নিজেকে উত্তম মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করুন
একদিন তো মারাই যাবো, মৃত্যুর আলিঙ্গনে দেহটা তো একদিন নিস্তেজ হয়েই যাবে।
ইমানটাকে আঁকড়ে সে পর্যন্ত কোনো রকম জীবনটা কাটাতে পারলেই হলো। মিছে দুনিয়ার রঙ-বেরঙের মিথ্যা স্বপ্নের পেছনে ছুটে কি লাভ?এতো ধন-সম্পদ,
প্রতাপ-প্রতিপত্তি-সবই তো সেদিন এক টুকরো কাফনের কাছে মূল্যহীন হয়ে যাবে, তুচ্ছ হয়ে যাবে।
রঙের জীবনের ইতি টেনে সাদার সাজ জড়িয়ে পরপারে প্রস্থান করতেই হবে সেদিন।
যেখানে মৃত্যু সুনিশ্চিত সেখানে মৃত্যুকে ভুলে দুনিয়ার মিছে মায়ায় মন ভুলানো নিত্যান্তই বোকামি। কি হবে এতো ধন-সম্পদ দিয়ে?
সব তো ফেলেই যেতে হবে। কিছুই তো কাজে আসবে না, কিছুই তো সাথে যাবে না। সাদা এক টুকরো
কাফন শরীরে জড়িয়ে কালো এক অন্ধকার গহ্বরে রেখে আসা হবে আমিটাকে।
কিছুদিন পর সবাই ভুলে যাবে “আমি” নামক কেউ ছিলাম,
প্রিয়জন-পরিজনরাও নিজেদের জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। আমি একা রয়ে যাবো নতুন এক জগতে যে জগতে প্রতাপ-প্রতিপত্তি,
ধন-সম্পদ সবই মূল্যহীন। এ জগৎ যে শুধু আমল চিনে। এ জগৎ কোনো দেশের রাজা-বাদশাহকে চেনে না, চেনে না কোনো প্রেসিডেন্ট বা প্রাইম মিনিস্টার।
এজগতে পা রাখার সাথে সাথে মাটির প্রথম চাপ বুকের এক পাশের পাজরকে আরেকপাশের পাজরে ঢুকিয়ে দিয়ে স্বগৌরবে যেনো ঘোষণা দেয়,
“কীসের প্রেসিডেন্ট? কীসের প্রাইম মিনিস্টার? রাজাধিরাজ একজনই। তাঁর রাজ্যে তাঁর রাজত্ব। মুক্ত ঘুরির মতো জীবন কাটিয়েছো,
ভাবোনি লাটাই কার হাতে। টান লাগলে পালানোর উপায় নেই।এবার স্বীয় কর্মফল ভোগ করো”
যিনি রব তাঁকে ভুলে দুনিয়ার পেছনে ছুটে কী লাভ? একদম হৃদয়ের গভীর থেকে বলছি, আমার কাছে এই দুনিয়া,ধন-সম্পদ সবকিছু মূল্যহীন।
এসবের পেছনে ছুটে চলায় সত্যি বলছি কোনো লাভ নেই, একদমই না। রিযিক নির্ধারিত। রিযিকদাতাকে খুঁজুন,
যতটুকু নাহলেই নয় ততটুকুর জন্য সময় ব্যয় করুন। বাকিটা সময় আখিরাতের জন্য পুঁজি করুন।
দুনিয়া অস্থায়ী জেনেও কেন এতো আয়োজন? আখিরাত স্থায়ী জেনেও মনোভাব কেন এমন অপ্রয়োজন?
জীবন নামক ঘুড়িটার লাটাইয়ে টান পড়ার আগে মনের ঘুড়িটাকে টেনে ধরুন, নফসের বন্দিনী নাহয়ে নফসটাকে বন্দী করুন,
মৃত্যু থেকে না পালিয়ে নিজেকে উত্তম মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত করুন, রবকে ভুলে না গিয়ে রবের প্রিয়জন হয়ে যান, ইমানের মশাল হাতে নিরন্তর পায়ে ছুটে যান সফলতার পথে।
তবেই না শুনতে পারবেন হৃদয় প্রশান্ত করা বহুলপ্রতীক্ষিত সেই বাণী,
“প্রবেশ করো আমার সৃজিত জান্নাতে” (সূরাহ ফজরঃ৩০)