Islamic Path
Saturday, February 4, 2023
No Result
View All Result
  • Home
  • Islamic Story
  • Quran-Translation
  • Islamic-Drama
  • About Us
Islamic Path
No Result
View All Result
নীল ডায়েরি  (ইসলামিক গল্প)

নীল ডায়েরি (ইসলামিক গল্প)

Blue diary (Islamic Story)

islamicpath by islamicpath
April 23, 2022
in Islamic Story
0
0
SHARES
217
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter
📘নীল ডায়েরি
ফাতিমা আফরিন
১ম+২য় +৩য়+শেষ পর্ব

আপু একটু জায়গা হবে ?
মাথা উঁচু করে জান্নাত উত্তর দিল- সিট বুকিং ।
‘ আসলে সিট পাচ্ছি না , এতদূর সিট ছাড়া যাবাে কীভাবে সেটা ভেবেই বললাম । ‘

 

 

“ কেন আপনি টিকিট কাটেননি ? ‘

“ না আপু ।

 

মেয়েটার পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালােভাবে দেখলাে জান্নাত । হালকা আকাশি রঙের ড্রেস পরা । চুলগুলাে ব্যান্ড দিয়ে আটকানাে । গায়ের রঙ গভীর কালাে । তবে চেহারায় অদ্ভুত একটা আকর্ষণ আছে । দেখে মনে হচ্ছে কোনাে অভিজাত পরিবারের সন্তান । চোখেমুখে চিন্তার ছাপ । কিন্তু মেয়েটা টিকিট না কেটেই ট্রেনে উঠে পড়লাে । রহস্য কী ওর !

 

 

 

মেয়েটা আবার বলল , ‘ আপু , একটু বসতে পারি ?
জান্নাতের কেমন যেন মায়া হলাে , আবার ভয়ও পাচ্ছে । আল্লাহ ভাল । জানেন এই মেয়ের মনে কী আছে । ভয়েভয়ে বলল , বসুন । ট্রেন আপন গতিতে ছুটছে , মেয়েটা জানালার ফাঁকগেলে নির্বাক তাকিয়ে আকাশ দেখছে , কখনও উদাসদৃষ্টে মাঠের সবুজে হারিয়ে যাচ্ছে । কপালে চিন্তার ভাঁজ । আনমনে ভাবছে- কোথায় যাচ্ছি আমি ? কতশত চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ।

 

 

হঠাৎ জান্নাতের হাতের স্পর্শ পেয়ে ঈষৎ কেঁপে ওঠে । জান্নাত প্রশ্ন করল , “ কোথায় যাবেন আপনি ? ‘ মেয়েটার সরল উত্তর , ‘ জানি । অবাক হয়ে জান্নাত জিজ্ঞেস করল , “ ওমা ! এটা আবার কেমন কথা ! একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেয়েটি বলল , এই জগতটা বড় অদ্ভুত , আরও বড় অদ্ভুত এই জগতের মানুষরূপী পশুগুলাে ।

 

 

পৃথিবীতে মেয়েদের কোন মূল্য নেই , মেয়ে মানেই ভােগ্যপণ্য । বলতে পারেন টিস্যু পেপারের মতাে । ব্যবহার করার পরে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেও । জান্নাত হতভম্ভ হয়ে জিজ্ঞেস করল , “ কী হয়েছে আপনার ? একটু খুলে বলবেন ?
মেয়েটা চোখের কোণে অশ্রু মুছতে মুছতে বলল , ‘ আর বাঁচতে মনে চায় ।

 

 

এই জগত সংসার মাকাল ফলের মতােই তেঁতাে । উপর দিয়ে আকর্ষণ ভেতরে কালাে । ঠিক এমনই মানুষরূপী হায়েনাগুলাে । আমি রাইতা । ভালােবেসে বিয়ে হয়েছিল সুমন নামের একটি ছেলের সাথে । প্রথম প্রথম । আমাদের সংসার খুব ভালাে চলছিল । শ্বশুর – শাশুড়ি নিয়ে খুব ভালােই দিন কাটাচ্ছিলাম ।

 

 

 

….. হঠাৎ এক দমকা হাওয়া এসে আমার জীবনের সব লন্ডভণ্ড করে দিল । জান্নাত উৎসুক কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল , ‘ তারপর ? তারপর কী হয়েছে একটু খুলে বলবেন ? ‘ রাইতা বলা শুরু করল- ‘ সুমনের বােনের বাসা নাটোর , ও প্রায়ই বােনের বাসায় বেড়াতে যায় । একসপ্তাহের নিচে কখনও বাড়ি ফেরে না

 

 

ওদের ভাইবােনের মাঝে অনেক মিল , খুনসুটি লেগেই থাকে সবসময় । আমি ভাবতাম ভাইবােনের ভালবাসা অনেক গভীরের কারণে ও বাড়ি আসতে চায় না । কখনও ভিন্নকিছু মনে আসেনি ।

 

 

 

বাড়িতে আমি , শাশুড়ি আর শ্বশুর থাকি । সুমন বাড়ি খুব কম থাকে । শাশুড়িটা জল্লাদের মতাে । আমার চলনে , বলনে সবকিছুতেই সে দোষ খোঁজে । কিন্তু এগুলাে আমার কিছু মনে হতাে না । ভাবতাম সুমন তাে । আছে , ও তাে আমায় ভালােবাসে । ওর ভালােবাসার কাছে অন্যসব তুচ্ছ মনে । হতাে । একবার শাশুড়ি খালাশাশুড়ির বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল ।

 

 

 

বাড়িতে আমি একা , শ্বশুর অফিস থেকে বিকেলে আসে । সব কাজ গুছিয়ে দরজা ভিড়িয়ে রুমের লাইট বন্ধকরে শুয়ে ছিলাম । শ্বশুর কখন বাড়ি ফিরেছে বুঝতে পারিনি । তিনি কোনাে আওয়াজ না দিয়েই আমার রুমে ঢুকে পড়েছে । আমি শােয়া থেকে লাফিয়ে উঠে বললাম- কে ! কে এখানে ! শ্বশুর শান্ত গলায় বলল- আরে আমি , আমি তােমার শ্বশুর ।

 

 

তিনি আস্তে আস্তে আমার পাশে এসে বসলাে , মাথায় হাত বুলিয়ে বলল , ভয় পেয়েছাে ? আমি মুচকি হেসে বললাম- না আব্বা , ভয় পাইনি । হঠাৎ লক্ষ করলাম তিনি আস্তে আস্তে আমার পিঠে হাত দিচ্ছে , আচমকা হ্যাঁচকা টানে আমাকে তার সাথে মিশিয়ে নিল । আমি জোরকরে ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম ।

 

 

জিনিসটা আমার একদমই ভাল লাগেনি । মধ্যেবয়সী এই মানুষটাকে আমার কাছে জানােয়ার মনে হলাে ।
মদের ভ্যাঁপসা গন্ধে বমি আসার উপক্রম ।

ছিঃ এই মানুষটা মদ খায় ! আমি দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম । শাশুড়ি বাড়ি নেই , বাড়িতে আমি আর শ্বশুর একা । পাশের বাড়ির এক ভাবির সাথে রাতটা কোনরকম পার করলাম । সকালে সুমনকে ফোন করে বললাম , তুমি বাড়ি এসাে , আমার একাএকা খুব ভয় করে । মা বাড়ি নেই । সুমন বলল , আমি অনেক ব্যস্ত , এখন বাড়ি যেতে পারবাে না । মা বিকেলেই বাড়ি ফিরবে ।

 

 

 

সুমনকে বললাম , দেখাে সুমন , বাবার আচরণ আমার মােটেও ভাল লাগছে না । কাল রাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে আমার ঘরে ঢুকে পড়েছে । সুমন খিলখিল করে হেসে বলল , আরে একটু আধটু মদ খেলে কী হয় ! এই বয়সটাই তাে ফুর্তি করার । আমার বাবার বয়স আর কত হয়েছে , এই ধরাে পঞ্চাশ হবে । সুমন ! তুমি কী বলছাে এসব ! তােমার মাথা ঠিক আছে ?! হাসতে হাসতে সুমন ফোন কেটে দিল । শাশুড়িকেও বিষয়টা জানালাম ।

 

 

 

শাশুড়ি রেগে কটকট করতে করতে বলল- সুমনের বাবা তাে তােমারও বাবা । একটু গায়ে হাত দিয়েছে তাতে কী এমন ক্ষতি ? তােমরা বাপু আদরও বােঝে একটু পর তিনি তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে আরও বলল , এই মেয়ে ! তােমার লজ্জা করে না আমার স্বামীর নামে মিথ্যা অপবাদ দিতে !

 

 

 

তােমার চেহারার যা সুরত , তােমার ওই কুতসিত চেহারায় আমার স্বামী পাগল হবে তাই ভেবেছাে ? আহ ! কোন পরিবারে আসলাম আমি , কোন অপরাধের শাস্তি হচ্ছে আমার ! এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম । ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আমার চেহারার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে দেখছি আর ভাবছি , আজ কালাে হয়ে জন্মেছি বলেই কী আমার এতাে শাস্তি ! কালাে মানুষের এই পৃথিবীতে কোনাে দাম নেই ।

 

 

 

সমাজ আমাদের এততা তুচ্ছ মনে করে । বিধাতা কেন আমাকে কালাে বানিয়ে পাঠালাে !
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কোনাে উত্তর মেলেনি আমার । বুকের ভেতর এক পাহাড় কষ্ট নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলাম । সুমন কয়েক মাস ধরে যােগাযােগ করে না । বাবা মায়ের সাথে কথা বলে ফোন রেখে দেয় , কিন্তু আমার কোনাে খোঁজ করে না ।

 

 

 

কেমন আছি , কী খেয়েছি , কিছু জানতে চায় না । দিনে পঞ্চাশবারের মতাে কল দিই , রিং হয় কিন্তু সে রিসিভ করে না । রুমের দরজা আটকে কাঁদি , খুব কাঁদি , কিন্তু শব্দ হয় না । আমার যে শব্দ করে কাঁদতে মানা ! আর কাঁদলেও দেখার ও বুঝার কে আছে আমার ! কথাগুলাে একশ্বাসে বলল রাইতা । ততক্ষণে জান্নাতের চোখের কোণে অশ্রু জমে গেছে । জান্নাত বলল , শ্বশুর বাবার মতাে , কিন্তু তার সামনে শালিনতা বজায় রেখে চলতে হবে ।

 

 

 

মুখমন্ডল , দু’হাতের পাতা এবং দু’পায়ের তালু ব্যতীত সবকিছু সতর । স্বামী ব্যতিত অন্যান্য মাহরামের সামনেও এর বেশি খােলা রাখা যাবে । । আর গায়রে মাহরামের সামনে তাে এটুকুও না । কিন্তু আমাদের সমাজের সাধারণ মানুষ এটা বুঝে না । ‘ জান্নাতের স্বামী মাহমুদ নাস্তা নিয়ে এসে বলল , “ নাও নাস্তা করে নাও । জান্নাত মাহমুদের দিকে তাকিয়ে বলল , ‘ আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে ।

 

 

 

জান্নাতের চোখে পানি দেখে মাহমুদ প্রশ্ন করলাে , “ এই , কাঁদছাে কেন ? ‘ ‘ কই না তাে ! মাহমুদ কথা না বাড়িয়ে সােজা তার সিটে গিয়ে বসে পড়লাে ।

 

 

জান্নাত বলল , তারপর কী হলাে ? রাইতা আবার বলা শুরু করলাে । এভাবে পাঁচটি মাস কেটে গেলাে কিন্তু সুমনের কোনাে খোঁজ নেই । পাঁচ মাসের মাথায় সুমন বাড়িতে আসলাে । বলে । বুঝাতে পারবাে না সেদিন আমি কতটা আনন্দিত হয়েছিলাম । নতুনকরে জীবন

 

 

 

২য় পর্ব

 

 

 

সাজানাের স্বপ্ন বুনেছিলাম আবার । কিন্তু সবার কী আর স্বপ্ন পূরণ হয় ! সবাই কি স্বপ্নের রঙীন ডানায় উড়তে পারে ! উহু ! পারে না । ফোনের রিংটোনের আওয়াজ শুনে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম ‘ সারা ’ নামটা স্ক্রিনে ভেসে উঠলাে । আগপিছ কী যেন ভেবে ফোনটা রিসিভ করলাম । অপর পাশ থেকে অভিমানী সুরে ভেসে আসলাে-

 

 

 

সুমন , এই বুঝি তােমার ভালবাসা ! ফোন ফেলে কোথায় থাকো তুমি ? ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখাে তাে ।
কতবার কল দিয়েছি ! বুঝেছি তুমি আমাকে ভালােবাসাে না , ভালােবাসলে ফোনটা রিসিভ করতে এতাে দেরি হতাে না । আমি হতভম্ভ হয়ে গেলাম , কোনাে উত্তর খুঁজে পাচ্ছিলাম না ।

 

 

হাত – পা অসাড় হয়ে আসছিল । তবুও একটু সাহস নিয়ে বলললাম- কে আপনি ? আর । কাকে ভালােবাসেন ?
মেয়েটা বলল- আমি সারা ।

 

সুমনের স্ত্রী ।
আপনি কে ? ‘
আপনি সুমনের স্ত্রী মানে ?
কী বলছেন মাথা ঠিক আছে আপনার ? ‘
আমার মাথা ঠিক থাকবে না কেন ? বললাম তাে আমি সুমনের স্ত্রী ।
ও আচ্ছা ।

 

 

 

তাে আপনাদের বিয়ে হয়েছে কবে ? ‘ ‘
এইতাে দু’মাস আগে ।
আচ্ছা ,

 

 

 

আপনাকে তাে চিনলাম না , সুমনের ফোন । আপনার কাছে কেন ? সুমন কোথায় ? আপনি সুমনের কী হন ?
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম- আমি কেউ নই ।

 

 

একথা বলেই ফোন কেটে বারান্দায় চলে গেলাম । নির্বাক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি । আমার চোখে এখন পানি নেই । অতি শােকে পাথর হয়ে গেছি । বুকটা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাচ্ছে , কিন্তু কোনাে শব্দ নেই । অনেক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সুমন বলল ,

 

 

 

“ কী ব্যাপার এভাবে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে কী করছাে ? ”
কোনাে উত্তর দিলাম না , শুধু নির্বাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম ওর দিকে । এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সুমন আবার প্রশ্ন করলাে , এভাবে কি দেখাে ? ক্ষুধা পেয়েছে কিছু খেতে দাও । ” আর চুপ থাকতে পারলাম না । বলেই ফেললাম , ‘ আমার কাছে ক্ষুধার কথা বলে সারার কাছে চাও ।

 

 

 

আমার কথা শুনে কিছুটা বিস্মিত হয়ে বলল , ‘ সারা ? সারা আবার কে ? ও … সারাকে চিনাে না । তা ? আরে বলবা তাে সারা কে ? “ কেন তােমার দ্বিতীয় স্ত্রী ! ‘ কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল সুমন । কোনাে কথা না বলে ফোনে ব্যাস্ত হয়ে গেল ।

 

 

 

একি ! তুমি আমার ফোন ধরেছিলে কেন ? ‘ কেন আমি বুঝি তােমার ফোন ধরতে পারবাে না ! ‘ ‘ কেন ধরলে সেটা জিজ্ঞেস করেছি ।
‘ ‘ সারা বারবার ফোন দিচ্ছিলাে তাই ধরেছি । ‘

 

 

 

‘ আমার ফোন ধরার সাহস কে দিল তােমাকে ? ‘ ঝাঁজালাে স্বরে বলল সুমন । ‘
তুমি এমন হয়ে গেলে কেন সুমন ? তােমার সেই আগের ভালােবাসা কোথায় গেল ! আগের সুমন আর এখনকার সুমন অনেক পার্থক্য । তুমি তাে এমন ছিলে না ! ভালােবেসেই তাে আমাকে এনেছিলে কিন্তু এখন আমি এতােটাই খারাপ হয়ে গেলাম ? সুমন তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে বলল ,

 

 

তুমি আমার ফোন ধরেছাে কেন ? সারার সাথে কথা বলার সাহস কে দিলাে তােমাকে ? ‘ আমি কাঁদোকাঁদো স্বরে বললাম , তুমি এমন কাজ করতে পারলে । সুমনাবিবেক একটুও বাধা দিল না ? ‘

 

 

 

সুমন আমার গালে ঠাস – করে চড় বসিয়ে বলল , ‘ লজ্জা করে না আমার ফোনে হাত দিতে ! কী আছে তাের ! না আছে চেহারা , না আছে রং , না আছে । তাের বাবার টাকাপয়সা । আয়নায় একবার ভালােকরে দেখ তাে তাের চেহারা ! পাতিলের তলার চেয়েও কালাে তুই । আর এক জিনিস কয়দিন খাবাে । সারার পায়ের সমতূল্যও নস তুই ।

 

 

এসব শুনে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি । আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল । গগনবিদারী চিৎকার করে কান্না করেছিলাম সেদিন । তবুও তার অন্তরে একটুও রেখাপাত করেনি । একটিবারের জন্যও আমার কাছে । আসেনি । আমার সামনেই সারার সাথে ফোনে খুঁনসুটিতে মেতেছিল । আমি সহ্য করতে পারিনি ওর এমন আচরণ । রুম থেকে বেরিয়ে অন্যরুমে গিয়ে ঠাস – করে । দরজা আটকে দিলাম ।

 

 

 

এই পৃথিবীর আলাে – বাতাস আর সহ্য হচ্ছিলাে না । নিজেকে শেষ করে ফেলতে চেয়েছিলাম । ওড়নাটা ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে আমি গলায় প্যাঁচ দেব এমন সময় জোরে জোরে দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিয়েছিল । বারবার সুমন বলছিল , রাইতা দরজা খােলাে ।

 

 

 

আমি কোনাে সাড়াশব্দ না করে চুপকরে ছিলাম । এই পৃথিবীর প্রতি আমার কোনাে মায়া ছিল না । কার জন্য বাঁচবাে আমি ! আজ কালাে বলে সমাজের কাছে । এতােটাই তুচ্ছ আমি । আমার কী দোষ ! বিধাতাই আমাকে সৃষ্টি করেছেন । তাই ঠিক করেছিলাম পরপারে চলে যাবাে ।

 

 

কারাে পথের কাঁটা হয়ে থাকবাে না । একটু পর কেন যেন হঠাৎ নিজের জীবনের প্রতি মায়া হলাে । দরজা খুলে বেরিয়ে আসলাম । সুমন বলল , এরকম পাগলামি করছাে কেন , তােমার জন্য আজ আমার জেল হয়ে যেতাে । সুমনের কথাটি যেন আমার কলিজায় সুঁচের মতাে বিধেলাে ।

 

 

সহ্য করতে না পেরে বললাম- সুমন , আমার থেকে তােমার জেলখানাটা বড় হয়ে গেল ! জেলখানায় থাকার ভয়ে এভাবে দরজা ধাক্কাচ্ছিলে ? বাহ সুমন , তুমি পারােও বটে ।

 

 

 

সুমন কোনাে কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে গেল । কিছুক্ষণ পর এসে ডিভাের্স পেপার দিয়ে বলল , আমাকে মুক্তি দাও , তুমিও মুক্তি নাও । তােমাকে আমি এক মুহূর্তের জন্য সহ্য করতে পারছি না । তুমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাও প্লিজ ! আমি নির্বাক হয়ে শুধু সুমনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম , কোনাে কথা বলার শক্তি আমার ছিলাে না । কোনাে কথা না বলে রুমে চলে গেলাম ।

 

 

 

চিল্কার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছিলাে কিন্তু কাঁদতে পারিনি । সেদিন আমার চোখে কোনাে পানি ছিল না । একখন্ড পাথরের মূর্তির মতাে চুপকরে বসে ছিলাম । আমার জীবনে এতাে বড় ধাক্কা আসবে বুঝতে পারিনি । অনেক কষ্টে নিজেকে শামলে নিলাম । ব্যাগপত্র গুছিয়ে কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়েছি । তবে কোথায় । যাচ্ছি জানি না । শুধু এটুকু জানি , কোথাও যাচ্ছি । জান্নাতের চোখ বেয়ে দরদর করে পানি ঝরছে ।

 

একমুহূর্তে কোনাে কথা বলার শক্তি তারও নেই । সান্তনা দেওয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে । জান্নাত চোখের পানি মুছে বলল , আচ্ছা আপনার মা – বাবার কাছে গেলে তাে হতাে । এভাবে একাএকা বের হওয়া ঠিক হয়নি ।

 

 

‘ বের হওয়া ঠিক হয়েছে কিনা জানি না , তবে মা – বাবার কাছে যাওয়ার ইচ্ছা নেই এখন । তারা আমার এই বিয়ে কিছুতেই মেনে নিচ্ছিলাে না , অনেক জোরকরে মানিয়েছি । আমার এই খবর পেলে জানি না তাদের অবস্থা কেমন হবে ।

 

 

