছি– তা তো জানি না
এরই মধ্যে আজান হয়ে যায়
আব্দুল্লাহ– স্যার নামাজ এর জন্য তো মাসজিদে যেতে পারি?
অছি– না জেলের মধ্যেই আপনাকে নামাজ আদায় করতে হবে!
এই বলে অছি চেয়ার থেকে উঠে লকাবটা খুলে দিয়ে বললো যান ভিতরে যান!
আব্দুল্লাহ– ভিতরে চলে যায়।
অছি সাহেব জায়নামাজ বিছাচ্ছে
আর থানায় থাকা বাকিরা অজু করছে।
আব্দুল্লাহ– আচ্ছা ভাই এখানে কি জামাত হয়?
অছি– হ্যাঁ হয় কিন্তু স্যার না থাকায় এখন হয় না নিজেরাই একা একা পড়ে নেই।
আব্দুল্লাহ– কেনো ভাই?
অছি– কারন আমাদের কুরআন পড়া তেমন শুদ্ধ না তাই। আমরা এমনি এখন কুরআন শুদ্ধ করে পড়ার চেস্টা করছি মানে শিখছি।
আব্দুল্লাহ– ওওও তাহলে ভাইজা একটা কথা বলি?
অছি– হ্যাঁ বলুন
আব্দুল্লাহ– আমার কুরআন পড়া আলহামদুলিল্লাহ শুদ্ধ আছে আমি কি জামাত নামাজ পড়াতে পারি?
অছি– না থাক প্রয়োজন নেই!
আব্দুল্লাহ– ভাই জামাতে নামাজ আদায়ের তাগিদ দিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা।
ইরশাদ হয়েছে-‘তোমরা রুকুকারীদের সাথে রুকু
করো’
(সূরা : বাকারা : ৪৩)।
অর্থাৎ জামাতে নামাজ আদায়কারীদের সাথে নামাজ আদায় করো।
রাসূলুল্লাহ সা: সারা জীবন জামাতের সাথেই নামাজ আদায় করেছেন। এমনকি ইন্তেকালপূর্ব অসুস্থতার সময়ও জামাত ছাড়েননি। সাহাবায়ে কেরামের পুরো জীবনও সেভাবে অতিবাহিত হয়েছে
(বুখারি-হাদিস : ৬৪৪)।
পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা, যা ওয়াজিবের সাথে তুলনীয় (অর্থাৎ এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি) (মুসলিম, হাদিস : ১০৯৩)।
শরিয়ত অনুমোদিত কোনো ওজর বা অপারগতা ছাড়া জামাতে শরিক না হওয়া বৈধ নয়। যে ব্যক্তি জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গুনাহগার হবে (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬৪)।
ভাই অনেক সাওয়াব পাওয়া যায়
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘জামাতে নামাজের ফজিলত একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি’
(মুসলিম-১৪৭৭)।
জামাতে নামাজ আদায় করলে প্রতি কদমে নেকি লাভ হয় এবং গুনাহ মাফ হয়। সাথে একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, নবীজী সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে পবিত্রতা লাভ করে মসজিদে এসে নামাজ আদায় করে তার প্রতি কদমে একটি নেকি দেয়া হয়। একটি করে গুনাহ মাফ করা হয়। একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়
(মুসলিম-১০৯৩)।
আরো একটি ফজিলত আছে
জামাতে নামাজ আদায় করলে প্রথম কাতারের সওয়াব লাভ করার সুযোগ হয়। নবীজী সা: ইরশাদ করেছেন, মানুষ যদি আজান এবং প্রথম কাতারে নামাজের সওয়াব জানতো তাহলে প্রয়োজনে লটারি করে হলেও তারা তা লাভ করতো
(বুখারি- হাদিস : ৬১৫)।
জামাতে নামাজ আদায় করলে সারা রাত ইবাদতের সওয়াব লাভ করা যায়।
রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ইশার নামাজ জামাতে আদায় করে সে যেন অর্ধরাত্রি ইবাদত করল। আবার যদি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে তবে সে যেন পূর্ণ রাত ইবাদত করল (মুসলিম-১৪৯১)।
জামাতে নামাজ আদায় করলে সারা দিন আল্লাহর হেফাজতে থাকা যায়।
নবীজী সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করে, সে আল্লাহর হেফাজতে থাকে। আল্লাহর হেফাজতে থাকা ব্যক্তিকে যে কষ্ট দেবে, আল্লাহ তাকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ-২/২৯)।
ভাই এতো ফজিলত থাকার পরেও কি আমরা জামাতে নামাজ পড়বো না?
তাছারা ভাই বিনা ওজরে জামাত পরিত্যাগকারীর নিন্দায় নবীজী কঠোর কথা বলেছেন।
রাসূল সা: বলেন, ‘আমার প্রাণ যাঁর হাতে, তাঁর শপথ করে বলছি, আমার ইচ্ছা হয় আমি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেই আর নামাজের আজান দেয়ার জন্য হুকুম দেই। তারপর আমি এক ব্যক্তিকে হুকুম করি, যেন সে লোকদের নামাজের ইমামতি করে। আর আমি ওই সব লোকদের দিকে যাই, যারা নামাজের জামাতে হাজির হয়নি এবং তাদের বাড়িঘরগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেই’
(বুখারি, হাদিস : ৬১৮)।
অছি– তাহলে কি ভাই কোনো কারনেই জামাত ছাড়া নামাজ পড়া যাবে না?
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ ভাই যাবে। আসলে ইসলাম এতোটা কঠোর নয়! কিছু অপারগতার কারণে জামাতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি আছে।
অছি– কি সেগুলো?
আব্দুল্লাহ– অনেক আছে আমি কিছু উল্লেখ করছি।
১. যদি মুষলধারে বৃষ্টি হয় (বুখারি : ১১২৬)।
২. প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, ঘর থেকে বের হলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকলে জামাতে শরিক না হওয়ার অবকাশ আছে (বুখারি : ৬২৬)।
৩. রাস্তায় বেশি কাদা হলে (বদরুল মুনির : ৪/৪১৯)।
৪. অতি আঁধার হওয়া (জমউল জাওয়ামে : ১/৩০৫৮)।
৫. রাতে যদি অতিমাত্রায় মেঘ হয় (মুসনাদে আহমাদ : ৫৩০২)।
৬. অসুস্থ হলে (আবু দাউদ : ৪৬৪)।
৭. দৃষ্টিহীন ব্যক্তির জন্য (সহিহ বুখারি : ৬২৭)।
৮. এমন বৃদ্ধ, যিনি মসজিদে আসতে সক্ষম নন (ইবনে মাজাহ : ৭৮৫)।
৯. কোনো রোগীর সেবাশুশ্রƒষায় আত্মনিয়োজিত থাকলে (প্রাগুক্ত)।
১০. ঘন ঘন প্রস্রাব-পায়খানার বেগ হলে (তিরমিজি : ১৩২)।
১১. বন্দী অবস্থায় (ইবনে মাজাহ: ৭৮৫)।
১২. এক পা বা উভয় পা কর্তিত হলে (আবু দাউদ : ৪৬৪)।
১৩. এমন রোগ হওয়া, যার কারণে চলতে অক্ষম। যেমন অর্ধাঙ্গ রোগ ইত্যাদি (প্রাগুক্ত)।
১৪. খানা সামনে, সেও ক্ষুধার্ত, মনের আকর্ষণ খানার দিকে। এমন অবস্থায় জামাতে না গেলেও চলবে (সহিহ বুখারি : ৬৩১)।
১৫. সফরের প্রস্তুতি গ্রহণের সময় (সহিহ বুখারি : ৩/৬৭)।
১৬. জামাতে নামাজ আদায় করতে গেলে কোনো সম্পদ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকলে জামাত ত্যাগ করতে পারবে (আবু দাউদ : ৪৬৪)।
১৭. জামাতে যাওয়ার কারণে ট্রেন, ফ্লাইট বা গাড়ি চলে যাওয়ার আশঙ্কা হলে জামাতে শরিক না হওয়ার অনুমতি আছে (আবু দাউদ : ৪৬৪)।
ভাই আমাকে বিশ্বাস করতে করতে পারেন আমি পালাবো না ইন শা আল্লহ
আছি কিছুক্ষন ভেবে বলে,,
আচ্ছা আসুন
আব্দুল্লাহ লকাব থেকে বের হয়ে অজু করে নেয়
এরপরে যোহরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে যায়।
যোহরের ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত ও ফরজ নামাজের পরে দুই রাকাত সুন্নাত নামাজ এটা সিন্নাতে মুআক্কাদা
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) জোহরের আগে চার রাকাত সুন্নত ও জোহরের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়তেন।
(তিরমিজি, হাদিস নং: ১/৫৫০)
এই সুন্নাত নামাজের ফজিলত অনেক বেশি
আবু সুফিয়ান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার বোন উম্মে হাবিবা (রা.) (প্রিয় নবীজীর সা. বিবি) কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, ‘আমি স্বয়ং রাসুল (সা.) থেকে শুনেছি, তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি জোহরের নামাজের পূর্বের এবং পরের সুন্নত নামাজের পূর্ণ খেয়াল রাখবে (নিয়মিত আদায় করবে), মহান আল্লাহ তায়ালা তার থেকে জাহান্নামের আগুন হারাম করে দেবেন।
(তিরমিজি, হাদিস : ১/৫৫৪)
ফজর ও জোহর নামাজের পূর্ববর্তী সুন্নত নামাজ সম্পর্কে আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) কখনই জোহরের পূর্বের চার রাকাত সুন্নত ও ফজরের পূর্বের দুই রাকাত সুন্নত ছাড়তেন না।’
(বুখারি, হাদিস : ১১৮২)
আব্দুল্লাহর নামাজ শেষ হলে পিছনে তাকিয়ে দেখে সবাই তার জন্য অপেক্ষা করছে
মানে ইমাম এর জন্য
আব্দুল্লাহ দাঁড়িয়ে ছোটখাটো সেই মেহরাবটার কাছে গিয়ে দাঁড়ায়
পিছন থেকে একজন ইকামত দিচ্ছে।
ইকামত শেষ হলে আব্দুল্লাহ “আল্লহু আকবার” বলে নামাজ শুরু করে।
মুসা থানার সামনে এসে পরেছে থানার ভিতরে ঢুকতেই দেখে জামাতে নামাজ পড়ছে
মুসাও জামাতে অংশ নিয়ে নেয়।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া র’হমাতুল্লহ” দুইবার বলে নামাজ শেষ করে
পিছনের পুলিশগুলো দেখে তাদের পিছনে একটি হুজুর ছেলে নামাজ পড়ছে
মুসা দুই রাকাত নামাজ পায়নি
তাই সে তার না পাওয়া নামাজটুকু শেষ করছে
আব্দুল্লাহ আমলে ডুব দেয়
ফরজ নামাজ শেষে অনেক আমল আছে আর এই আমলের ফায়দাও অনেক বেশি
আব্দুল্লাহ আয়াতুল কুরশি পড়ছে
কেননা হাদিসে এসেছে,
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন ‘প্রতি ফরজ নামাজের পর যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পড়বে তার জান্নাতে যাওয়ার পথে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকবে না।’
(আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, নাসায়ি, হাদিস : ১০০)।
(নোটঃ- আয়াতুল কুরশি হলো কুরআনের দ্বিতীয় সূরা, সুরাতুল বাকারাহ এর ২৫৫ নাম্বার আয়াত। ২৫৫ নাম্বার আয়াতকে আয়াতুল কুরশি বলা হয়)
অন্যরাও আমলে ডুবে আছে।
আব্দুল্লাহ সুন্নাত দুই রাকাত পড়তে থাকে
বাকিরাও পড়ে
সুন্নাত শেষ হলে আব্দুল্লাহ পিছনে তাকিয়ে দেখে মুসা নামাজ পড়ছে
আব্দুল্লাহ কিছুটা শান্তি পায়
কারন এই সময় প্রমান জোগার করার জন্যে মুসাকে খুবই প্রয়োজন।
অছি– ভাই আপনি লকাবে চলে যান
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ ভাই যাচ্ছি।
মুসা নামাজ পড়ছে
তার সামনে দিয়ে একজন পুলিশ যাওয়া ধরলে মুসা তার হাত বারিয়ে তাকে বাধা দেয়
পুলিশটি মুসার হাতের সাথে বাধা পেয়ে তৎখনাত পিছনে চলে আসে।
কেউ যদি অজ্ঞতাবশত নামাজি ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, তাহলে তাকে হাত দিয়ে কিংবা একটু উচ্চস্বরে তাসবিহ পড়ে সতর্ক করাও জায়েজ আছে। তবে নামাজি ব্যক্তির জন্য এমন না করাই উত্তম। তবে হ্যাঁ, তার সামনে দিয়ে কারও অতিক্রম করার আশঙ্কা থাকলে, নামাজ শুরু করার আগেই সুতরা সামনে রাখা সুন্নত।
(আল-বাহরুর রায়িক : ২/১৮; আল-মুহিতুল বুরহানি : ২/২১৩; ফাতহুল কাদির : ১/৩৫৫; বাদায়িউস সানায়ি : ১/৫০৯)
নামাজী ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমের ব্যাপারে হাদিসে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, সে যদি জানত (এর গুনাহ কিংবা শাস্তি কতটা ভয়াবহ)— তাহলে নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে এ পদক্ষেপের তুলনায় তার কাছে একশত বছর দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম মনে হতো।’
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৯৪৬; কানজুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদিস : ১৯২৫২)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী যদি জানত— এতে তার জন্য কী অপেক্ষা করছে, তাহলে চল্লিশ পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে থাকাও ভালো মনে করতো।’ আবুন নাজর বলেন, আমার জানা নেই— হাদিসে চল্লিশের কী অর্থ। চল্লিশ দিন, চল্লিশ মাস, নাকি চল্লিশ বছর? (আবু দাউদ, হাদিস : ৭০১; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৬; সুনানে দারেমি, হাদিস : ১৪১৭)
প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে কি নামাজি ব্যক্তির সামনে দিয়ে যাওয়াই যাবে না?
উত্তরে বলবো হ্যাঁ যাওয়া যাবে
কখন?
নামাজির সামনে সুতরার ব্যবস্থা করে অতিক্রম করা যাবে। এক হাত বা তার চেয়ে দীর্ঘ কোনো বস্তু যেমন- চেয়ার, টুল ও কাঠের স্ট্যান্ড ইত্যাদি সুতরা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। নামাজির সামনে তা দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে।
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৯৯)
কিন্তু যদি সুতরা না থাকে বা না পাওয়া যায়?
যদি নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমের জন্য সুতরা না থাকে, তাহলে এক্ষেত্রে ইসলামের বিধান হলো- নামাজির সামনে যদি সুতরা না থাকে এবং মসজিদ বেশ বড় ও অনেক প্রশস্ত হয়; তাহলে নামাজি ব্যক্তির দুই/তিন কাতার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে। তবে বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে এভাবে অতিক্রম না করা উত্তম।
(খুলাসাতুল ফাতাওয়া : ০১/৫৯)
মসজিদ যদি বড় হয় অর্থাৎ মসজিদের প্রশস্ততা চল্লিশ হাতের বেশি হয় তাহলে উক্ত মসজিদে নামাজরত ব্যক্তির দুই/তিন কাতার সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয আছে।
পক্ষান্তরে চল্লিশ হাতের চেয়ে ছোট মসজিদ হয়, সেক্ষেত্রে নামাজরত ব্যক্তির সামনে দিয়ে ‘সুতরা (প্রতিবন্ধক) ব্যতীত’ অতিক্রম করা জায়েজ হবে না। সুতরা সামনে রেখেই প্রয়োজনে অতিক্রম করতে পারবে।
(ফাতহুল কাদির : ১/৩৫৪; ফতওয়ায়ে শামি : ১/৬৩৭; আল-বাহরুর রায়েক : ২/১৭)
সুতরার পরিমাপ কতটুকু?
নামাজি ব্যক্তির সামনে দিয়ে যদি অন্যদের যাতায়াতের সম্ভাবনা থাকে, তাহলে নামাজ শুরু করার পূর্বেই সামনে ‘সুতরা’ রেখে নামাজ শুরু করা সুন্নত। আর সুতরার, সর্বনিম্ন পরিমাণ হলো- এক হাত হওয়া।
হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.)-কে সুতরার পরিমাণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে— তিনি বললেন, ‘হাওদার লাঠির মতো।’
(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫০০)
এর ব্যাখ্যায় হজরত আতা (রা.) বলেন, হাওদার লাঠির দৈর্ঘ্য হলো- এক হাত বা তার চেয়ে একটু বেশি। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৬৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১০৪; শরহুল মুনইয়াহ ৩৬৮)
আব্দুল্লাহ লকাবের মধ্যে চলে যায়
মুসার নামাজ শেষ হলে
মুসা লকাবের সামনে যায়
মুসা– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া র’হমাতুল্লহ আব্দুল্লাহ তুমি এখানে কেনো?
আব্দুল্লাহ সালামের উত্তর নিয়ে বিস্তারিত তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা বলতে থাকে।
আব্দুল্লাহ– ভাই মুসা এখন তুমি একটু আমাকে হেল্প করবে?
মুসা– ইন শা আল্লহ আমি আমার সবটুকু দিয়ে তোমার পাশে ছিলাম,আছি এবং থাকবো ইন শা আল্লহ।
আব্দুল্লাহ– ভাই তুমি আগে আমার ফ্যামিলিকে দেখবে!
কারন ওরা এখন আমার পরিবারকে ক্ষতি করবার চেস্টা করবেই বিশেষ করে আবিহার!
আর তোমারও ক্ষতি করবে ওরা তুমিও বেচে থেকে ওদের থেকে!
এইদিকে হাসান ও আরফান আব্দুল্লাহদের বাসায় যায়
গিয়ে আব্দুল্লাহর বাবাকে জানায় যে আব্দুল্লাহকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে
কেনো ধরেছে জানতে চাইলে বলে
আসলে আঙ্কেল বলতে নিজের খারাপ লাগছে
বাট বলতে হচ্ছে তবুও!
আব্দুল্লাহ নেশার সাথে জড়িত ছিলো
সে বিভিন্ন নেশাদ্রব্য সেল দিতো
আজ পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরেছে
আর ধরে নিয়ে হাজতে ভরে দিয়েছে।
পর্বঃ- ২৭
এইদিকে হাসান ও আরফান আব্দুল্লাহদের বাসায় যায়
গিয়ে আব্দুল্লাহর বাবাকে জানায় যে আব্দুল্লাহকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে
কেনো ধরেছে জানতে চাইলে বলে
আসলে আঙ্কেল বলতে নিজের খারাপ লাগছে
বাট বলতে হচ্ছে তবুও!
আব্দুল্লাহ নেশার সাথে জড়িত ছিলো
সে বিভিন্ন নেশাদ্রব্য সেল দিতো
আজ পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধরেছে
আর ধরে নিয়ে হাজতে ভরে দিয়েছে।
হাসান ও আরফান চলে যায়
আর বাহিরে বের হয়ে বলতে থাকে
প্লান B কোম্পলিট
এবার প্লান C এর পালা
মুসা– ভাই তুমি টেনশন করিও না তোমার পরিবার মানে আমারও পরিবার তাই আমি তাদের খেয়াল রাখবো ইন শা আল্লহ
আব্দুল্লাহর বাবা হাসান এর কথাগুলো এখনো বিশ্বাস করছে না
ঘরে চলে যায় আব্দুল্লাহর বাবা
আব্দুল্লাহর মা– কে এসেছিলো?
আব্দুল্লাহর বাবা সকল কথাগুলো আব্দুল্লাহর আম্মুকে বলে
আব্দুল্লাহর মা– কি বলছো তুমি এইগুলো? (কেদে)
আব্দুল্লাহর বাবা– ধৈর্য ধরো,,,, আমি একটু পুলিশস্টেশনে যাচ্ছি
আব্দুল্লাহর মা– আমিও যাবো
না তুমি থাকো আমি গিয়ে দেখি,,,,আব্দুল্লাহর বাবা
না আমিও যাবো,,,
আচ্ছা তাহলে চলো,,,,কিন্তু আবিহা?
এরই মধ্যে আব্দুল্লাহ ফোন দেয়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
বাবা– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লহ বাবা তুমি কোথায়?
আব্দুল্লাহ– বাবা আমি পুলিশস্টেশনে আছি
বাবা– কেনো? তাহলে কি হাসান যা বললো তা সত্য?
আব্দুল্লাহ– হাসান কি বলেছে তা জানি না। মুসা বাসায় যাচ্ছে সে তোমাদেরকে বলবে
বাবা– আমি আর তোমার আম্মুতো আসতেছিলাম থানায়
আব্দুল্লাহ– নাহ বাবা আসা লাগবে না আমি খুব শিগ্রই চলে আসবো ইন শা আল্লহ
বাবা– কিন্তু,,,,,
আব্দুল্লাহ– বাবা আমার উপরে যে বিশ্বাস তোমাদের আছে তা কখনোই হারাবে না দয়া করে! আমি আব্দুল্লাহ আগের আব্দুল্লাহ নই!
বাবা– আচ্ছা বাবা।
এরপরে ফোন কেটে দেয় আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ– মুসা ভাই তুমি যাও এখন আমার বাসায় আর তোমার নিজের খেয়াল রেখো ভাই…..
মুসা– নিজের খেয়াল রেখো ভাই আর আমি খুব শিগ্রই আসছি।
এই বলে মুসা চলে আসে
থানার অফিসার বলে,,,
ভাই কেনো জানি আমারও বিশ্বাস হচ্ছে না যে আপনি এই কাজ করেন
আব্দুল্লাহ– ভাই আমাকে হয়তো ফাসানো হচ্ছে
অফিসার– ভাই আপনি প্রুভ তৈরি করুন তাহলে হবে আর কিছু লাগবে না
আর এই নিন আপনার মোবাইল ফোন
আব্দুল্লাহ– জাযাকাল্লহু খইরন ভাইজান।
আব্দুল্লাহ ফোন নিয়ে আবিহাকে ফোন দেয়
আব্দুল্লাহ– আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
আবিহা– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লহ
আব্দুল্লাহ কি বলবে তা ভেবে পায় না শুধু এইটুকু বলে
আব্দুল্লাহ– আবিহা আপনি নিজের ও নিজের পর্দার খেয়াল রাইখেন,,,,,, আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যা করেন তা তার বান্দার ভালোর জন্যই করেন!
আবিহা– কি হয়েছে? আপনার? আপনি এভাবে কথা বলছেন কেনো? (নরম কন্ঠে)
আব্দুল্লাহ– বউ আমার প্লিজ নিজের পর্দার দিকে খেয়াল রাখিয়েন!
আবিহা– কি হয়েছে বলবেন তো আমায়?
আব্দুল্লাহ আর কিছু বলতে পারে না ফোনটা কেটে দেয়
আবিহা দৌড়ে তার মামা বাবার ঘরে যায়
গিয়ে দেখে আব্দুল্লাহর মায়ের চোখে পানি
আর আব্দুল্লাহ বাবা বসে আছে
আবিহা– বাবা কি হয়েছে?
