ঘুম চোখে সালাত আদায় :সালাতে দাঁড়ালে আপনার কি ঘুম আসে?
ঘুম চোখে সালাত আদায়ের বদঅভ্যাস আমাদের কারো কারো মধ্যে লক্ষনীয়।
আর এই অভ্যাসের আধিক্য সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফজরের সালাতে কেননা এসময় রাতের গভীর ঘুম ছেড়ে উঠে আমরা সালাতে দাঁড়াই।
ঘুমের ঘোরেই ক্বিরাত করি,রুকু-সিজদাহ করি। মসজিদের জামাতে এমন দৃশ্যও অপ্রতুল নয় যে কেউ কেউ দীর্ঘ ক্বিরাতের সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই নাক ডেকে একটু ঘুমিয়ে নিচ্ছে।
অথচ নবীজী ﷺ বলেছেন,
“সালাতরত অবস্থায় তোমাদের কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সে যেন ঘুমের আমেজ চলে না যাওয়া পর্যন্ত ঘুমিয়ে নেয়।
কারণ, যে তন্দ্রাচ্ছন্ন সালাত আদায় করে সে জানে না যে, সে কি ইস্তেগফার করছে নাকি নিজেকে গালি দিচ্ছে।”[সহিহ বুখারী ২১২]
অর্থাৎ,ঘুম না কাটা পর্যন্ত নবীজী ﷺ সালাত আদায়ের ব্যাপারে অনুৎসাহিত করেছেন কেননা ঘুমের ঘোরে আমরা বুঝতেই পারিনা কি তিলাওয়াত হচ্ছে-না নিজেরটা আর না ইমামেরটা।
একরকম সালাত পড়তে হবে তাই পড়ছি-এরকম একটা ভাব কাজ করে আমাদের মধ্যে অথচ আল্লাহ পাক আমাদের সালাত “কায়েম” করতে বলেছেন
আর তা করতে হলে দরকার জাগ্রত অবস্থা,যখন আমি অনুভব করবো আমি আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান,
আমার তিলাওয়াতের জবাব আল্লাহ দিচ্ছেন।সালাত প্রতিষ্ঠা করতে হলে দরকার সালাতের প্রাণ যেটাকে বলে খুশু।
অথচ আমরা কোনোমতে আদায় করেই নিজেকে ফরজ আদায়ের দায়মুক্ত দাবি করি অথচ আল্লাহর দাবি আমাদের কাছে-সালাত প্রতিষ্ঠা করো।
তাই ঘুম কাটিয়ে উঠে সালাত আদায়ের ব্যাপারে মনোযোগী হই।ঘুম কাটানোর প্রয়োজনে নবীজী ﷺ ঘুমিয়ে নিতে পর্যন্ত বলেছেন
কিন্তু সবসময় তো আর ওয়াক্ত থাকে না।এরূপ ক্ষেত্রে আমরা ঘুম তাড়ানোর কিছু পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারি,যেমন-
১.ঠান্ডা পানি দিয়ে অজু করা,এতে শরীর সজাগ হয়।প্রয়োজনে অজুর পর বেশি বেশি পানি চোখে ছিটা দেওয়া।
২.আলোময় স্থানে সালাত আদায় করা।ঘরে থাকলে বাতি জ্বালিয়ে নেওয়া আর মসজিদে আলো বেশি এমন জায়গায় দাঁড়ানো।
৩.আরামের উৎস ত্যাগ করা যেমন রুমে এসি থাকলে এসি বন্ধ করে দেওয়া।এতে হয়তো কিছুটা কষ্ট হবে কিন্তু ঘুম কেটে যাবে।
তবে সবচেয়ে বড় পদ্ধতি নিজের মন ও মস্তিষ্কে এটা স্মরণ রাখা-আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আছি,
আল্লাহ আমার আনুগত্য দেখছে আর এরূপ অবস্থায় আমি সালাত আদায়ের ব্যাপারে এতোটা উদাসীন হতে পারিনা।
সালাত কায়েম করে আমি ফরজ ইবাদত আদায় করবো, সূরা ফাতিহা পাঠ করে আল্লাহর সাথে কথোপকথন করবো,
সিজদারত অবস্থায় আল্লাহর নিকটবর্তী হবো আর শেষ বৈঠকে আল্লাহর নিকট আমার চাওয়ার কথা বলবো-
এই প্রতিটা কাজই মুমিন হিসেবে আমার সাফল্য এবং এই সাফল্য সালাত আদায়ের সাথে জড়িত।আর আপনি আমি কি চাইবো
আমাদের সাফল্য আর আমাদের মাঝে ঘুম এসে বাধা দিক, আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করুক?