তাই আর তাদের কাছে গেলাম না । মাহমুদ এসে বলল , ‘ জান্নাত ওঠো , আমাদের নামতে হবে । জান্নাত মাহমুদের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে । নরম গলায় মাহমুদ বলল , এভাবে তাকিয়ে কেন ? জান্নাত চোখ নামিয়ে বলল , “ কই না তাে ! জান্নাত রাইতার হাত ধরে বলল , “ আপু আমার নামতে হবে । আপনার জীবন – কাহিনী পুরােটা শােনা হলাে না । আপনি এখন কোথায় যাবেন ?
রাইতার সরল উত্তর- জানি না ।

 

 

 

জান্নাতের খুব ইচ্ছে করছিল ওর সাথে নিয়ে যাওয়ার , কিন্তু একজন অজানা – অচেনা মানুষকে নিয়ে ওর যদি কোনাে বিপদ হয় ! গাড়িতেই পরিচয় , এটুকু পরিচয়ে কাউকে বেশি আপন করা ঠিক না ।

 

 

 

এসব আগপিছ ভেবে জান্নাত রাইতার হাত ধরে বলল , ‘ আপু আসি । জান্নাত নেমে গেলাে । রাইতা জান্নাতের হাঁটার দৃশ্য দেখছে আর ভাবছে কালাে বােরকা , ইয়া বড় ওড়না পেঁচিয়ে আবার হাতে – পায়ে মুজা পরে এদের কষ্ট হয় না ! যেখানে একটা ওড়না পেঁচাতেই আমার কষ্ট লাগে , সেখানে কালাে বােরকা !

 

 

 

কীভাবে সম্ভব !
নাহ , মেয়েটার কথা ভাবলে চলবে না । আমার গতিহীন অনন্ত পথের কথাই বরং চিন্তা করি । ঢাকায় গিয়ে কোথায় উঠবাে আমি ! বান্ধবী শায়লাকে ফোন দিয়ে বরং খোঁজ নিই , দেখি ওর কাছে ওঠা যায় কি না । শায়লাকে ফোন দিয়ে বলল ,

 

 

 

“ তাের সাথে আমাকে কিছুদিন রাখবি ? ” ‘ আয় , আমি ম্যানেজ করে নেব । ‘ কিছুটা চিন্তা মুক্ত হলাে রাইতা । ঝকঝক , ঝকঝক রবে ট্রেন চলছে । নীরব নিস্তব্ধ চারপাশ । ঝােপঝাড় পেরিয়ে মাঝবয়েসী ট্রেনটা চলছে তাে চলছেই । কত কথা , কত স্মৃতি রাইতার মানস্পটে উকি দিচ্ছে !

 

 

 

কত বিচিত্রময় এইজীবন । কোথায় ছিলাম আজ কোথায় যাচ্ছি আমি ! ট্রেন থেমে গেল । লােকজন নামতে শুরু করলাে । রাইতা উঠে দাঁড়ালাে । হঠাত পায়ের সাথে কিসের যেন ছোঁয়া লাগলাে । পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখলাে একটা ডায়েরি পড়ে আছে । ডায়েরির রং – টা নীল । গাড় নীল । হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখে বলল , বাহ ! চমকার ডায়েরি তাে ! মনে হয় বােরকাওয়ালী মেয়েটা ফেলে গেছে ।

 

 

ডায়েরিটা নিয়ে নেমে পড়লাে রাইতা । শায়লার বাসায় গিয়ে উঠলাে ।
বান্ধবীকে পেয়ে শায়লাও বেশ আনন্দিত হলাে । একসপ্তাহ শায়লার বাসায় কাটালাে । রাইতা বলল , ‘ শায়লা , আমাকে কোন কাজ খুঁজে দিবি ? আর কোথাও ফিরে যেতে চাই না ।

 

 

মায়ের কাছেও না । শুধুশুধু ভাই বউয়ের বােঝা হতে যাবাে কেন ? কোন কাজে লেগে গেলে মনটাও ভালাে থাকবে আমার দিনও চলে যাবে । ‘ শায়লা মনেমনে ভাবলাে , কোনাে কাজে লাগিয়ে আপাতত আপােদ দূর করলেই হয় । কতদিন বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবাে ? হােক না বান্ধবী , আমারও তাে । সংসার আছে ।

 

 

 

শায়লা বলল , চল , দেখি গার্মেন্টসে কোনাে কাজ পাই কি না । শায়লা , রাইতা কাজের উদ্দেশ্যে বের হলাে । সারা শহর তন্নতন্ন করেও কোনাে কাজের হদিস না পেয়ে বাসায় ফিরে এলাে । ফ্রেস হয়ে ক্লান্ত শরীর নিয়ে । শুয়ে পড়লাে রাইতা । রাতের খাবার খেলাে না ।

 

 

শুয়ে শুয়ে ভাবছে , এই জগত সংসার এমন কেন ! অন্তরে কোনাে শান্তি । পাচ্ছে না সে । এপাশ – ওপাশ করেও কিছুতেই ঘুম আসছে না । হঠাত নীল । ডায়েরিটার কথা মনে পড়লাে । লাইট জ্বালিয়ে ব্যাগ থেকে ডায়েরিটা বের করে উল্টাতে লাগলাে ।

উল্টাতে উল্টাতে এসে এক জায়গায় চোখ আটকে গেল । সেখানে লেখা ছিল “ হতাশ হয়াে না । জীবনে অনেক ঝড় আসবে , তাইবলে নিজেকে শেষ করে দিতে হবে ? জীবন একটিই , এজীবনকে মূল্যায়ন করতে হবে ।

 

 

যখন তুমি হতাশার গহিন অরণ্যে হারিয়ে যাবে , ঠিক তখনই নামাজের দাঁড়িয়ে যাবে । কাঁদবে , খুবকরে কাঁদবে । তবে জায়নামাজের বুকে । চোখের পানি অমূল্য । অপাত্রে এর অপচয় কোরাে না । আল্লাহর সামনে সব অভিযােগ পেশ করবে ।

 

 

পৃথিবীতে এই একটিই প্রশস্ত জায়গা আছে , সেটা হলাে জায়নাজের বুক । জায়নাজের বুকে কেঁদে কেঁদে মালিকের কাছে সব অভিযােগ পেশ করবে , শান্তি পাবে । মনে তৃপ্তি আসবে । শুভ্রতার আবেসে আবেশিত হবে । কারণ তিনি কাউকে ফিরিয়ে দেন না । কারাে প্রতি জুলুম করেন না । ”

 

 

লেখাটা পড়ে রাইতার চোখ ছলছল করে উঠলাে । মনেমনে ভাবতে লাগলাে , এভাবে তাে কখনও ভেবে দেখিনি ! আমি তাে স্রষ্টাকে কখনও স্মরণ করি না । নামাজ পড়ি না । অথচ মুসলিম ঘরে জন্ম আমার । ডায়েরিটা বন্ধ করে অযু করে নামাজে দাঁড়িয়ে গেল রাইতা । সুরা – কেরাত যেরকমই পারে সেভাবে নামাজ পড়লাে ।

 

এশার নামাজ পড়ে আরও দু’রাকাআত বেশি পড়লাে । দু’হাত উঠালাে আল্লাহর দরবারে । অজান্তেই টপটপ করে অশ্রু ঝরছে । কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলাে- হে আল্লাহ !

 

 

আমি এক অধম বান্দি গুনাহের
বােঝা মাথায় নিয়ে তােমার আলিশান দরবারে দু’টি হাত উঠিয়েছি । তুমি আমাকে তােমার রহমতের চাদরে জড়িয়ে নাও মাওলা !

 

 

এভাবে মনের যত চাওয়া সব আল্লাহর দরবারে নিবেদন করলাে সে । মুনাজাত শেষ করতেই রাইতার পুরােটা সত্তা জুড়ে অদ্ভুত মিষ্টি আবহ খেলে যায় । ভিন্নরকম ভাললাগা কাজ করে । কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে রাইতা । সকালে ফজরের সময় উঠে যায় সে ।

 

 

নামাজ আদায় করে মােবাইলটা অন করে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে তিলাওয়াত শুনতে থাকে । তিলাওয়াতের মুছনায় মিষ্টি আবহের তরঙ্গে দোল খেতে থাকে সে । চোখে মুখে স্নিগ্ধের আভা । প্রশান্তির জোয়ারে ভাসতে থাকে । অস্ফুট স্বরে বলে ওঠে -আলহামদুল্লিল্লাহ ! আমি আমার আসল ঠিকানা পেয়ে গেছি । শান্তির জায়গা পেয়ে গেছি ।

 

 

আবার ডায়েরিটা হাতে নেয় রাইতা । ডায়েরির উপরে হাত বুলাতে থাকে । বুকের সাথে মিশিয়ে বলতে থাকে- তুই আমার পরম বন্ধু । তাের জন্য আমি আমার স্রষ্টাকে খুঁজে পেয়েছি । আমার আসল ঠিকানা পেয়েছি ।

 

 

 

ডায়েরিটাকে আদরকরে পৃষ্ঠা উল্টাতে লাগলাে । আজ ডায়েরিটা পড়ে শেষ করবে সে । প্রথম থেকে পড়া শুরু করলাে “ সবাই সাদার সৌন্দর্য খোঁজে , কালাের সৌন্দর্য ক’জন বােঝে ! সাদা গােলাপ দেখতে সুন্দর , কিন্তু কালাে গােলাপটা আরও বেশি মনহর !

 

 

 

কখনও কখনও কালাের কাছে সাদা হার মেনে যায় । কালাে ! সে তাে প্রভুরই দান । তুমি
কালাে তাতে মন খারাপ করার কিছু নেই । আল্লাহ তােমাকে ভালােবেসে তাঁর নিপুণ হাতে সৃষ্টি করেছেন । মানুষের চাহিদার কাছে তুমি অসুন্দর হতে পারাে , কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি তাে সেরা ।

 

 

 

যে তােমাকে কালাের কারণে অবজ্ঞা করে , জেনে রেখাে সে কিন্তু স্রষ্টাকেই অবজ্ঞা করলাে ।
আল্লাহর সৃষ্টিকে কটাক্ষ করলাে । তুমি ভেবাে না , মন খারাপ কোরাে না ।
তুমি তােমার সৃষ্টি নও , আল্লাহর সৃষ্টি । সাদা – কালাে , ধনী – গরীব সবই আল্লাহর দান ।

 

 

 

এতে মন খারাপ করার কিছু নেই এবং অহংকার করারও কিছু নেই । আল্লাহ চাইলেই টাকা পয়সা , চেহারার আকর্ষণ সবই কেড়ে নিতে পারেন ।
নিজের যেটুকু আছে তাতেই সন্তুষ্ট থেকো , শান্তি পাবে । ” রাইতা পড়তে পড়তে ভাবনার গভীরে হারিয়ে গেলাে । আহ !

 

 

মেয়েটা কেমন যেন সব আমাকেই উদ্দেশ্য করে বলছে। সবকিছু আমার জীবনের সাথে মিলে যাচ্ছে ।
কী অদ্ভুত সমীকরণ । আসলেই তাে সবই আল্লাহর সৃষ্টি , তবুও মানুষ কেন বুঝে না !

নাহ , আর অযথা কেঁদে নিজের জীবন নষ্ট করবাে না । কালাে । তাতে কী , আমি তাে আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি । আমার কাঁদলে চলবে না । আমি হাসবাে , মনখুলে হাসবাে । কালাে বলে নিজেকে ছােট ভাববাে না ।

 

 

শায়লা এসে বলল , কিরে রাইতা নাশতা করবি না ? কখন থেকে ডাকছি তোকে ।
‘ জানিস শায়লা , আমি আমার আসল গন্তব্য খুঁজে পেয়েছি । ‘

 

 

 

‘ তাই নাকি ? কী সেটা ?
রাইতা ডায়েরির কথাগুলাে খুলে বলল , বােরকাওয়ালী মেয়েটার কথাও বলল । শায়লা বলল , ‘ সব ঠিক আছে কিন্তু বােরকা পরে সুফি সাজা আমার ভালাে লাগে না । এটা বেশি বাড়াবাড়ি । মনের পর্দা বড় পর্দা । আমি যদি খারাপ কিছু না করি তাহলেই তাে হলাে । বােরকা পরে হাত মুজা , পা মুজা পরে চলা ।

 

 

এটা আবার কোন আদিখ্যেতা ! এই বােরকাওয়ালীদের মধ্যেই বেশি শয়তানি । খুঁজে দেখ , যারা সমাজে চলে না তারাই এরকম বােরকা পরে সং সাজে ।
রাইতা কোনাে উত্তর খুঁজে পেলাে না । সেও তাে জানে না পর্দার গুরুত্ব কতখানি কথা না বাড়িয়ে ডায়েরি পড়ায় আবার মনযােগ দিল রাইত । আবার । একটি লেখায় চোখ আটকে গেল ।

 

 

 

” আত্মহত্যা ! সে তাে মহাপাপ । যদি হতাশার গহিন অরণ্যে হারিয়ে যাও , যদি জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তবুও আত্মহত্যা কোরাে না । তােমার জীবনের মূল্য অনেক । হে মন , তুমি কি ভেবে দেখেছাে পরকালের পরিনতির কথা ! ভেবেছাে কি কখনও কিয়ামতের কঠিন দিনের কথা । কেন তােমার এতাে উদাসীনতা ! কেন অবৈধ পথে ছুটে চলা ! তােমার হাতে যার জীবন তার হাতেই তােমার মৃত্যু । নিজের হাতে নিজেকে শেষ কোরাে না , ধ্বংস হয়ে যাবে । ”

 

 

অদ্ভুত তাে ! মেয়েটা অকপটে আমার সব সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছে । এটা বুঝি নিয়তি ! যেখানে কষ্টের সীমা ছাড়িয়ে যায় , সেখান থেকেই হয়তাে আল্লাহর সাহায্য শুরু হয় । আল্লাহ আমাকে হয়তাে পরিক্ষা করেছিলেন । এতােদিন ।

 

 

 

নাশতা সেরে শায়লা আর রাইতা আবার কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়লাে । রােদের তীব্রতায় প্রাণ উষ্ঠাগত অবস্থা । লােকাল বাসে বাদরের মতাে ঝুলতে ঝুলতে যাচ্ছে তারা । গরমের ভ্যাপসা গন্ধ , তারমধ্য বাসের উপচেপড়া ভীড় । অসহ্য এক পরিস্থিতি । নারী – পুরুষ কোনাে ভেদাভেদ নেই ।

 

 

ডলাডলি , মাখামাখি তাে আছেই । রাইতা এতােটা ভীড়ের কবলে কখনও পড়েনি । ঢাকা শহরের জ্যাম , লােকাল বাসের পরিস্থিতির সাথে রাইতা পরিচিত না । নারী – পুরুষের এই মিশ্র ভ্যাপসা গন্ধ ওর সহ্য হচ্ছে না ।

 

 

রাইতা শায়লাকে ডেকে বলল , ‘ শায়লা , সহ্য হচ্ছে না , নেমে পড় । দেখ , ছেলেগুলাে কীভাবে মেয়েদের সাথে আটকে আছে , আর মেয়েগুলােও বা এতাে বেয়াদব কেন ? চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে । আমার সহ্য হচ্ছে না শায়লা ! ‘
শায়লা রাগান্বিত হয়ে বলল , ‘ আরে চুপ কর !

