মুসলিম জাতি এক প্রাণ, এক দেহ-
সূরা আলে-ইমরান : ১০৩
মুসলমানদের পরস্পরের সম্প্রীতি ও ভালোবাসা তথা ঐক্যকে আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি তাঁর ‘নিয়ামত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর সাহচর্যে এসে তাঁর আনীত দ্বীন গ্রহণ করে মক্কার মুহাজির ও মদিনার আনসার এবং মদিনার চিরবৈরী আউস ও খাজরাজ গোত্র পরস্পরের ভাই ভাই হয়ে গেল- আল্লাহ বলেন :
‘আর তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো, যখন তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে, অতঃপর তিনি তোমাদের হৃদয়ে প্রীতির সঞ্চার করেন,
ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে গেলে। তোমরা অগ্নিগর্তের দ্বারপ্রান্তে ছিলে, তিনি তোমাদের তা থেকে রক্ষা করেছেন’
সূরা আলে-ইমরান, আয়াত-১০৪
আল্লাহ পাক বলেন : ‘তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা তাদের কাছে সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পরও বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে।
আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।
সূরা আলে-ইমরান, আয়াত-১০৫
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, সালাত কায়েম কর এবং কখনো মুশরিকদের দলভূক্ত হয়ো না, যারা তাদের দ্বীনকে টুকরো করে দিয়েছে এবং
নিজেরা নানা দলে বিভক্ত হয়েছে, এদের প্রত্যেকটি দলই নিজেদের যা আছে তা নিয়েই মত্ত। ’
-সূরা তাওবা: ৩১-৩২
তারমানে সোজা কথা, যে সলাত্ আদায় করে না এবং দলভুক্ত হয় তারা মুশরিক।
আল্লাহ সোবহানাহ্ তাআ’লা বলেনঃ
‘এই যে তোমাদের জাতি, এতো একই জাতি, আর আমি তোমাদের পালনকর্তা, অতএব তোমরা (ঐক্যবদ্ধভাবে) আমারই দাসত্ব কর ও একে অপরে বিভক্ত হইয়ো না।
-সূরা তওবা: ৯২
ঐক্য সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে কারিমের এক নির্দেশনা থাকার পরও বর্তমানে মুসলিম সমাজের ঐক্যের অভাবই বেশি পরিলক্ষিত হয়। মুসলিম জাতি এক প্রাণ,
এক দেহ- এই চেতনাবোধ দিনে দিনে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর আসছে। ইসলামে মুসলমানদের পারস্পরিক সর্ম্পক ভ্রাতৃত্বের।
এ সর্ম্পকের ভিত্তি ইসলামের একটি স্তম্ভের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যে কেউ তার স্বীকৃতি দিবে সেই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হবে।
এই ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য বজায় রাখার ব্যাপারে মহান আল্লাহতায়ালা এবং হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জোর তাগিদ দিয়েছেন।
হজরত হারিছ আল আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি,
স্বয়ং রব আমাকে ওইগুলোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়গুলো হচ্ছে- সংঘবদ্ধ, আমিরের নির্দেশ শ্রবণ, নির্দেশ পালন, হিজরত এবং আল্লাহর পথে জিহাদ।
যে ব্যক্তি সংঘবদ্ধতা ত্যাগ করে এক বিঘৎ পরিমাণ দূরে সরে গেছে সে নিজের গর্দান থেকে ইসলামের রজ্জু খুলে ফেলেছে। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন,
হে আল্লাহর রাসূল! সালাত কায়েম এবং সাওম পালন করা সত্ত্বেও? এর উত্তরে রাসূল (সা.) বলেন, নামাজ কায়েম এবং রোজা পালন এবং মুসলমান বলে দাবি করা সত্ত্বেও। ’
সুনানে তিরমিজি
হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যারা জান্নাতের সর্বোত্তম অংশে বসবাস করে আনন্দিত হতে চায়,
তারা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর রশিকে আঁকড়ে ধরে। যারা আলাদা হবে তারাই গাফেল
(তিরমিজি)
হজরত রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন-যাপন কর, সংঘবদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবন-যাপন করো না,
কারণ বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করলে শয়তানের কু-প্ররোচনায় আকৃষ্ট হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। বিভক্ত হয়ে জাবে বিভিন্ন দলে, আর মনে রেখো এক মুসলিম ব্যাতীত অন্য কোন দল আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। ’
-আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ্
হজরত রাসূলে কারিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মুমিনগণ অপর মুমিনের জন্য একটি প্রাচীরের মতো,
যার এক অংশ অপর অংশকে মজবুত করে। এরপর তিনি এক হাতের আঙুল অপর হাতের আঙুলে প্রবিষ্ট করেন। ’
সহিহ বোখারি ও মুসলিম
হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
‘যে ব্যক্তি সংঘবদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করবে তার মৃত্যু হবে জাহিলিয়াতের মৃত্যু। ’
সহীহ্ মুসলিম
হজরত রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘মুমিনগণ একজন মানুষের মতো, যার চোখ আক্রান্ত হলে সমস্ত শরীর আক্রান্ত হয়; আর তার মাথা আক্রান্ত হলে সমস্ত শরীর আহত হয়। ’(সহিহ মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন : ‘এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করবে না,
তাকে সহযোগিতা করা পরিত্যাগ করবে না এবং তাকে লাঞ্ছিত ও হেয় করবে না। পিঠ পিছনে কথা বলবে না, জদিও তা সত্য হয়।
কোনো ব্যক্তির জন্য তার কোনো মুসলিম ভাইকে হেয় ও ক্ষুদ্র করার মতো অপকর্ম আর নেই। নিশ্চয়ই সে তখন মুনাফিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে জায়।
মুসনদে আহমাদ; ১৬/২৯৭, ৭৭৫৬
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আরো বলেছেন : ‘একজন মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। সে তার ওপর অত্যাচার, গীবত, মিথ্যাচার, খেয়ানতকারী,
ও মতভেদের কারনে বিভক্ত হতে পারে না এবং মুসলমানদেরকে ধংশের মুখে ঠেলে দিতে পারে না এবং সলাত ও উওম আখলাক হতে গাফেল হতে পারে না।
জাবের রাঃ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ), আর জারা এসব করে তারা
উওরে রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, হে জাবের, তুমি কি শোননি? জখন আমি মুসলিম বলেছি! জারা এসব করবে নিঃসন্দেহে তারা মুসলিমদের কলংকিত করলো।
বুখারি : ২৪৪২; মুসলিম ২৫৮০
[ উপরের এই হাদিসটি অনেক অর্থ বহন করে। আর যারা মুসলিম হয়ে মুসলিমকে কলংকিত করে সে মুসলিম থাকে কিভাবে?
আর ৭টা জিনিসের কথা বলা হয়েছে; ১.অত্যাচার ২. গীবত ৩.মিথ্যাচার ৪.খেয়ানতকারি ৫.সলাত্/নামাজ ৬.উওম আখলাক/ সচরিএবান
৭.নিজেদের মতভেদ। মতভেদের পয়েন্ট টা সবার পরে আনার কারন হলো এটাই বর্তমানে সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।ইসলামে মতভেদ সাহাবিদের পরের জুগ থেকেই ছিলো।
কোরআন আর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ওসিয়ত ও হাদীস শুনতো।যে যেভাবে বুঝতো, সে সেভাবে মানতো। আজ অবদি সেটাই হয়ে আসছে।
আসল কথা হলো, সংক্ষেপে এক বাক্যে বলতে গেলে- আল্লাহর দেয়া প্রধান ঈমান আর আকিদা সমূহ ঠিক থাকলেই হলো।
আল্লাহ সোবহানাহ্ তাআ’লা এটাই দেখবেন। এবং এর বিচার ও যেকোনো রায় দেয়ার মালিক একমাএ আল্লাহই।
আপনি জাচাই বাচাই করে কোরআন আর সহীহ হাদীসের উপর টিকে থাকেন তারপর আপনি যে দল করেন বাধা নেই।
কোরআন এবং হাদিসের এসব আদেশ ও নিষেধ বিশ্বের সব মুসলমানের ওপরই সুধু প্রযোজ্যই নয় এটা হুকুম।
যিনি যে অবস্থায়ই আছেন, তার সে অবস্থাতেই এ সব আদেশ-নিষেধ পালন করা কর্তব্য।
কুরআন হাদিসের আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও কার্যক্রম পরিচালনা করলে মুসলমানের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। এটা বাধ্যতামূলক।
কিন্তু কথা জখন আসবে মুসলিম উম্মাহ এর ঐক্যের ব্যাপারে, সেখানে কোন দলগিরি চলবে না, সোজা কথা।
এটা ফরজ না ফরজে আইনের অন্তর্ভুক্ত। নিজেকে মুসলিম দাবি করতে হলে আপনি ঐক্য হতে বাধ্য। এটা হুকুম। ]
মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ থাকা কুরআনের নির্দেশ। বিশ্ব মুসলিমের ঐক্যের পক্ষে কাজ করা, কথা বলা কিংবা নিদেনপক্ষে এর আকাক্সক্ষা পোষণ করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য অবশ্য কর্তব্য,
এটি তার ঈমানের দাবি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন মন্দ অবস্থা অবলোকন করে,
তখন তার উচিত শক্তি প্রয়োগ করে তা ঠিক করে দেয়া; যদি তা সম্ভব না হয় তবে তার বিপক্ষে কথা বলে তা ঠিক করার চেষ্টা করা,
যদি তাও সম্ভব না হয় তা দূর করার জন্য আকাক্সক্ষা প্রকাশ করা উচিত। এটি ঈমানের সর্বনিম্ন স্তর’ (সহীহ্ মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
বিশ্বে মুসলমানদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যেসব দ্বন্দ্ব বিরোধ ও যুদ্ধবিগ্রহ বিদ্যমান তা নিরসনের জন্য বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রচেষ্টা চালানো কর্তব্য;
এটি কুরআনের নির্দেশ, ঈমানি দায়িত্ব। এসব দায়িত্ব পালনের জন্য ওআইসি সচিবালয়ের আওতায় একটি স্থায়ী মধ্যস্থতাকারী সেল গঠন করা যেতে পারে।
বিভিন্ন মুসলিম দেশের সরকারি ও বেসরকারি ইসলামী চিন্তাবিদ, আলেম, উম্মাহর কল্যাণকামী অভিজ্ঞ কূটনৈতিক বা
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সমন্বয়ে ওই সেল গঠন করা যেতে পারে। যেকোনো দেশে দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত দেখা দিলে এই সেল মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে।
আল্লাহ তাআ’লা বলেনঃ ‘যদি মুসলমানের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেবে।
অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের ওপর চড়াও হয়, তবে তোমরা শক্তিশালি আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যে পর্যন্ত না
তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দেবে এবং ইনসাফ করে দেবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন’
সূরা আল হুজুরাত, আয়াত-৯
মুসলিম রাষ্ট্রগুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম হওয়া সত্ত্বেও কুরআন
ও হাদিসের নির্দেশ অনুসরণের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ উম্মাহ গঠনে দায়িত্ব পালন করতে পারে। এ দায়িত্ব পালন ঈমানি দায়িত্বের অংশ। ‘মুমিনগণ পরস্পর ভাই ভাই’
সূরা হুজুরাত, আয়াত-১০
এই আয়াত দুনিয়ার সব মুসলমানকে বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। প্রত্যেক মুসলিম অপর মুসলিমকে নিজের ভাইয়ের মতো আপন মনে করবে,
এটি আল্লাহর আদেশ। অতএব একজন মুসলমান অপর মুসলমানকে কোনো শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া ঘৃণা করতে পারে না,
তার কোনো অনিষ্ট চিন্তা করবে না, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ-বিগ্রহ করতে পারে না। যারা এরূপ করবে তারা অবশ্যই কুরআনের এই আদেশের সীমালঙ্ঘনকারী।
অতএব, প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্র পরস্পরের ভাই। এক মুসলিম ভাই (রাষ্ট্র) অপর কোনো ভাইয়ের বিরুদ্ধে যাবে না,
ক্ষতি করবে না এবং দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতে লিপ্ত হবে না। প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্র পরস্পরের বন্ধু হবে এবং একে অপরের কল্যাণকামী হবে।
এর মাধ্যমে তাদের ঈমানি দায়িত্ব পালন করা হবে এবং উম্মাহও ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
কে/কার আকিদা সঠিক, আর কে/
কার আকিদা ব্যাঠিক তার নির্ধারন করার মালিক একমাত্র আল্লাহ সোবহানাহ্ তাআ’লা। কোন ব্যাক্তি, রাষ্ট্র, মাজহাব নয়। তিনিই একমাত্র বিচারক।
প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রের সরকারকে তার নাগরিকদের কল্যাণের জন্য সর্বপ্রকার চেষ্টা করতে হবে।
প্রতিটি রাষ্ট্রের সরকারকে কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত নির্দেশাবলির আলোকে তার জনগণের সাথে মানবিক আচরণ ও দায়িত্ব পালন করতে হবে।
