মুসলিম হয়েও জাহান্নামে যাবে যারা
১) যে হারাম খাবার খায়:
যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা লালিত-পালিত হয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (বায়হাকি/৫৫২০)
২) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী:
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। (বুখারি/৫৫২৫)
৩) প্রতিবেশীকে কষ্টদাতা:
যার অত্যাচার (আচরণ) থেকে প্রতিবেশীরা নিরাপদ নয়, তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন না।’ (মুসলিম/৬৬)
৪) অবাধ্য সন্তান, দাইয়ুস ও পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী:
তিন শ্রেণির লোক জান্নাতে যাবেন না—মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, দাইয়ুস
(অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীনস্থ নারীকে বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেন না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী। (মুসতাদরাকে হাকেম/২২৬)
৫) অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি:
অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি লোক জান্নাতে যাবেন না। (আবু দাউদ/৪১৬৮)
৬) প্রতারণাকারী শাসক:
মুসলমানদের ওপর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে, সে তার
অধীনস্তদের ধোকা দিয়েছে। তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। (বুখারি/৬৬১৮)
৭) অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী:
যে ব্যক্তি কসম করে কোনো মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন এবং জান্নাত হারাম করেন। এক ব্যক্তি
বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! যদি সামান্য কোনো জিনিস হয়? তিনি বললেন, পিপুল গাছের একটি ছোট ডাল হলেও। (মুসলিম/১৯৬)
৮) খোঁটাদাতা, অবাধ্য সন্তান ও মদ্যপী:
উপকার করে খোঁটা দানকারী, মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান, সর্বদা মদপানকারী—এই তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। (নাসায়ি/ ৫৫৭৭)
৯) চোগলখোর:
যারা মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশে কুৎসা রটায় (চোগলখোর) তারা জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। (মুসলিম/১৫১)
১০) অন্যকে নিজের পিতা পরিচয়দাতা:
যে ব্যক্তি জেনে শুনে নিজেকে অন্য পিতার সঙ্গে সম্পর্কিত করে—অর্থাৎ
নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়, তার জন্য জান্নাত হারাম।’ (বুখারি/ ৬২৬৯)
১১) দাম্ভিক ও অহংকারকারী:
যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবেন না।’ (মুসলিম/ ১৩১)
১২) আল্লাহর রাসুল (স)-এর অবাধ্য:
আমার সব উম্মত জান্নাতে যাবেন, কিন্তু যিনি (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার
করেছেন, তিনি নন। সাহাবিরা বললেন, আল্লাহর রাসুল! কে অস্বীকার করেছেন? তিনি বললেন, যিনি আমার আনুগত্য করেন,
তিনি জান্নাতে যাবেন। আর যিনি আমার নাফরমানি করেন, তিনি (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছেন।’ (বুখারি/৬৭৩৭)
১৩) দুনিয়াবি উদ্দেশে ইলম শিক্ষাকারী:
যে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয়, সেই ইলম যদি কোনো ব্যক্তি
দুনিয়াবি স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশে শিক্ষা করেন, তিনি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেন না।’ (আবু দাউদ/৩১৭৯)
১৪) যে নারী অকারণে তালাক চান:
যে নারী তার স্বামীর কাছে অকারণে তালাক কামনা করেন, তিনি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেন না।’ (তিরমিজি/ ১১০৮)
১৫) কালো কলপ ব্যবহারকারী:
শেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সিনার মতো কালো কলপ ব্যবহার করবেন। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবেন না।’ (নাসায়ি/৪৯৮৮)
১৬) লৌকিকতা প্রদর্শনকারী:
কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন কারিকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতঃপর শহীদকে বীর-বাহাদুর উপাধি লাভের উদ্দেশে জিহাদ করার অপরাধে, কারি সাহেবকে বড় কারির উপাধি ও সুখ্যাতি
লাভের জন্য কেরাত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের উদ্দেশে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (মুসলিম/৩৫২৭)
১৭) ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী:
যে ব্যক্তি কোনো ওয়ারিসকে তার অংশ (প্রাপ্য) থেকে বঞ্চিত করল, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন। (ইবনে মাজাহ /২৬৯৪)