আব্দুল্লাহর বাবা কিছু বলে না
আবিহা– বলুন না বাবা কি হয়েছে উনার? কোনো সমস্যা? (হালকা কাদু কাদু ভাব)
বাবা– জানি না মা আমাদেরকে সে কিছুই বলেনি মুসা আসছে সে এসে বলবে!
আবিহা– উনি এখন কোথায় আছেন? আর সুস্থ আছেন তো?
বাবা– থানায় আছে
আবিহা– থানায় থানায় কেনো বাবা? (কেদে)
বাবা– জানি না মা তুমি কেদো না তেমন কিছুই হয়নি
আবিহা কাদতে কাদতে তার ঘরে চলে যায় গিয়েই জায়নামাজটা বিছিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়
আবিহার চোখ থেকে পানি পড়ছে
তার হৃদয়ে কিসের যেনো একটা ঢেউ উঠেছে
যে ঢেউ আর আঘাতে তার হৃদয়টা ভেঙে যাচ্ছে!
আবিহা সিজদায় গিয়ে অঝরে কান্না করছে
না জানি কি হলো উনার
কিভাবে হলো?
কে করলো এমনটা?
কিছুক্ষন পরেই মুসা বাসায় এসে পরে
এসে আব্দুল্লাহর বাবাকে সকল বিষয়টা খুলে বলে পাশে আব্দুল্লাহর মাও ছিলো আর ঘরের এক কোণায় আবিহা মাথা নিচু করে বসে বসে মুসার কথাগুলো শুনছিলো
বাবা– এখন কি করবো বাবা?
মুসা– আপনি শুধু আন্টি ও ভাবির দিকে খেয়াল রাখিয়েন আর আব্দুল্লাহর জন্য কোনো টেনশন করিয়েন না শুধু দু’আ করিয়েন।
বাবা– আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।
আবিহা– আমি একটু তাকে দেখতে যেতে চাই
মুসা– আজকে না দেখি আগামীকাল নিয়ে যাওয়া যায় কিনা
এরপরে মুসা চলে যায়
মুসা বাসায় যাচ্ছিলো তার পথি মধ্যে হাসান এর সাথে দেখা হয়
তার সাথে আরো অনেকে ছিলো
হাসান– সাইড দে দে শায়েখ আসতাছে চাপ তোরা চাপ শায়েখকে যেতে দে
মুসা সালাম দিয়ে হাসানকে বলে
ভাই আব্দুল্লাহতো তোমাদের বন্ধু তাহলে তার সাথে এমনটা কেনো করছো এবং করলে?
হাসান– কে আমার বন্ধু আর কার সাথে কিরকম করমু তা কি তোর কাছ থেকে জানতে হবে আমার?
মুসা– কিন্তু ভাই কাজটা তো ঠিক করছো না তোমরা!
হাসান মুসার কলার চেপে ধরে বলে তোর কাছ থেকে কি শিখতে হবে আমার? যে কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক?
হাসান আবার একটু পিছনে ফিরে তাকায় তার মনে পরে যায় যে এর আগের বার যখন মুসার কলার ধরে তখন আব্দুল্লাহ তার হাত চেপে ধরেছিলো
কিছুটা ভয় পায়
কিন্তু পক্ষান্তরেই মনে পরে যায় যে আব্দুল্লাহ এখন জেলে!
মুসা– কলার ছারো
হাসান– না ছারলে কি করবি? মারবি আমায়?
নে মার,, মার আমায়
মুসার গায়ে ধাক্কা দিতে দিতে হাসান কথাগুলো বলে
মুসা– মুসা দেখো ভাই কাজটা কিন্তু ঠিক করছো না!!
হাসানা– কাজ ঠিক না করলে কি করবি তুই? নে কর আমায় কি করবি!
মুসা হাসানের হাত ধরে ধাক্কা দিয়ে বলে
যেতে দাও আমায়
হাসান– কিরে তুই আমায় ধাক্কা দিলি? তোর এতো বড় সাহস? তুই একা হয়ে এমন কাজটা কিভাবে করলি?
মুসা– কে বললো আমি একা? আমার সাথে আমার রব আছেন!
হাসান মুসার গালে থাপ্পড় মারতে নেয়
আর তখনই দেখে তার হাতটা কে জেনো ধরে ফেলেছে
হাসান তাকিয়ে দেখে রানা তার হাত ধরে আছে
রানা– কিরে কি হচ্ছে এখানে?
মুসা– তেমন কিছু না রানা
রানা– তাহলে ওর হাত এখানে কেনো??
হাসান– ভাই আপনি এখানে?
রানা– তুই ওরগায়ে হাত তুলছিছ কেনো?
মুসা রানাকে সকল বিষয়টা খুলে বলে
রানা একবারেই অবাক হয়ে যায়
আর বলে
রানা– আব্দুল্লাহ এখন জেলে?
মুসা– হুম
হাসানের ইশারায় তার সাথে থাকা বাকিরা রানাকে পিছন থেকে ধরে দূরে সরিয়ে নেয়
আর এই ফাকে হাসান মুসার কলার চেপে ধরে বলে,,
হাসান– তোর উপরে আমার অনেক জ্বিদ তুই কিনা আমার গায়ে হাত দেছ? তোর এতো বড় কলিজা হয়েগেছে আবার আমার মুখে মুখে কথাও বলিছ?
এই বলে হাসান তার হাতটা মুসার পেটের সাথে ঘসা দিয়ে চলে যায়
আর বাকিদেরকে বলে চলে যাওয়ার জন্য
যে যার মতো দৌড়ে চলে যায়।
মুসা তার পেটে ব্যাথার অনুভব করে
সে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে মাটিতে রক্ত
রানা ছুটে আসে মুসার কাছে
রানা– মুসা মুসা এই মুসা কি হলো এটা?
মুসা কোনো কথাই বলতে পারে না শুধু রানার দিকে তাকিয়ে বলে,,
আ..আব্দুল্লা ও তার ফ্যামিলির দিকে তাকাও
মুসা আর কিছুই বলতে পারে না
রানা তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়
মুসার কোনো হুশ নেই
রানা আব্দুল্লাহকে ফোন দেয়
দিয়ে বিষয়টা জানায়
আব্দুল্লাহ টেনশনে পরে যায়
সন্ধা হয়ে যায়
আব্দুল্লাহ ইমামতিতে দাঁড়িয়ে যায়
আব্দুল্লাহ তিলাওয়াত করছে আর তার চোখ দিয়ে পানি পরছে
নামাজ শেষ করে আব্দুল্লাহ সিজদায় লুটিয়ে পরে
কান্নায় ভেঙে পরে আব্দুল্লাহ
কান্না করছে আর তার মালিক এর কাছে দু’আ করছে।
এইদিকে আবিহাও কান্না করছে আর দু’আ করছে
মুসার এখনো জ্ঞান ফিরেনি
তার মা বাবা তার পাশে বসে আছে
রানা নামাজ শেষ করে রওয়ানা হয় থানার উদ্দেশ্যে
থানায় গিয়ে আব্দুল্লাহর সাথে কথা বলে।
রানা– ভাই তুমি আমায় একটু জানাতে পারতে
আব্দুল্লাহ– সময় আর পরিস্থিতি ছিলো না ভাই
রানা– কতোদিন ধরে তুমি একটু আমার খোজও নিলে না ভুলে গেছো নাকি আমাকে?
আব্দুল্লাহ– নাহ ভাই ভুলবো কেনো?
রানা– তাহলে?
আব্দুল্লাহ– আসলে আমি কিছুটা বুঝতে পারি যে গুনাহ এর কারনে লজ্জিত তুমি
তাই তোমাকে একা ছেড়ে দিয়েছি যাতে তুমি এই সময়টা তাওবা করতে পারো আর নিজের রবের দিকে প্রত্যাবর্তন করতে পারো।
রানা– ভাই আসলেই আমি লজ্জিত
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ আর এখন কি রিলেশনটা ছেড়েছো?
রানা– তা তো সেদিনই ছেড়ে দিয়েছি। হারামে ডুবে থাকতে চাই না।
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ
রানা রাতে বাসায় চলে যায়
আব্দুল্লাহ এই প্রথমবার জেলের মধ্যে রাত্রীযাপন করে।
সকাল হলে আব্দুল্লাহর মা ও বাবা মুসাকে দেখতে যায় হসপিটালে
আবিহা বাসায় একা থাকে
সকাল প্রায় ১১ টা বাজে
আব্দুল্লাহর কাছে ফোন আসে
“আসস্লামালাইকুম ভাই
“”ওয়া ‘আলাইক
” ভাই আমি হাসান বলতাছি
আব্দুল্লাহ– এমনটা কেনো করতাছোছ তোরা আমার সাথে?
হাসান– কি বলেন ভাই কি করতাছি আমরা?
আব্দুল্লাহ– তোরা আমার সাথে যা করার কর বাট মুসার সাথে কেনো?
হাসান– ওও ওই মুসা? ওই বেটার বেশি সাহস হয়ে গিয়েছিলো তাই একটু দমিয়ে দিয়েছি। ভালো করেছি না বলো বন্ধু…?
আব্দুল্লাহ– বন্ধু? বন্ধু বলতে লজ্জা হওয়া উচিত!
হাসান– আচ্ছা ওই সব কথা রাখ এখন! এখন কথা হচ্ছে বলতো আমরা কোথায়….?
আব্দুল্লাহ– মানে.?
হাসান– মানে আমরা তোর বাড়ির নিচে….
আব্দুল্লাহ– ওইখানে কিসের জন্য?
হাসান– না মানে তোর আব্বু আম্মু নাকি মুসাকে দেখতে গেছে আর ভাবি সাহেবা বাড়িতে একা তাই আমরা একটু তাকে পাহারা দিতে আসলাম এই আরকি এইটুকুই।
আব্দুল্লাহ– দেখ ভাই প্লিজ এমন কিছু কিরিছ না প্লিজ…
হাসান– নাহ কি করবো আর? কে জানি তার বউ তার জানকে আগলে রাখবে কখনো তার চোখতো দূরের কথা পায়ের নখ পর্যন্তও দেখতে দিবে না
দেখি আজকে তার চেহারার সাথে আর কি কি দেখা যায়…..!
আব্দুল্লাহ– আমি তো আমার রবের উপরেই তাওয়াক্কুল করি! তার বান্দিকে তিনিই রক্ষা করবেন!
হাসান– দেখা যাক,,,,,আগামীকাল এক সপ্তাহ পূরণ হবে আর আমি তার আগেই জিতে গেলাম!
আব্দুল্লাহ কিছু বলে না ফোন কেটে দেয়…
আব্দুল্লাহ ফোন রেখে অযু করে নামাজে দাঁড়িয়ে যায়
সিজদায় গিয়ে আব্দুল্লাহর চোখ দিয়ে শুধু পানি পরছে…..
অনেকটা সময় নিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আব্দুল্লাহ
নামাজ শেষ করে আব্দুল্লাহ আবার সিজদায় পড়ে যায়
আব্দুল্লাহ শুধু কান্না করছে
আর মনে মনে তার রবের সাথে কথা বলছে
শুধু বলছে
“ইয়া রব”!
আপনি আবিহাকে হিফাজত করুন
আপনি আপনার কুদরতি ভাবে তাকে হিফাজত করুন!
হে রব আপনি ছাড়া আমরা অসহায়
হে রব আপনার বান্দিকে হিফাজত করুন!
আব্দুল্লাহ সিজদায় কাদছে আর দু’আ করছে
থানার বাকিরা আব্দুল্লাহর এই অবস্থা দেখে অবাক হয়ে চেয়ে থাকে
সবাই একটি কথাই বলতে থাকে
আব্দুল্লাহ এই কাজ করতে পারে না!
আব্দুল্লাহর ফোনটা হঠাৎ করে বেজে উঠে
আব্দুল্লাহর মনে একটা প্রশান্তির বাতাস বয়ে যায়।
আব্দুল্লাহ ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে তাকে হুজুর ফোন করেছে
যার বই দেওয়ার কারনে আব্দুল্লাহ আজ তার রবকে চিন্তে পেরেছে যার কারনেই এই পথে হাটা তার
আব্দুল্লাহ ফোনটা রিসিভ করে
ওপার থেকে ভেসে আসে
আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ
আব্দুল্লাহ– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লহ
হুজুর– কেমন আছো আব্দুল্লাহ ভাই?
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?
হুজুর– আলহামদুলিল্লাহ ভালো,,,,, তোমার বাসায় আমি তুমি কি আসতে পারবে?
আব্দুল্লাহ– আব্দুল্লাহ কান্নায় ভেঙে পরে আর বলতে থাকে হুজুর আমি পারবো না এখন বাসায় আসতে আমাকে মাফ করবেন।
হুজুর– কান্না করো না। আমাদের রব তার প্রিয় বান্দার কাছ থেকে এই রকম পরিক্ষা নিয়ে থাকে
যাতে করে তার বান্দা তার আরো কাছে আসতে পারে!
আব্দুল্লাহ– হুম…
হুজুর– দেখি ফোনটা অছিকে দাও তো..
আব্দুল্লাহ– হুজুর তাদেরকে আর কি বলবেন?
হুজুর– তুমি এখন বাসায় আসবে অছিকে……
পর্বঃ- ২৮
হুজুর– কান্না করো না। আমাদের রব তার প্রিয় বান্দার কাছ থেকে এই রকম পরিক্ষা নিয়ে থাকে
যাতে করে তার বান্দা তার আরো কাছে আসতে পারে!
আব্দুল্লাহ– হুম…
হুজুর– দেখি ফোনটা অছিকে দাও তো..
আব্দুল্লাহ– হুজুর তাদেরকে আর কি বলবেন?
হুজুর– তুমি এখন বাসায় আসবে অছিকে ফোনটা দাও তার সাথে আমি কথা বলছি
আব্দুল্লাহ অছি সাহেবকে ফোনটা দেয়
অছি– আসসালামু ‘আলাইকুম
হুজুর– ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লহ
অছি– জ্বি বলুন
হুজুর– তুমি ‘আব্দুল্লাহকে ছেড়ে দাও
অছি– আপনি কে?
হুজুর–……….. আমি থানায় এসে তোমাকে তথ্য দিচ্ছি তুমি দ্রুত ‘আব্দুল্লাহকে ছেড়ে দাও
অছি– জ্বি জ্বি স্যার
অছি সাহেব আব্দুল্লাহকে ফোনটা দিয়ে লকাবটা খুলে দেয় আর বলে
ভাই আপনি বাসায় চলুন এখন
আপনিও কি যাবেন?….(আব্দুল্লাহ বললো)
হ্যাঁ ভাই চলুন
এরপর তারা গাড়ি নিয়ে আব্দুল্লাহর বাসার দিকে রওয়ানা দেয়।
মুসার জ্ঞান ফিরলে সে দেখে আব্দুল্লাহর মা ও বাবা তার পাশেই বসে তার বাবা মার সাথে কথা বলছে
মুসা– আংকেল আপনি এখানে?
আব্দুল্লাহর বাবা– হ্যাঁ বাবা তোমাদে দেখতে এলাম আমরা
মুসা– ওওহ
আব্দুল্লাহ বাসায় ফিরে দেখে সেখানে আরফান, হাসান, রানা ও বোরখা পরা একটি মেয়ে তার হাতে একটি নাইফ তাতে কিছুটা রক্ত লাগানো
আরফান সে তার হাতটা চেপে ধরে রেখেছে সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে
আব্দুল্লাহ পাশেই হুজুরকে দেখতে পায়
হুজুর– আব্দুল্লাহকি হয়েছে তা আমি শুনেছি
আব্দুল্লাহ– এখানে সবাই বুঝতেছি না তো আমি?
বাবা মা ও আবিহা কোথায়?
রানা– তোমার বাবা ও মা মুসাকে দেখতে গেছেন
আব্দুল্লাহ– আবিহা? আবিহা কোথায়? তাকে দেখছি না কেনো? আবিহা কোথায়?
হুজুর– আবিহা উপরের রুমে আছে তুমি যাও
আব্দুল্লাহ ছুটে চলে যায় উপরের রুমে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আবিহার কান্নার শব্দ শুনতে পায় আব্দুল্লাহ
আব্দুল্লাহ দরজায় শব্দ করে
ভিতর থেকে কোনো জবাব আসে না
আব্দুল্লাহ আবার শব্দ করে
এরপরে আবিহা দরজাটা খুলে দেয় আর সাথে সাথেই আবিহা আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে কাদতে থাকে
আব্দুল্লাহ আবিহাকে নিয়ে ভিতরে গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দেয়
আবিহা কান্না করছে আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে
আব্দুল্লাহর চোখেও পানি..
আব্দুল্লাহ আবিহার মাথাট ধরে তার কপালে চুমু দিয়ে আবিহার কপালের সাথে আব্দুল্লাহর কপালটা লাগিয়ে বলে
আব্দুল্লাহ– কি হয়েছে আমার পাগলীটার?
আবিহা শুধু কান্না করতে থাকে কোনো কথাই তার মুখ থেকে বের হয় না
আব্দুল্লাহ আবিহার ওষ্ঠদ্বয়ে ভালোবাসা একে দিয়ে বলে
আব্দুল্লাহ– বলুন কি হয়েছে? আপনি কাদছেন কেনো? আমি না আপনাকে বলেছি যে আপনি কাদবেন না! আপনি কাদলে আমার ভীষণ কষ্ট হয় প্লিজ…
আবিহা আলহামদুলিল্লাহ বলে আবার আব্দুল্লাহকে জড়িয়ে ধরে আর বলতে থাকে
আবিহা– আমার রব আমার দু’আ কবুল করেছেন তিনি আপনাকে জেল থেলে মুক্ত করেছেন আলহামদুলিল্লাহ (কান্না মাখা গলায়)
আব্দুল্লাহ– হুম আলহামদুলিল্লাহ
আবিহা– ওরা খুবই বাজে ওরা ভালো না
আব্দুল্লাহ– মানে কি হয়েছে?
আবিহা– আমি বাসায় একা ছিলাম আর তখন আরফান ও হাসান ওরা জ্বোর করে বাসায় ঢুকে কিন্তু আমি তখন পর্দার সাথেই ছিলাম (কান্না করে)
আব্দুল্লাহ আবিহার আর কোনো কথা শুনে না
আব্দুল্লাব রেগে রুম থেকে বের হয়ে নিচে আসে
নিচে এসে দেখে আরফান বসে আছে
সবাই নিচে
আব্দুল্লাহ গিয়ে আরফান এর গলাটা চেপে ধরে বলে…
আব্দুল্লাহ– তোরা তো অনেক বড় গুন্ডা হয়ে গেছিছ? তাই না?
আমি ছাড়া তোদের পাওয়ার যে শুন্য তা কি মনে নাই তোদের?
তোরা আমায় ফাসিয়ে জেলে ভরলি সমস্যা কিন্তু মুসাকে কেনো আঘাত করলি সে তোদের কি ক্ষতি করেছে?
আর আবিহা?
সে তো একটা নারী সে তো তোদের সাথে কোনো দিনই কোনো কথা বলে নাই
তাহলে কেনো তার পিছনে পরে আছোছ?
আমি চাইলে আমার ক্ষমতার জোরে অনেক আগেই জেল থেকে বের হয়ে যেতে পারতাম কিন্তু হয়নি!
আমি আব্দুল্লাহ আমি কিরকম তা কি ভুলে গেছিছ তোরা?
আমি আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ এলাকাটার বাপ ছিলাম তা কি মনে নেই?
আর আজ তোরা????
তোদের এতো সাহস হয়ে গেছে?
তোরা আমার রাগ সম্পর্কে কি জানোছ না?
আমি কি করতে পারি আর কি না করতে পারি তা কি মনে নেই তোদের?
আব্দুল্লাহ আরফান এর গলাটা ছেড়ে দিয়ে বলে
আব্দুল্লাহ– নেহ আমাকে কি করবি কর,,,, মেরে ফেলবি আমাকে মেরে ফেল!
দেখি তোরা কি করতে পারোছ।
আব্দুল্লাহ বোরখা পরা মেয়েটার হাত থেকে নাইফটা নিয়ে আরফান এর দিকে দিয়ে বলে
আব্দুল্লাহ– নে নাইফটা ধর আর এটা দিয়ে আমাকে মেরে ফেল! নে নে ধর!
আরফান এর হাতে জোর করে নাইফটা ধরিয়ে দেয় আব্দুল্লাহ
পাশে হুজুর আব্দুল্লাহকে বলে
আব্দুল্লাহ কি করছো? ওদের শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রশাসন আছে!
হ্যাঁ প্রশাসন আছে আমাকে ওরা মারুক এরপরে প্রশাসন প্লিজ… হুজুর….. কিছু বলিয়েন না।
আরফান এর হাতটা কাপতে থাকে
আব্দুল্লাহ আরফান এর দিকে তাকায়
আরফান দেখে আব্দুল্লাহর চোখগুলো রাগে লাল হয়ে আছে আর চোখের কোণায় অশ্রু
আব্দুল্লাহ– কি?? হাত কাপছে কেনো?
এটা দিয়ে আমাকে প্রহর কর ভাই!!
আর নাইতো এই নাইফ যদি আমার হাতে একবার আসে তাহলে কি করবো আমি তা তুই ভালো করেই জানোছ!!
আরফান নাইফটাকে আব্দুল্লাহর দিকে বারিয়ে দিয়ে বলে…
আরফান– নে এটা নিয়ে তুই আমাকেই মার
আমি সত্যিই খুবই খারাপ কাজ করেছি!
আসলে আমি এতোটা যে নিচে কিভাবে নামলাম তা আমি নিজেও জানি না!
আজ ক্ষমতার শিকল আমাকে শক্ত করেই বেধে রেখে।
হাসান– আরফান কি করতাছোছ তুই??
আব্দুল্লাহ আরফান এর হাত থেকে নাইফটা নিয়ে হাসান এর দুকে ছুড়ে মারে
নাইফটা গিয়ে হাসানের পায়ে লাগে
হুজুর– আব্দুল্লাহ কি করছো তুমি?
আব্দুল্লাহ– হুজুর হুজুর আপনি জানেন না আমি ওদের জন্য কি না করেছি!
কিন্তু আজ ওরা আমারই শত্রু
আমারই ক্ষতি করছে!
ওদের সকল বিপদে আমি পাশে ছিলাম
কখনোই ওদেরকে বিপদে রেখে আসিনি আমি!
আর আজ ওরা আমার সাথেই…?! (কেদে)
হুজুর আব্দুল্লাহর কাছে গিয়ে তার কাধে হাত দিয়ে বলে
হুজুর– তুমি হয়তক বন্ধু নির্বাচনে ভুল করেছিলে!
আব্দুল্লাহ– হ্যাঁ অনেক বড় একটা ভুল করেছিলাম!
হুজুর– অছি সাহেব আপনি তুমি ওদেরকে নিয়ে গাড়িতে তোলো আর আমি সকল প্রমাণ তোমাকে থানায় এসে দিচ্ছি।
অছি– জ্বি স্যার!
এরপরে হাসান ও আরফানকে গাড়িতে তুলে পুলিশ
আব্দুল্লাহ বসে পরে আর বলতে থাকে আমি আবিহার পর্দা রক্ষা করতে পারলাম না!
আমি তাকে দেওয়া কথা রাখতে পারলাম না!
