আশুরার সিয়াম কি ও কেন?
উত্তর: আরবি মুহাররাম মাসের ১০ তারিখ আশুরার দিন। কেউ ইচ্ছা করলে সিয়াম রাখতে পারে। আশুরার দিনে সিয়াম পালন করা সুন্নাত।
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ فَرَأَى الْيَهُودَ تَصُومُ يَوْمَ عَاشُورَاءَ فَقَالَ مَا هَذَا قَالُوا هَذَا يَوْمٌ صَالِحٌ هَذَا يَوْمٌ نَجَّى اللهُ بَنِي إِسْرَائِيلَ مِنْ عَدُوِّهِمْ فَصَامَهُ مُوسَى قَالَ فَأَنَا أَحَقُّ بِمُوسَى مِنْكُمْ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِي
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল) (হিজরত করে) মদিনায় পৌঁছে ইহূদীদের সিয়াম অবস্থায় দেখতে পেয়ে তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ এটা কী? তারা বললো, এ দিনে আল্লাহ্ মূসা (আ)-কে মুক্তি দেন এবং ফিরাউনকে ডুবিয়ে মারেন। তাই মূসা (আ) এ দিন শোকরানা সিয়াম রাখেন। রসূলুল্লাহ (সা) বলেন, আমরা মূসা (আ)-এর (অনুসরণের) ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। তারপর তিনি এদিনে সিয়াম রাখেন এবং অন্যদেরও সিয়াম রাখার নির্দেশ দেন।
সহীহ বুখারী ২০০৪, ৩৩৯৭, ৩৯৪৩, ৪৬৮০, ৪৭৩৭,
আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সা) প্রথমে ‘আশূরার দিনে সওম পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরে যখন রমযানের সওম ফারয করা হলো তখন যার ইচ্ছা (‘আশুরার) সওম পালন করত আর যার ইচ্ছা করে।
সহীহ বুখারী- ২০০০, ২০০১, ২০০২, ২০০৩
ইব্নু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সা)- কে ‘আশূরার দিনের সওমের উপরে অন্য কোন দিনের সওমকে প্রাধান্য প্রদান করতে দেখিনি এবং এ মাস অর্থাৎ রমযান মাস (এর উপর অন্য মাসের গুরুত্ব প্রদান করতেও দেখিনি)
সহিহ বুখারী- ২০০৬, ২০০৭
সহীহ মুসলিম- ২৬৪৫,
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সা)-এর কাছে জিজ্ঞেস করা হ’ল, ফার্য সলাতসমূহের পর কোন্ সলাত এবং রমাযান মাসের সিয়ামের পর কোন্ সওম সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ফরয সলাতসমূহের পর গভীর রাতের সলাত সর্বোত্তম এবং রমাযান মাসের সিয়ামের পর আল্লাহ্র মাস মুহার্রমের সওম সর্বোত্তম।
সহিহ মুসলিম- ২৬৪৬, ২৬৪৭
মুহাম্মাদ বিন সায়ফী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সা) আশূরার দিন আমাদের জিজ্ঞেস করেনঃ তোমাদের কেউ আজ আহার করেছ কি? আমরা বললাম, আমাদের কতক আহার করেছে এবং কতক আহার করেনি। তিনি বলেন, তোমরা যারা আহার করেছো এবং যারা আহার করোনি, তোমাদের অবশিষ্ট দিনটি সিয়াম রাখো। আর তোমরা মাদীনাহ্র পার্শ্ববর্তীদের নিকট লোক পাঠিয়ে দাও, তারাও যেন দিনটির অবশিষ্টাংশ সিয়াম রাখে।
মুসনাদে আহমাদ ১৮৯৫৭
সহীহ বুখারী- ২০০৭
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সা) যখন নিজে আশূরার দিন সওম রাখলেন এবং আমাদেরকেও এ সওম পালনের নির্দেশ দেন, তখন লোকেরা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! ইয়াহুদী ও খৃষ্টানরা এ দিনটিকে সম্মান করে। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেনঃ আগামী বছর এলে আমরা নবম দিনও সওম পালন করবো। কিন্ত আগামী বছর না আসতেই রাসূলুল্লাহ (সা) ইনতিকাল করেন।
হাদিস নং ২৪৪৫
আশুরার সিয়ামের ফজিলত:
আবূ কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ আশূরার দিনের রোযার দ্বারা আমি আল্লাহ্র নিকট বিগত বছরের গুনাহ মাফের আশা রাখি।
তিরমিযী ৭৫২
আবূ দাউদ ২৪২৫,
রাসুল (সা) বলেন “তোমরা আশুরার সিয়াম পালন কর এবং ইহুদীদের বিরোধীতার জন্য আগের বা পরের দিন ও সিয়াম রাখ”।
মুসনাদে আহমাদ ১/২৪১
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত:
রাসুল (সা) বলেন ” আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে ৯ তারিখে ও অবশ্যই সিয়াম রাখবো”
সহীহ মুসলিম- ১/ ৩৫৯
আল্লাহ আমাদের সুন্নাতি আমলটি পালন করার তৌফীক দাও। আমিন।
👉 যে দোয়া ১ বার পাঠ করলে রাত দিন অনবরত জিকিরের চেয়েও বেশি সওয়াব পাবেন!:
👉 সমস্ত গুনাহ মাফের দোয়া সমূহ:
👉 ফজরের নামাজের উপকারিতা / ফজিলত / বৈজ্ঞানিক উপকারিতা: