সমস্ত গুনাহ মাফের দোয়া সমূহ
سُبْحَانَ اللّهِ وَ بِحَمْدِهِ
(সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি)
আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রতিদিন ‘‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’’ শতবার বললো, তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার ন্যায় (অধিক) হয়।
[সহীহুল বুখারী ৬৪০৬, তিরমিযি ৩৪৬৬, ৩৪৬৭, ৩৯৫৬, আহমাদ ৭১২৭]
আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক সকালে ও বিকালে একশত বার বলেঃ “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী,” কিয়ামাতের দিন তার চাইতে উত্তম (আমলকারী) আর কেউ হবে না।
তবে যে লোক তার ন্যায় কিংবা তার চাইতে অধিক পরিমাণ তা বলে (সে উত্তম আমালকারী বলে গণ্য হবে)।
[সূনান আত তিরমিজী ৩৪৬৯, মুসলিম।]
হযরত আবু যার (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ আল্লাহ্র নিকট যে কথাটি সর্বাপেক্ষা প্রিয় সেটি কি আমি তোমাকে জানাবো না? নিঃসন্দেহে আল্লাহ্র নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় কথাটি হচ্ছেঃ ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি।” [মুসলিম ১৬/৫]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর আগে এই দুআটি অধিকমাত্রায় পড়তেন, ‘সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহী, আস্তাগফিরুল্লাহা অআতূবু ইলাইহ্।’
অর্থাৎ আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর নিকট তওবাহ করছি। [মুসলিম, রিয়াযুস স্বা-লিহীন ৯/১৮৮৬ ]
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি কলেমা (বানী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারণে খুবই সহজ (আমলের) পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাণী দু’টি হচ্ছে),
“সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহান্নাল্লাহিল আযীম” আমরা আল্লাহ তায়ালার প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, মহান আল্লাহ অতীব পবিত্র।
[সহীহ বুখারী ৭০৫৩]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কতক সাহাবিকে, যারা কিয়ামুল লাইলে অক্ষম ছিল, কিছু সহজ আমল বাতলে দিয়েছেন যা কিয়ামুল লাইলের সমান।
এটা আমাদের নেকির পাল্লা ভারী করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ। আবু উমামা বাহেলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
(من هاله الليل أن يكابده ، أو بخل بالمال أن ينفقه ، أو جبن عن العدو أن يقاتله ، فليكثر من سبحان الله وبحمده ، فإنها أحب إلى الله من جبل ذهب ينفقه في سبيل الله عز وجل).
“যে শঙ্কাবোধ করে রাত জাগতে পারবে না, অথবা খরচ না করে সম্পদ জমা করে রাখে, অথবা শত্রুর সাথে যুদ্ধ না করে ভীরুতা প্রদর্শন করে, সে যেন سبحان الله وبحمده (সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি) অধিক পাঠ করে, কারণ তা আল্লাহর রাস্তায় পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ ব্যয় করার চেয়ে অধিক প্রিয়”।
[তাবরানি ফিল কাবির: (৭৭৯৫), আল-বানি ‘সহিহ তারগিব ওয়া তারহিব’: (১৫৪১) গ্রন্থে বলেছেন: হাদিসটি হাসান লি গায়রিহি।]
জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনাঃ রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহিওয়াসাল্লাম বলেনঃ “যে ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ বলে তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ রোপণ করা হয়”। (আত-তিরমিযি)
হযরত নূহ আঃ যখন মৃতুশয্যায় তখন তিনি স্বীয় ছেলে ডাকলেন। তারপর বললেন, আমি মুমুর্ষ হালাতে আছি। আমি তোমাকে দু’টি অসিয়ত করছি। দু’টি বিষয়ের আদেশ করছি আর দু’টি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। নিষেধ করছি শিরক ও কবিরা গুনাহ করা থেকে।
আর আদেশ করছি “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়তে। কেননা, যদি এ কালিমা এক পাল্লায় রাখা হয়, আর অপর পাল্লায় সমস্ত আসমান ও জমিন রাখা হয়, তবে কালিমার পাল্লা ঝুঁকে যাবে। আর যদি সমস্ত আসমান জমিন একটি বৃত্তে পরিণত হয়ে যায়,
তবু এ কালিমা সে বৃত্তকে ভেঙ্গে আল্লাহ তাআলার কাছে পৌঁছে যাবে। আর তোমাদের আদেশ করছি “সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী” পড়তে। কেননা, এটিই সমস্ত বস্তুর ইবাদত এর দ্বারাই সমস্ত বস্তুকে রিযিক দেয়া হয়।
হাদীসটির সনদ সহীহ।
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৭১০১
মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-১৫৪
গায়াতুল মাকসাদ, হাদীস নং-৪৫৮৭
মাজমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-৭১২৪
আলমুসনাদুল জামে, হাদীস নং-৮৩২৩
মুন্তাখাব হাদীস, ঈমান অধ্যায়-২৪-২৫
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি কালিমাহ আছে, যেগুলো দয়াময়ের কাছে অতি প্রিয়, মুখে উচ্চারণ করা খুবই সহজ, দাঁড়িপাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাণী দু’টো হচ্ছে), সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী সুবহান্নাল্লাহিল আযীম;- আমরা আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করছি, মহান আল্লাহ্ (যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে) অতি পবিত্র। [বুখারী ৭০৫৩]
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ (আল্লাহ পবিত্র ও সমস্ত প্রশংসা তাঁরই) একশ’ বার পাঠ করে কিয়ামতের দিনে তার চেয়ে উত্তম আমল কেউ আসবে না। তবে সে ছাড়া, যে ব্যক্তি তদানুরূপ আমল করে কিংবা তার চেয়ে আরও বেশী আমল করে। সহীহ মুসলিম ৬৫৯৯
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি কলেমা যা জবানে অতি হাল্কা, মীযানে ভারী, আর রাহমানের নিকট খুব পছন্দনীয়; তা হচ্ছে ‘সুবহানাল্লাহ্ ওয়া বিহামদিহী, সুবহানাল্লাহিল আযীম’। [সহীহ বুখারী- ৬২২৫]
শরীক হুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলবে, একবার আমি আইশা (রাঃ) এর কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করিঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে জাগার পর কোন দু’আ পড়তেন? তিনি বলেনঃ তুমি আমাকে এমন একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছ, যে সম্পর্কে এর আগে আমাকে আর কেউ জিজ্ঞাসা করেনি।
তিনি যখন রাতে ঘুম থেকে জাগতেন, তখন আল্লাহু আক্বার- ১০ বার, আল-হামদুলিল্লাহ- ১০ বার; (سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ) সুবহানাল্লাহি ওয়া-বিহামদিহি-১০ বার; (سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ) সুবহানাল মালিকিল কুদ্দুস- ১০ বার,
আস্তাগফিরুল্লাহ- ১০ বার এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ- ১০ বার পড়তেন। এরপর তিনি এ দু’আ ১০ বার পড়তেন- (অর্থঃ) হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে দুনিয়া ও কিয়ামতের দিনের সংকীর্ণতা থেকে সাহায্য চাই(” اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ ضِيقِ الدُّنْيَا وَضِيقِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ ”)।এরপর তিনি সালাত আদায় করতেন। [সূনান আবু দাউদ ৪৯৯৮]
👉খলীফা হারুনুর রশীদ এর শাসন আমলের একটি ঘটনা-
👉খলিফা হারুনুর রশিদ এর একটি শিক্ষনীয় ঘটনা-