পাশে আবিহা দাঁড়িয়ে ছিলো
আবিহা আব্দুল্লাহর কাছে আছে
এসে আব্দুল্লাহর চোখের অশ্রুগুলো মুছতে থাকে আর বলতে থাকে
আবিহা– আমি জানি না আমার রব আমার কোন আমল বা দু’আ কবুল করেছেন আর আপনার মতো একটা জীবনসঙ্গী দান করেছেন!
আমি আমার রবের নি’আমাত ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না!
জানি না যে আপনার মতো দ্বিতীয় কেও আছে কিনা!
আমি আপনাকে পেয়ে আসলেই অনেক ধন্য মনে করছি নিজেকে!
আপনার সাথে প্রতিটা মুহূর্ত যেনো জান্নাতে কাটানোর মতো
আপনাকে পেয়ে মনে হচ্ছে যে আমি দুনিয়াতেই জান্নাত পেয়েগেছি!!!
এই জান্নাত কতো জনে পায় তা আমি জানি না
কিন্তু আমি পেয়েছি
আমাকে আমার রব দুনিয়াতেই জান্নাত এর সুখ দিয়েছেন!
আপনার মতো একজন মানুষ দান করেছেন আমাকে আমার রব!
পর্বঃ- ২৯
আবিহা– আমি জানি না আমার রব আমার কোন আমল বা দু’আ কবুল করেছেন যার ফলে আপনার মতো একটা জীবনসঙ্গী দান করেছেন!
আমি আমার রবের নি’আমাত ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না!
জানি না যে আপনার মতো দ্বিতীয় কেও আছে কিনা!
আমি আপনাকে পেয়ে আসলেই অনেক ধন্য মনে করছি নিজেকে!
আপনার সাথে প্রতিটা মুহূর্ত যেনো জান্নাতে কাটানোর মতো
আপনাকে পেয়ে মনে হচ্ছে যে আমি দুনিয়াতেই জান্নাত পেয়েগেছি!!! 🤍
এই জান্নাত কতো জনে পায় তা আমি জানি না
কিন্তু আমি পেয়েছি
আমাকে আমার রব দুনিয়াতেই জান্নাত এর সুখ দিয়েছেন!
আপনার মতো একজন মানুষ দান করেছেন আমাকে আমার রব!
আব্দুল্লাহ আবিহার দিকে তাকিয়ে থাকে
আব্দুল্লাহর চোখে অশ্রু
আবিহা বলে
আলহামদুলিল্লাহ আমার রব যে আপনার দু’আ কবুল করেছেন
আমাকে তারা দেখেনি
আব্দুল্লাহ আবিহার দিকে তাকিয়ে থাকে আর নিজের রবের শুকরিয়া আদায় করতে থাকে
আব্দুল্লাহ দেখে পাশে বোরখা পড়া একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে
আব্দুল্লাহ– উনি কে?
আবিহা– তাকে চিনেন নাই এখনো?
আব্দুল্লাহ– নাহ
আবিহা– উনি হচ্ছেন রুমি আপু
আব্দুল্লাহ– রুমি..?
আবিহা– হ্যাঁ রুমি আপু ওইযে আপনার কলেজের…
আব্দুল্লাহ– কিন্তু সে এখানে কেনো?
আবিহা ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনাটা বলতে থাকে আব্দুল্লাহকে
আবিহা– সকালে আম্মু আব্বু যখন মুসা ভাইকে দেখতে যায় তখন আমি ঘরে একা থাকি
হঠাৎ করে দুরজায় কে যেনো কড়া নাড়ে আমি গিয়ে পরে দেখি যে রুমি আপু এসেছে
রুমি আপু দুরজায় দাঁড়িয়ে আসে ভিতরে আসতে চাচ্ছিলো না।
রুমি– আব্দুল্লাহ এখন কেমন আছে জানো তুমি?
আবিহা– এখনো জানিনা তার অবস্থা
রুমি– আচ্ছা আমি এখন থানার ওইদিকে যেতে চাচ্ছি তুমি কি যাবে…?
আবিহা– যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু… মাহরাম ছাড়া তো বাড়ির বাহিরে যাওয়া যাবে না
রুমি– তাহলে আব্দুল্লাহর আব্বুকে ফোন দিয়ে বলো
আবিহা– তারা তো এখন মুসা ভাইকে দেখতে গিয়েছে তারা তাকে দেখে আসবে এরপরে হয়তো থানায় যাবো ইন শা আল্লহ। তুমি ভিতরে আসো
রুমি ভিতরে আসে এসে বসে
রুমি– তুমি রেডি হয়ে নাও
আবিহা– জি আচ্ছা
এরপরে আবিহা রেডি হয়ে নিচে আসে
সকাল প্রায় ১১ঃ৩০ টার কাছাকাছি
হঠাৎ দরজায় কে যেনো আসে
রুমি গিয়ে জিজ্ঞাসা করে কে?
ওপার থেকে আওয়াজ আসে দরজা খুলবার জন্য
আব্দুল্লাহর কি যেনো হয়েছে তাই তারা তার বাসায় এসেছে তাকে নিয়ে
রুমি কিছু না ভেবেই দরজা খুলে দেয়
দরজা খুলে দেখে আরফান ও হাসান
রুমি– তোরা এখানে?
হাসান– ভাবি আপনি আজ চোখ ঢাকেননি? যাইহোক আর ঢাকলেই বা কি এমনিই এখন কিছু ঢাকা থাকবে না।
রুমি– মানে এইগুলো কি বলতাছোছ তোরা?
আমি রুমি!
আরফান– আরে রুমি তুই এখানে??
রুমি– তোরা এইগুলো কি শুরু করলি?
আরফান– দেখ চাপ এখান থেকে আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে দে
রুমি– কিসের কাজ? আমি বুঝতে পেরেছি তোদের উদ্দেশ্য
এইবলে রুমি যেই দরজা আটকাতে যায় তখন হাসান রুমিকে ধাক্কা দিকে ঘরে প্রবেশ করে
ঘরে এসে দেখে আবিহা বসে আছে
হাসান– ওহহ ভাবি এইখানে তার পর্দা দেখেই বুঝেছি।
হাসান আবিহার দিকে যেতে থাকে পিছন থেকে রুমি এসে হাসানের কাধে হাত দিয়ে তাকে টেনে পিছনে এনে তার গালে কসিয়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়
হাসান রুমির দিকে চেয়ে থাকে
হাসান রুমির থুতনিটা চেপে ধরে বলে
শালী তোরও দেখি বড্ডবার বেড়েছে
নিজেকে বড় কি বড় মনে হচ্ছে?
এতো সাহস আমার গায়ে হাত তুলিস?
হাসান রুমিকে জোরে ধাক্কা দেয়
রুমি গিয়ে দেয়ালের সাথে ধাক্কা খায়।
আরফান রুমির সামনে এসে দাড়াঁয়
রুমি আরফান এর দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে তার মতলব ভালো না।
এইদিকে হাসান আবিহার দিকে যেতে থাকে
আবিহার সামনে এসে তাকে বলে
হাসান– তা ভাবি সাহেবা এখন কে বাচাবে আপনাকে?? বলুন বলুন কে বাচাবে?