 

 

লােকাল বাসে আর কী চাস ! এখন কি আমি তাের জন্য প্রাইভেট কার ভাড়া করে আনবাে ! এভাবেই চলা শিখতে হবে । ছেলেরা পারলে আমরা পারবাে না কেন ? ” রাইতা কথা না বাড়িয়ে চুপ হয়ে গেল । গার্মেন্টসে গিয়ে আজও কোন কাজ পেলাে না ।

 

 

 

হতাশ হয়ে আবার ফিরে এলাে । রাইতা বলল , ‘ আর কাজের সন্ধানে যাবাে না । এই গরমে বাদরের মতাে ঝুলে ঝুলে ছেলেদের ঠেলাঠেলি খেয়ে আর যাইহােক কাজে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না । তারচেয়ে আমি বরং মায়ের কাছে ফিরে যাই ।

 

 

ওখানে গিয়ে টিউশনি খুঁজতে থাকবাে । টিউশনি করে আমার পেট চলে যাবে । ‘ শায়লা বলল , ‘ তাের যা ভাল লাগে তাই কর । পরদিন শায়লার বাসা থেকে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হলাে । রাইতা । শায়লা হাজার দুয়েক টাকা রাইতার হাতে গুজে বলল ,

 

 

 

“ এই নে ভাড়া , আর কিছু কিনে খেয়ে নিস । ট্রেনের টিকিট কেটে সিটে গিয়ে বসলাে রাইতা । আজ কেউ নেই ওর পাশে , তবে সেই বােরকাওয়ালীর কথা ভাবছে রাইতা , আর ভাবছে নীল ডায়েরির কথা।

 

 

 

ডায়েরির কথা মনে পড়তেই ব্যাগ থেকে ডায়েরিটা বের করে পাতা উল্টাতে লাগলাে । রাইতা মনে মনে বলছে , বাহ ! বােরকাওয়ালীর হাতের লেখা বেশ দারুণ তাে ! আবার প্রত্যেকটা লেখা অনেক শিক্ষণীয় । পর্দা সম্পর্কীয় একটা লেখায় রাইতার চোখ আটকে যায় , লেখাটা একটা গল্পকারে ছিল ঠিক এমন …

 

 

 

“ আমরা ক’জন বান্ধবী নদীর কোল ঘেঁষে হাটছি , গােধূলি লগ্নে পশ্চিম আকাশে হেলে যাওয়া সূর্যের লালিমা আর পাখীদের নীড়ে ফিরে যাওয়ার দৃশ্য দেখছি । কখনও নদীর জল ছুঁয়ে দেখছি , আবার কখনও খুঁনসুটিতে মেতে উঠছি । আমাদের খুঁনসুটি দেখে পাশ থেকে একদল কলেজ পড়ুয়া মেয়েরা বলাবলি করতে লাগলাে , এই দেখ , দেখ , নদীতে ভুত আসছে ভুত ।

 

 

আবার কেউ বলছে আরে ভুত না এরা হলাে জঙ্গী পার্টি । আবার কেউ বলছে , বােরকা পরেছে ঠিকই ।
কিন্তু ওদের ভেতরে গিয়ে খবর নিলে দেখা যাবে সবকয়টা মিনমিনে শয়তান ।

 

 

শেষ পর্ব

 

 

আমাদের মধ্যে থেকে সানিহা নামের একটা মেয়ে বলে ফেলল- পর্দা আমাদের অলংকার , পর্দাই আমাদের অহংকার । তাদের মধ্য থেকে একজন পিশাচিনীর মতাে হেসে উঠে বলল , হেহ ! আইছে অলংকারওয়ালা ।

 

 

ভুত হয়ে সং সেজে আবার অলংকার দাবি করছে । আমরা মেয়েগুলাের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম । সানিহা বলল , আচ্ছা , কিছুপ্রশ্ন করি , উত্তর দেবেন ? তাদের মধ্যে একজন বলল- বলেন শুনি কী প্রশ্ন ! সানিহাপ্রশ্ন করলাে , আপনার স্বর্ণ অলংকার কোথায় রাখেন ?

 

 

 

মেয়েটি অকপটে উত্তর দিলাে , কোথায় রাখবাে আবার , আলমারিতে রাখি ! সানিহা আবার বলল , কেন , ওগুলাে বাহিরে রাখতে পারেন না ? মেয়েটি ভেংচি কেটে বলল , আপনার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে ? এতাে দামি জিনিস কোনাে পাগলেও বাইরে রাখে না । আপনার মাথায় আসলে গােবর ভরা ।

 

 

 

পাশ থেকে আরেকজন বলে উঠলাে , আরে , এদের মাথায় গােবর ভরা থাকবে না তাে কী থাকবে , সারাদিন মাথায় কাপড় দিয়ে সং সেজে থাকলে তাে গােবরই হবে । মাথায় মগজ – টগজ থাকলে এরকম প্রশ্ন করতাে না ।
ওদের কথা শুনে সানিহার খুব অপমানবােধ হলাে , মেয়েগুলাে পর্দা নিয়ে উপহাস করলাে ! অথচ পর্দা একটি ফরজ বিধানসানিহা এদিক

 

 

 

– ওদিক ভালাে করে তাকিয়ে মুখ থেকে নেকাব সরিয়ে বলল , আমাকে দেখতে কি কাইল্লা ভুতনির মতাে লাগে ? মেয়েগুলাে একজন আরেকজনের দিকে চোখাচোখি করে মিনমিনকরে বলতে লাগলাে , আসলেই তাে মেয়েটা অনেক সুন্দর ! তাহলে বােরকা পরে এমন সং সাজে কেন ?
সানিহা বলল , এই যে শুনুন , আমরা ঢং করে সং সেজে বােরকা পরি না ।

 

 

 

আমরা বােরকা পরি কারণ এটা আল্লাহর বিধান । আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারিমে স্পষ্ট বলেছেন- হে নবী পত্নীগন ! তােমরা সাধারণ স্ত্রী লােকের মতাে নও ।

 

 