পরস্পর কল্যাণকামিতার মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মনোভাব জাগ্রত রাখতে হবে এবং কোনো দল বা
গোষ্ঠীর প্রতি প্রতিহিংসা বা শত্রুতামূলক আচরণ পরিহার করে চলতে হবে। জাতীয় ঐক্যের জন্য প্রয়োজন দেশের জনগণের কল্যাণ ও
মতামতকে গুরুত্ব দেয়া এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। যে সব দেশ গণতন্ত্রকে সাংবিধানিকভাবে গ্রহণ করেছে সেসব দেশে
ক্ষমতার পালাবদলের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রণয়ন এবং
তার সঠিক বাস্তবায়ন করতে পারলে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো অভ্যন্তরীণ অনেক দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত থেকে মুক্ত থাকতে পারবে।
বিশ্বের যে প্রান্তেই হোক, কোনো মুসলিম ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠী নির্যাতিত হলে তাদের নির্যাতন থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করা অপর মুসলমানের দায়িত্ব।
রাসূল সা: বলেছেন : মুমিনরা একটি দেহের মতো। দেহের যে অঙ্গেই ব্যথা হোক না কেন তাতে সম্পূর্ণ দেহ ব্যথা অনুভব করে, জ্বর ও অনিদ্রায় ভুগতে থাকে।
এবং এতে জদি সে ব্যাথা অনুভব না করে নিঃসন্দেহে সে মুসলিম নয়।
বুখারি-৬০১১, মুসলিম-২৫৮৬
আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ছাড়া
অপর কাহাকেও বন্ধুরূপে গ্রহণ করিও না। তাহারা তোমাদের ক্ষতি করিতে ছাড়িবে না’(সূরা আলে-ইমরান, আয়াত-১১৮)
এ আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী কোনো মুসলমান রাষ্ট্র অপর কোনো মুসলমান ভাইয়ের (রাষ্ট্রের) বিরুদ্ধে কোনো অবিশ্বাসী শক্তিকে বা রাষ্ট্রকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতে পারবে না।
এবং ঈমাম মাহাদী এসে সর্বপ্রথম যে কাজটি করবেন, সেটা হলো ঐক্যতা। আর সকল মুসলমানদের একটা কথা জিজ্ঞেস করার রইলোঃ
দলগঠন/দলভুক্ত হয়ে কাজ করা “ফরজ” ( আপনিনযে দলেরই হোন না কেনো),
নাকি উম্মতের ঐক্য পালন করা ফরজ
কোনটা, উওর দিয়ে জাবেন যদি আপনি সত্যবাদি হন
ইসলাম প্রচার করাও বাধ্যতামূলক। এ বিষয়ে হাদীস এবং কোরআন যা বলেঃ
কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে,
প্রত্যেকে তার সমান সাওয়াবের অধিকারী হবে। তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সাওয়াবেও কোন কমতি হবে না। ( সহীহ্ মুসলিমঃ ২৬৭৪ )
হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “অবশ্যই প্রচার করো,যদি একটি মাএ আয়াতও হয়।আর যে করে,কে হতে পারে তার হতে উওম আল্লাহর নিকট”।। ( সহীহ্ বুখারীঃ ৩৪৬১)
ইসলাম প্রচারে সয়ং আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَمَنْ أَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّن دَعَا إِلَى اللَّهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَقَالَ إِنَّنِي مِنَ الْمُسْلِمِين
“তার কথার চেয়ে উত্তম কথা আর কোন ব্যক্তির হতে পারে,
যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নেক কাজ করে এবং বলে আমি মুসলমান”
সূরাহ হা’মীম সেজদাহ্ঃ ৪১:৩৩
তাই আমাদের সকলের উচিত উত্তম কথা বলা মানুষকে সদ উপদেশ দেওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর দিকে ডাকা এবং আল্লাহর কোরআন ও রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
এর সহীহ্ হাদীস অনুযায়ী আমল এবং বুক ফুলিয়ে বিশ্বকে বলা হ্যা আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
এর উম্মত, আমার ধর্ম ইসলাম, আমার পরিচয় আমি মুসলিম, আমার ইলাহ্ একমাএ আল্লাহ সোবহানাহ্ তাআ’লা
#ব্যাক্তিগত_মন্তব্যঃ উপরোক্ত আমার কোন উক্তি যদি কোরআন ও সহীহ্ হাদিসে বিপরীতে যায় তবে তা ছুড়ে ফেলে দিন এবং যতটুকু সহীহ্ তা যাচাই-
বাছাই করে গ্রহণ করুন ও আমল করুন। আমিও মানুষ তাই ভুলের উর্ধে নই। জাজাকাল্লাহ খাইরান
আল্লাহু আকবার