আবিহার মুখ থেকে তখন বের হয়
“হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’
حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ، نِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ ]
উচ্চারণ : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’
অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক; আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।
যেকোনো বিপদের সম্মুখীন হলে উল্লিখিত দোয়া বেশি বেশি পড়তে পারেন। এটি আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াত এবং
সুরা আনফালের ৪০ নম্বর আয়াতের
আবার সুরা হজের ৭৮ নম্বর আয়াত অংশের মিলিত রূপ।
মানুষের অবস্থা সব সময় অনুকূলে যায় না। কখনো ভালো যায়, কখনো খারাপ সময় ধেয়ে আসে। তাই যেকোনো বিপদে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা চাই। তাহলে আল্লাহ তাআলা বিপদ থেকে রক্ষা করবেন এবং শান্তিতে রাখবেন।
যেকোনো বিপদের সম্মুখীন হলে উল্লিখিত দোয়া বেশি বেশি পড়তে পারেন। এটি আলে ইমরানের ১৭৩ নম্বর আয়াত এবং সুরা আনফালের ৪০ নম্বর আয়াতের (আবার সুরা হজের ৭৮ নম্বর আয়াত) অংশের মিলিত রূপ।
حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ، نِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ
উচ্চারণ : হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান-নাসির’
অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক; আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।
আশা করা যায়, আয়াতগুলো পড়ে দোয়া করলে অবশ্যই সেই দোয়া কবুল হবে। যেকোনো অন্যায়-অত্যাচার-অবিচারের শিকার হলে অথবা অন্যায়ভাবে কারাবন্দি থাকলে নিচে উল্লিখিত আয়াতটি বেশি বেশি পড়বে। সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার দরবারে আন্তরিকভাবে মুক্তির জন্য দোয়া করবে, তাতে ইনশা আল্লাহ মুক্তি মিলবে।
যেভাবে এই দোয়াটি মিল পেয়েছে…
‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল’-অংশটি কোরআনের আয়াত। এটি পড়ার কথা পবিত্র সহিহ হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত।
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। حَسْبُنَااللهُوَنِعْمَالْوَكِيلُ কথাটি ইবরাহীম (‘আ.) বলেছিলেন, যখন তিনি আগুনে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। আর মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন যখন লোকেরা বলল, “নিশ্চয় তোমাদের বিরুদ্ধে কাফিররা বিরাট সাজ-সরঞ্জামের সমাবেশ করেছে, সুতরাং তোমরা তাদের ভয় কর। এ কথা তাদের ঈমানের তেজ বাড়িয়ে দিল এবং তারা বলল ঃ আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট এবং তিনিই উত্তম কার্যনির্বাহক”
(সূরাহ আলু ইমরান ৩/১৭৩)। [৪৫৬৪] (আ.প্র. ৪২০২, ই.ফা. ৪২০৪)
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৪৫৬৩
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
এছাড়াও আল্লাহর রাসুল (সা.) এই বিশেষ দোয়াটি পাঠ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন
(তিরমিজি, হাদিস : ৩২৪৩; আল-আহাদিস আস-সাহিহা : ১০৭৯)
আর ‘নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান নাসির’ অংশটিও কোরআনের আয়াত; আল্লাহর প্রশংসাসূচক।
(সুরা আনফাল, আয়াত : ৪০; সুরা হজ, আয়াত : ৭৮) ]
আল্লহই যথেষ্ট আমাকে রক্ষা করবার জন্য!
হাসান– দেখা যাক
এই বলে হাসান আবিহার দিকে এগোয়
এইদিকে রুমি উঠে আরফানকে ধাক্কা দিয়ে টেবিলের পাশে থাকা নাইফটা হাতে নিয়ে বলে
রুমি– অনেক হয়েছে আজ এটার শেষ দেখে ছারবো!
হাসান পিছনে ফিরে দেখে রুমির হাতে নাইফ
হাসান– আরেহ কি করছিছ তুই রুমি? আমরা না তোর বন্ধু? কোথায় বন্ধুদেরকে একটু সাহায্য করবি তা না করে এইগুলো কি করছিছ?
আরফান– ওআর কি করবে?
এইবলে রুমির দিকে যেতে থাকে আরফান
রুমি কিছু না ভেবেই নাইফটা আরফানের হাতের ভিতরে ঢুকে দেয়
আরফাম ব্যাথায় চিল্লাতে থাকে
হাসান হতদম্ভ হয়ে রুমির দিকে তাকিয়ে থাকে
রুমি নাইফটা হাসান দিকে নিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলে
ওইদিকে যা,, যা বলছি ওইদিকে না হয় কিন্তু…
হাসান আবিহার কাছ থেকে দূরে গিয়ে আরফানকে ধরে
রুমি গিয়ে আবিহার পাশে দাড়াঁয়
এইদিকে দরজায় কড়ানাড়ে কে যেনো
রুমি ভাবে যে আব্দুল্লাহর বাবা মা এসেছে
তাই রুমি আবিহাকে ইশারা দিয়ে বলে দরজাটা খুলে দিতে
আবিহা দরজাটা খুলে দেখে হুজুর
আরেহ এটাতো সেই হুজুর যার কারনে আব্দুল্লাহ আজ তার রবকে চিনতে পেরেছে
আবিহা পিছনে চলে আসে
হুজুর দেখে ঘরের ভিতরে হট্টগোল
সে ভিতরে এসে দেখে রুমির হাতে নাইফ অন্যদিকে আরফান আহত
হুজুর– এইগুলো কি হচ্ছে?
রুমি হুজুরকে বলতে থাকে ঘটনাগুলো
হুজুর– আব্দুল্লাহ এখন কোন থানায়?
রুমি হুজুরকে বলে,,
হুজুর ফোন বের করে থানায় ফোন দেয়
দিয়ে বলে আব্দুল্লাহকে নিয়ে তার বাসায় আসতে।
আবিহা উপরে চলে যায়
হুজুর তার ফোনের সাউন্ড রেকর্ডারটা চালু করে আরফান ও হাসান এর কাছ থেকে সকল সত্য কথাগুলো রেকর্ড করে
আব্দুল্লাহর বাবা– তা মুসা বাবা এখন আসি ওইদিকে আবার আবিহা একা বাসায়
মুসা– কিহ আংকেল ভাবিকে বাসায় একা কেনো রেখে এসেছেন?
আব্দুল্লাহর বাবা– কেনো বাবা কি হয়েছে??
মুসা আব্দুল্লাহর বাবাকে সব ঘটনাগুলো খুলে বলতে থাকে
আব্দুল্লাহ– এতো কিছু হয়ে গেছে??
হুজুর– হ্যাঁ ভাই আব্দুল্লাহ,,,,আমিতো তোমার বাসায় এসেছিলাম যে,,,, এই থানায় এখন আমি অফিসার হিসেবে আছি তাই ভাবলাম যে তোমার বাসা যেহেতু এখানে তাই তোমার সাথে দেখা করে আসি। আর এখন এসেতো দেখছি যে কত্তো কি…।
আব্দুল্লাহ– আলহামদুলিল্লাহ আল্লহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লাই হয়তো আপনার রাস্তা পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
আর রুমি তোমার কৃজ্ঞতা আমি কিভাবে আদায় করবো তা জানি না।
রুমি– না না কি বলছো? আমি তোমার জন্যই আজ অনেকটা পরিবর্তন হয়েছি।
আমিও আজ আমার রবকে কিছুটা হলেও চিনতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ। তুমি হুজুর হওয়ার পর থেকেই আমি ইসলাম ধর্মকে নিয়ে ভাবতে থাকি আর আলহামদুলিল্লাহ এখন নিজেকে চেঞ্জ করার চেস্টায় আছি
আব্দুল্লাহ– তা আমি একটু আসছি
আবিহা– কোথায় যাচ্ছেন?
আব্দুল্লাহ– মুসাকে দেখতে
আবিহা– আমিও যাবো
আব্দুল্লাহ– চলুন তাহলে
হুজুর– হ্যাঁ চলো আমিও যাবো
এরপরে তারা সবাই হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়
পথি মধ্যে রানার সাথেও দেখা হয়
রানা অনেক খুশি হয় আব্দুল্লাহকে দেখে
আব্দুল্লাহর বাবা ও মা এইসকল কথা শুনে অবাক হয়ে যায় তারা তৎক্ষনাৎ বের হয়ে যায় বাসার উদ্দেশ্যে
বের হবার সময়ই দেখে আব্দুল্লাহ আসছে
আব্দুল্লাহ এসে তার বাবা ও মা কে জড়িয়ে ধরে
খুব খুশি হয় তারা আব্দুল্লাহকে দেখে
আব্দুল্লাহর মা আব্দুল্লাহকে দেখে কাদতে থাকে
চলবে……?