যদি তােমরা তাকওয়া অর্জন করে । থাকো , তাহলে কোমল স্বরে কথা বলবে না । কেননা , এতে যাদের মনে বিকৃতি আছে তারা প্রলুদ্ধ হবে , বরং সংযতভাবে কথা বলবে । ( যেমনটা পুন্যবতী নারীগন বলে থাকেন ) আর তােমরা গৃহেই অবস্থান করবে এবং জাহেলিয়াতের
যুগের ন্যায় বেপর্দা অবস্থায় বের হয়াে না ।

 

 

 

আর তােমরা নামাজ কায়েম করাে , যাকাত আদায় করাে , আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুগত্য করাে । ” ( সুরা আহযাব : এবং হাদিসে বলা হয়েছে- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ( রাযি . ) বর্ণনা করেন ,

 

 

 

রাসুল ( সা . ) বলেছেন , নারী হলাে গােপনীয় জিনিস । যখন সে বাইরে বের হয় , শয়তান তার দিকে তাকাতে থাকে ।
আর নিঃসন্দেহে একজন স্ত্রীলােক থাকে ।

 

 

-তাবরানী আল্লাহ পাকের সবচেয়ে নিকটবর্তী ওই সময় হয় যখন সে ঘরের অভ্যন্তরে উল্লেখিত হাদিসে প্রথমত নারীজাতির মর্যাদা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে , ‘ নারী সত্তা ’ গােপন রাখার বিষয় এবং পর্দার আড়ালে থাকাই তার জন্য শােভনীয় ।

 

 

যে সকল নারীরা পর্দার বাইরে ঘােরাফেরা করে , তারা নারীত্বের অবমাননাকারী । তারপর বলা হয়েছে যখন কোনাে নারী ( বিনা প্রয়ােজনে ) ঘর থেকে বের হয় তখন শয়তান তার পেছনে উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে । দুনিয়ার গরম থেকে জাহান্নামের গরম অনেক বেশি ,

 

 

 

জাহান্নামের কঠিন আজাব থেকে রক্ষা পেতে আমরা বােরকা পরি । পর – পুরুষকে নিজের সৌন্দর্য দেখিয়ে আকৃষ্ট করি না । আপনার স্বর্ণ যেমন দামি প্রতিটা মেয়ের শরীরের প্রতিটি অঙ্গ প্রতঙ্গ স্বর্ণের চেয়ে কয়েক কোটি গুণ দামি ।

 

 

আচ্ছা বলুন তাে , আমার এতাে দামি জিনিস সস্তায় পর – পুরুষের সামনে বিলিন করে দেব কেন ! তাদের লােলুপ দৃষ্টি আমার সৌন্দর্যের দিকে আকৃষ্ট করাবাে কেন ! আমি বাজারের পণ্য নই যে ,

 

 

 

যার যেমন ইচ্ছা সে তেমনভাবে আমাকে নিয়ে তামাশা করবে । আমরা আল্লাহর একটি দান , সেই দানের মূল্যায়ন আমরা করবাে । চাই কেউ কাটার আঘাতে জর্জরিত করুক , বা না করুক । আজ আমি পর্দা করি বলেই আমি স্বাধীন , আজ আমি স্রষ্টার হুকুম মেনে চলার চেষ্টা করি বলেই আমি স্বাধীনভাবে চলতে পারি ।

 

 

 

পর্দা মানেই পরাধীনতার শেকলে আবদ্ধ হওয়া নয় । আমি পর্দা করি বলেই টিশার্টে ‘ সরে দাঁড়ান ‘ স্লোগান লিখতে হয় না , বরং ছেলেরা আমায় সম্মান দেখিয়ে নিজেদের আসন ছেড়ে আমাকে বসতে দেয় ।

 

 

আজ আমি পর্দা করি বলেই রাজপথে নেমে বেহায়া বেশে নারী অধীকারের স্লোগান দিতে হয় না , বরং আমার অধিকার , আমার সম্মান আমি পর্দার মাঝেই খুঁজে পেয়েছি । সানিহার এই তেজোদ্দীপ্ত কথাগুলাে শুনে মেয়েগুলাে বােকা বনে গেলাে ।

 

 

কোনাে উত্তর খুঁজে পেলাে না তারা । খুঁজে পাওয়ার কথাও না । মেয়েগুলাে কোনাে কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ চলে গেলাে । সেই দিনটি আমাদের স্মরণীয় একটি দিন । আজও সেই নদী আছে , আকাশ আছে , সন্ধ্যার লালিমা আছে , কিন্তু

 

 

আমাদের সেই সােনালী দিনগুলাে নেই । সবাই নিজনিজ সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । জীবনের কী বৈচিত্রময় সমীকরণ !

” রাইতা ডায়েরি বন্ধ করে ভাবতে থাকে , সত্যিই তাে পর্দার মাঝে স্বাধীনতা আছে ।
আমি কত ভুলের মধ্যে আছি ! কতকিছু জানার বাকি । সারাজীবন শুধু পার্থিব সুখ খুঁজেছি কিন্তু পাইনি ,

 

 

আসল সুখের ঠিকানা কখনও খুঁজে দেখিনি , দেখার চেষ্টাও করিনি । রাইতা মনেমনে ঠিক করলাে সে পরিপূর্ণ পর্দা করবে । রাইতা বাড়ি গিয়ে মাকে সব খুলে বলার পর ওর মা অসার হয়ে পড়লাে । মেয়ের এমন পরিণতি আগেই তিনি ধারণা করেছিল । নিষেধ করেছিল মেয়েকে ।

 

 

শােনেনি । রাইতার মা ভারাক্রান্ত মনে বসে আছে । কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়ার পর মাকে গিয়ে বলল ,
“ মা ! আমাকে হাজার দুইয়েক টাকা দিতে পারবে ? খুব দরকার । রাইতার মা মেয়েকে দুইহাজার টাকা দিয়ে বলল , “ বাজে কাজে খরচ করিস না মা !

 

 

 

রাইতা বলল , ‘ মা ! আমি আর আগের রাইতা নেই । আমি অনেক পরিবর্তন হয়েছি । আমি পরিপূর্ণ ইসলাম মেনে চলতে চাই । আমি অন্ধত্বের বেড়াজালে আর আবদ্ধ থাকতে চাই না ।

 

 

আমি একটা সুন্দর জীবন চাই । এই পার্থিব জীবনের মােহ এখন আর আমাকে মােহিত করে না । আমি সুখের সন্ধান পেয়েছি । আসল ঠিকানা পেয়েছি । রাইতা তার মাকে ট্রেনের বােরকাওয়ালী মেয়েটার ডায়েরির কথা বলল ।

 

 

এই ডায়েরি থেকে পাওয়া আলাের মশালের কথা শুনালাে । রাইতার মা খুশি হয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে মেয়েকে ধরে কান্না করতে লাগলেন । রাইতাও কাঁদতে থাকলাে
কাঁদুক রাইতা এবং তার মা । এই কান্নায় বাধা দিতে নেই ।

 

 

কিছুক্ষণ পর রাইতা নিজেকে শামলিয়ে বলল ,
“ মা জানাে , এই দুইহাজার টাকা দিয়ে আমি একটা বােরকা কিনবাে । আমি পরিপূর্ণ পর্দা করবাে মা ।

 

 

ট্রেনের বােরকাওয়ালীর নাম্বার পেয়েছি ডায়েরির শেষ পাতায় । তার সাথে কথা বলবাে , তাকে আমাদের বাসায় দাওয়াত দিলে কেমন হয় মা ?

 

 

পরিবর্তন তাকে আমি একনজর হলেও দেখতে চাই ।
‘ রাইতার মা বলল , “ খুব ভাল হবে । যার জন্য আমার মেয়ের এতাে রাইতা জান্নাতকে ফোন দেয় কিন্তু রিসিভ হয় না । দশ থেকে বারাে বার ফোন দেওয়ার পরে জান্নাত ফোন রিসিভ করে ।

 

 

রাইতা বলল ,
“ আপু , আমি রাইতা , চিনতে পেরেছেন ?
‘ ঠিক চিনতে পারলাম না ।
‘ ওই যে ট্রেনে দেখা হয়েছিলাে !
“ ও আচ্ছা আচ্ছা !

 

 

সেই রাইতা ! মনে পড়েছে !
তাে আমার নাম্বার পেলেন কোথায় ?
‘ আপনার ডায়েরিতে । আপনি একটা নীল ডায়েরি ফেলে গিয়েছিলেন দেখছাে !
অনেক খুঁজেছি ডায়েরিটা । কোথাও পাইনি । অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এর প্রতিটা পাতায় । রাইতা বলল ,

 

 

“ যেই ডায়েরি জুড়ে আপনার স্মৃতি জড়িয়ে আছে , সেই ডায়েরি জুড়ে আমার নতুন একটি জীবন জড়িয়ে ছিল । জান্নাত বিস্ময় হয়ে বলল ,
“ নতুন জীবন মানে ? ‘

 

 

আপনার ডায়েরি থেকে অনেক শিক্ষা পেয়েছি আমি । অনেক ভুল থেকে বেরিয়ে এসেছি । জানেন আপু , আমি এখন বােরকা পরি , পরিপূর্ণ ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করি । আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি । নিজেকে শুধরে নিয়েছি । এখন আমার জীবনে আর কোনাে চাওয়া – পাওয়া নেই ।

 

 

এখন শুধু রবের তরে একটিই চাওয়া , তিনি যেন আমাকে পরকালে ক্ষমা করে দেন । আপু , আপনার ডায়েরিটা ফেরত দিতে চাই , এই ডায়েরি জুড়ে আপনার অনেক স্মৃতি আছে । আমার আম্মু আপনাকে দাওয়াত দিয়েছে । ভাইয়াকে নিয়ে আসবেন অবশ্যই ।

 

 

জান্নাত বলল , “ সত্যিই আজ নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে । আমার মতাে সাধারণ একজন মানুষের ডায়েরি থেকেও কেউ দীনের পথ পায় ! সত্যিই অভিভূত আমি । যেই ডায়েরির মাধ্যমে আপনি হেদায়েত পেয়েছেন সেই ডায়েরি আমার স্মৃতির থেকে আপনার কাছে থাকলে আমি বেশি খুশি হবাে ।

 

 

এতেই আমি আমার সুখ খুঁজে পাবাে । যদি একটি ভালাে । কাজের জন্য পরকালে মাফ পেয়ে যাই তাহলে আমারও এই জীবনে আর কোনাে চাওয়া – পাওয়া নেই ।

 

 

দ্বীন- মানুষের জীবনের অযাচিত চাওয়া – পাওয়ার উচ্চাভিলাষীতাকে বুঝি এভাবেই বিলীন করে দেয় ? এভাবেই বুঝি জীবনের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন ।

 

 

করিয়ে দেয় ? আর এভাবেই বুঝি জীবনের পরতে পরতে বিজয়ী করে দেয় ?
আলহামদুলিল্লাহ ।

Tags: ইসলামিক উপন্যাস ডাউনলোডইসলামিক গল্পইসলামিক গল্প উপন্যাসইসলামিক গল্প নতুনইসলামিক গল্প পর্দাইসলামিক গল্প পর্দা নিয়েইসলামিক ছোট গল্পইসলামিক বাস্তব গল্প নামাজ নিয়েনীল ডায়েরিনীল ডায়েরি (ইসলামিক গল্প)বাংলা ইসলামিক গল্পমজার ইসলামিক গল্প

Related Posts

খলিফা হারুনুর রশিদ এর একটি শিক্ষনীয় ঘটনা
Islamic Story

খলিফা হারুনুর রশিদ এর একটি শিক্ষনীয় ঘটনা

November 19, 2022
মায়াজাল (ইসলামিক গল্প)
Islamic Story

মায়াজাল (ইসলামিক গল্প)

April 29, 2022
শ্যামপরী (ইসলামিক গল্প)
Islamic Story

শ্যামপরী (ইসলামিক গল্প)

May 20, 2022
অপেক্ষা  (ইসলামিক গল্প)
Islamic Story

অপেক্ষা (ইসলামিক গল্প)

April 26, 2022
আবৃত মুক্তা  (ইসলামিক গল্প)
Islamic Story

আবৃত মুক্তা (ইসলামিক গল্প)

April 28, 2022
বেহেশতী আলোয় আলোকিত মন্দ মানুষ (ইসলামিক গল্প)
Islamic Story

বেহেশতী আলোয় আলোকিত মন্দ মানুষ (ইসলামিক গল্প)

April 27, 2022
Next Post
চিরকুট (ইসলামিক গল্প)

চিরকুট (ইসলামিক গল্প)

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Posts

  • কাউকে মেরি-ক্রিস্মাস বা শুভ বড়দিন উইশ করার আগে নিচের আয়াত গুলো পড়ে দেখুন December 27, 2022
  • মাত্র ৪০ দিনে নিজের জীবন পরিবর্তনের ২০টি চ্যালেঞ্জ- November 19, 2022
  • খলিফা হারুনুর রশিদ এর একটি শিক্ষনীয় ঘটনা November 19, 2022
  • জান্নাতি মৃত্যুর ১২ টি লক্ষণ November 19, 2022
  • নামাজের বৈজ্ঞানিক উপকারীতা: November 18, 2022

Categories

  • INTEREST-ING (79)
  • Islamic Story (26)
  • Islamic-Drama (5)
  • Quran-Translation (4)
Islamic Path

We bring you the best article for you. stay with us and stay happy. thank you.

Categories

  • INTEREST-ING
  • Islamic Story
  • Islamic-Drama
  • Quran-Translation

Recent News

  • কাউকে মেরি-ক্রিস্মাস বা শুভ বড়দিন উইশ করার আগে নিচের আয়াত গুলো পড়ে দেখুন
  • মাত্র ৪০ দিনে নিজের জীবন পরিবর্তনের ২০টি চ্যালেঞ্জ-
  • খলিফা হারুনুর রশিদ এর একটি শিক্ষনীয় ঘটনা
  • Privacy Policy
  • Terms and Condition
  • Contract Us

© 2021 Easy Path of Islam. Website design and Develop by Skylark It.

No Result
View All Result
  • About Us
  • Blog
  • Contract Us
  • Home
  • Privacy Policy
  • Sample Page
  • Terms & Conditions

© 2021 Easy Path of Islam. Website design and Develop by Skylark It.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password? Sign Up

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
x